সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

হেরে যাওয়ার দিনেও জিতে যাওয়া

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ শুধুই ব্যর্থ মানুষ দের কথা। হ্যাঁ, জীবন যুদ্ধে যারা ব্যর্থ। মই বেয়ে সর সর করে যাদের কোনোদিন ওপরে উঠে যাওয়ার সুযোগ হয়নি কোনোভাবেই। একে ওকে ঠেলে ফেলে দিয়ে সিঁড়ি বেয়ে অনেক ওপরে উঠে যাওয়া। আর তারপর কেমন উজ্জ্বল হাসি মুখ করে নিচুতে তাকিয়ে থাকা। যাদের গায়ে, মাথায়, হাতে, পিঠে, মুখে শুধুই গোল গোল ব্যর্থতার স্ট্যাম্প পড়ে গেছে চারিদিকে। যাঁরা ঘরে, বাইরে, সমাজে, সংসারে, বাজারে, দোকানে, পথে, ঘাটে  হাটে, মাঠে সব জায়গায় শুধুই ব্যর্থতার কথা শুনেই বেঁচে থাকে। আর খালি হীনমন্যতায় ভোগে। আর মাথা নিচু করে সব কথা শুনে মুখ বুজে সহ্য করে সব কিছুই। 

হ্যাঁ, সেই আন্তজার্তিক ব্যর্থতা দিবস আজ। ভাবা যায় International Failure Day, হলো এই আজকের দিনটা। প্রতিবছর সারা বিশ্ব জুড়ে পালিত হয় এই দিনটি। যে দিনটাকে বেছে নিয়েছিল দুহাজার দশ সালে ফিনল্যান্ডের আল্টো ইউনিভার্সিটির ছাত্ররা। তারা মনে করেছিল ব্যর্থতার ভয় কাটিয়ে নতুন উদ্যোগের বার্তা দিতেই তারা এই দিন পালনের কথা ভাবে। সবাই মিলে এই তেরো অক্টোবর দিনটিকে বেছে নেন তারা। তাই জীবনে ব্যর্থ হলেও, হতাশ হবেন না।

 সত্যিই ব্যর্থতাকে স্বীকার করে মেনে নিয়ে জীবনের পথে চলতে চলতে এটাই মনে হয় যে এই শুধু ফেল করা মানুষদের জন্য এই একটা গোটা দিবস পালন করা এটা বেশ সুন্দর ব্যাপার কিন্তু। ভাবলেও কেমন আনন্দ লাগে আমার। যেখানে সমাজের সর্বত্র এই ব্যর্থ আপাত দৃষ্টিতে যাঁরা সমাজের আর পাঁচটা মানুষের কাছে শুধুই পিছিয়ে পড়া একটি মানুষ। যাঁরা শুধুই কথা শোনে আর মুখ ঝামটা খায় ওপরের কাছে। সেই সব মানুষদের কথা ভেবেই আজকের এই দিন পালন।

 যেখানে ব্যর্থতাকে মেনে নিয়েও দিব্যি হাসি মুখে অনাবিল সুখের খোঁজে বেঁচে থাকা মানুষদের জন্য একটা গোটা দিন। যে মানুষগুলো শুধু ফেল করতে করতে শুধুই পিছিয়ে পড়েছে জীবনের নানা অধ্যায়ে। তাদের জীবনে এগোবার স্বপ্ন দেখতে ইচ্ছা হয় কিন্তু ভয় হয় আবার যদি সেই স্বপ্ন দেখাও ফেল করে যায় কোনোভাবে। পাশ মার্ক না পায় তাহলে কি যে হবে। এই পাশ আর ফেল এর অদৃশ্য সুতোর টানে ছুটে চলা আমাদের এই সুন্দর মিষ্টি জীবন। 

যে জীবনে ব্যর্থ হলেও গোটা একটা দিন পালন করা হয়। তাহলে আর চিন্তা কি বলুন আমার মত ব্যর্থ লোকদের। যদিও মেয়ে, বউ, আত্মীয় স্বজনদের একটাই কথা এইভাবে শুধুই বার বার ব্যর্থ হয়ে কি বেঁচে থাকতে ভালো লাগে। সবার থেকে পিছিয়ে যেতে যেতে কি ভালো লাগে। কে জানে। যদিও আমি মনে মনে ভাবি ভাগ্যিস ওই ফিনল্যান্ডের কলেজের ছাত্ররা এই ফেল করা লোকদের জন্য বা পড়ুয়াদের জন্য এমন একটা দিনের কথা ভেবেছিল। না হলে আরও কি যে দুর্দশা হতো আমার মত ফেলুড়েদের কে জানে।

 হ্যাঁ, ঠিক কথা বলেছি আমি নিজেকে খেলুড়ে না বলে ফেলুড়ে বলে। যে বারবার জীবনের পরীক্ষায় ফেল করে আমি লজ্জা পাই না আর একদম বিশ্বাস করুন। পাশ করে ফুল মার্কস পেয়ে হাসি মুখে রাস্তা দিয়ে মাথা উঁচু করে গটমট করে হয়তো যেতে পারিনা আমি। কিন্তু ফেল করেও মাথা নিচু করে রাস্তায় ঘুরে বেড়াতে হয় না আমায়। কারুর কাছে শিরদাঁড়াকে বন্ধক রেখে। 

কি বা হতো পাশ করলে একটু ঝাঁ চকচকে জীবন আর কিছু হাততালি মিলত। আর ওই দুটো সমাজ মাধ্যমের দেওয়ালে দুটো লাইক বেশি মিলত এর বেশি আর কি পেতাম আমি আমার এই পোড়া জীবনে। আর আজ ব্যর্থ হয়ে এসব কিছু না পেয়েও কেমন করে যেনো আমার পল্টুকে পেলাম শ্রীরামপুরের রাস্তায়। যে আমায় হাসতে হাসতে বলে এটা নিয়ে যাও রান্না করে খাবে তুমি পয়সা লাগবে না কোনও তোমার। ওই যে কঙ্কালীতলা হাট এর মাঝে মংলুকে পেলাম হাসিখুশি ছেলেটা যে শুধু জেগে ঘুমিয়ে সবুজ খেলার মাঠ দেখে আর গোলপোস্ট দেখে। গোল করা যে তার বড় নেশা যেনো।

 আর ওই যে হাসি খুশি সুমিত্রা মাড্ডি যার মেয়ে ডাক্তারি পড়ে। কিন্তু হাটে এসে বসে বেচা কেনার আশায়। ওই যে বিশ্বজিৎ যে ব্যাগ করে দোকান ঘরে বসে বসে আপনমনে কোপাই এর ধর্মতলায়। যে শীতের সময় বলে খাঁটি সর্ষের তেল রেখে দেবো নিয়ে যাবেন কিন্তু। আর ওই দর্পশীলা গ্রামের সেই জামা বিক্রি করা শিপ্পু। যে কাকা ভালো থেকো তুমি বলে বিজয়ার শুভেচ্ছা জানায় পূজোর পর এই কদিনের আলাপেই। আর ওই যে ইকড়া গ্রামের মেঠো ছেলে শ্রীকান্ত, অভিজিৎ এরাও যে কেমন ভালোবাসে এই হেরে যাওয়া ব্যর্থ মানুষটাকে।

 আরও কত যে এমন মুখ ভেসে আসে লিখে শেষ করা যাবে না। ওই যে রাতের বেলায় ব্লাউজ বিক্রি করা ক্লাস সিক্সের ছেলেটি যে বলে এসো তুমি আমাদের বাড়ি কিন্তু মুলুকে। আর সেই বাতাসপুরের অসীম যে ব্যাগ ভরে নিজের ক্ষেতের সবজি দেয় আমাদের খাবার জন্য। গাছের পাকা আম দেয় বলে দাদাকে দেবেন কিন্তু। আর সেই রায়পুর গ্রামের মেঠো মানুষ লালু দা। যে নিজের ক্ষেতে তৈরি শাক তুলে বলেন দিদি নিয়ে যান আপনি বাড়িতে। আর মাথা গরম করা সামিম যে নিজের ঘরে ভাত না থাকলেও আসুন পেতে অতিথি সেবা করতে সিদ্ধহস্ত যে। 

