সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

স্যার এর ফোন

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ স্যার এর ফোন। স্যার আমায় ফোনে একদিন বলেছিলেন অভিজিৎ তোমার সাথে আমার একটু দরকার আছে একবার দেখা করো তুমি শ্রীরামপুরে এলে। বেশ কিছুদিন আগের কথা সেটা। কথাটা শুনে কেমন যেন একটু ভয় ভয় লাগলো আমার। কি হলো, কি বলবেন স্যার আমায় কি দরকার কে জানে বাবা। সেই কলেজের টিচার্স রুমে ডাক পড়লে যে অবস্থা হতো আমার তেমন অবস্থা আর কি। খালি ভাবছি কি এমন বলতে পারেন স্যার। কেনো ডাকলেন আমায় স্যার। দুরুদুরু বুকে হাজির হলাম সেই বাড়ির সামনে বহুদিন বহু বছর পর।
 কিছুটা ভয়, আর কিছুটা নস্টালজিয়া নিয়ে। শ্রীরামপুর শহরের শেষ প্রান্তে সেই গড়িগড়ি ঘাটের সেই বিখ্যাত বাড়ী। যে নতুন রং করা বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে কেমন যেন মনে মনে অতীত দিনে ফিরে যেতে বড়ো ইচ্ছা হলো আমার। বাড়ির কাছে গিয়ে দরজায় দাঁড়িয়ে ফোন করলাম স্যারকে। সেই সদা হাস্যময় নীতিশ বাবুকে দেখলাম কতদিন পর। বললেন অভিজিৎ এসো এসো। একটু চেহারা খারাপ হয়েছে স্যার এর, কিন্তু বেশ ভালো লাগলো দেখে এতদিন পর। ভিতরে নিয়ে গেলেন আমায়। যে সিঁড়ি দিয়ে ওপরে উঠে পড়তে যেতাম আমরা সেটা দেখালেন স্যার আমায়। 
আসলে এগুলো যে আমার সেই পুরোনো কলেজ জীবনের ফেলে আসা অতীত দিনের বড়ো সুখ স্মৃতি। কত যুগ পড়ে এই বাড়ীটায় পা দিলাম। যে ভয় আর সঙ্কোচ নিয়ে এসেছিলাম আমি এই স্যার এর বাড়িতে ধীরে ধীরে কাটতে থাকলো সেটা। কেমন স্বচ্ছন্দে দুজনেই ডুবে গেলাম অতীত দিনের স্মৃতি চারণায়। মানুষ যে অতীত অতিথিকে আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাকার চেষ্টা করে বার বার। সেটাই মানুষের কাছে বেঁচে থাকার রসদ। স্যার এর লেখার টেবিল,সেই পুরোনো দিনের ঘর, রং চটা দেওয়াল, বাড়ীতে পোষা নানা পাখির কলরব সব মিলিয়ে যেনো সেই কবেকার পুরোনো দিনে ফিরে যাওয়া আবার। শুধু ফারাক একটাই স্যার আর আমার দুজনের বয়স বেড়ে গেছে অনেক। 
ছাত্র আর শিক্ষকের সম্পর্ক বড়ো মধুর। জানিনা আজ কাল এমন আর হয় কি না।হয়তো এই সম্পর্ক এখন শুধুই অর্থের বিনিময়ে অর্জিত হয়। স্যার আজও সেই কবে কার কথা বললেন। তুমি যখন লজ্জায় ঘাড় তুলে তাকাতে পারছিলে না আমার দিকে। কি করে পড়বে তুমি টাকা না দিয়ে আমার কাছে। আমি বললাম তোমার বাবাকে নিয়ে এসো আমি যা বলার বলে দেবো ওনাকে। সেই সময় তো বাবা এলে স্যার বলেছিলেন কোনো চিন্তা ভাবনা করবেন না আপনি দশ টাকা দেবেন আমায়। অভিজিৎ কে আমি পড়াবো। এখন বাবা কেমন আছেন তোমার স্যার জিজ্ঞাসা করলেন আমায়। আমি বললাম স্যার বাবা ভালো আছেন।

 আসলে দিন দিন বড়ো দ্রুত ভালো মানুষের সংখ্যা  কমছে এই পৃথিবীতে। স্বার্থপরতার যুগে এমন সব লোকজন এর দেখা পাওয়াই ভার। কথা বলতে বলতে নানা পুরোনো স্মৃতি রোমন্থন করা আমাদের দুজনকে কেমন করে যেনো সেই আগের জীবনে ফিরিয়ে দিলো এক ঝলকে। দুরুদুরু বুকের মাঝে যে হৃদপিন্ডটা ভয় পাচ্ছিল এই বাড়ির খিড়কি দুয়ার পার হতে। সে কেমন করে নিশ্চিন্তে সেই পুরোনো গল্পে মেতে উঠল। আসলে এটাই বোধহয় জীবনের ধর্ম। ঘড়ির কাঁটা এগিয়ে গেলো বড়ো দ্রুত। তিনটে নিজের লেখা বইতে সই করে দিলেন আমায় স্যার। 
আসলে জীবনের ছোটো ছোট পাওয়া কেমন করে যে মানুষের জীবন কে জড়িয়ে ধরে রাখে, বেঁধে রাখে কে জানে। যার খোঁজ পেলে এই বয়সে এসে মনে হয় আমি হারালাম তো অনেক কিছুই জীবনে কিন্তু পেলামও তো কম নয়। এই সব মানুষের ভালোবাসা আর আশীর্বাদ নিয়ে তো এতগুলো বছর কাটিয়ে দিলাম দিব্যি। অর্থ, মান, প্রতিপত্তি, সামাজিক স্ট্যাটাস, চাকরি সব ছেড়ে। শুধু এমন কিছু ভালোবাসার স্পর্শ পেয়ে ভালোভাবেই যে এই জীবন কেটে গেলো। শুধু হয়তো একটু কষ্ট করে বেঁচে থাকতে হলো এই আর কি। 
আসলে বোধ হয় মানুষের জীবন দর্শন তার চাওয়া পাওয়া এগুলো যদি সব কিছুকে একটু মেপে মেপে পা ফেলে চলা যায় তাহলে বোধ হয় এত দুঃখ কষ্ট ভুলে চলা যায় জীবন। স্যার বললেন অভিজিৎ আমি একটা বই লিখছি তুমি একটু বইয়ের একটা ভূমিকা যদি লিখে দাও তাহলে খুব ভালো হয়। তোমার লেখা আমার খুব ভালো লাগে পড়তে। আমি এই কথা শুনে লজ্জায় ভাবছি কি বলছেন স্যার আপনি। আপনার লেখা বইয়ের জন্য আমি কি লেখা লিখবো জানিনা। তবু মনে হয় সত্যিই তো অসাধারন এই অনুভূতি। যদি না ভয় পেয়ে স্যার এর বাড়িতে না এলে এই অনুভূতির অভিজ্ঞতা আজ হতো না আমার।
একবুক টাটকা বাতাস নিয়ে স্যারকে প্রনাম করে রাস্তায় বেড়িয়ে পড়লাম। দুজনে পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলে রাখলাম। জীবনের এমন একটা দিন, এমন দিনের স্মৃতি চিহ্নকে মোবাইলের পর্দায় তুলে রেখে দিলাম। সেই ছাত্র আর শিক্ষকের দুজনের ছবি আর কিছু কথাকে ভাসিয়ে দিলাম ফেসবুকের দেওয়ালে আমার সাদা জীবনের কালো কথার পর্দায় আঁকাবাঁকা অক্ষরে। গঙ্গার জলের ধারায়, বৃষ্টি ভেজা সকাল বেলায় সেই ছবি দেখে মনটা বড়ো ভালো হয়ে গেলো আমার। 
স্যার ভাগ্যিস আপনি আমায় ফোন করে ডেকেছিলেন আমায়। ভয়ে ভয়ে আর দুরু দুরু বুকে আপনার কাছে হাজির হয়েছিলাম। সেই যেভাবে আপনি জুলজি প্রাকটিক্যাল ক্লাস রুমে ডাক দিতেন অভিজিৎ এদিকে এসো তুমি। আমি ছুরি কাঁচি ফেলে দিয়ে দৌড়ে যেতাম বুকে ভয় নিয়ে। আপনার সামনে হাজির হতাম তাহলে কি ভুল করলাম কিছু আবার পারিনি আমি ঠিক করে ওই মাছটা কাটতে। ডিসেকশন ঠিক করে করা হয়নি।
 আজ এতদিন পর নিজের জীবনের কটা ছেঁড়া করতে গিয়ে বড়ো ভালো লাগলো আমার। আপনার সামনে দাঁড়িয়ে মনে মনে আপনাকে বললাম, স্যার আপনাকে ধন্যবাদ জানাই, প্রনাম জানাই। আপনি যদি এই ভাবে না ডাকতেন তাহলে হয়তো আমার জীবনের অনেক কিছু হারিয়ে যাবার পরেও এই পাওয়াটা হতো না স্যার আমার। যে পাওয়া হারিয়ে ফেলা অনেক কিছুর থেকেও বড়ো পাওয়া।
 আমি বেরিয়ে পড়লাম স্যার এর বাড়ী থেকে। রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে একবুক টাটকা বাতাস বুকে ভরে নিয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়ে ঘুরে বেড়ালাম বহুক্ষণ এদিক ওদিক। গঙ্গার পাড় ধরে, সেই চেনা চেনা পথ ধরে চেনা মানুষের মুখের ভীড় ঠেলে এগিয়ে চললাম আমি। যে পথের মাঝে ছড়িয়ে আছে আমার গভীর গোপন ভালোবাসার অনুরণন। যার ঝাপটায় আমি আজও মোহিত হই এই বুড়ো বয়সেও। যে পথের মাঝে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে কত টুকরো টুকরো সুখের আবেশ মাখা সুখ স্পর্শ। যে স্পর্শের ঠিকানা আমি আজও খুঁজে বেড়াই। যে চেনা পথের বাঁকে আজও হয়তো অপেক্ষা করে কেউ আমার জন্য। সেই মাতাল করা সুবাস নিয়ে। সেই দীঘল চোখের চাহনি নিয়ে। বৃষ্টি ভেজা সকালে বহুদিন পর আবার আমি স্নাত হলাম। 

