সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

বৃষ্টিভেজা রাত ও বিন্দাস জীবন

জীবন নিয়ে কাটা ছেঁড়া করতে আমার বেশ ভালোই লাগে এই বুড়ো বয়সে পৌঁছেও। একদম সেই কলেজ জীবনের জুলজি পড়তে গিয়ে যেমন গঙ্গার ধারে এই শ্রাবণের জলে বৃষ্টি ভেজা দুপুরে ছুরি চালাতাম আমি আধমরা ব্যাঙের পেটের উপর দিয়ে শান্ত হয়ে আর চোয়াল শক্ত করে। কোনও ভাবে বাঁচার জন্য ছটফট করতো সেই বর্ষায় নাকডাকা ভিজে জবজবে ব্যাঙ ঠ্যাং ছুঁড়তো এদিক ওদিক। কেমন আপনমনে আর আপন ছন্দে এদিক ওদিক বিন্দাস জলে ভিজে ঘুরে বেড়াতো সে নিজের মতো করেই সবুজ শ্যাওলা পড়া উঠোনের এদিক ওদিক। কেমন ঘোলাটে চোখ মেলে পিটপিট করে বুঝে নিত আশপাশের সবকিছু ঠিক আছে তো। কিন্তু সেই ছটফট করে ঘুরে বেড়ানো প্রাণীটি প্রাণ বাঁচাতে পারতো না কিছুতেই এক সময়ে কেমন লড়তে লড়তে স্থির হয়ে যেতো সে। ডিসেকশন টেবিলের মোমের দুধসাদা টেবিলে কেমন চোখ উল্টে পড়ে থাকত সে আমার দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে। 


আসলে এই আমার নিজের জীবন নিয়ে বেশ ছিনিমিনি খেলতে খেলতে আমার এই উদাহরণটি মনে পড়ে গেলো এই বৃষ্টি ভেজা রাতে। সেই কটু গন্ধ ওলা ল্যাবরেটরি, সেই জলে ভেজা কলেজের রাস্তা, সেই বড়ো ক্লাসরুম, এক দঙ্গল ছেলের আর মেয়ের স্বপ্ন দেখা নতুন জীবন। সেই আমল থেকেই আমি বেশ ডাকাবুকো। কেউ কেউ আবার ভীতুও ভাবেন আমায়। কেউ কেউ মনে করেন ক্ষমতার স্বাদ পেয়ে আমি বোধহয় ধন্য হয়ে গেছি আজকাল। একদম ঠিক নয় সেই কথা। রাতের অন্ধকারে দুটো শক্ত রুটি আর আলুভাজা খেতে খেতে ভাবছিলাম এই জীবনের প্রয়োজন খুব কম আমার। আমার ওপরে ওঠার তাড়া নেই, কর্পোরেট হবার ভাবনা নেই, ঝাঁ চকচকে জীবনকে বগলদাবা করে বগল ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াবার কোনও রকম তাড়াহুড়ো নেই আমার, এই সমাজে, সংসারে আর নানা জনের মাঝে বুক ফুলিয়ে। 

যে জীবন যাপন নিয়ে আমার বিশেষ কিছু প্ল্যান প্রোগ্রাম, মেডিক্লেম, এল আই সি, পি এফ কিছুই নেই। আমার মা নেই, বাবা থেকেও নেই, আত্মীয় স্বজন পরিজন কেউ থেকেও নেই, বন্ধু সে তো কবেই শত্রু পক্ষের লোক হয়েছে অনেক আগেই। শুধুই অজান্তে কারুর সাথে হাত মিলিয়ে দূরে চলে গিয়ে। যাকগে এই রাতদুপুরে পঞ্চা বা ভজা মার্কা এই জীবন নিয়ে আমার তেমন কোনোও আফশোষ নেই আর। কী হলো না হয় এই বিশ্ববাংলায় আমি কেউকেটা নয়। আমি না হয় থানা পুলিশ বা এস পি আর ডিএম কে ফোন করতে পারিনা আজ কাল। একসময় হাসি মুখেই যেসব নেতা মন্ত্রী সান্ত্রীর কাছে পৌঁছে যেতাম অনায়াসে আজকাল না হয় একটু আড়াল আবডালে লুকিয়ে লুকিয়ে বেঁচে থাকতে হয় আমার। তাতে পাড়ার ভজা, পঞ্চা বা বিশু মার্কা ছেলেদের খুব একটা যেমন হেলদোল নেই। পাড়ার মাতব্বর হতে হবে, দাপুটে নেতা হতে হবে। একডাকে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে পৌঁছে যেতে হবে, মিডিয়ায় কাজ করে সবার কাছে কেমন অবাক চোখে সম্ভ্রম আর ধান্দাবাজ হয়েছি বলে জানান দিতে হবে এটা আমার এই এলোমেলো এলেবেলে জীবনের দর্শন নয়। 