তাহলে আর হীনমন্যতা কেনো। মাথা নিচু করে মুখ লুকিয়ে লুকিয়ে এই সমাজে বাঁচা কেনো। বারবার জীবনে হেরে যাওয়ার আর পাশ না করার এত দুঃখ কেনো। বিশ্বাস করুন আপনারা আমি তো জীবনে হেরে যাওয়া পিছিয়ে পরা একজন ফেল করা মানুষ। যার কোনোই মূল্য নেই এই সফল দৌড়ে চলা পৃথিবীতে। আর সেই মানুষটা যখন এই সব গ্রামের প্রান্তিক মানুষদের কাছে কেমন হঠাৎ করেই পাশ করে যায় একেবারেই। তখন কি ভালো যে লাগে আমার কি বলব আপনাদের। হারতে হারতে পাশ করার যে এত আনন্দ সেটা তো আগে বুঝিনি আমি। 

আমার মনে হয় ভাগ্যিস এই আজকের দিনটা এই ভাবে ফেল করাদের জন্য শুধু একটা দিন আবিষ্কার হয়েছিল। না হলে কি আর বার বার ফেল করেও এইভাবে জীবনকে খুঁজে পেতাম আমি। যে ফেল করা এই জীবনের রাস্তায় সিপ্পু, মোংলা, পল্টু, বিশ্বজিৎ, শ্রীকান্ত, লালু দা, অসীম, সামিম এরা সব হাসি মুখে দাঁড়িয়ে আছে। আর আমি ওদের হাত নেড়ে এগিয়ে চলেছি ওদের পাশ দিয়ে হাসতে হাসতে। সত্যিই আজকের এই দিন পালনের কথা জেনে আমার এই বার বার হেরে যাওয়া জীবনে আজ আমি হারতে হারতেও কেমন যেনো জিতে গেলাম জীবনের এই শেষ বেলায়।

হেরে যাওয়ার দিনেও জিতে যাওয়া - অভিজিৎ বসু।
তেরো অক্টোবর, দু হাজার চব্বিশ।
 ছবিঃপিক্সাবে।

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ইটিভির পিনাকপাণি ঘোষ

কিছু মানুষ কত কাছে থেকেও পাশাপাশি এক জায়গায় বাস করেও একসাথে একসময় কাজ করেও যে কত দূরে রয়ে যান নিজের হাসিমুখ নিয়ে আর সেই চেনা ছন্দ নিয়ে সত্যিই বেশ ভালো মজার ব্যাপার কিন্তু এটা জীবনের মেঠো পথে। সেই ইটিভির বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে ঘুরে ঘুরে স্ট্রীট ফুডের ছবি তোলা আর নানা খবর করে খাওয়া দাওয়ার এপিসোড করে একসময়ে বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে যাওয়া ইটিভি নিউজে। আর আমাদের জেলায় বসে সেইসব হাঁ করে দেখা আর কেমন মনের ভেতর অস্থিরতা তৈরি হওয়া। একেই বলে কলকাতার রাজপথের সাংবাদিক বলে কথা।  সেই যে বার রাষ্ট্রপতি এলেন জয়কৃষ্ণ লাইব্রেরী প্রাঙ্গণে সেই অনুষ্ঠানের বিশেষ কার্ড জোগাড় করে দেওয়ার অনুরোধ করা ইটিভির চাকরি করার সুবাদে। কোনো রকমে সেই কার্ড জোগাড় করে এনে দেওয়া তাঁকে আর তাঁর পরিবারের সদস্যদের জন্য। আর সেই একদিন দুপুর বেলায় খুব সম্ভবত করোনা শেষ পর্বে বালিঘাট স্টেশন থেকে অফিস যাওয়ার সময় এসি পঞ্চাশ এর বাস এর ভিতরে দেখা হওয়ায় কত গল্প করা দুজন মিলে পুরনো দিনের। আবার উত্তরপাড়ার সেই বিখ্যাত চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে গিয়ে হাসি মুখে দেখা হয়ে যাওয়া রাতের বেলায় কাঁঠালবা...

