আজ ফেসবুক আমায় জানিয়ে দিলো মনিরুল হোসেনের জন্মদিন। সেই আশাবুল হোসেন এর আর মোশারফ হোসেনের ভাই মনিরুল হোসেন। সেই ইটিভির সংসারের পুরোনো দিনের কর্মীদের মধ্য বসদের কাছের জন একজন সে বরাবরই। সেই সিঙ্গুরে লাঠিচার্জ এর দিনে সন্ধ্যায় কলকাতা অফিস থেকে গাড়ী আর ক্যামেরা নিয়ে হাজির হলো সিঙ্গুরের আন্দোলনের মাঠে বস সিদ্ধার্থ সরকারের নির্দেশে। সেই রাতে মার খাওয়া গ্রামের লোকদের আতঙ্কের ছবি করে ওবি ভ্যান করে হায়দরাবাদে পৌঁছে দেওয়া ওর। আর সেই ছবি দেখে হৈ চৈ হুল্লোড় পড়ে যাওয়া রাত নটার খবরে।
সেই কলকাতা শহরে জেলা থেকে কাজে গিয়ে মহাকরণে পৌঁছে যাওয়া একদিন আমার। আর মনিরুল এর হাত ধরেই নানা মন্ত্রীর ঘরে পৌঁছে যাওয়া আমাদের দুজনের। সেই সৌমেন মহাপাত্র, মানস রঞ্জন ভুঁইয়া, সাবিনা ইয়াসমিন, সেই অরূপ রায়, সেই উপেন বিশ্বাস, মদন মিত্র, অরূপ বিশ্বাস, ফিরহাদ হাকিম, সব বিখ্যাত জন যে ছিলো সেই সময় মহাকরণের বারান্দায় মন্ত্রীর চেয়ারে। সেই পুরোনো দিনে ইটিভির লাল বুম নিয়ে ঘুরে বেড়ালেও যা বুমেরাং হয়নি তখনও একদম এই মিডিয়ার বাজারে আমাদের মত দু পয়সার সংবাদিকদের কাছে। দাদা আর দিদির চ্যানেল বলে তার গায়ে ছাপ পড়ে যায়নি তখনও সেই সময়ে। হাসিমুখে মন্ত্রী আর আমলাদের কাছে ঘুরে বেড়াতে অসুবিধা হয়নি আমাদের একদমই। এটাই যে ছিলো সেই মিডিয়ার আমলের সাথে এই হাল আমলের ফারাক।
সেই ওর গাড়ী নিয়ে ধাপার মাঠের দিকে স্টোরি করতে চলে যাওয়া। শহরের মাঝে দূরে গ্রামের মেঠো পথ ধরে যা দেখে বেশ ভালোই লাগতো আমাদের সবার। সেই পঞ্চান্ন গ্রাম তখন অজ পাড়া বা গ্রাম। সেই পুরোনো দিনে ইটিভির পর্দায় এই সব নানা খবর করেই বিখ্যাত সাংবাদিক ছিলো আমাদের সেই মনিরুল হোসেন। আজ ও কোথায় গেলো কে জানে। সেই দিল্লী যাওয়া ওর, বোলপুরে শুটিং করতে আসা সেই আমায় বলা হুগলী জেলায় কেবেল চ্যানেল এর ব্যবসা করার কথা বলা। কিছুটা হলেও রাগ বা অভিমান হয়েছিল সেই কথা শুনে আমার সেই দিন। যদিও আজ মনে হয় সেটা করলেই বেশ ভালো করে বাঁচা যেতো আজ আমার। এই যা অবস্হা হলো আমার তার থেকে তো ভালো হতো আমার।
সেই সদা প্রাণবন্ত আর হাসিমুখে কাজ করে যাওয়া ওর। সেই অজাতশত্রু হয়ে এই মিডিয়ায় বেঁচে থাকা ওর। সেই অরূপ দত্ত আর দীপালী মিত্র আর অভিজিৎ বিশ্বাস, আর মৌসুমীর আমলে কাজ করা এক সাংবাদিক। সেই পুরোনো দিনের ইটিভির চেনা সংসার। সেই ক্যামেরা রুম আর ভিস্যাট এর ঘর, আই টি, এইচ আর ও একাউন্টস এর নানা ধরনের লোকজন কাজ করেন সেই আমলে ম্যানেজারদের দাপটে নাজেহাল হয়নি ইটিভির সংসার।
সেই সব বিখ্যাত লোকজন যাঁদের আজ অনেকেই আছেন আর নেই সেই চ্যানেলে। তবু ওর জন্মদিনের দিন এইসব নানা কথা মনে পড়ে যায় আমার। সেই পুরোনো দিনের স্মৃতি চারণ করতে বেশ ভালোই লাগে আমার। সেই সাধনার অফিস এর নতুন একটা চ্যানেল হওয়া দিল্লীর কোম্পানির, ওর দায়িত্ব নেওয়া। সেই অনেক এর কাজ হওয়া। সেই সব আজ শুধুই অতীত। তবু এই বঙ্গের মিডিয়ায় মোশারফ হোসেন, আশাবুল হোসেন আর মনিরুল হোসেনের নাম উজ্জ্বল হয়েই লেখা থাকবে।
সেই পুরোনো দিনের মিডিয়ার যুগের কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে এইসব কথা মনে পড়ে যায় আমার। সেই আমলে এই বাংলা চ্যানেলের এত রমরমা হয়নি সেই সময়সেই আমলেও। রিপোর্টারদের সঙ্গে এইভাবেই হাসিমুখে রাজনীতির নেতাদের দহরম মহরম আর ছবি তোলার হিড়িক পড়ে যায়নি সেই সময়েও বিজয়া দশমীর পর। তবুও তো সেই সময় খবর করতে অসুবিধা হয়নি আমাদের সেই সময় একদম। যে সময়ে নিশ্চিন্তে নিরাপদে খবর করা সম্ভব ছিল আমাদের। একটু মান অভিমান লেগে থাকত সেই সময় সাংবাদিক আর রাজনীতির ময়দানে ঘুরে বেড়ানো লোকদের সঙ্গে।
তবুও এই পক্ষের লোক আর ওই পক্ষের লোক বলে কামান দেগে দেওয়ার চেষ্টা করা হতনা সেই আমলে। সত্যিই অসাধারণ এই মিডিয়ার জীবন কত দ্রুতই যে বদলে গেলো এই বঙ্গের মিডিয়ার জীবন। ভালো থেকো তুমি দাদা। শুভ জন্মদিন। হ্যাপি বার্থডে টু ইউ। টোটো চালকের লেখা দেখে রেগে যেওনা একদম তুমি। ভালো থেকো তুমি। হ্যাপি বার্থডে টু ইউ। সেই ওর বউ এর কাজ পাওয়া। সুন্দরবন এলাকায় কাজ করতে যাওয়া। পরে ট্রান্সফার হয়ে চলে আসা। সেই সব নানা স্মৃতি তো জড়িয়ে আছে আমাদের।আর সেই সব স্মৃতিকে আগলে রেখেই তো আমাদের এই বেঁচে থাকা। হ্যাপি বার্থডে টু ইউ। ভালো থেকো তুমি।
হ্যাপি বার্থডে মনিরুল - অভিজিৎ বসু।
তেইশ অক্টোবর দু হাজার পঁচিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন