সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

হ্যাপি বার্থডে সৌম্যাদিত্য

বাংলা মিডিয়ার টিভির পর্দায় এমন সুন্দর ঝকঝকে পুরুষের মুখ বেশ কম দেখতে পাওয়া যায় আজকাল। বাংলার এক নম্বর চ্যানেলের সেই উত্তম কুমার এরপর আর সেই অর্থে সুন্দর সুপুরুষ মুখের অ্যাঙ্কর আর কই পাওয়া যায়। সেই হায়দরাবাদে গিয়ে কত বছর আগে ওকে বাস থেকে নেমে ভাগ্যলতায় ব্যাগ কাঁধে হেঁটে যেতে দেখলাম আপনমনে চলেছে সে সন্ধ্যা বেলায়। একটু ঘাড় কাত করে মৃদু হাসি। এইটুকু যা আলস্য আলাপ আর কি আমাদের। তবু আজ ওর জন্মদিনের দিন সেই আবছা ফিকে স্মৃতি রোমন্থন করতে খারাপ লাগে না আমার এত বছর পরেও। 


সেই ভাগ্যলতার মোড়, সেই চেনা এলাকা, সেই রাস্তার পাশের একটা তিনতলা বাড়ী। সেই পুলকদার সেই বাড়ীতে বাস করা। কলকাতা থেকে কেউ গেলেই পুলকদার শরণাপন্ন হওয়া আমাদের লোকাল গার্জেন হিসেবে। বেশ ভালই দিনযাপন ছিল সেই বিদেশ বিভুঁইয়ে আমাদের সবার সেই কর্মময় এই জীবন। যে জীবনে কর্ম ছিল কিন্তু ঘর ছেড়ে কর্ম করতে হতো আমাদের। আজকাল তো ঘর আছে কিন্তু কর্মই নেই এই বাংলায় আর। আসলে একদম উলট পুরান আর কি। সেই পুরোনো দিনের কথাগুলো মনে পড়লে বেশ ভালোই লাগে আজকাল এই বুড়ো বয়সে আমার। খুব বিশেষ একসাথে কাজ করা হয়নি আমাদের দুজনের। সেই গান গেয়ে ওর কাছে গল্প শোনাও হয়নি আমার। একে সুন্দর দেখতে একজন মানুষ আর তারপরে আবার আমার সাথে বিশেষ আলাপ পরিচয় নেই দুজনের। তবু আজ ওর জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে এইসব কিছু কথা মনে পড়ে যায় আমার।

 সেই ২৪ ঘণ্টার উজ্জ্বল ছবি, সেই নিউজ ১৮ এর ছবি, সেই এবিপি আনন্দের ছবি মনে হয় ওকে এই বাংলা মিডিয়ার অনেকের কাছে একদম সামনে এনে দিয়েছে। আর সেই পুরোনো দিনের খবর এখন এর ছবি। সেই বিখ্যাত অ্যাঙ্কর সৌম্যাদিত্যকে অনেকটা সামনে এনে দিয়েছে যেনো। একদম এটা ঠিক ওকে যে কোনও দর্শক এর কাছে ওর গ্রহণযোগ্যতা বেশ ভালোই আজও। সর্বোপরি একজন মানুষ হিসেবে বেশ ভালো ও। মুখের হাসি অমলিন ওর সব সময়। খুব বেশি স্মৃতি নেই আমার আর ওর। কাজের অভিজ্ঞতা নেই আমাদের দুজনের। মাঝে কিছুদিন আগেই কথা হয়ে হলো আমার সাথে। কিন্তু সেই নতুন প্রজেক্ট আর না হওয়ায় সেই নিয়ে ওর সাথে আর কথা এগোয়নি আর।

সেই মিডিয়া সিটির অফিস। সেই চেনা বারান্দা আর নিউজ রুম আর চেনা সহকর্মী আর চেনা স্টুডিও। সেই কত যে পুরোনো দিনের চেনা বস সব। সত্যিই অসাধারণ কিন্তু এই মিডিয়ার জীবন। যে জীবনে এই চেনা কেমন হঠাৎ করেই অচেনা হয়ে যায় এই ট্রাক এন্ড ফিল্ডে না থাকলেই একটু আড়ালে চলে গেলেই। এই কত ভালো লোক দেখানো বন্ধুত্বের সম্পর্ক কেমন করে যেনো ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যায় এর ওর সাথেই একদিন সত্যিই অসাধারণ এই মিডিয়ার জীবন। আলোর বৃত্তে ঘুরপাক খেলে কত কিছুই যে ঘটে যায় এই জীবনে। আর আলোর বৃত্তের বাইরে গেলেই কত কিছুই যে অন্ধকার সামনে এসে দাঁড়িয়ে পড়ে কে জানে হঠাৎ করেই একদিন। একদম নাটকের মঞ্চের মতই।

 আজ ওর জন্মদিনের দিন শুভেচ্ছা বিনিময় করতে গিয়ে এইসব নানা ফালতু কথাই মনে পড়ে যায় আমার। যে সব কথার কোনও দাম নেই কারুর কাছেই আজ। সেই কোয়েল এর মুখে ওর কত যে প্রশংসা শুনেছি আমি একদিন। সবাই বেশ পছন্দ করে ওকে। তবু কেনো যে এমন মানুষ এর জায়গা হয়না এই বঙ্গের মিডিয়ায় কে জানে। আমার না হয় বদনাম আর বিদ্রোহ নামক বদরোগ আছে ওর তো আর সেই সব কিছুই নেই। আজ এই গভীর রাতে ব্যাঙ্গালোরে বসে এইসব কথা মনে পড়ে যায় আমার। সেই কম কথা বলে মৃদু হেসে নিজেকে ধরা না দিয়ে কাজ করে যাওয়া মানুষটা কিন্তু বেশ ভালো একজন অ্যাঙ্কর। সেই চেনা পোশাকে সেই চেনা মঞ্চে ওকে দেখে বেশ ভালোই লাগে আমার। কতদিন যে কথা হয়নি আর আমাদের। কতদিন যে ওর সাথে সেই মিডিয়া সিটির সামনে প্রদীপদার দোকানে দেখা হয়নি আর আমার। সেই পুরোনো দিনগুলো কথা মনে পড়লে আজকাল বেশ ভালই লাগে আমার। 

সেই খবর এখন আর জার্নি থেকে শুরু করে এই হাল আমলের চিৎকার করে খবর পড়া টিভির যুগে ওর কাজ করে যাওয়া একদম চুপচাপ করে ফুলে ছাপ দিয়ে আর কী। ভালো থেকো তুমি সৌম্যাদিত্য। শুভ জন্মদিন দাদা। ভুল লিখলে ক্ষমা করে দিও আমায়। আসলে দিনকাল বদলে গেছে যে। সেই ভাগ্যলতার মোড়ে গিয়ে আমাদের ভাগ্য গণনা করতে যাওয়া আর ভাগ্য ফেরাতে যাওয়া কিছু যুবক যুবতীর দল সেদিন কিন্তু ভালই ছিল কী তাই না। এই বদলে যাওয়া দিনে বাংলায় বাস করে অনেকেই আজ বিপদেই আছেন বেশ। কে আর আজকাল কাকেই বা বিপদ থেকে উদ্ধার করে বলতে পারেন। সব যে আমাদের সবার এই ভাগ্য আর কপালের উপর নির্ভর করে। তবু মেনে আর মানিয়ে নিয়ে চলা তো জীবন। যে জীবন একটি বহতা নদীর মতই। ভালো থেকো তুমি। হ্যাপি বার্থডে টু ইউ।

হ্যাপি বার্থডে সৌম্যাদিত্য - অভিজিৎ বসু।
তেইশ অক্টোবর দু হাজার পঁচিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

জামালপুরের প্রদীপ দা

আজ আমার সাদা জীবনের কালো কথায় বর্ধমানের জামালপুরের সেই দাপুটে ঠোঁট কাটা সাংবাদিক প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় এর কথা। সেই বিখ্যাত সুভাষ তালুকদার এর কাগজ সংবাদে মাত্র এক টাকার কাগজে কাজ করা সংবাদ পত্রিকার দাপুটে সাংবাদিক সেই প্রদীপ দা। সেই মুখ্যমন্ত্রীর সভায় বাঁশের ব্যারিকেডের এপারে দূরে দাঁড়িয়েও যে খবর করা যায় সেটা বড়ো মিডিয়ার সাংবাদিকদের হাসি মুখে দেখিয়ে দিয়ে, আর তাদের খবরের ময়দানে গোল দিয়ে শুধু খবরকে ভালোবেসে ছোটো কাগজে কাজ করে চলা সর্বদা হাসি মুখের সেই আমাদের প্রদীপ চ্যাটার্জী দা।  কোথাও কোনো অন্যায় দেখলেই প্রতিবাদে মুখর হয়ে যাওয়া আর এক দৌড়ে বেরিয়ে পড়া ঝোলা কাঁধে সেই খবরের খোঁজে সেই জামালপুরের প্রত্যন্ত গ্রামের সেই প্রদীপ দা। সেই বিখ্যাত পন্ডিত রবিশঙ্কর আর উদয়শঙ্কর এর আপন মাসতুত ভাই এর ছেলে সেই প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় দাদা। সেই বামদের আমলে জামালপুরের এলাকায় দাপিয়ে খবর করে ছুটে বেড়ানো সেই প্রদীপ দা। সেই তৃণমূল আমলেও একভাবেই ছুটে বেরিয়ে কাজ করা আমাদের সদা ব্যস্ত প্রদীপ দা।  সেই বাবার অসুস্থতার কারনে বড়ো সংবাদ মাধ্যমে কাজ না করেও...

আমার স্যার কাজীদা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ আমার স্যার এর কথা। যার লেখা আজ হঠাৎ চোখে পড়লো একটি কাগজে। আর স্যার এর নামটা দেখেই মনে পড়ে গেলো নানান কথা। হ্যাঁ, সেই কাজী গোলাম গাউস সিদ্দিকী। যাঁর সাথে আমার আলাপ আর দেখা হয়েছিল সেই অজিতদার ফ্রিল্যান্স ছকু খানসামা লেনের ফ্রীল্যান্স প্রেস ক্লাবের অফিসে খুব সম্ভবত। হাসিখুশি বেশ অজাতশত্রু এই মানুষটিকে দেখেই আমার মনে হয়েছিল যে রিপোর্টারদের প্রভূত ক্ষমতা থাকে বোধহয়। তাই পকেটে পেন আর সেই ফোনের ছোট্টো নোটবুক দেখেই আমার মনে হয়, যে ক্ষমতার স্বাদ পাবার জন্য সেই সদ্য গ্র্যাজুয়েশন করে আমার কচি মনে সাংবাদিক হবার বাসনা জাগে সেই সময়।  কোনো প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক নয়, কোনো অফিসে মাছি মারা দশটা পাঁচটার লোয়ার ডিভিশন এর কেরানি নয়, মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ নয়, ল্যাবরেটরিতে টেকনিশিয়ান এর কাজ নয়, এল আই সি বা পোষ্ট অফিস এর এজেন্ট নয়, কোনো মুদি দোকানে হিসেব পত্র লেখার কাজ নয়, স্বাধীন ব্যবসা করা নয়। শুধুই সাংবাদিক হবার স্বাদ।  কাগজে সাদা কালো অক্ষরে নিজের নাম ছাপা হবে, সেই নাম দেখে বুক ফুলে যাবে, পাড়ায় প্রতিবেশীরা সহ স...

কুড়ি থালা দশ টাকা আর রসিক মুলুর জীবন

নাম মুলু হাঁসদা। বাংলা ঝাড়খণ্ড সীমানার চরিচা গ্রাম পঞ্চায়েত এর চর ইচ্ছা রঘুবরপুরের বাসিন্দা মুলু। আজ মুলুর জীবন কথা। গ্রামের নামটা ভারী অদ্ভুত। চর ইচ্ছা রঘুবরপুর। যে গ্রাম অন্য পাঁচটা গ্রামের মতই।সাদামাটা এই গ্রামে দারিদ্র্য, অপুষ্টি আর কর্মহীন জীবনের জলছবি সুস্পষ্ট। আর সেই গ্রামের মহিলারা নিজেদের সংসার রক্ষা করতে গাছের পাতাকে আঁকড়ে ধরে রেখেছে। গাছের পাতা মুলুদের জীবনের জিয়ন কাঠি। যে জিয়ন কাঠিতে তারা ভোর হতেই পেটের টানে চলে যায় জঙ্গলে। খস খস শব্দ করে পায় হেঁটে তারা পাতা তোলে। গাছ থেকে টুপ টাপ করে ঝড়ে পড়া পাতাকে একটা একটা করে নিজের শাড়ির আঁচলে ভরে নেয়। তার পর সব পাতাকে বস্তায় ভরে ঘরে ফেরে।  ঠিক যেভাবে তারা পুকুরে নেমে শামুক গেঁড়ি আর গুগলি তোলে। যে ভাবে তাদের উদর পূর্তি হবে বলে। আর এই পাতাও যে তাদের পেট ভরায়। একটা একটা পাতাকে নিজের সন্তানের মতো আলগোছে ছুঁয়ে বুকে জড়িয়ে ধরে চুমু খায় মুলু, বলে তোরা না থাকলে কি করতাম কে জানে। মাথার ওপর শাল সেগুনের বিশাল আকারের গাছগুলো চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে আর তারা চুপ করে শোনে মুলুর কথা।  একে অপ...

শুভ মকর সংক্রান্তি

মকর মানেই নতুন জামা কাক ভোরে স্নান, রাত্রি জেগে মিঠে সুরে টুসুমণির গান। মকর মানেই পিঠে - পুলির গন্ধে ম - ম হাওয়া, ডুলুং পাড়ে টুসুর মেলায় দল বেঁধে যাওয়া। মকর মানেই মোরগ লড়াই পাহুড় জেতার সুখ, সন্ধ্যা - রাতে মাংস পিঠের স্বাদে ভরা মুখ। মকর মানেই হাতি - ঘোড়ার পুজো করম তলে, সান্ধ্য হাওয়ায় মন উদাসী দিমির দিমির বোলে। আসলে আজ এই মকর সংক্রান্তির দিন, টুসু মেলার দিন, টুসু গানে নিজেকে মাতিয়ে দেবার দিন। অজয় এর ধারে জয়দেব কেঁদুলির মেলায় ভীড়ের মাঝে নিজেকে হারিয়ে দেবার দিন। অজয় এর জলে ডুব দিয়ে স্নান করে পূণ্য অর্জনের দিন। আর নদীর ধারে মোরগ লড়াই এর দিন। আকাশে ঘুড়ি ওড়ানোর দিন, সুতো লাটাই হাতে আকাশ পানে তাকিয়ে থাকার দিন। কেমন যেনো রাশির একটি স্থান থেকে অন্য রাশিতে স্থান পরিবর্তনের দিন। সূর্যের দেবতাকে সকালে উঠে স্নান সেরে প্রণাম জানিয়ে শক্তি সঞ্চয় এর দিন। সূর্যের উত্তর দিকে চলে যাবার দিন। ধীরে ধীরে শীতকাল চলে যাওয়ার দিন।  এই মকর সংক্রান্তি এর ইতিহাস ও ভারতীয় ঐতিহ্যের গভীর শিকড় রয়েছে। এটি কৃষি চক্র এবং ফসল কাটার মৌসুমের সাথে জড়িত। এই মকর সংক্রান্তি চ...