সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

স্বপ্ন দেখার দিন

আজ শুধু স্বপ্ন দেখার দিন। হ্যাঁ খাতায় কলমে তাই বলা হচ্ছে যে আজ বিশ্ব স্বপ্ন দিবস। সকাল বেলায় বৃষ্টি ভেজা আলসেমি কাটিয়ে বিছানায় আড়মোড়া ভাঙতে ভাঙতে কেমন যেনো মনে হলো সত্যিই তো কতদিন যে জমিয়ে স্বপ্ন দেখা হয়নি আমার কে জানে। এই দৌড়ে বেড়ানো আর ছুটে বেড়ানো জীবনে অন্ধকার হাতড়ে আলোর দিশা খোঁজার জীবনে স্বপ্ন দেখার আর তাকে আমন্ত্রণ জানাবার আর ফুরসৎ পাই কোথায়। তবু তো স্বপ্ন দেখার বাতিক আমার বরাবর সেই ছোটো বেলা থেকেই। 

যে বাতিক এর জন্য নিজেকে এক একসময় বেশ হাস্যকর মনে হয়েছে। ঘুম ভেঙে জেগে গিয়ে ভেবেছি এমন স্বপ্ন দেখা কি যায় নাকি। তবু ওই যে বাতিক একটা রোগ। ছোটবেলায় আমাদের পাড়ার সেই যে নন্দ খুঁড়ো যে একটু মাথার চুল বড় রাখতে দিত না কোনোদিন আমায়। সেই যে রাস্তার পাশের কাঠের দোকানে কেমন বিবিধ ভারতী সেন্টার এ নানা গান এর সুর চালিয়ে আপন মনে কাঁচি চালাতো গম্ভীর মুখে। তার কাছেই শুনতাম একবার একটা এক লাখ টাকার লটারি জেতা হলেই তার সব স্বপ্ন পূরণ হবে জীবনে।

 বিড় বিড় করে কাঁচি চালাতো আর মনে মনে বলতো এইবার নিশ্চয়ই আল্লাহ তার স্বপ্ন পূরণ করে দেবেন। আমরা রবিবার তার দোকানে চুল কাটতে গিয়ে জিজ্ঞাসা করতাম কিগো স্বপ্ন পূরণ হলো তোমার। কেমন ভেঙে পড়া খয়াটে মুখে আর নিষ্প্রভ হাসি নিয়ে আমার দিকে ঘোলা চোখে তাকিয়ে থাকতো নন্দ নাপিত। ওর মেয়ে বড় হয়েছে বিয়ে দিতে হবে। ছেলেটার কাজ নেই কোনো। ভাড়া বাড়িতে কোনো রকমে দিন আনা দিন খাওয়া জীবন যাপন করা। এইসব আমার স্বপ্ন পূরণের কথা শুনে কেমন চুপ করে থাকতো সে। আমার মুখের দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকতো নন্দ খুড়ো। আর এই সুযোগে আমি বলতাম জেঠু একটু বড় করে রেখো না চুলটা বাড়িতে বুঝতে পারবে না কেউ। কি ভেবে নন্দ খুড়ো কেমন যেনো মেনে নিত আমার এই  অন্যায় আবদার।
 
আসলে বহুদিন পর ওই রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে থেমে গেলাম আমি। না রাস্তার পাশের সেই কাঠের মলিন দোকানে যে তালা পড়ে গেছে। শুনলাম নন্দ নাপিত রোগে ভুগে মারা গেছেন বহু দিন আগেই। মনটা বড্ড ভারী হয়ে গেলো আমার। সেই ছোটো বেলার দিন গুলোর কথা মনে পড়ে গেলো। নন্দ খুড়োর স্বপ্ন পূরণ হয়নি নিশ্চই। তার মাঝেই সে চলে গেলো পৃথিবী ছেড়ে সবাইকে ছেড়ে একবুক স্বপ্ন পূরণের আশা নিয়ে। যদি ফিরে এসে আবার কোনোদিন এমন স্বপ্ন দেখা দেখতে পারে সে এই আশায়। 

আসলে আজ এই স্বপ্ন দেখার দিনে কেনো যে সাত সকালে আমার নন্দ নাপিতের ওই শুকিয়ে যাওয়া মুখ, বিবর্ণ ভেঙে পড়া দোকান, ভাঙা রেডিও সেন্টার এর বিবিধ ভারতীর গান এর কথা মনে পড়ে গেলো কে জানে। মনে হলো সত্যিই যদি নন্দ নাপিতের ওই ছোট্ট লাখ টাকার স্বপ্ন দেখা আর জীবন ভোর অপেক্ষার প্রহর গোনার পালা শেষ হতো তাহলে বোধ হয় ওর জীবনটাই বদলে যেতো। জীবনের মানে বদলে যেত তার। না, যা হয়নি সেটা ভেবে আর কি হবে। সবার সব স্বপ্ন পূরণ হয় কি এই এক জীবনে। 

এর বহু বছর পরে পুরোনো স্মৃতির কথা মনে পড়ে গেলো আমার। আমি সবে তখন চিৎকার করে গলায় সুর তুলে পশ্চিমের জানলার ধারে বসে দুলে দুলে মাকে শুনিয়ে শুনিয়ে সেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্বপ্ন কবিতা আবৃত্তি করে পড়তে শুরু করেছি আমি। ভাবটা এমন দেখো কত সুন্দর পড়া করছি আমি। সন্ধ্যা বেলায় লণ্ঠনের মৃদু আলোয় টালির ঘর ভরে যাচ্ছে স্বপ্ন দেখা কবিতার আওয়াজে গম গম করছে গোটা বাড়ী। বাবা কারখানার কাজ সেরে এসে মাটির বারান্দায় চা খেতে খেতে বলছেন আজ বেশ মন দিয়ে পড়ছে ছেলেটা। মার মুখে হাসি উপচে পড়ছে। কিন্তু সেই ছোটকালে যে বিনুর মতই কত স্বপ্ন আছড়ে পড়ে জীবনে কে জানে। 

স্বপ্ন (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)

একদিন রাতে আমি স্বপ্ন দেখিনু-
“চেয়ে দেখো” “চেয়ে দেখো” বলে যেন বিনু।
চেয়ে দেখি, ঠোকাঠুকি বরগা-কড়িতে,
কলিকাতা চলিয়াছে নড়িতে নড়িতে।
ইঁটে-গড়া গণ্ডার বাড়িগুলো সোজা
চলিয়াছে, দুদ্দাড় জানালা দরজা।
রাস্তা চলেচে যত অজগর সাপ,
পিঠে তার ট্রামগাড়ি পড়ে ধুপ্‌ ধাপ্‌।
দোকান বাজার সব নামে আর উঠে,
ছাদের গায়েতে ছাদ মরে মাথা কুটে।
হাওড়ার ব্রিজ চলে মস্ত সে বিছে,
হ্যারিসন্‌ রোড চলে তার পিছে পিছে।
মনুমেণ্টের দোল যেন ক্ষ্যাপা হাতি
শূন্যে দুলায়ে শুঁড় উঠিয়াছে মাতি।
আমাদের ইস্‌কুল ছোটে হন্‌ হন্‌,
অঙ্কের বই ছোটে, ছোটে ব্যাকরণ।
ম্যাপগুলো দেয়ালেতে করে ছট্‌ ফট্‌,
পাখি যেন মারিতেছে পাখার ঝাপট।
ঘণ্টা কেবলি দোলে, ঢঙ্‌ ঢঙ্‌ বাজে—
যত কেন বেলা হোক তবু থামে না যে।
লক্ষ লক্ষ লোক বলে, “থামো থামো”,
কোথা হতে কোথা যাবে, একী পাগ্‌লামো।”
কলিকাতা শোনে না কো চলার খেয়ালে;
নৃত্যের নেশা তার স্তম্ভে দেয়ালে।
আমি মনে মনে ভাবি চিন্তা তো নাই,
কলিকাতা যাক নাকো সোজা বোম্বাই।
দিল্লি লাহোরে যাক, যাক না আগরা-
মাথায় পাগ‍্‌ড়ি দেব পায়েতে নাগ্‌রা।
কিম্বা সে যদি আজ বিলাতেই ছোটে
ইংরেজ হবে সবে বুট-হ্যাট্‌-কোটে।
কিসের শব্দে ঘুম ভেঙে গেল যেই-
দেখি কলকাতা আছে কলকাতা তেই।

আসলে বিনুর মত এমন স্বপ্ন দেখার রোগ যে সেই কবেকার অভ্যাস আমাদের কে জানে। গভীর রাতে ঘুমের ঘোরে স্বপ্ন দেখা, ভোররাতে মোবাইলের স্ক্রীনে দৃষ্টি রেখে আধঘুমে আর জাগরণে রং বেরঙর এর নানা স্বপ্ন দেখা। যে স্বপ্ন দেখে কখনও আকাশে হাজার ঘুড়ির মাঝে নিজের ঘুড়ির আকাশ জুড়ে মাতব্বরি দেখতে বড়ো ভালো লাগে আমার। লাল,নীল, সবুজের মাঝে কেমন যেন আমার ঘুড়ি পঙ্খীরাজ রাজার মত উড়ে বেড়ায় একা একা সবাইকে হারিয়ে দিয়ে। সন্ধ্যা হলেও কোনো ঘুড়ি আকাশে দেখা না গেলেও কেমন আমার ঘুড়ি উড়ে বেড়ায় হাসি মুখে যা দেখে অন্যদের বুক ফেটে যায় কিন্তু মুখ ফাটে না যে। এই স্বপ্ন যে আমি কতবার দেখেছি তার ইয়ত্তা নেই।

 ছোটবেলার সেই নানা রং এর ছোটো ছোটো স্বপ্নকে বুকে আগলে রেখেই তো বড়ো হয়ে যাওয়া। যেখানে আর ছোটো বেলার সেই ঘুড়ি, মার্বেল, ডাকটিকিট, ডাংগুলি, দেশলাইয়ের বাক্স, এদের নিয়ে গড়ে ওঠা সব স্বপ্ন কেমন যেন মিলিয়ে যায় ধীরে ধীরে বুদবুদের মত। ছোটো স্বপ্নের রাজ্য পেরিয়ে কেমন তেপান্তরের মাঠে হাজির হৈ আমরা। বড়ো বেলার নানা রঙের উজ্জ্বল ছোপ ছোপ দাগ লেগে যাওয়া আলাদা অনুভূতির সব রকমারি স্বপ্নকে সাথে নিয়ে। যে স্বপ্নকে ঘিরে আবর্তিত হয় জীবনের ওঠা আর নামা। যে স্বপ্ন দেখে কখনও মন খারাপ হয়ে যায় কখনো মনে হয় কেনো যে দেখলাম এই কর্পোরেট দুনিয়ার এমন জীবনমুখী গান এর মত জীবনবোধের শুধু ওপরে ওঠার স্বপ্ন। কে জানে স্বপ্ন দেখার নেশা যে বড়ো ভয়ঙ্কর।

যার পূরণ হয় না কোনোদিন কিন্তু স্বপ্ন দেখার নেশা লেগে যায় প্রতি রাতে। ঘুম আসে না কিছুতেই। ভোর বেলায় ঘুম এর মধ্যে দেখি জীবনে অনেক ওপরে উঠে যাওয়ার স্বপ্ন। যে স্বপ্ন নিজেকে খুশি করে। আনন্দ দেয়। মনে হয় সত্যিই কি ভোরবেলার স্বপ্ন পূরণ হয়, সত্যিই হয়। কে জানে এসব ঠিক কথা না বেঠিক কথা জানি না আমি। শুধু এটা বুঝি ছোটো বেলায় সেই ভোরবেলায় মার পাশে অকাতরে ঘুমিয়ে পড়া ছোটো বেলার ছোটো কালের স্বপ্ন দেখার সাথে বড়ো বেলার স্বপ্নের ফারাক যে অনেক। 

তাহলে কি স্বপ্ন দেখার মধ্যে ফারাক আছে। মনটা কেমন খারাপ হয়ে যায় আমার। এই স্বপ্ন দেখার দিনে সকাল বেলায় বৃষ্টি ভেজা সকালে চুপটি করে আবার ছোটো বেলায় ফিরতে ইচ্ছা করে আমার। সেই বিনুর মতই চোখ মেলে তাকিয়ে দেখতে ইচ্ছা করে আমার সেই ছোটো বেলার নন্দ খুড়োর স্বপ্নকে, আমার সেই ঘুড়ি হয়ে আকাশ পানে উড়ে বেড়ানো, পাখি হয়ে যাওয়া ছোটো আমিকে। সেই কাঁচের বয়ামে লাল নীল জল রঙের গুলি ভরে রাখার স্বপ্ন কে বড়ো জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছা হয় যে আমার। 

মনে হয় কবির লেখা বিনুর মত স্বপ্ন দেখতে যে স্বপ্নের রাজ্যে আমার মায়ের সেই ঘুম থেকে জোর করে তুলে দেবার ডাক আছে। যে স্বপ্নের রাজ্যে ভেসে বেড়ায় পেটকাটি, চাঁদিয়াল, ময়ূরপঙ্খী, আর সেই ভো কাট্টা আওয়াজ। যে স্বপ্নের দেশে কাঁচের গুলির শব্দ শুনতে বড়ো ইচ্ছা করে আমার। আজ বুড়ো বয়সে এই স্বপ্ন দেখার দিনে নন্দ খুড়োর সেই ভেঙে পরা মুখ, চোয়াল, ফ্যাকাশে বিবর্ণ চোখ, আমায় কেমন যেন অবশ করে দেয়। ধীরে ধীরে আমি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দেখি আমি নয়, আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আছে সেই স্বপ্ন দেখা নন্দ খুড়ো। তার ফ্যাকাশে মুখ, বিবর্ণ চোখ আমায় কেমন তাড়া করে বেড়ায় আজও। 

স্বপ্ন দেখার দিন - অভিজিৎ বসু।
পঁচিশে সেপ্টেম্বর, দু হাজার চব্বিশ।
ছবি সৌজন্য গুগল।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

টোটো চালক ও দালাল

আজ আপনাদের এক দালাল আর টোটো চালকের গল্প বলি। যে দালাল টাকা নিয়ে বাংলাদেশের বর্ডার পার করে দেওয়া দালাল নয়। এই দালাল একটু অন্য ধরনের দালাল। আমার সাদা জীবনের কালো কথায় আমার আঁকিবুঁকি ব্লগের পাতায় যে এলোমেলো এলেবেলে আর বিন্দাস জীবন কাটানো এক টোটো চালকের আজ এই হঠাৎ করেই দালাল হয়ে ওঠার গল্প। যে গল্পের পরতে পরতে রহস্য আবিষ্কার করছি আমি। জীবনের এই মেঠো পথের বাঁকে বাঁকে কত যে নতুন নতুন সব কিছু আবিষ্কার করছি আমি সত্যিই অবাক পৃথিবী অবাক করলে আরও বলতে ইচ্ছা হয় আমার এই রাত দুপুরে।  জীবনের এই শেষ বেলায় এসে এলোমেলো জীবনে যেনো ঝড় উঠেছে হঠাৎ করেই আমার। যে জীবন একদিন স্থবির জীবন ছিল আমার। যে জীবন বধির ছিল। যে জীবন শুধুই নিজের মৃত্যুর কাছাকাছি এসে অপেক্ষার প্রহর গুনছিল আর রাতের অন্ধকারে নিশাচর পেঁচার ডাক শুনত। যে জীবন শুধুই অপমান, অবহেলা সহ্য করেই বেঁচে থাকতে অভ্যস্ত হয়ে গেছিল একসময়। সেই জীবন কেমন স্থবিরতা কাটিয়ে আড়মোড়া ভেঙে জীবনের মেঠো রাস্তায় হাঁটছে টলমল পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে। সেই জীবনে এখন শুধুই ব্যস্ততা আর ব্যস্ততা আর ব্যস্ততা। যে অন্ধকার ঘরে আলো জ্বলতে দেখা ...

মহম্মদ নিজামউদ্দিন - এর গল্প

আজ আপনাদের বলবো বর্ধমানের জামালপুরের মহম্মদ নিজামুদ্দিন এর গল্প। আমার সাদা জীবনের কালো কথায় আমার আঁকিবুঁকি ব্লগের পাতায় আজ এই ঝড়ের রাতে সেই নিজামুদ্দিন এর হাসি মুখ, নামাজ পড়ে যিনি নিজের দাড়িতে হাত বুলিয়ে বলতে পারেন, নেতাদের কথা বাদ দিন আমি আর আপনি তো এক। মানুষ আমরা, বন্ধু আমরা। কেউ কারুর শত্রু নয়। সত্যিই কি অসাধারন জীবন দর্শনের কথা কত সহজেই অবলীলায় বলে দিলেন তিনি হাসতে হাসতে। যা শুনে আমি সত্যিই অবাক হলাম এই ঝড়ের রাতে। বিহারের সমস্তিপুর জেলা থেকে প্রায় পঞ্চাশ বছর আগে যিনি চলে এসেছিলেন এই বাংলায় এক সময় এই বর্ধমানের জামালপুর এলাকায়। ব্রিটিশ আমলে যাঁর বাবা এক সময় দেশের হয়ে কাজ করেছেন বলে জানান তিনি আমায় কথায় কথায়। যিনি মনে করেন এই তাঁর সাথে আমার পাশে বসে গল্প করার সুযোগ করে দিলেন তাঁর প্রিয় আল্লাহ আকবর আর আমার মা কঙ্কালী ও‌ মা তারা স্বয়ং নিজেই হয়তো।  আর তাই তো এই ঝড় জল এর রাতে তাঁর সাথে কথা বলার সুযোগ হলো আমার কলকাতার বিখ্যাত হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক ডাঃ সৌমাল্য চট্টোপাধ্যায় এর চেম্বারে বসে তাঁর সেই সুন্দর জামালপুরের গ্রামের বাড়িতে...

নকশাল নেতা সুবোধ মিত্র

কিছু কিছু মানুষ থাকেন যাঁরা বোধহয় জীবনকে এক ভাবে গড়ে তোলার কথা ভাবেন। আর অন্য ভাবে তাঁরা জীবনকে গড়ে তোলেন। আসলে এইসব মানুষগুলো বোধহয় শুধুই নিজের কথা ভেবে বেঁচে আর বেড়ে ওঠেন না। শুধুই আত্মস্বার্থে নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেন না। তাঁরা মনে করেন নিজের জন্যে তো শুধুই বাঁচা নয়। মানুষের জন্যে, জল, জঙ্গল,নদী, জঙ্গলের সহজ সরল আদিবাসী মানুষদের জন্য, তাদের অধিকারের জন্য লড়াই করা আর বাঁচা। আর সেটাই তো জীবনের আসল উদ্দেশ্য।   আর সেটাকে মাথায় রেখেই তো তাঁর সেই আই এ এস হবার পরও কেমন সেই দেরাদুনে ট্রেনিং পিরিয়ডের সময়ে। হঠাৎ করেই সব কিছু ছেড়ে দিয়ে সুখের নিশ্চিত জীবন ছেড়ে দিয়ে অজানা এক জীবনে ভেসে পড়া। নিজের জন্যে নয় প্রত্যন্ত গ্রামের মেঠো মানুষ গুলোর জন্য। সরকারের গোলামি করে তো আর, চাকরি করে তো আর সেই কাজ করা যাবে না কিছুতেই। তাই চাই আন্দোলন। জোরদার একটা আন্দোলন। যে আন্দোলন নাড়িয়ে দেবে সরকারের ভিত। আর তাতেই হাসি ফুটবে গরীব খেটে খাওয়া প্রান্তিক মানুষের মুখে। যে সহজ সরল হাসি বড়ই সুন্দর।  আর তাই শুধু তিনি একা নন উনিশ জন আই এ এস তাঁদের ট্রেন...

অ্যাঙ্কর মিমির কথা

'আমরা যদি এই আকালেও স্বপ্ন দেখি কার তাতে কী?' বাহ দারুন সুন্দর এই কথা। স্বপ্ন দেখার কি কোনো সময় হয় নাকি। পঞ্জিকার পাতা উল্টে তিথি নক্ষত্র দেখে কি স্বপ্ন দেখা যায়। যে স্বপ্ন বাঁচার খোরাক জোগায়। যা দেখে এই দৌড় ঝাঁপ করা জীবনে কেমন একটা স্বস্তি মেলে সেই স্বপ্ন সফল হোক বা না হোক। যে কোনোও বয়সে এই স্বপ্ন দেখা যায়। ফেসবুকের পাতায় সেই কথা লেখা দেখে মনে মনে কিছুটা সাহস সঞ্চয় করেই এই রাত দুপুরে ভয়ে কম্পমান হয়েই ওকে নিয়ে লেখার চেষ্টা করা। সেই পোদ্দার কোর্টের অফিসে সেই দুর থেকেই অচেনা জগতের সেই খবরের বিখ্যাত সব নানা ধরনের খবর পাঠিকাদের ভীড়ে তাঁকে দুর থেকে দেখা। একদম অন্য এক গ্রহের বাসিন্দা যেনো। সেই কালামের দোকানে হয়তো কোনোও সময় চা খেতে গিয়ে দেখতে পাওয়া। সেই লিফটের কুঠুরিতে একসাথে ওঠা বা নামা কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখেই। কিন্তু সেই অন্য খবর পড়া অ্যাঙ্কর দের সাথে সহজ সরল ভাবে মিশে যাওয়ার সাহস হয়নি আমার কোনোও দিন তাঁর সাথে। আজ আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায় আমার আঁকিবুঁকি ব্লগের পাতায় সেই ২৪ ঘণ্টার পোদ্দার কোর্টের অফিসের বিখ্যাত অ্যাঙ্কর মিমির কথা। ...

ইটিভির অ্যাঙ্কর অঙ্কুর

ভাবা যায় এই ভুবন ভোলানো হাসিমুখের বিখ্যাত অ্যাঙ্করও নকল হতে পারে নাকি কোনোভাবে। হতেই পারে না একদম এটা। কোনোভাবেই এটা মেনে নেওয়া যায় না আর বিশ্বাস করাও যায় না। ওর এই পোস্ট দেখে সেটাই মনে হলো আমার সবার প্রথমেই। আসলে এই জীবনের পথে হাঁটতে হাঁটতে আসল আর নকলের এই গা ঘেঁষাঘেঁষির ভীড়ে পার্থক্য বোঝাই যে দায়। কে আসল বন্ধু আর কে নকল বন্ধু সেটাই বোঝা মুশকিল। সেটাকে নির্ধারণ করা যে বড়ই দুষ্কর কাজ। সেটাই যে আজকাল আর ঠিক করে ঠাওর করতে পারি না আমি এই বুড়ো বয়সে এসে।  আজ সাদা জীবনের কালো কথায় আমার এই আঁকিবুঁকি ব্লগে তাই সেই যার কোলে চেপে বাসে করে জীবনে প্রথম বার দুরু দুরু বুকে রামোজি ফিল্ম সিটিতে গিয়েছিলাম আমি বেশ ভয়ে আর আতঙ্কে যদি চেয়ারম্যান এর সামনে যেতে হয় আর ইংরাজিতে কথা বলতে হয় এই ভয়ে। সেই ভীড় বাসে বসতে জায়গা না পেয়ে সেই তাঁর কথা। সেই যে সারাদিন অফিস করে হায়দরাবাদ এর বাংলা ডেস্ক থেকে ধ্রুব রাতে ওর বাড়িতে ভাত খাবার জন্য নেমতন্ন করলো আমায় গরম ভাত, ডাল আর আলুভাজা রান্না করলো রূপা ওর শরীর খারাপ নিয়েও সেদিন কত কষ্ট করে। সেই খেতে দেবার সময় ওদের ঘরে খাবা...