আমাদের সবার মৃনাল দা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ এক বাবা আর ছেলের লড়াই এর গভীর গোপন কাহিনী। এই সাংবাদিকতার পেশায় এসে কত লড়াই, কত অসম যুদ্ধ, করে যে কেউ সংসার টিকিয়ে রাখতে পারে হাসি মুখে কাউকে কিছুই বুঝতে না দিয়ে। এমন করে কেউ টিকে থাকার চেষ্টা করেন সেটা বোধহয় আমার জানা হয়ে উঠত না কিছুতেই। যদি না এই পেশায় আমি গা ভাসাতাম এমন করে। জীবনের এই নানা টুকরো টুকরো ছবির কোলাজ ভেসে ওঠে এই রাতের অন্ধকারে আচমকা আমার মনের মাঝে। আর আমি চমকে উঠি কেমন করে তাদের সেই কোলাজ দেখে।  এমন এক চরিত্র, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী হয়ে কেমন আলগোছে, হাসিমুখে, নির্মোহ ভাবে, শুধু নিজের কাঁচা পাকা দাড়িতে হাত বুলিয়ে জীবনটা কাটিয়ে দিলো সে শুধুই আকাশ পানে তাকিয়ে। যে নীল আকাশের গা ঘেঁষে উড়ে যাওয়া সাদা বকের ডানায় লেগে থাকে মেঘের হালকা টুকরো। একদম যেনো সিনেমার পর্দার হিরোর মতোই। দেখে বোঝার উপায় নেই একদম। পেটে খাবার না থাকলেও মুখের হাসিটা অমলিন হয়েই বেঁচে আছে আজও এতোদিন পরেও। আর সেই বিখ্যাত সাদা পাকা নাসিরউদ্দিন স্টাইলের দাড়ি, কালো চুল, আর সব সময় ধোপদুরস্ত ফিটফাট একজন মানুষ। রাত নটা বাজলেই যাকে শ্রীরামপুরে...

শপিং মলের উদ্বোধনে সিঙ্গুর আন্দোলনের দাপুটে মন্ত্রী

নালিকুল স্টেশন বাজারে একটি শপিং মলের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বেচারাম মান্না হাজির। একসময় যাঁর অন্দোলনের ঠেলায় পড়ে দৌড়ে একপ্রকার পালিয়ে চলে যেতে হয়েছিল সিঙ্গুর থেকে টাটা কোম্পানিকে। যে আন্দোলনের দগদগে ঘা আর সেই স্মৃতি ধীরে ধীরে আজ প্রায় মিলিয়ে যেতে বসেছে আমাদের কাছ থেকে। আজ সেই চাষার ঘরের মানুষ না হলেও সেই কৃষক আর শ্রমিকের ন্যূনতম অধিকার নিয়ে যে আন্দোলন শুরু করে সারাটা জীবন কাটিয়ে দিলেন সেই মানুষটাকেই কেমন যেন আজ শপিং মলের উদ্বোধনে দেখে বেশ ভালই লাগলো আমার।  একদম নালিকুল স্টেশনের কাছে ঝাঁ চকচকে শপিং মল। দোকানে সাজানো জিনিস পত্র। আর সেখানেই আমাদের মাননীয় মন্ত্রী বেচারাম মান্না। একদম কেমন একটু আমার অচেনা লাগলো যেন। সেই মুড়ি খেয়ে আলুর তরকারি বা শশা খেয়ে আন্দোলন শুরু করা জমি আন্দোলন এর অন্যতম পথিকৃৎ নেতা আজ এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। তাহলে টাটা কোম্পানির বিরুদ্ধে যে জমি দখল নিয়ে আন্দোলন সেই আন্দোলন এর মধ্যে ছিল জোর করে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা। যদিও সেখানেও সেই সময়ের শাসকদলের কর্মসংস্থানের যুক্তি।তবে এই নতুন শপিং মলের উদ্বোধনে তো আর ...

