সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ভিখারী অন্তর্ধান রহস্য দ্বিতীয় পর্ব

সাদা জীবনের কালো কথায় সেই ভিখারী অন্তর্ধান এর আজ দ্বিতীয় পর্ব। আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই সময় বোধহয় বুঝতে পেরেছিলেন এই যে ভিখারী পাসওয়ান এর অন্তর্ধানের ঘটনা। আর সেটার মধ্যে একটা রাজনীতির অনেক রসদ আর পুঁজি লুকিয়ে আছে ভালই। আর তাই তার সেই সময়ের বিশ্বস্ত সহচর ও ছায়াসঙ্গী হুগলীর নেতা আকবর আলী খন্দকারকে বলেন এই এলাকায় মাটি কামড়ে পড়ে থাকতে হবে। কোনো ভাবেই সিপিএমকে জমি ছাড়া যাবে না। আর দিদির বাক্যকে যে সারা জীবন বেদ বাক্য বলে মেনে এসেছেন সেটাই করলেন তিনি। নিজের জীবনকে বাজি রেখে আকবর আলী। তারজন্য তার ওপর হামলাও হয় বলে অভিযোগ। এমনকি তার শেওড়াফুলির বাড়িতে বোম মারার অভিযোগও ওঠে।

যে কোনো উপায়ে এই রাজনীতির ফসলকে নিজের ঘরে তুলতে হবে এটাই ছিল সেই সময় বিরোধী দলের নেত্রীর একমাত্র চিন্তা। সেটাই তো আমরা এই তৃণমূল আমলেও দেখতে পাচ্ছি। কোনো ঘটনায় পুলিশের ও প্রশাসনের ব্যর্থতা ধরা পড়লেই হলো। যে করে হোক ক্ষমতার শীর্ষে বসে থাকা ব্যক্তিকে যে করে হোক মাটিতে নামিয়ে আনতে হবে। যে কোনো উপায় অবলম্বন করে সরকারকে উৎখাত করতে হবে। জুটমিল এলাকায় সিটুর দাপট থাকা সত্ত্বেও ভিখারী ইস্যু নিয়ে কিছুটা ব্যাকফুটে চলে যায় শাসক দল সিপিএম। আর ক্রমেই গোটা মাঠ জুড়ে খেলে বেড়াতে থাকলেন একা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 

ঠিক তেমন এক রাতের গল্প। বৃষ্টি পড়ছে অঝোরে। হঠাৎ খবর এলো ভিখারীর বাবা লখীচাঁদ পাসওয়ান খুব অসুস্থ। খবর পেয়ে কলকাতা থেকে সেই রাতেই ছুটে আসছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই। আমায় ফোন করে খবর দিলো আকবর আলী খোন্দকার নিজেই। বললো শোন দিদি আসছে ভিখারীর বাড়িতে।একটু পরেই আকবর দার পিএ, সিএ আর ইয়ে যাই বলি সেই সিংদার ফোন এলো। অভিজিৎ দা, বড়ো ভাই ফোনে কিছু বলেছে তোমায়। আমি সিংদাকে বললাম হ্যাঁ এইমাত্র বলেছে দিদি আসছেন এই রাতে। 
এই সিং দা আমাদের হুগলীর সাংবাদিকদের যে কি করে নানা গুরুত্বপূর্ণ খবর দিয়ে, খবর করতে সাহায্য করেছেন তার হিসেব নেই। সেই গল্প একদিন বলবো আমি।  সেই এই বৃষ্টিতে এত রাতে আমরা সব যাবো কি করে তেলেনিপাড়াতে। ফোন করলাম হায়দরাবাদ এ ইটিভির সেই সময়ের জেলার কো অর্ডিনেটর আমাদের সবার সেই ডাকাবুকো নেতা ধ্রুবজ্যোতি প্রামাণিককে। সব শুনলো ধ্রুব। বললো দাদা তুমি যাবে কি করে এই রাতে বৃষ্টির মধ্যে। আমি বললাম চলে যাবো দাদা কোনো চিন্তা করো না তুমি। এই খবরের নেশা তো আজও টিকে আছে আমার। বলেই আমার সেই বিখ্যাত ক্যামেরাম্যান মিন্টেকে ফোন করে জানালা, বললাম চলো বেরোতে হবে এই রাতে।
 মিন্টের ভালো নাম জ্যোতির্ময় বসু। যে এখন নবান্নে নিউজ এইট্টিন এর হয়ে কাজ করে। মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর সফরসঙ্গী বিখ্যাত ফটো জার্নালিস্ট এখন সে কলকাতায় পোস্টিং। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসছেন ভিখারীর বাড়িতে মিন্টে কে বললাম আমি।
 মিন্টে আমার ফোন পেয়েই বলল আসছি আমি এখুনি তুমি রেডি হয়ে থাকো। সাইকেল নিয়ে অফিস চলে এলো আমার ক্যামেরাম্যান রাত তখন প্রায় এগারোটা বাজে। বৃষ্টির মধ্যে ক্যামেরার ব্যাগে প্লাস্টিক জড়িয়ে আমার সেই বিখ্যাত বাজাজ বক্সার গাড়ি নিয়ে চালক মিন্টে আর আমি পেছনে বসে আছি। ছুটে চলেছে বাইক অন্ধকার ভেজা রাস্তায় দ্রুত। গন্তব্য তেলেনিপাড়া। জলে ভিজছি দুজনেই কাক চান করে গেছি। আর মাঝে মাঝেই ধ্রুবর ফোন দাদা তোমরা সাবধানে যাও দাদা। দেখো তাড়াহুড়ো করো না কিন্তু। আমি বললাম না না কোনো চিন্তা নেই তোমার তুমি ঘুমিয়ে পড়ো দাদা। ধ্রুব বললো না গো আমি জেগে আছি। 
আমরা পৌঁছে গেলাম ভিখারীর বাড়ী। অন্য সব চ্যানেলের জেলার সাংবাদিকরাও সেই রাতে ভীড় করেছেন সেই পরিচিত ভিখারীর বাড়ির সামনে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এলেন কিছু সময় পরে টালির ঘরে ঢুকলেন। কোনো ভাবে ছবি হলো হুড়োহুড়ি করে। ঘর থেকে বেরিয়ে এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই বললেন সব কথা। ভিখারীর বাবা খুব অসুস্থ। তাই তিনি দেখতে এসেছেন খবর পেয়েই। যেটা তাঁর রাজনীতির একমাত্র প্রধান কাজ ছুটে স্পটে পৌঁছে যাওয়া। আমরা তাঁর সব কথা রেকর্ড করলাম।
পুলিশের ভীড় সব সামলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই রাতে হাজির হলেন তেলিনীপাড়ায়। বৃষ্টির মধ্যে কোনো রকমে ক্যামেরার গায়ে কালো কাপড় জড়িয়ে আর মাথায় ছাতা ধরে কাজ হলো আমাদের। রাতের অন্ধকারে কোনো এক চ্যানেলের ক্যামেরাম্যান রেকর্ড করতে করতে নর্দমায় উল্টে পড়ে গেলো। টলমল করতে করতে বোধহয় গভীর রাতে সে সুস্থ হয়ে আর দাঁড়াতে পারছিল না কিছুতেই। বৃষ্টির রাত বলে কথা। আর সেটা দেখেই কেমন ভয় পেয়ে গেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও। তাড়াতাড়ি বলা শেষ করেই গাড়িতে উঠে পড়লেন তিনি দ্রুত। বেশ মজার ঘটনা এটা। ক্যামেরা নিয়ে নর্দমায় পড়ে যাওয়া আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর বাইট দেওয়া থামিয়ে দিয়ে দ্রুত গাড়িতে উঠে পড়া। সত্যিই তো কত কি যে ঘটে যায়।
আমরা সেই বৃষ্টি মাথায় করে ঘরে ফিরছি রাত প্রায় আড়াইটে বেজে গেছে। আবার ধ্রুবর ফোন দাদা কাজ হলো সাবধানে ফেরো দাদা। আমি তোমার সাথে জেগে আছি দাদা। আমি সেইদিন থেকেই তো ওর ফ্যান হলাম। কলকাতার এক বিখ্যাত মাতব্বর সাংবাদিক এর সাথে যখন কাজ করতে শুরু করলাম চব্বিশ ঘন্টা চ্যানেলে। সেই সময় ধ্রুব সেই চ্যানেলে কর্মরত ডেপুটি এডিটর পদে। দুজনেই পাশাপাশি বসত ওরা দুজন। সেই মাতব্বর সাংবাদিক বার বার বলতো তুই কেমন ধ্রুবর কথা উঠলে তোর চোখগুলো চক চক করে যেনো। যদিও কিছুটা শ্লেষ ছিল সেই মাতব্বর সাংবাদিক এর কথায় সেটাও আমি জানি। 
কিন্তু আমার মনে হয় একজন খবরের মাঠের নেতা তো এইভাবেই বুস্ট আপ করে তার নিজের দলের খেলোয়াড়দের। যুদ্ধক্ষেত্র থেকে অনেক দূরে থেকেও সেনাপতি মনে করিয়ে দেয় তার সৈন্যকে আমি তোমার সঙ্গে আছি, পাশেই আছি। তুমি লড়ে যাও, ভয় না পেয়ে। হ্যাঁ সেই বৃষ্টি ভেজা রাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজনীতির কিছু ফসল ঘরে তুলে ফিরে গেছিলেন কলকাতা  হাসি মুখে তাঁর কালীঘাটের বাড়িতে টালির ঘরে। কিন্তু হায়দরাবাদ আর হুগলীর সেই দেড় হাজার কিলোমিটার দূরে থেকেও সেনাপতি আর একজন সাধারণ সৈনিক এক অমলিন সম্পর্কের ফসল ঘরে তুলতে সক্ষম হয়েছিল সেই বৃষ্টি ভেজা রাতে। যে সম্পর্ক আজও অমলিন হয়েই টিকে আছে কোনো দেওয়া নেওয়া না করেই, কোনো হিসেব নিকেশ না করেই আমাদের দুজনের মধ্যে।
