দাদা আজ কি তোমার জন্মদিন? ফেসবুকের পর্দায় শুভেচ্ছা দেখে আমিও কেমন যেনো বোকা হয়ে গেলাম। হ্যাপি বার্থডে জানিয়ে দিলাম সকাল সকাল তাঁকে। কিন্তু মনে হলো কপাল ঠুকে ফোন করে ফেললাম তাঁকে বুকে বল নিয়ে। সেই ফোনের ওপর প্রান্তে শুনলাম দুর ওসব ফেসবুক মানেই তো ফেক এর কারবার রে। আজ কে বলেছে আমার জন্মদিন। আমার এই জন্মদিন আর দাদার জন্মদিন এক দিনে। সেটা শুনে বেশ ভালই লাগলো।
সত্যিই তো এমন সৌভাগ্য আর ক জনের হয়। দাদার জন্মদিন আর দাদার অনুগামীর প্রধান শিষ্যের জন্মদিন বলে কথা। সেই আমাদের সবার শৌনক ঘোষ। সেই আশীষ ঘোষদার দেওয়া নাম সেই ভজ। সেই বিখ্যাত এক লেখকের ছেলে সে। সেই ইটিভি বাংলা তে রামোজি ফিল্ম সিটিতে মিটিং এর ডাক পড়লে সামনে এগিয়ে চলা আর হায়দরাবাদ এর ধোসা আর ইডলি খাওয়া লোকদের সাথে ইংরেজিতে কথা বলা সেই শৌনক ঘোষ।
সেই ইটিভির সাম্রাজ্য ছেড়ে এবিপিতে কাজে যোগ দেওয়া ওর। তারপর সেখান থেকে ২৪ ঘন্টায় চলে আসা। সেখান থেকে ধীরে ধীরে এগিয়ে চলা এদিক থেকে ওদিক। সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠে পড়া কিছুটা। অনেকটা সেই দাদার হাত ধরেই। সেই বিখ্যাত সাংবাদিক এর আজ জন্মদিন যদিও সেটা খাতায় কলমে নয় তাঁর কথায়। তবু তো ফেসবুকের পাতায় সেই বিখ্যাত সাংবাদিক এর জন্মদিন দেখে সেটা তারিখ ঠিক নয় দেখেও কতজন যে লাফিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়লো তার ঠিক নেই।
মনে পড়ে গেলো আমার নানা কথা। সেই মন্দারমুনির সন্ধ্যায় গাড়ী নিয়ে উথাল পাতাল জলে ভেসে যাওয়া আমাদের। কোনোও রকমে প্রাণে বেঁচে হোটেলের ঘরে ফেরা। সেই সুন্দর হোটেলে দুই পরিবার নিয়ে আনন্দে মেতে ওঠা আর বাজি পোড়ানো। সেই চন্দননগরে ভীড় রাস্তায় জগদ্ধাত্রী ঠাকুর দেখতে গিয়ে ভীড়ের মাঝে আটকে পড়া। সেই দুই পরিবারের রাতের বেলায় ঠাকুর দেখা প্রতি বছর। বেশ ভালই ছিল কিন্তু সেই দিন গুলো। মজার দিন, আনন্দের দিন, সংসারে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট দিনে টাকা আনার দিন। মাসের প্রথম ভালো থাকার দিন। কালী পুজোয় বোনাস মেলার দিন। সেই সুন্দর গিফট পাওয়ার দিন। সেই মিডিয়ার অফিসে কাজ করে হাসি খুশি দিন যাপনের দিন। আবার চেনা সহকর্মীর কড়া কথা শুনে মন খারাপের দিন। যে দিন কবেই হারিয়ে গেছে আমাদের।
তবু তো এই ফেক জন্মদিনের দিন ওকে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে গিয়ে এতগুলো কথা মনে পড়ে গেলো আমার। সেই ওর দাদার হাত ধরে আজকালে চলে যাওয়া। কাজ না পেয়ে আমার চুপ করে বসে থাকা বোলপুরের রতনপল্লীর ভাড়া বাড়িতে। কাজ নেই টাকা নেই মেয়ের পড়া আছে। আজ তো সেটা অভ্যাস হয়ে গেছে অনেকটাই। তারপর একদিন সেই দাদার নতুন এক চ্যানেলে কাজে যোগ দেওয়া। আমাদের নানা জনের নানা মত আর ধারণা হওয়া। এই বুঝি দাদার ডাকে জীবন বদলে যাওয়া। কিন্তু সব কিছুই কেমন যেন হয়ে গেলো সবার।
সেই নকল জন্মদিনের দিন শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে এইসব হাবিজাবি নানা কথাই মনে আসে বারবার। সেই ওদের সুন্দর একটা পরিবার, নিশ্চিত একটা সুখের জীবন, গাড়ী চালিয়ে অফিস আসা, সেই গাড়ীতে বাড়ী ফেরার জন্য কত জনের লাইন পড়ে যাওয়া অফিস এর নিচে। আর আজ সেই সব কিছুই কেমন যেন আবছা হয়ে ধরা দেয়। আমার সাদা জীবনের কালো কথায় আমার আঁকিবুঁকি ব্লগের পাতায় লিখতে ইচ্ছা হয় সেই সব কথা। যে কথা বলতে গেলে যন্ত্রণা হয়, কষ্ট হয়, মনের অজান্তেই কেমন মন ভার হয়ে যায়। পরিবার এর কাছে কথা শুনতে হয়। সবাই পারলে তোমরা কাজ করতে পারো না কেনো সমঝোতা করে।
তবু তো আজও আমরা সেই আমাদের দাদার অনুগামী হয়েই বেঁচে আছি এই দুর্ভিক্ষের খবরের এই বিশ্ব বাংলায় পেটে গামছা বেঁধে। যেখানে শুধু আমরা বাতিলের দলে। যেখানে শুধু আমরা ঘৃণা আর অপমান সহ্য করেই বেঁচে থাকার দলে। করুণার পাত্র হয়ে বেঁচে থাকার দলে। তবু তো ভাগ্যিস ফেসবুক নকল জন্ম দিনের ঘোষণা করেছিল আজ সাত সকালে। তাই তো আমাদের সেই বিখ্যাত লিড আউটপুট এডিটর শৌনক ঘোষকে এতজন শুভেচ্ছা জানিয়ে দিলেন অভ্যাস বশতঃ। দাদা ভালো থেকো তুমি। নকল জন্ম দিনের দিন শুভ জন্মদিন এর শুভেচ্ছা জানিয়ে দিলাম আমিও আমার টোটো চালকের জীবনে এলোমেলো এলেবেলে আর। বিন্দাস জীবনে এত ভুল করলাম না হয় সারাজীবন ধরে। এই একটা দিনকে শুভ জন্মদিন বলে আবারও না হয় ভুল করলাম। ভালো থেকো তুমি। শুভ জন্মদিন।
শুভ জন্মদিন দাদা - অভিজিৎ বসু।
১৪ জুন, দু হাজার পঁচিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন