সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আমার বন্ধু প্রতাপ


সাদা জীবনের কালো কথায় আজ আমার স্কুলের বন্ধু প্রতাপ এর কথা। আসলে আজ সকালে বহুদিন পর ওর সাথে দেখা হয়ে গেলো আমার শ্রীরামপুর স্টেশন এর সামনে। ওর তখন অফিস যাবার ট্রেন ধরবার খুব তাড়া আছে। সেই একই রকম রয়ে গেছে ও। চোখে হাই পাওয়ার এর চশমা। পায়ে সেই চটি। সাধারণ একটি হাফ শার্ট আর প্যান্ট পরা। দেখলে বোঝা যাবে না যে একজন রাজ্য সরকারের উচ্চ পদে কর্মরত অফিসার যাচ্ছে। জাস্ট তাড়াহুড়োয় বললো তোর সব লেখা আমি পড়ছি। চালিয়ে যা খুব ভালো লিখছিস তুই অভিজিৎ। বলেই ট্রেন ধরবে বলে দৌড় দিল ও। একটু হাতটা আস্তে করে ধরে বলল চালিয়ে যা ভাই। না একটা ছবি তোলার ফুরসৎ পাইনি আমি।


ও দৌড়ে চলে গেলো অফিসে ট্রেন ধরে শ্রীরামপুর থেকে চুঁচুড়াতে। কাদা ভেজা রাস্তায় আমি হাঁটতে হাঁটতে ঘরে ফিরে এলাম। ওর কথা শুনে সেই কত বছর আগে আমার মনে পড়ে গেলো ঊনিশ শো পঁচাশি সালে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়ে আমি উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে ভর্তি হলাম। সেই উচ্চমাধ্যমিক স্কুল জীবনের কথা শুরু হলো। আজ থেকে প্রায় আটত্রিশ বছর আগের কথা এসব। সবে তখন মাধ্যমিক এর গণ্ডি পার করে অনেক কষ্ট করে বিজ্ঞান নিয়ে পড়বো বলে এই শ্রীরামপুর হাইস্কুলে ভর্তি হয়েছি। 
এই ভর্তির জন্য অনেক সাহায্য করেছিল আমাদের মামার বাড়ির পাড়ার গবা মামা। না হলে হয়তো আমার বিজ্ঞান নিয়ে পড়াই হতো না। দুরু দুরু বুকে বিজ্ঞান পড়তে এসে প্রথমেই হোঁচট খেলাম অঙ্কে কাঁচা বলে। তাই ফোর্থ সাবজেক্ট নিলাম ইকোজিও। আর সেই সময় থেকেই স্কুলে ঢুকে দেখলাম প্রতাপকে। কম কথা বলা শুধু পড়ার জগৎ নিয়ে থাকা একজন ছাত্র। এর বাইরে কোনো জগৎ নেই ওর।পরীক্ষার সময় কতদিন যে ওর বাবা মাকে দেখতাম ছেলেকে নিতে এসেছেন স্কুলে গর্বের হাসি দেখতাম ওনাদের মুখে।

।সত্যিই তো সেই প্রতাপ সিংহ রায়। আমাদের সেই সময় এর প্রথম হওয়া একজন ছাত্র। কিছুটা সমীহ করেই চলতাম ওকে। ওর মেধা, ওর পড়ার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে একের পর এক পরীক্ষায় ভালো ফল করা। বিজ্ঞান নিয়ে পড়া তো একমাত্র ওরই সাজে আমাদের নয়। সেটা দেখে কিছুটা কুণ্ঠা জড়তা ছিল আমার। সঙ্কোচ কাটিয়ে এগিয়ে ওর সাথে সহজ সরল ভাবে সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারিনি আমরা কেউই। আসলে এটাই তো স্বাভাবিক একজন প্রথম বেঞ্চের ছাত্রর সাথে কি করে শেষ বেঞ্চের ছাত্রের বন্ধুত্ব গড়ে উঠবে। তবু আজ এত দিন পরে রাস্তায় ওর সাথে দেখা হতেই ওর আমার হাত ধরে বলা অভিজিৎ খুব ভালো লিখছিস্ তুই চালিয়ে যা। এটা শুনে আমি অভিভূত হলাম। 

উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেই তো ও জয়েন্ট পরীক্ষা দিলো। তারপর আবার সরকারি পরীক্ষা দিয়ে ডব্লুবিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে গেলো প্রতাপ। বহুদিন পর যখন জেলায় সাংবাদিকতা করছি আমি দেখা হলো সেই সময় ও তখন বলাগড় ব্লকে কাজ করছে। খুব সম্ভব জয়েন্ট বিডিও হবে। একদিন সন্ধ্যা বেলায় দেখা হলো বাড়ী ফিরছে অফিস থেকে। সেই এক সাদা মাটা রয়ে গেছে ও। পরে চুঁচুড়া তে বদলি হয়ে এলো ও বলাগড় থেকে। তবে আজ এত দিন পরে রাস্তায় ওর সাথে দেখা হওয়া। আমাকে আমার লেখার প্রশংসা শুনে বেশ ভালো লাগলো আমার। যার সাথে স্কুল জীবনে কাছে ঘেঁষতে পারিনি কিছুটা ভয় আর ওর পাণ্ডিত্যের জন্য সেই প্রতাপ আজ আমায় আমার লেখাকে ভালো বললো। এর থেকে আনন্দের আর কি হতে পারে বলুন। 

কত দিন আগের সেই স্কুলের স্মৃতি। সেই গেট পেরিয়ে হেড স্যার দেবী বাবুর ঘর। অন্ধকার সিঁড়ি, লম্বা স্কুলের বারান্দা, টিচার রুম, পিতলের ঘন্টার ঢং ঢং আওয়াজ। কালো ব্ল্যাকবোর্ড এ সেই সব স্যারদের দ্রুত গতিতে ভারী ভারী বিষয় নিয়ে লিখে বুঝিয়ে দেওয়া। আর সেই যে রাস্তার ধারের সেই ল্যাবরেটরিতে ঢুকে পরীক্ষার সময় প্রাকটিক্যাল করা। সেই ধোঁয়ায় ঢেকে যাওয়া ক্লাসরুম। শ্যামল বাবু, যৌতম বাবু, বিশ্বজিৎ বাবু, ব্রম্ভপদও বাবুর ক্লাস করা। কোথায় যে সব হারিয়ে গেলো এরা একে একে কে জানে। 
সাড়ে তিনটে বাজলেই দেখতাম তিন তলা থেকে সাদা জামা আর গেরুয়া স্কার্ট  পরা মেয়েরা কেমন খিল খিল করে হাসতে হাসতে ঘরে ফিরত। আমিও কেমন যেন ছুটির ঘণ্টা কখন বাজবে তার জন্য আঁকুপাঁকু করতাম সেই সময়। কিন্তু সেই যে কিছুতেই শেষ ক্লাসটা শেষ হতো না কিছুতেই। তারপর ঘন্টা পড়তো হৈ হৈ করে বেরিয়ে পড়তাম স্কুল ছেড়ে ঘরের বাইরে। অন্ধকার সিঁড়ি দিয়ে হুড়মুড়িয়ে  সব নেমে পড়তাম আমরা। আর হেড স্যার দেবী বাবু কড়া দৃষ্টিতে নজর রাখতেন সব।

 এই তো সেই প্রতাপ, আমার, পরাগের উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের জীবন। যে জীবনের সবাই কে কোথায় ছিটকে গেছি জানি না আমরা। পরাগ তো এখন শ্রীরামপুরে ওয়ালস হাসপাতালে কর্মরত একদিন দেখলাম ওকে।  কিন্তু এই যে ফেলে আসা দিনের, অতীত দিনের স্কুলের বন্ধুর কথা মনে পড়ে গেলো ওকে দেখে সেটা বেশ ভালো লাগলো আমার। যে বন্ধুকে একদিন দুর থেকে দেখেছি কাছে ঘেঁষতে পারিনি। আজ সেই বন্ধু এগিয়ে এসে এসে জড়িয়ে ধরে বলল চালিয়ে যা ভাই এই লেখা। 

সত্যিই তো সাদা জীবনের কালো কথায় ভালো কথাই বেশি লিখছি আমি। যাদের জীবনের কালো কথা, কালো অভিজ্ঞতা সঞ্চয় যা হয়েছে  আমার জীবনে সেটা না হয় আপাতত কুলুঙ্গিতে তোলা থাক। নিশ্চয়ই সেই সব অব্যক্ত কথাও একদিন আঁকা বাঁকা জীবনের ক্যানভাসে ফুটে উঠবে। সেদিন হয়তো সত্যিই সাদা জীবনের কালো কথা লেখা সার্থক হবে। কিন্তু তার আগে এমন পল্টু, প্রতাপ, শঙ্খ বাবুর কথা ধরা থাক আমার এই আঁকিবুঁকি ব্লগে। যাদের জন্য আমার গর্ব হয়। 
জীবনের ভালো আর কালোর মাঝে যে সীমারেখা আছে সেই বেড়া না টপকে কেমন করে যেন এই দীর্ঘ সাংবাদিক জীবনের নানা গল্প কাহিনী লিখে রাখি আমি আমার সাদা জীবনের পাতায়। যে সাদা জীবনে চলতে চলতে অনেক ভালো আর খারাপ অভিজ্ঞতা সঞ্চয় হয়েছে আমার। যে অভিজ্ঞতা আমায় ঋদ্ধ করেছে, আবার বিদ্ধ করেছে নানা সময় নানা ভাবে।
 তবে সেই সব কথাই লিখে রাখছি আমি আমার এই ক্যানভাসে। এই জীবনের শেষ প্রান্তে এসে যেনো আকাশে উড়ে বেড়ানো ঘুড়িকে একটু একটু করে গুটিয়ে ফেলা। সেই কাজটাই ধীরে ধীরে করছি আমি। প্রতাপ তোর সঙ্গে দেখা হয়ে বেশ ভালো লাগলো। ভালো থাকিস তুই। 

আমার বন্ধু প্রতাপ - অভিজিৎ বসু।
ছাব্বিশে জুলাই, দু হাজার চব্বিশ।

মন্তব্যসমূহ

  1. ছবি অনেক কথা বলে, প্রতাপবাবুর একটা ছবি থাকলে যেন জীবনের এই ক্যানভাসে পাঠকের পাঠ সম্পূর্ণ হয়ে উঠত।

    উত্তরমুছুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অমৃত কুম্ভের সন্ধানে চন্দ্রাণী

কখনও কুম্ভ মেলায় হাজির। আবার কখনও রাজনৈতিক দলের ঝাণ্ডা কাঁধে দৃপ্ত ভঙ্গিতে এগিয়ে চলেছেন তিনি রাস্তা দিয়ে একমনে ধীর পায়ে। আবার কোনোও সময় গঙ্গাসাগর সঙ্গমে তো আবার কোনোও সময় হঠাৎ করেই শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলার মাঠে কিম্বা সোনাঝুড়ির হাটে পৌঁছে গেছেন তিনি হাসি মুখে পরিবার নিয়ে। আর এইসবের মাঝে কেউ অসুস্থ হয়েছেন শুনে তাঁকে হাসপাতালে দেখতে গিয়ে হঠাৎ করেই অ্যাম্বুলেন্স করে সোজা অন্য দূরের উত্তরপাড়া হাসপাতালে চলে গেছেন তিনি বাড়ীর কাউকে কিছুই না জানিয়েই। একদম স্বতস্ফূর্ত ভাবেই অন্য কারুর বিপদে এই ভাবেই ঝাঁপিয়ে পড়া হাসি মুখেই। যা আমার মার অসুস্থ অবস্থায় করেছিলেন তিনি কাউকে কিছুই না জানিয়ে রিষড়ার হাসপাতাল থেকে সোজা উত্তরপাড়ার হাসপাতালে চলে গেলেন সেদিন। আবার কোনো সময় সাংবাদিকদের কোনও অনুষ্ঠানে হাসিমুখেই হাজির হয়েছেন তিনি সবার সাথে মিলেমিশে। আর সেই তাঁর সোজা গাড়ী করে ছেলে আর মেয়েকে নিয়ে রিষড়া রেলগেট পার হয়ে সোজা, একদম সোজা সটান অমৃত কুম্ভের সন্ধানে কুম্ভ মেলায় হাজির হলেন তিনি কোনোও কিছু না ভেবেই চিন্তা না করেই। এতো পাপ মোচন করতে বা পূণ্য সংগ্রহ করতে ...

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

আমাদের সবার মিল্টনদা

“স্মৃতি ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হবে। নতুন স্মৃতির পলি পড়বে। কোনও একদিন যক্ষের মতো কোনও এক নির্জন ঘরে সিন্দুকের ডালা খুলব। ক্যাঁচ করে শব্দ হবে। ভেতরে দেখব থরে থরে সাজানো আমার জীবনের মৃতঝরা মুহূর্ত। মাকড়সার ঝুলে ঢাকা, ধূসর। তখন আমি বৃদ্ধ; হাত কাঁপছে, পা কাঁপছে। চুল সাদা। চোখদুটো মৃত মাছের মতো। এই তো মানুষের জীবন, মানুষের নিয়তি। এই পথেই সকলকে চলতে হবে। বর্তমানের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকতে না পারলে, অতীত বড় কষ্ট দেয়।” ― সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় , লোটাকম্বল হ্যাঁ, সত্যিই তো, অতীত বড়ো কষ্ট দেয় আমাদের এই রাত বিরেতে। দু চোখের পাতা এক হয় না কিছুতেই। রাত কেটে ভোর হয়, আলো ফোটে তবু সিন্দুকের ডালা খুলে বেরিয়ে আসে নানা স্মৃতি, নানা মুখ, নানা চরিত্র, নানা ঘটনা। হ্যাঁ, আজ আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায় হুগলীর বিখ্যাত দাপুটে সাংবাদিক মিল্টন সেন এর কথা। ওর সেই হাসি খুশি মিষ্টি ভদ্র ব্যবহার, সব সময় মুখে ভালো কথা। আমার মত খারাপ বদনাম নেই ওর কোথাও। সবার সাথে নেতা, মন্ত্রী, পুলিশ অফিসার সবার সাথে ভালো সম্পর্ক রেখে এগিয়ে চলা মিল্টন এর বড়ো প্লাস পয়েন্ট।  সে যাক প্রথম ওর...