 হ্যাঁ ভিখারী অন্তর্ধান এর সেই বৃষ্টি ভেজা রাত এর কথা আমি সারা জীবন মনে রাখবো। আসলে এটা এক ধরনের নেশা, যেমন রাজনীতির লোকদের দৌড় করায়। ঠিক তেমন করেই সাংবাদিকদেরও দৌড় করায়। যে নেশায় বুঁদ হয়ে ছুটে বেড়াই আমরা এদিক থেকে ওদিক। আর এই ভাবেই ভিখারীর ডিভিডেন্ড ধীরে ধীরে পেতে শুরু করলো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই এক ভাবেই আকবর আলি খোন্দকার হুগলী জেলায় একটা পরিচিত নাম হয়ে যায়। আর সেই জোরেই তো আকবর আলী খন্দকার চন্ডিতলা বিধানসভায় ভোটে দাঁড়িয়ে সিপিএমের মলিন বাবুকে হারিয়ে দিয়ে বিধানসভায় পৌঁছে গেলেন কেমন সহজেই। সেই বামেদের লাল পার্টির জমানায় এটা বড় কঠিন লড়াই ছিল। কিন্তু সেই কঠিন লড়াইতে জয় পেলো বিরোধী দল। 
এটাই তো সেই ভিখারী কে নিয়ে লেগে থাকার ফল পেলেন বিরোধীরা। আর আজও বিরোধী দলের আন্দোলনের বিরুদ্ধে যে করেই হোক প্রতিরোধ গড়তে চায় সরকার। আর তাই নানা ফন্দি ফিকির করা হয়। সেই আমলে বাম সরকার ভেবেছিল পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভকে নেভাতে হবে যে কোনো উপায়ে। তাই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হরমন প্রীত সিং কে বিদেশে ট্রেনিং এ পাঠানোর পরিকল্পনা করে সেই সময়ের বাম সরকার। যদিও সেটা পরে আটকে যায়। বামেরা ভাবে এই ভাবে যে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাকে একটু দূরে সরিয়ে দিলে হয়ত কিছুটা শান্ত হবে পরিস্থিতি। কিন্তু না পরিস্থিতি শান্ত হয় না কোনো ভাবেই। উল্টে আন্দোলনের জেরে সেটা আরও বাড়তে থাকে ক্রমে ক্রমে।
আসরে নেমে পড়ে এপিডিআর। গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতি তারাও বেশ চাপ বাড়াতে শুরু করে জুট মিলের নিখোঁজ ঠিকা কর্মী ভিখারির জন্য। মানুষের মধ্য আস্থা ফেরাতে সেই সময় বাম সরকার তিন জন পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে সরকারি স্তরে কিছু পদক্ষেপ নেয়। কারণ অভিযোগ ওঠে এই তিনজন সমর দত্ত, স্বপন নামহাট্টা ও আর একজন নাকি ভিখারী কে তার বাড়ি থেকে তুলে আনে। নিচু তলার পুলিশকে কিছুটা শাস্তি দিয়ে ওপর তলার পুলিশকে কিছুটা স্বস্তি দেওয়া হচ্ছে। এই অভিযোগ তোলে গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতি। তারা একটা ছ পাতার পুস্তিকাও প্রকাশ করে ভিখারী অন্তর্ধান নিয়ে। 
ভিখারী অন্তর্ধান ছাড়াও পুলিশ আরও কোন কোন এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে। সিবিআই যে রিপোর্ট উল্লেখ করে ভিখারী অন্তর্ধান নিয়ে সেটা তাদের পুস্তিকায় প্রকাশও করে এপিডিআর। আর তাতেই অনেকটা চাপে পড়ে যায় তৎকালীন রাজ্য সরকার। তাদের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম নিজের মতো করে অনুসন্ধান করে গোটা ঘটনা। তারা বলে পুলিশ ইচ্ছা করে নিজেদের দোষ ঢাকতে নানা পদক্ষেপ নেয়। এমনকি তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত মুখ্যমন্ত্রী বিনয় চৌধুরীর কাছে এপিডিআর একটি স্মারকলিপিও পেশ করে। তারা বলেন, পুলিশ যেভাবে হোক এই ঘটনা ধামা চাপা দিতে চাইছে। কিন্তু সেটা ঠিক নয়। বিনয় চৌধুরী বলেন সিবিআই এর রিপোর্ট তিনি হাতে পাননি পেলে নিশ্চয়ই দেখবেন। 
যা যে কোনো বড়ো বড়ো ঘটনায় দেখা যায় সত্যকে চেপে দেওয়ার জন্য চেষ্টা করা। ঠিক তেমনি ভিখারীর ঘটনায় সেটাই দেখা যায়। কিন্তু ভিখারীর কোনো সন্ধান দিতে, হদিস দিতে কার্যত সেদিনও ব্যর্থ হয় সিবিআই। যা বার বার বড়ো বড় তদন্তে দেখা যায় বারবার সিবিআই সমাধান করতে পারে নি। নোবেল চুরি থেকে শুরু করে তাপসী মালিক হত্যা রহস্য নানা ঘটনায় তার প্রমাণ মিলেছে বারবার।
আসলে জানা যায় সেই বিখ্যাত পুলিশ অফিসার হরমন প্রীত সিং বেশ কঠিন ধরনের অফিসার ছিলেন। আর তাই তিনি এমন ভাবেই হয়তো শিক্ষা দিতে চেয়েছিলেন ভিখারীকে। আর তাতেই গোলমাল বেধে যায়। কিন্তু বর্তমানে কর্মরত অন্য এক অভিজ্ঞ পুলিশের কথায় যিনি আমার খুব পরিচিত অফিসার, একসময় চন্দননগরের এসডিপিও ছিলেন তিনি। তাঁর কথায় ওই পুলিশ অফিসার এর মতে,ওই অফিসার হরমন প্রীত সিং কিন্তু কিন্তু বেশ ভালো অফিসার ছিলেন। 
যা আজও দেখা যায় রাজ্যের নানা ঘটনায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর নির্দেশে আকবর আলি খোন্দকার সেই সময় কলকাতা হাইকোর্টে ভিখারীর মামলার তোড়জোড় শুরু করে সরকারকে চাপে ফেলে দেয়। আর তাতেই খবরের শিরোনামে চলে আসে ভিখারী অন্তর্ধান রহস্য। যে রহস্যের উন্মোচন আজও করা যায়নি। এপিডিআরও একটি মামলা করে তারা নিখোঁজ ভিখারীকে নিয়ে। 
দিন বদলে গেলো। ক্ষমতার পালা বদল হলো। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হয়ে যান রাজ্যের। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার আগে ভিখারীর মা আবেদনও করেন আদালতে যাতে দ্রুত এই মামলার বিচার হয়, নিষ্পত্তি হয়। তাঁর নিখোঁজ ছেলের বিচার পান তিনি। কিন্তু না সেই বিচার আজও নিখোঁজ ভিখারী ওরফে অমৃতলাল এর মা লালতী দেবী পাননি।
যে হৈ চৈ আর হুল্লোড় ঘটে যায় ভিখারী পাসওয়ান ওরফে অমৃতলাল পাসওয়ান এর অন্তর্ধানকে ঘিরে সেই নব্বই এর দশকে। সেই হৈ হুল্লোড় আর উত্তেজনা চারিদিকে অনেকটাই আজ স্তিমিত। এখন তো শুধুই ভিখারীর অন্তর্ধান হলো একটা রাজনীতির বড়ো মাইলস্টোন আর ইতিহাস। যে মাইলস্টোন এর কঠিন ফলক পার করে, ইতিহাসের পাতা উল্টে সেদিনের সেই বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজকে আমাদের সবার মুখ্যমন্ত্রী। 

ভিখারী অন্তর্ধান রহস্য - অভিজিৎ বসু।
শেষ পর্ব
ঊনত্রিশ আগস্ট দু হাজার চব্বিশ।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অ্যাঙ্কর মিমির কথা

'আমরা যদি এই আকালেও স্বপ্ন দেখি কার তাতে কী?' বাহ দারুন সুন্দর এই কথা। স্বপ্ন দেখার কি কোনো সময় হয় নাকি। পঞ্জিকার পাতা উল্টে তিথি নক্ষত্র দেখে কি স্বপ্ন দেখা যায়। যে স্বপ্ন বাঁচার খোরাক জোগায়। যা দেখে এই দৌড় ঝাঁপ করা জীবনে কেমন একটা স্বস্তি মেলে সেই স্বপ্ন সফল হোক বা না হোক। যে কোনোও বয়সে এই স্বপ্ন দেখা যায়। ফেসবুকের পাতায় সেই কথা লেখা দেখে মনে মনে কিছুটা সাহস সঞ্চয় করেই এই রাত দুপুরে ভয়ে কম্পমান হয়েই ওকে নিয়ে লেখার চেষ্টা করা। সেই পোদ্দার কোর্টের অফিসে সেই দুর থেকেই অচেনা জগতের সেই খবরের বিখ্যাত সব নানা ধরনের খবর পাঠিকাদের ভীড়ে তাঁকে দুর থেকে দেখা। একদম অন্য এক গ্রহের বাসিন্দা যেনো। সেই কালামের দোকানে হয়তো কোনোও সময় চা খেতে গিয়ে দেখতে পাওয়া। সেই লিফটের কুঠুরিতে একসাথে ওঠা বা নামা কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখেই। কিন্তু সেই অন্য খবর পড়া অ্যাঙ্কর দের সাথে সহজ সরল ভাবে মিশে যাওয়ার সাহস হয়নি আমার কোনোও দিন তাঁর সাথে। আজ আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায় আমার আঁকিবুঁকি ব্লগের পাতায় সেই ২৪ ঘণ্টার পোদ্দার কোর্টের অফিসের বিখ্যাত অ্যাঙ্কর মিমির কথা। ...

