ছবিটা পয়লা জানুয়ারির রাতের ছবি। নতুন বছরের প্রথম দিনের ছবি। এক মা আর তার দুই শিশুর ভালোবাসার মন খারাপ করা এই ছবি। যে ছবি তোলার ইচ্ছা আমার ছিল না একদমই। এমন রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে বেলুন বিক্রি করা মা আর তার দুই শিশুর ভালোবাসার স্পর্শ মাখা এক উজ্জ্বল ছবি।
যে ছবিতে মা তার ছোট্ট দুই শিশুকে ছোট্ট প্লাস্টিকে করে একটু গরম চাউ কিনে দিয়েছে। একটা বা দুটো বেলুন বিক্রি করে রাস্তায় দাঁড়িয়ে। আর দুই শিশু এক মনে মাটিতে বসে মহানন্দে সেটা খাচ্ছে। আর বড়ো ভাই বা দিদি ছোটো ভাই বা বোনকে খাইয়ে দিচ্ছে মহানন্দে। জীবনের এই জলছবি তুলেছিলাম আমি বোলপুরের বিশ্ব ক্ষুদ্র বাজারের সামনে দাঁড়িয়ে বছর শুরুর দিনে।
গেটের মুখেই কটা বেলুন নিয়ে বিক্রি করছে সেই দুই শিশুর মা। ঠাণ্ডায় কাবু হয়ে গায়ে চাদর জড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছে সেই মহিলা। ভিতরে তখন হস্তশিল্প মেলার ভীড়। আসলে এই ছবির কোনো নতুনত্ব নেই। আকছার এই ছবি চোখে পড়ে আমাদের। তবু কেমন করে যেনো ছুঁয়ে গেলো এই মা আর সন্তানের ভালোবাসার সম্পর্কের অমলিন ছবি। যেখানে বাবার কোনও জায়গাই নেই।
সত্যিই সন্তান এর কাছে মার স্থান আর মায়ের অধিকার বোধ হয় এমন হয়। যেখানে মা মানে মা। যেখানে পিতৃত্বের অধিকার আদায়ে আইন থেকে যায় হয়তো কিন্তু মাতৃত্বের সেই স্বাদ আলাদা। যার জন্য আর কিছুই লাগে না। আর সেই মা কেমন যেনো নিজের নাড়ী কাটা ধনকে ভালোবেসে জড়িয়ে ধরে বেঁচে থাকে হাজার কষ্ট সহ্য করে। মুখ বুজে লড়াই করে হাসিমুখে।
২০২৫ এর বছরের এই প্রথম দিনের ছবি দেখে আমার বুটার আর ওর মার কথা মনে পড়ে গেলো। সত্যিই তো ওরা দুজনেও কেমন একে অপরকে জড়িয়ে আঁকড়ে ভালোবেসে বেঁচে আছে। ওর মা হাজার কষ্ট করে তার মেয়েকে আগলে রেখে দিয়েছে যেটা আমি পারিনি। আর এখানেই তো ফারাক মা আর বাবার। যে চিত্র রাস্তায় দেখলাম। সেই চিত্র তো আমার ঘরেও। সাদা জীবনের কালো কথায় আঁকাবাঁকা অক্ষরে আঁকিবুঁকি ব্লগে সেই চিত্র তুলে ধরলাম আমি।
নতুন বছরে নতুন ছবি - অভিজিৎ বসু।
চার জানুয়ারী, দু হাজার পঁচিশ।
ছবি নিজের মোবাইল ফোনে তোলা।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন