সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

রাজধানী এক্সপ্রেস আটকে দেওয়া চাঁদ

রাজধানী এক্সপ্রেসকে ডানকুনিতে দাঁড় করিয়ে দিয়ে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছিল যে কংগ্রেস নেতা। পুলিশ ও আরপিএফের দু চোখের ঘুম কেড়ে নিয়েছিল সেই কংগ্রেস নেতা সেই দিন। যা গোটা রাজ্য জুড়ে কেউ কোনোদিন করে দেখাতে পারেনি। আর সেটাই হাসতে হাসতে অম্লান বদনে করে দিয়ে, আর বন্দেমাতরম স্লোগান দিতে দিতে পুলিশের গাড়িতে উঠে যাওয়ার আগে তার বাইট মানে কি বক্তব্য সেটা প্রেসকে জানাতে ভুলে যায়নি সে। যে কোনো ভাবেই হোক আন্দোলন এরপর তার বাইট নেবার বায়না করা ছিল তাঁর অন্যতম আকর্ষণীয় বিষয়। 



রেলের ট্রাক দিয়ে টেনে হেঁচড়ে তাকে পুলিশ চ্যাঙ দোলা করে নিয়ে যাচ্ছে। আর তার গলায় বন্দেমাতরম স্লোগান একদম নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর স্টাইলে। শুধু একটাই আর্তি তার একটা বক্তব্য যেনো প্রেসকে নিতে দেওয়া হয়। আর পুলিশ সেই রাজধানীকে আটকে দেওয়া বিখ্যাত নেতাকে কোনো মতেই আর রিস্ক নিয়ে দাঁড়াতে দিতে চায় না। সোজা পুলিশ ভ্যানে তুলে ফেলতে চায় তাকে। সে যতই হাত পা ছুঁড়ুক আর
অনুনয় বিনয় করুক। পরদিন সব কাগজে প্রথম পাতায় সেই রাজধানী আটকে দেওয়ার ছবি ছাপা হয়েছে। হ্যাঁ, সেই বিখ্যাত কংগ্রেসের নেতা আমাদের সবার প্রিয় নেতা, ডানকুনির নানা গুরুত্বপূর্ণ খবরের সোর্স সেই আফজল আলী চাঁদ। আজ সেই সাদা জীবনের কালো কথায় আমাদের ডানকুনির চাঁদের কথা। রাজধানী আটকে দিয়ে যে আজও এতদিন পরেও সূর্যের মতোই উজ্জ্বল হয়ে আছে আমার মনে। 

এমনকি ডানকুনি থানার সেই সময় এর ওসি অরিজিৎ দা। চাঁদের কোনও আন্দোলন এর খবর পেলেই স্পটে পৌঁছে সাংবাদিকদের আগেই বলে দিত সাংবাদিক ভাই তোমরা আগে ওর বাইট বা বক্তব্য নিয়ে নাও কিন্তু। আমরা বলতাম আগে ওর আন্দোলন হোক তারপর না হয় ওর বক্তব্য হবে। পুলিসের কথা আলাদা, চাঁদ অন্দোলন বিক্ষোভ করতে করতে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হবেই। আর তাকে পুলিশ ধরে নিয়ে যাবে। আর ওর যদি আন্দোলনের ছবি ওঠার পাশে যদি বাইট না হয় তাহলে ও পুলিশের গাড়ি ভেঙে ফেলবে। আমাদের বলবে স্যার একবার ছেড়ে দিন আমায়, আগে আমার বাইটটা হোক তারপর না হয় থানায় ধরে নিয়ে যাবেন। হ্যাঁ, এই হলো আমাদের সেই চাঁদ। 