স্যার এর ফোন - অভিজিৎ বসু।
পয়লা আগষ্ট, দু হাজার চব্বিশ।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ইটিভির পিনাকপাণি ঘোষ

কিছু মানুষ কত কাছে থেকেও পাশাপাশি এক জায়গায় বাস করেও একসাথে একসময় কাজ করেও যে কত দূরে রয়ে যান নিজের হাসিমুখ নিয়ে আর সেই চেনা ছন্দ নিয়ে সত্যিই বেশ ভালো মজার ব্যাপার কিন্তু এটা জীবনের মেঠো পথে। সেই ইটিভির বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে ঘুরে ঘুরে স্ট্রীট ফুডের ছবি তোলা আর নানা খবর করে খাওয়া দাওয়ার এপিসোড করে একসময়ে বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে যাওয়া ইটিভি নিউজে। আর আমাদের জেলায় বসে সেইসব হাঁ করে দেখা আর কেমন মনের ভেতর অস্থিরতা তৈরি হওয়া। একেই বলে কলকাতার রাজপথের সাংবাদিক বলে কথা।  সেই যে বার রাষ্ট্রপতি এলেন জয়কৃষ্ণ লাইব্রেরী প্রাঙ্গণে সেই অনুষ্ঠানের বিশেষ কার্ড জোগাড় করে দেওয়ার অনুরোধ করা ইটিভির চাকরি করার সুবাদে। কোনো রকমে সেই কার্ড জোগাড় করে এনে দেওয়া তাঁকে আর তাঁর পরিবারের সদস্যদের জন্য। আর সেই একদিন দুপুর বেলায় খুব সম্ভবত করোনা শেষ পর্বে বালিঘাট স্টেশন থেকে অফিস যাওয়ার সময় এসি পঞ্চাশ এর বাস এর ভিতরে দেখা হওয়ায় কত গল্প করা দুজন মিলে পুরনো দিনের। আবার উত্তরপাড়ার সেই বিখ্যাত চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে গিয়ে হাসি মুখে দেখা হয়ে যাওয়া রাতের বেলায় কাঁঠালবা...