ভীড়ের মাঝে একা

জীবন জুড়ে শুধুই ভীড় আর ভীড়। নানা ধরনের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় মানুষের গন্ধে, বর্ণে , স্বাদের ভীড়ে আমি একদম একা হয়ে যেতে চাই। যে ভীড় উপচে পড়া রাস্তায় শুধুই হেমন্তের ভোরে শিশিরের ফিসফিস শব্দ, পাখির কিচির মিচির আওয়াজ,ধানসিড়ি ওই নদীটির তীর ধরে ঘুঘুর আকুল মন কেমন করা ডাক, উদাসী শালিকের ঝাঁক বেঁধে উড়ে যাওয়া ওই হেমন্তের হলুদ ধানের মাঠ এর পাশ দিয়ে, হলুদ বসন্ত বৌরীর সেই আমলকীর গাছের পাতায়,আড়ালে আবডালে বসে কেমন যেন আমায় দেখে লজ্জা পাওয়া, আর তারপর চোখ নামিয়ে হঠাৎ করেই তার উড়ে চলে যাওয়া। আর মেঘের কোল ঘেঁষে সেই সাদা বকের, বুনো হাঁসের, আর সেই পানকৌড়ির জলে ভেজা ডানা মেলে উড়ে যাওয়া আকাশ জুড়ে। সত্যিই ওরাও যে ভিড়ের মাঝেই বড়ো একা। একা একাই ওদের যে এই বেঁচে থাকা। কেমন নিপাট হৈ চৈ হুল্লোড়হীন একটা জীবন নিয়ে বেশ মজা করে, আনন্দ করে। আর সেই ভোরের আলোয় আলোকিত হয়ে রাস্তার একপাশে গুটি শুটি মেরে শুয়ে থাকা ওই সাদা কালো ভুলো নামের কুকুরের। যে অন্তত এই সব মানুষদের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় একটু যেনো আলাদা , একটু যেনো অন্য রকমের। একটু একা একাই যেনো ওর এই আলগোছে জীবন কাটিয়...

গৌড় প্রাঙ্গণে আনন্দবাজার

গৌরপ্রাঙ্গনে শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যের আনন্দের মেলা আনন্দবাজার। মহালয়ার ভোরবেলায় ঢাকের বাদ্যি আর সানাইয়ের মন কেমন করা সুরে মেতে উঠলো শান্তিনিকেতনের গৌড়প্রাঙ্গণ। প্রতি বছরের মতো এই বছরও যে হবে আনন্দমেলা আনন্দবাজার। হ্যাঁ সত্যিই যেনো আনন্দের এই হাটে বেচাকেনার পসরা নিয়ে একদিনের জন্য বসে পড়া মন প্রাণ খুলে হৈ হুল্লোড় করে। এই মেলা শুরু হয় 1915 সালের 15 এপ্রিল নববর্ষের দিনে। কিন্তু আগে এই মেলাকে একসময় বলা হতো বৌঠাকুরাণীর হাট। সেই সময় আশ্রমের মহিলারা নিজেদের হাতের তৈরি জিনিস নিয়ে মেলায় বসতেন। মেলার আয়োজন করতেন তারা। আনন্দ করে বেচাকেনা হতো। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময় একবার গরমের ছুটির আগে এমন মেলা নাকি হয়েছিল। যার নাম ছিল আনন্দবাজার। পরে এই মেলার নামে হয়ে যায় আনন্দমেলা। সত্যিই আনন্দের এই মিলন মেলা।  প্রথমদিকে পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের ছেলেমেয়েদের নিয়ে এই মেলা শুরু হয়। পরে ধীরে ধীরে বিশ্বভারতীর সব বিভাগের পড়ুয়ারা এই মেলায় যোগদান করে। এই মেলার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো ছাত্রছাত্রীদের বেচা কেনার লাভের টাকার কিছু অংশ জমা পরে বিশ্বভারতীর সেবা বিভাগে। সেখান থেকে এ...