ওর বাবা সিপিএম করতেন। ছেলে কংগ্রেস করবে এতে বাবার আপত্তি ছিল খুব। কিন্তু চাঁদ অনড় সে কংগ্রেস করবেই। কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন আই এন টি ইউ সির হয়ে নানা আন্দোলন অভিযান করেই চাঁদ এর ফোন। দাদা আমি চাঁদ বলছি। চন্ডীতলায় বড়ো বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ হয়েছে। চাঁদের থেকে এই খবর পেয়ে সাংবাদিকরা লোকাল থানায় ফোন করে জানল এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। আবার চাঁদের ফোন দাদা খবর কিন্তু পাক্কা। পুলিশ বলছে না, সব কিছু গোপন করতে চাইছে। যাই হোক ওর কথায় বিশ্বাস করে স্পটে গিয়ে দেখা গেলো সত্যিই ঠিক। পুলিশ ঘটনা ঘটলেও সব চেপে দিয়ে এলাকা পরিষ্কার করে ফেলেছে। হ্যাঁ, এই হলো আমাদের খবরের সোর্স চাঁদ। 

সেই কংগ্রেস দলের হাত ছেড়ে চাঁদ ঘাসের ওপর জোড়া ফুলে যোগ দিলো একদিন। সিঙ্গুরের টাটাদের জমি অধিগ্রহণ এর সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর ধর্না মঞ্চের আশপাশে ঘুরে বেড়ায় চাঁদ হাসি হাসি মুখে। সেই সাদা পাজামা আর পাঞ্জাবী পরে। আর সাংবাদিকদের দেখলেই হাত জোড় করে বলে দাদা ভালো আছেন তো আপনি। সেই এত বড় আন্দোলনে তার মুখ দেখাবার খুব শখ। একদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর ধর্না মঞ্চ থেকে একটু দূরে মদন মিত্র বসে আছে গল্প হচ্ছে নানা। চাঁদ ঘুর ঘুর করছে নেতার আশপাশে। আমরা সব দাঁড়িয়ে আছি। 

মদনদা জানতেন চাঁদের এই ছবি তোলা রোগের কথা। সেই সময় ক্যামেরা নিয়ে দাঁড়িয়ে মিন্টে, বাপি, সৌগত, উপেন অনেকেই। চাঁদকে বলা হলো তোমার লাইভ হবে নানা টিভি চ্যানেলে। সঙ্গে সঙ্গে চাঁদ তার বাড়িতে ফোন করে বলে দিলো সব টিভিতে তাকে লাইভ দেখানো হবে তোমরা পাড়ায় সবাইকে বলে দাও। ক্যামেরা অন না হতেই ফোন করে জানান দেওয়া চাঁদের তাকে টিভিতে দেখা যাবে। একবার চাঁদের ফোন ইন নেওয়া হবে। চাঁদ বাস করে যাচ্ছে। বাস ড্রাইভারকে বলে বাস দাঁড় করিয়ে দিলো সে কারণ তার চ্যানেলে ফোন ইন নেওয়া হবে। যদিও সেটা সত্যি ফোন ইন ছিল না। কিন্তু এমন মজার ব্যাপার ঘটলেও চাঁদ কোনোদিন রেগে যায়নি। হাসি মুখে সাংবাদিক দেখলেই কার্ড এগিয়ে দিত সে। নানা কমিটির নানা পদে বিরাজ করছে সে। এই হলো আমাদের সেই বিখ্যাত আফজল আলী চাঁদ।
কিন্তু এই সবের মাঝেও প্রতিবার ঈদের নামাজ পড়ার সময় সৌগত আর প্রকাশকে খবর দিয়ে বলতেন আমার বাড়ি চলে এসো তোমরা। মহিলারা নামাজ পড়বেন। সেই ছবিটা অসাধারন হবে। সেই সময় কাগজে এই ছবি উঠলেই সেটা বের হবেই। আর সেই ছবি তোলার জন্য আজকালের সৌগত আর আনন্দ বাজারের প্রকাশ চাঁদের ডানকুনির বাড়িতে চলে যেতো। ওর বাড়ির মহিলা সদস্যরা, বাড়ির আশপাশের মহিলারা নামাজ পড়ছেন। এটা একটা ভালো উদ্যোগ ছিল সেই সময়। নানা ওর আন্দোলনের ছবির মাঝে এটা একটু অন্য ছবির সন্ধান করা।

 আর এর মাঝেই চাঁদ একবার মা দুর্গা কে বরণ করবে মুসলিম মহিলারা। সেই ব্যবস্থাও প্রায় পাকা করে ফেলে সে। সাংবাদিকদের সেই খবরও দিয়ে দেয় সে। এ এক অভিনব ছবি হবে। হাজির দু একজন জেলার ফটোগ্রাফার। আজকাল এর সৌগত। আরও দু একজন। কিন্তু বরণ করার সময় সেই বোরখা পরা মহিলারা দুর্গা বেদীর কাছে যেতেই ফিসফাস গুঞ্জন শুরু হয়। বেগতিক দেখে চিত্র সাংবাদিকরা আর সেই স্পটে দাঁড়িয়ে থাকতে পারেনি। সেই ছবিও আর হয়নি তোলা। শুধু ছবির জন্য, খবরের জন্য, চাঁদ যে কোনো কাজ করতে পারে। এটাই ওর অন্যতম বৈশিষ্ট্য। যার ফলে সে রাজধানী আটকে দিয়েছে হাসি মুখে। যে সব মহিলাদের সেই আন্দোলনে এনেছিল সেদিন তারাও বেশ হকচকিয়ে গিয়েছিল। 

সেই চাঁদ মাঝে কিছুদিন বোধহয় তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গ ছেড়ে দিয়ে পিডিএস দলেও যোগ দেয়। সেটা বোধহয় অল্প কিছুদিন। সব দলেই একটু একটু করে সে নিজের নাম তুলে ফেলে। এরপর তাকে দেখা গেলো বিজেপির দলে। সোজা সে লোকসভা ভোটে বিজেপির প্রার্থী হয়ে যায়। বর্ধমান জেলা থেকে। আর প্রথমেই সে সরকারী দেওয়ালে নিজের নাম লিখে দেয় প্রার্থী হয়ে। যা নিয়ে খবর হয়, হৈ চৈ হয়। সেই দেওয়ালে তার লেখা নাম মুছে দেওয়া হয়। সেই খবরও করতে হয় সংবাদ মাধ্যমকে। আর চাঁদ বিনা বাধায় খবরে টিকে থাকে এই ভাবেই নানা উপায় অবলম্বন করে।

 একবার চাঁদ ভোটের সময় আন্দোলন করলো চন্ডীতলায় সে ভোটার তালিকা পোড়াবে পুলিশ প্রশাসনের সামনে। চাঁদ প্রথম থেকেই সাংবাদিকদের বলছে যে তার বক্তব্য আগে নিয়ে নেওয়া হোক। কিন্তু সাংবাদিকরাও নাছোড়বান্দা আগে ছবি হোক তারপর বাইট হবে চাঁদ এর। অনেক দড়ি টানাটানির পর ছবি হলো। চাঁদ ভোটার তালিকাতে আগুন ধরালো পুলিশের সামনেই। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ চাঁদকে ধরে নিয়ে গেলো জিপে তুলে। চাঁদ এর আফশোষ তার বাইট নেওয়া হলো না যে। পুলিসের জিপের ভেতর চাঁদের কি আফশোষ। আর হাত পা ছুঁড়ে পুলিশকে অনুনয় বিনয় করা একটি বার স্যার গাড়ি থামান আপনারা, আমি বাইট দিয়েই আবার আপনাদের সাথে থানায় যাবো। 

হ্যাঁ, এই আমাদের চাঁদ। এখন মাঝে মাঝেই দেখি ওকে হাইকোর্ট পাড়ায়। আঙুল তুলে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে গর্জে উঠে বলছে নানা কথা। নানা চ্যানেলে ইউটিউবে চ্যানেলে বাইট দিচ্ছে। বহুদিন আমার সাথে ওর কোনো যোগাযোগ নেই আর। কিন্তু সেই সময়ে শুধু একজন রাজনীতির ছোটো নেতা হয়েও শুধু একটু ছবি করার জন্য, কাগজে আর টিভির পর্দায় যে হাসিমুখে রেললাইনে শুয়ে পড়ে রাজধানী এক্সপ্রেসকে আটকে দিয়েছিল। 

এমনটা বোধহয় আর আমি কাউকেই দেখিনি আমার এই পঁয়ত্রিশ বছরের সাংবাদিকতার জীবনে। সত্যিই অসাধারণ আফজল আলী চাঁদ। ভালো থেকো তুমি। আর খবরের জন্য ভালো ছবির জন্য এমন করেই ঝাঁপিয়ে পড়ো তুমি বার বার। যাতে আমরা এই সংবাদ মাধ্যমের লোকরা অন্তত একটু ভালো ছবি, ভালো খবর পাই তোমার কাছ থেকে। 