আমাদের সবার মৃনাল দা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ এক বাবা আর ছেলের লড়াই এর গভীর গোপন কাহিনী। এই সাংবাদিকতার পেশায় এসে কত লড়াই, কত অসম যুদ্ধ, করে যে কেউ সংসার টিকিয়ে রাখতে পারে হাসি মুখে কাউকে কিছুই বুঝতে না দিয়ে। এমন করে কেউ টিকে থাকার চেষ্টা করেন সেটা বোধহয় আমার জানা হয়ে উঠত না কিছুতেই। যদি না এই পেশায় আমি গা ভাসাতাম এমন করে। জীবনের এই নানা টুকরো টুকরো ছবির কোলাজ ভেসে ওঠে এই রাতের অন্ধকারে আচমকা আমার মনের মাঝে। আর আমি চমকে উঠি কেমন করে তাদের সেই কোলাজ দেখে।  এমন এক চরিত্র, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী হয়ে কেমন আলগোছে, হাসিমুখে, নির্মোহ ভাবে, শুধু নিজের কাঁচা পাকা দাড়িতে হাত বুলিয়ে জীবনটা কাটিয়ে দিলো সে শুধুই আকাশ পানে তাকিয়ে। যে নীল আকাশের গা ঘেঁষে উড়ে যাওয়া সাদা বকের ডানায় লেগে থাকে মেঘের হালকা টুকরো। একদম যেনো সিনেমার পর্দার হিরোর মতোই। দেখে বোঝার উপায় নেই একদম। পেটে খাবার না থাকলেও মুখের হাসিটা অমলিন হয়েই বেঁচে আছে আজও এতোদিন পরেও। আর সেই বিখ্যাত সাদা পাকা নাসিরউদ্দিন স্টাইলের দাড়ি, কালো চুল, আর সব সময় ধোপদুরস্ত ফিটফাট একজন মানুষ। রাত নটা বাজলেই যাকে শ্রীরামপুরে...

শপিং মলের উদ্বোধনে সিঙ্গুর আন্দোলনের দাপুটে মন্ত্রী

নালিকুল স্টেশন বাজারে একটি শপিং মলের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বেচারাম মান্না হাজির। একসময় যাঁর অন্দোলনের ঠেলায় পড়ে দৌড়ে একপ্রকার পালিয়ে চলে যেতে হয়েছিল সিঙ্গুর থেকে টাটা কোম্পানিকে। যে আন্দোলনের দগদগে ঘা আর সেই স্মৃতি ধীরে ধীরে আজ প্রায় মিলিয়ে যেতে বসেছে আমাদের কাছ থেকে। আজ সেই চাষার ঘরের মানুষ না হলেও সেই কৃষক আর শ্রমিকের ন্যূনতম অধিকার নিয়ে যে আন্দোলন শুরু করে সারাটা জীবন কাটিয়ে দিলেন সেই মানুষটাকেই কেমন যেন আজ শপিং মলের উদ্বোধনে দেখে বেশ ভালই লাগলো আমার।  একদম নালিকুল স্টেশনের কাছে ঝাঁ চকচকে শপিং মল। দোকানে সাজানো জিনিস পত্র। আর সেখানেই আমাদের মাননীয় মন্ত্রী বেচারাম মান্না। একদম কেমন একটু আমার অচেনা লাগলো যেন। সেই মুড়ি খেয়ে আলুর তরকারি বা শশা খেয়ে আন্দোলন শুরু করা জমি আন্দোলন এর অন্যতম পথিকৃৎ নেতা আজ এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। তাহলে টাটা কোম্পানির বিরুদ্ধে যে জমি দখল নিয়ে আন্দোলন সেই আন্দোলন এর মধ্যে ছিল জোর করে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা। যদিও সেখানেও সেই সময়ের শাসকদলের কর্মসংস্থানের যুক্তি।তবে এই নতুন শপিং মলের উদ্বোধনে তো আর ...