কোনও ভাবে বেঁচে থাকা, অসুস্থ হলে ওষুধ এর যোগান না পেয়ে মরে যাওয়া, পাঁচ বছর এই ভাবে কোনোও কাজ না করে টিকে থাকা আমার বদ অভ্যাস। আর তাই ক্ষমতা থাকা আর না থাকা সেটা নিয়ে বিচলিত নই আমি একদম কোনওদিন। এই ক্ষমতা পেতে হেদিয়ে মরা, উড়ান ধরে কলকাতা ছুটে আসা, এর ওর গোপন অভিসারে নানা জনের নানা কথা শুনতে পাওয়া আমার মনে কেমন বিবমিষার উদ্রেক করে আজকাল। সত্যিই কি এই জীবনে প্রচুর টাকা আর ক্ষমতা দখল করা দরকার। একদম একা একাই এলোমেলো, এলেবেলে, বিন্দাস জীবনকে সঙ্গে নিয়ে বেঁচে থাকা যায়না কিছুতেই। না হয় বড়ো নাই হলাম, পকেটে টাকা নাই থাকলো, কাউকে কাজ দেবার ক্ষমতা নাই থাকলো, কাউকে টপকে শীর্ষে ওঠা নাই হলো আমার তাতে কী পঞ্চা বা বিশুর কিছু ক্ষতি হয় জীবনে কে জানে। 

আমার তো ওই পাড়ার গম্ভীর মুখের লাহিড়ী বাবুর ছেলে যিনি বছরে একবার দূর থেকে পূজোর সময় কদিন বাড়ী এলেই তার বাবা মা উজ্জ্বল মুখে বুকে কষ্ট সহ্য করেও ছেলের গুণগান করেন সবার কাছে। আর ছেলে চলে গেলে গোপনে চোখের জল মোছেন। তেমন হতে ইচ্ছা করে নি কোনওদিন। সেই বৃষ্টি ভেজা দুপুরে কলেজের গঙ্গার ধার, সেই জলে ভিজে ভিজে দুজনের কলেজ ফেরত দুটি জীবনের প্রথম স্বপ্ন দেখার শুরু, আর তারপরে কলেজ জীবন শেষ হলেই ভেঙে যাওয়া সেই স্বপ্নকে রাস্তায় গড়াগড়ি খেতে দেখে গুমড়ে ওঠা আমার মত টোটো করে ঘুরে বেড়ানো এক বেহিসেবী বেমক্কা ছেলের। সেই দিন থেকেই যে আমি স্বপ্ন দেখি না আর। কঠিন কঠোর জীবনকে সঙ্গে নিয়েই আমার বেঁচে থাকা। যে জীবন আমায় কখনও হাসায় আবার কখনও কাঁদায়। যে জীবন আমায় বারবার বলে জীবনকে দেখো জীবনই হলো আমাদের সবথেকে বড়ো শিক্ষক।