আইচ আর মাটির সংসার

আইচ আর মাটি। ফ ব মানে সেই বিখ্যাত কুচবিহার জেলার কমল গুহ আর মাটি মনে দেবমতী এই দুজনের বিখ্যাত মিডিয়ার জুটি। সেই সব সময় যে আইচ অফিস, বাড়ী নিয়ে নানা ভাবেই চাপে নাজেহাল হয়ে থাকে সব সময়। বর্তমানে কাগজে কাজ পেয়েও যে পরে চার কোনা বোকা বাক্স টিভির দুনিয়ায় ঢুকে পড়ল যে আইচ বলে ছেলেটি। যে রাজনীতির পাঠশালায় বেশ ভালই। সেই আমাদের এক সময়ের বিখ্যাত চ্যানেল এর পোদ্দার কোর্টের অফিসে সেই ২৪ ঘণ্টায় বিখ্যাত লোকজনের সাথে ওর কাজ করা। সব আকাশ থেকে নেমে আসা লোকজন আর স্বর্ণযুগের সেই বিখ্যাত সংসার। যে সংসার একদিন আবার ভেঙেও গেলো কেমন করে যেন। যে ভাঙা সংসারে ভাঙনের মুখে আমার কাজের সুযোগও ঘটে।  সেখানেই শুভ্রজিৎ আইচ আর দেবমতীর আলাপ, ঘর, মাটির সংসার পাতা আর নানা ভাবেই ওদের বেড়ে ওঠা একটা সুন্দর পরিবারকে নিজের মত করে গড়ে নিয়ে। কখনও এক মিডিয়ার অফিসে কাজ করে এক দফতর বা সেই ডেস্ক ডিপার্টমেন্ট থেকে অ্যাসাইন মেন্টের টেবিলে বদলি হয়ে চাকরি করা ওদের দুজনের একে অপরকে দূরে সরে গিয়ে। আবার সেখানেও জলের নিচে পা কাটা হাঙ্গরের দলবল ঘুরছে বলে এক চেনা অফিস ছেড়ে অন্য অফিসে চলে যাওয়া ওর ...

ওই খানে মা পুকুর পাড়ে

ওইখানে মা পুকুর-পাড়ে জিয়ল গাছের বেড়ার ধারে হোথায় হবে বনবাসী,           কেউ কোত্থাও নেই। ওইখানে ঝাউতলা জুড়ে বাঁধব তোমার ছোট্ট কুঁড়ে, শুকনো পাতা বিছিয়ে ঘরে           থাকব দুজনেই। বাঘ ভাল্লুক অনেক আছে- আসবে না কেউ তোমার কাছে, দিনরাত্তির কোমর বেঁধে           থাকব পাহারাতে। রাক্ষসেরা ঝোপে-ঝাড়ে মারবে উঁকি আড়ে আড়ে, দেখবে আমি দাঁড়িয়ে আছি           ধনুক নিয়ে হাতে। .......রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর টুপ টুপ বৃষ্টির দুপুরে এই কবিতার লাইন গুলো দেখে। মনে পড়ে গেলো মার কথা। বাইরে একটানা বৃষ্টির একটা অদ্ভুত আওয়াজ। কখনো কখনো বেশ জোরে, কোনো সময় একটু কম। মাথার মধ্যে কেমন ঝিম ঝিম করছে এই বৃষ্টির টানা আওয়াজ শুনে।  একটানা আওয়াজে কেমন যেন একটা অস্বস্তি ভাব। গাছের পাতাগুলো বৃষ্টির জলে ভিজে একদম চুপ চুপে হয়ে গেছে। পাতার ডগা থেকে ফোঁটা ফোঁটা জল ঝরে পড়ছে নিচে।গাছের পাতাগুলোর অসময়ে স্নান করে ওদের আবার শরীর খারাপ না হয়।  জানলার ধারে সারাদিন ধরে যে পায়রা গুলো বসে থাকতো আর বক বকম করতো।...