এলোমেলো , এলেবেলে বিন্দাস জীবন ও জন্মদিন

দেখতে দেখতে বছরের পর বছর গড়িয়ে যায়। আসলে এই অচলাবস্থা আর অকর্মণ্য দিনযাপনের একটা জীবন কাটিয়ে দিতে দিতে বেশ আমি কেমন যেন এডজাস্ট করে নিয়েছি নিজের সাথে নিজেরই এক অদ্ভুত সহাবস্থান। আমার জীবনের সাথে ক্রমেই দ্রুত কমতে থাকে যেনো মৃত্যুর দূরত্ব। দীর্ঘ দিনের জীবনের ঘন্টা ধ্বনিতে কেমন অচেনা সুরের সুর মূর্ছনা বেজে ওঠে ঠিক যেনো ওই গির্জার ঘরে জিঙ্গেল বেল, জিঙ্গেল বেল এর সুরের মতই আচমকা রাত বারোটা বাজলেই এই একত্রিশ মে।  যার তাল, লয় আর ছন্দে আন্দোলিত হয় এই জীবন আর জীবনের নানা জলছবি। যে ছবির কোলাজে ধরা পড়ে হাসি কান্না, সুখ আর দুঃখের নানা অনুভব। যে অনুভূতির জারক রসে আমি জারিত হই প্রতি মুহূর্তে। আর তাই তো বোধহয় সেই ছোটবেলার দিন এর কথা মনে পড়ে গেলেই সেই ঝাপসা হয়ে যাওয়া ধূসর হয়ে যাওয়া সেই ছবির সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে ইচ্ছা হয় আমার বড়ো এই আজকের দিনে।  সেই পুরোনো দিনের ভালোবাসার স্পর্শ আর স্মৃতি রোমন্থন করা একটি ছবি। মায়ের নিরাপদ কোলে ঠিক নয় চুপটি করে পাশে বসে আছি আমি একদম ফিট ফাট হয়ে আপন মনে ভদ্র শান্ত ছেলের মতোই যা আমি মোটেও নয়। আজকের সেই এ...

যা দেখি…প্রতিদিন মনে পড়ে কত… স্মৃতির পথ ধরে হাঁটি… লিখি…

ইটিভির অ্যাঙ্কর অঙ্কুর

ভাবা যায় এই ভুবন ভোলানো হাসিমুখের বিখ্যাত অ্যাঙ্করও নকল হতে পারে নাকি কোনোভাবে। হতেই পারে না একদম এটা। কোনোভাবেই এটা মেনে নেওয়া যায় না আর বিশ্বাস করাও যায় না। ওর এই পোস্ট দেখে সেটাই মনে হলো আমার সবার প্রথমেই। আসলে এই জীবনের পথে হাঁটতে হাঁটতে আসল আর নকলের এই গা ঘেঁষাঘেঁষির ভীড়ে পার্থক্য বোঝাই যে দায়। কে আসল বন্ধু আর কে নকল বন্ধু সেটাই বোঝা মুশকিল। সেটাকে নির্ধারণ করা যে বড়ই দুষ্কর কাজ। সেটাই যে আজকাল আর ঠিক করে ঠাওর করতে পারি না আমি এই বুড়ো বয়সে এসে।  আজ সাদা জীবনের কালো কথায় আমার এই আঁকিবুঁকি ব্লগে তাই সেই যার কোলে চেপে বাসে করে জীবনে প্রথম বার দুরু দুরু বুকে রামোজি ফিল্ম সিটিতে গিয়েছিলাম আমি বেশ ভয়ে আর আতঙ্কে যদি চেয়ারম্যান এর সামনে যেতে হয় আর ইংরাজিতে কথা বলতে হয় এই ভয়ে। সেই ভীড় বাসে বসতে জায়গা না পেয়ে সেই তাঁর কথা। সেই যে সারাদিন অফিস করে হায়দরাবাদ এর বাংলা ডেস্ক থেকে ধ্রুব রাতে ওর বাড়িতে ভাত খাবার জন্য নেমতন্ন করলো আমায় গরম ভাত, ডাল আর আলুভাজা রান্না করলো রূপা ওর শরীর খারাপ নিয়েও সেদিন কত কষ্ট করে। সেই খেতে দেবার সময় ওদের ঘরে খাবা...

বিনোদন রিপোর্টার দেবপ্রিয়

দেবপ্রিয় দত্ত মজুমদার। ওর সাথে কোথাও একসাথে কাজ করা হয়নি আমার। ওর খবরের ফিল্ড একদম আলাদা এন্টারটেনমেন্ট। আর আমার শুধুই সাধারণ খবর। কখনও জেলার খবর,আর কলকাতার খবর। রাজনীতির খবর নিয়েই ঘুরে বেড়ানো। তবু কেনো জানিনা ওর শান্তিনিকেতনে আসার খবর শুনেই ওকে সাহস করে আমার নম্বর দিলাম। এমনি কোনোও কারণ ছাড়াই যদি যোগাযোগ হয়। যদি দেখা হয়। কলকাতার গন্ধ আছে। মিডিয়ার একটা বলয় গায়ে জড়িয়ে আছে। আর কি শুধুই যদি দেখা হয়ে যায় এই আশায়।  চমক অপেক্ষা করেছিল আমার জন্য। পরদিন ফোনে যোগাযোগ করলো ও নিজেই। কথা হলো দু চারটে আমাদের। কোথায় থাকো তুমি জিজ্ঞাসা করলো। আর সত্যিই আমি টোটো চালকের কাজ করি কি না যেটা নিয়ে ওর নিজেরও একটা সন্দেহ ছিল মনে মনে সেটা পরিষ্কার করে দিলাম আমি ওকে। কিন্তু যেনো কতদিনের চেনা একজন মানুষ। কত আপন ছন্দে কথা বলা ওর। যেটা আমায় আকর্ষিত করলো বেশ। ওর অনুষ্ঠান যেটা হচ্ছে শান্তিনিকেতনে সেখানে আমার মতো একজন বাতিল মানূষকে আসতে বললো ও নিমন্ত্রণ জানালো সপরিবারে।  আমি একটু আবেগ প্রবণ মানুষ। আমি চলে গেলাম সেই অনুষ্ঠানে ওর আমন্ত্রণে। যা সচরাচর আমি কো...