আমি এই শ্রাবণের বৃষ্টি ভেজা রাতে জীবনকে দেখি। যে জীবন আমায় বারবার ঠকায়। যে জীবন আমায় বারবার বলে কী হবে এই বুড়ো বয়সে এসে ভাবনাহীন এলোমেলো, এলেবেলে জীবনে আবার নতুন করে স্বপ্ন দেখে আর অন্যদের স্বপ্ন দেখিয়ে। সত্যিই তো জীবনের এই পড়ন্ত বেলায় এসে বৃষ্টিতে ভিজে পঞ্চা বা ভজার কী আর স্বপ্ন দেখা সাজে বলুন। মাথার ওপর শনশন করে ঘুরতে থাকে ধুলো পড়া ফ্যান, সেই দুটো রুটি কেমন ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে আমার দিকে। আধপোড়া আলুভাজা, সাতশো পঞ্চাশ স্কয়ার ফিটের এই দু কামরার ঘরে আমি একা একদম একা চুপ করে বসে থাকি। জানি জীবন বড্ড মায়ার, জীবন বড্ড ভালোবাসার, জীবন বড্ড বেদনার, জীবন বড্ড যন্ত্রণার। যে জীবনের পরতে পরতে লুকিয়ে থাকে কতকিছুই। যে জীবন এই সুখের আর এই দুঃখের। যা নিয়ে আমার কোনোদিন চিন্তা ছিল না আজও নেই এই রাতদুপুরে গভীর নিশুতি রাতে। 

সেই বৃষ্টি ভেজা মা কঙ্কালীতলার মন্দির, সেই সোনাঝুরি গাছের পাতা থেকে টুপটাপ করে জল পড়া, সেই মেয়ের তৈরি জিনিস যাতে ভিজে না যায় সব গুছিয়ে ব্যাগে যত্ন করে তুলে নেওয়া। সেই খদ্দের কেউ এলো কি না মেয়ের জানতে চাওয়া। আর আসেনি শুনে ওর চুপ করে যাওয়া। খদ্দের না পেয়েও কেমন ভালোলাগার একটা জীবন। যে জীবনে স্বপ্ন ভঙ্গের যন্ত্রণা ছিল না আমার এই বুড়ো বয়সে। যে জীবনে একপেট খিদে থাকলেও বন্ধুত্বের মেঠো সম্পর্কে পিছন থেকে ছুরি মারা ছিল না। আজ রাতের অন্ধকারে দূরে কুকুরের ডাক শুনে বিছানাতে শুয়ে মনে হয় সেই কলেজের প্র্যাক্টিকাল ক্লাস, সেই বৃষ্টির জল মিলেমিশে একাকার হয়ে যাওয়া আমার অতীত জীবন। আমি সেই ডিসেকশন টেবিলের ওপর যেনো পড়ে আছি আমার এলোমেলো, এলেবেলে আর বিন্দাস জীবন নিয়ে। যে জীবনকে আমি কাটাছেঁড়া করে উপভোগ করতে বড্ড ভালবাসি। প্ল্যান প্রোগ্রাম না করে এত কসরৎ না করে একটু পাঁচু বা ভজা হয়ে দেখুন না আপনি ভালোই লাগবে আপনার। সাদা জীবনের কালো কথায় আজ আমার আঁকিবুঁকি ব্লগের পাতায় এইটুকুই থাক বাকি কথা পরে হবে। 

বৃষ্টি ভেজা রাত ও বিন্দাস জীবন - অভিজিৎ বসু।
২৬ জুলাই, দু হাজার পঁচিশ।
ছবি সৌজন্য নিজের মোবাইল ক্যামেরায় তোলা।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ইটিভির পিনাকপাণি ঘোষ

কিছু মানুষ কত কাছে থেকেও পাশাপাশি এক জায়গায় বাস করেও একসাথে একসময় কাজ করেও যে কত দূরে রয়ে যান নিজের হাসিমুখ নিয়ে আর সেই চেনা ছন্দ নিয়ে সত্যিই বেশ ভালো মজার ব্যাপার কিন্তু এটা জীবনের মেঠো পথে। সেই ইটিভির বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে ঘুরে ঘুরে স্ট্রীট ফুডের ছবি তোলা আর নানা খবর করে খাওয়া দাওয়ার এপিসোড করে একসময়ে বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে যাওয়া ইটিভি নিউজে। আর আমাদের জেলায় বসে সেইসব হাঁ করে দেখা আর কেমন মনের ভেতর অস্থিরতা তৈরি হওয়া। একেই বলে কলকাতার রাজপথের সাংবাদিক বলে কথা।  সেই যে বার রাষ্ট্রপতি এলেন জয়কৃষ্ণ লাইব্রেরী প্রাঙ্গণে সেই অনুষ্ঠানের বিশেষ কার্ড জোগাড় করে দেওয়ার অনুরোধ করা ইটিভির চাকরি করার সুবাদে। কোনো রকমে সেই কার্ড জোগাড় করে এনে দেওয়া তাঁকে আর তাঁর পরিবারের সদস্যদের জন্য। আর সেই একদিন দুপুর বেলায় খুব সম্ভবত করোনা শেষ পর্বে বালিঘাট স্টেশন থেকে অফিস যাওয়ার সময় এসি পঞ্চাশ এর বাস এর ভিতরে দেখা হওয়ায় কত গল্প করা দুজন মিলে পুরনো দিনের। আবার উত্তরপাড়ার সেই বিখ্যাত চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে গিয়ে হাসি মুখে দেখা হয়ে যাওয়া রাতের বেলায় কাঁঠালবা...