ভীড়ের মাঝে একা

জীবন জুড়ে শুধুই ভীড় আর ভীড়। নানা ধরনের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় মানুষের গন্ধে, বর্ণে , স্বাদের ভীড়ে আমি একদম একা হয়ে যেতে চাই। যে ভীড় উপচে পড়া রাস্তায় শুধুই হেমন্তের ভোরে শিশিরের ফিসফিস শব্দ, পাখির কিচির মিচির আওয়াজ,ধানসিড়ি ওই নদীটির তীর ধরে ঘুঘুর আকুল মন কেমন করা ডাক, উদাসী শালিকের ঝাঁক বেঁধে উড়ে যাওয়া ওই হেমন্তের হলুদ ধানের মাঠ এর পাশ দিয়ে, হলুদ বসন্ত বৌরীর সেই আমলকীর গাছের পাতায়,আড়ালে আবডালে বসে কেমন যেন আমায় দেখে লজ্জা পাওয়া, আর তারপর চোখ নামিয়ে হঠাৎ করেই তার উড়ে চলে যাওয়া। আর মেঘের কোল ঘেঁষে সেই সাদা বকের, বুনো হাঁসের, আর সেই পানকৌড়ির জলে ভেজা ডানা মেলে উড়ে যাওয়া আকাশ জুড়ে। সত্যিই ওরাও যে ভিড়ের মাঝেই বড়ো একা। একা একাই ওদের যে এই বেঁচে থাকা। কেমন নিপাট হৈ চৈ হুল্লোড়হীন একটা জীবন নিয়ে বেশ মজা করে, আনন্দ করে। আর সেই ভোরের আলোয় আলোকিত হয়ে রাস্তার একপাশে গুটি শুটি মেরে শুয়ে থাকা ওই সাদা কালো ভুলো নামের কুকুরের। যে অন্তত এই সব মানুষদের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় একটু যেনো আলাদা , একটু যেনো অন্য রকমের। একটু একা একাই যেনো ওর এই আলগোছে জীবন কাটিয়...

গৌড় প্রাঙ্গণে আনন্দবাজার

গৌরপ্রাঙ্গনে শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যের আনন্দের মেলা আনন্দবাজার। মহালয়ার ভোরবেলায় ঢাকের বাদ্যি আর সানাইয়ের মন কেমন করা সুরে মেতে উঠলো শান্তিনিকেতনের গৌড়প্রাঙ্গণ। প্রতি বছরের মতো এই বছরও যে হবে আনন্দমেলা আনন্দবাজার। হ্যাঁ সত্যিই যেনো আনন্দের এই হাটে বেচাকেনার পসরা নিয়ে একদিনের জন্য বসে পড়া মন প্রাণ খুলে হৈ হুল্লোড় করে। এই মেলা শুরু হয় 1915 সালের 15 এপ্রিল নববর্ষের দিনে। কিন্তু আগে এই মেলাকে একসময় বলা হতো বৌঠাকুরাণীর হাট। সেই সময় আশ্রমের মহিলারা নিজেদের হাতের তৈরি জিনিস নিয়ে মেলায় বসতেন। মেলার আয়োজন করতেন তারা। আনন্দ করে বেচাকেনা হতো। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময় একবার গরমের ছুটির আগে এমন মেলা নাকি হয়েছিল। যার নাম ছিল আনন্দবাজার। পরে এই মেলার নামে হয়ে যায় আনন্দমেলা। সত্যিই আনন্দের এই মিলন মেলা।  প্রথমদিকে পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের ছেলেমেয়েদের নিয়ে এই মেলা শুরু হয়। পরে ধীরে ধীরে বিশ্বভারতীর সব বিভাগের পড়ুয়ারা এই মেলায় যোগদান করে। এই মেলার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো ছাত্রছাত্রীদের বেচা কেনার লাভের টাকার কিছু অংশ জমা পরে বিশ্বভারতীর সেবা বিভাগে। সেখান থেকে এ...