শপিং মলের উদ্বোধনে সিঙ্গুর আন্দোলনের দাপুটে মন্ত্রী

নালিকুল স্টেশন বাজারে একটি শপিং মলের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বেচারাম মান্না হাজির। একসময় যাঁর অন্দোলনের ঠেলায় পড়ে দৌড়ে একপ্রকার পালিয়ে চলে যেতে হয়েছিল সিঙ্গুর থেকে টাটা কোম্পানিকে। যে আন্দোলনের দগদগে ঘা আর সেই স্মৃতি ধীরে ধীরে আজ প্রায় মিলিয়ে যেতে বসেছে আমাদের কাছ থেকে। আজ সেই চাষার ঘরের মানুষ না হলেও সেই কৃষক আর শ্রমিকের ন্যূনতম অধিকার নিয়ে যে আন্দোলন শুরু করে সারাটা জীবন কাটিয়ে দিলেন সেই মানুষটাকেই কেমন যেন আজ শপিং মলের উদ্বোধনে দেখে বেশ ভালই লাগলো আমার।  একদম নালিকুল স্টেশনের কাছে ঝাঁ চকচকে শপিং মল। দোকানে সাজানো জিনিস পত্র। আর সেখানেই আমাদের মাননীয় মন্ত্রী বেচারাম মান্না। একদম কেমন একটু আমার অচেনা লাগলো যেন। সেই মুড়ি খেয়ে আলুর তরকারি বা শশা খেয়ে আন্দোলন শুরু করা জমি আন্দোলন এর অন্যতম পথিকৃৎ নেতা আজ এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। তাহলে টাটা কোম্পানির বিরুদ্ধে যে জমি দখল নিয়ে আন্দোলন সেই আন্দোলন এর মধ্যে ছিল জোর করে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা। যদিও সেখানেও সেই সময়ের শাসকদলের কর্মসংস্থানের যুক্তি।তবে এই নতুন শপিং মলের উদ্বোধনে তো আর ...

আমাদের সবার মৃনাল দা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ এক বাবা আর ছেলের লড়াই এর গভীর গোপন কাহিনী। এই সাংবাদিকতার পেশায় এসে কত লড়াই, কত অসম যুদ্ধ, করে যে কেউ সংসার টিকিয়ে রাখতে পারে হাসি মুখে কাউকে কিছুই বুঝতে না দিয়ে। এমন করে কেউ টিকে থাকার চেষ্টা করেন সেটা বোধহয় আমার জানা হয়ে উঠত না কিছুতেই। যদি না এই পেশায় আমি গা ভাসাতাম এমন করে। জীবনের এই নানা টুকরো টুকরো ছবির কোলাজ ভেসে ওঠে এই রাতের অন্ধকারে আচমকা আমার মনের মাঝে। আর আমি চমকে উঠি কেমন করে তাদের সেই কোলাজ দেখে।  এমন এক চরিত্র, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী হয়ে কেমন আলগোছে, হাসিমুখে, নির্মোহ ভাবে, শুধু নিজের কাঁচা পাকা দাড়িতে হাত বুলিয়ে জীবনটা কাটিয়ে দিলো সে শুধুই আকাশ পানে তাকিয়ে। যে নীল আকাশের গা ঘেঁষে উড়ে যাওয়া সাদা বকের ডানায় লেগে থাকে মেঘের হালকা টুকরো। একদম যেনো সিনেমার পর্দার হিরোর মতোই। দেখে বোঝার উপায় নেই একদম। পেটে খাবার না থাকলেও মুখের হাসিটা অমলিন হয়েই বেঁচে আছে আজও এতোদিন পরেও। আর সেই বিখ্যাত সাদা পাকা নাসিরউদ্দিন স্টাইলের দাড়ি, কালো চুল, আর সব সময় ধোপদুরস্ত ফিটফাট একজন মানুষ। রাত নটা বাজলেই যাকে শ্রীরামপুরে...

ভীড়ের মাঝে একা

জীবন জুড়ে শুধুই ভীড় আর ভীড়। নানা ধরনের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় মানুষের গন্ধে, বর্ণে , স্বাদের ভীড়ে আমি একদম একা হয়ে যেতে চাই। যে ভীড় উপচে পড়া রাস্তায় শুধুই হেমন্তের ভোরে শিশিরের ফিসফিস শব্দ, পাখির কিচির মিচির আওয়াজ,ধানসিড়ি ওই নদীটির তীর ধরে ঘুঘুর আকুল মন কেমন করা ডাক, উদাসী শালিকের ঝাঁক বেঁধে উড়ে যাওয়া ওই হেমন্তের হলুদ ধানের মাঠ এর পাশ দিয়ে, হলুদ বসন্ত বৌরীর সেই আমলকীর গাছের পাতায়,আড়ালে আবডালে বসে কেমন যেন আমায় দেখে লজ্জা পাওয়া, আর তারপর চোখ নামিয়ে হঠাৎ করেই তার উড়ে চলে যাওয়া। আর মেঘের কোল ঘেঁষে সেই সাদা বকের, বুনো হাঁসের, আর সেই পানকৌড়ির জলে ভেজা ডানা মেলে উড়ে যাওয়া আকাশ জুড়ে। সত্যিই ওরাও যে ভিড়ের মাঝেই বড়ো একা। একা একাই ওদের যে এই বেঁচে থাকা। কেমন নিপাট হৈ চৈ হুল্লোড়হীন একটা জীবন নিয়ে বেশ মজা করে, আনন্দ করে। আর সেই ভোরের আলোয় আলোকিত হয়ে রাস্তার একপাশে গুটি শুটি মেরে শুয়ে থাকা ওই সাদা কালো ভুলো নামের কুকুরের। যে অন্তত এই সব মানুষদের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় একটু যেনো আলাদা , একটু যেনো অন্য রকমের। একটু একা একাই যেনো ওর এই আলগোছে জীবন কাটিয়...

গৌড় প্রাঙ্গণে আনন্দবাজার

গৌরপ্রাঙ্গনে শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যের আনন্দের মেলা আনন্দবাজার। মহালয়ার ভোরবেলায় ঢাকের বাদ্যি আর সানাইয়ের মন কেমন করা সুরে মেতে উঠলো শান্তিনিকেতনের গৌড়প্রাঙ্গণ। প্রতি বছরের মতো এই বছরও যে হবে আনন্দমেলা আনন্দবাজার। হ্যাঁ সত্যিই যেনো আনন্দের এই হাটে বেচাকেনার পসরা নিয়ে একদিনের জন্য বসে পড়া মন প্রাণ খুলে হৈ হুল্লোড় করে। এই মেলা শুরু হয় 1915 সালের 15 এপ্রিল নববর্ষের দিনে। কিন্তু আগে এই মেলাকে একসময় বলা হতো বৌঠাকুরাণীর হাট। সেই সময় আশ্রমের মহিলারা নিজেদের হাতের তৈরি জিনিস নিয়ে মেলায় বসতেন। মেলার আয়োজন করতেন তারা। আনন্দ করে বেচাকেনা হতো। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময় একবার গরমের ছুটির আগে এমন মেলা নাকি হয়েছিল। যার নাম ছিল আনন্দবাজার। পরে এই মেলার নামে হয়ে যায় আনন্দমেলা। সত্যিই আনন্দের এই মিলন মেলা।  প্রথমদিকে পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের ছেলেমেয়েদের নিয়ে এই মেলা শুরু হয়। পরে ধীরে ধীরে বিশ্বভারতীর সব বিভাগের পড়ুয়ারা এই মেলায় যোগদান করে। এই মেলার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো ছাত্রছাত্রীদের বেচা কেনার লাভের টাকার কিছু অংশ জমা পরে বিশ্বভারতীর সেবা বিভাগে। সেখান থেকে এ...