রাজধানী এক্সপ্রেস আটকে দেওয়া চাঁদ - অভিজিৎ বসু।
পঁচিশ নভেম্বর দু হাজার চব্বিশ।
ছবি সৌজন্য গুগল।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ইটিভির পিনাকপাণি ঘোষ

কিছু মানুষ কত কাছে থেকেও পাশাপাশি এক জায়গায় বাস করেও একসাথে একসময় কাজ করেও যে কত দূরে রয়ে যান নিজের হাসিমুখ নিয়ে আর সেই চেনা ছন্দ নিয়ে সত্যিই বেশ ভালো মজার ব্যাপার কিন্তু এটা জীবনের মেঠো পথে। সেই ইটিভির বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে ঘুরে ঘুরে স্ট্রীট ফুডের ছবি তোলা আর নানা খবর করে খাওয়া দাওয়ার এপিসোড করে একসময়ে বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে যাওয়া ইটিভি নিউজে। আর আমাদের জেলায় বসে সেইসব হাঁ করে দেখা আর কেমন মনের ভেতর অস্থিরতা তৈরি হওয়া। একেই বলে কলকাতার রাজপথের সাংবাদিক বলে কথা।  সেই যে বার রাষ্ট্রপতি এলেন জয়কৃষ্ণ লাইব্রেরী প্রাঙ্গণে সেই অনুষ্ঠানের বিশেষ কার্ড জোগাড় করে দেওয়ার অনুরোধ করা ইটিভির চাকরি করার সুবাদে। কোনো রকমে সেই কার্ড জোগাড় করে এনে দেওয়া তাঁকে আর তাঁর পরিবারের সদস্যদের জন্য। আর সেই একদিন দুপুর বেলায় খুব সম্ভবত করোনা শেষ পর্বে বালিঘাট স্টেশন থেকে অফিস যাওয়ার সময় এসি পঞ্চাশ এর বাস এর ভিতরে দেখা হওয়ায় কত গল্প করা দুজন মিলে পুরনো দিনের। আবার উত্তরপাড়ার সেই বিখ্যাত চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে গিয়ে হাসি মুখে দেখা হয়ে যাওয়া রাতের বেলায় কাঁঠালবা...

আমাদের সবার মৃনাল দা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ এক বাবা আর ছেলের লড়াই এর গভীর গোপন কাহিনী। এই সাংবাদিকতার পেশায় এসে কত লড়াই, কত অসম যুদ্ধ, করে যে কেউ সংসার টিকিয়ে রাখতে পারে হাসি মুখে কাউকে কিছুই বুঝতে না দিয়ে। এমন করে কেউ টিকে থাকার চেষ্টা করেন সেটা বোধহয় আমার জানা হয়ে উঠত না কিছুতেই। যদি না এই পেশায় আমি গা ভাসাতাম এমন করে। জীবনের এই নানা টুকরো টুকরো ছবির কোলাজ ভেসে ওঠে এই রাতের অন্ধকারে আচমকা আমার মনের মাঝে। আর আমি চমকে উঠি কেমন করে তাদের সেই কোলাজ দেখে।  এমন এক চরিত্র, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী হয়ে কেমন আলগোছে, হাসিমুখে, নির্মোহ ভাবে, শুধু নিজের কাঁচা পাকা দাড়িতে হাত বুলিয়ে জীবনটা কাটিয়ে দিলো সে শুধুই আকাশ পানে তাকিয়ে। যে নীল আকাশের গা ঘেঁষে উড়ে যাওয়া সাদা বকের ডানায় লেগে থাকে মেঘের হালকা টুকরো। একদম যেনো সিনেমার পর্দার হিরোর মতোই। দেখে বোঝার উপায় নেই একদম। পেটে খাবার না থাকলেও মুখের হাসিটা অমলিন হয়েই বেঁচে আছে আজও এতোদিন পরেও। আর সেই বিখ্যাত সাদা পাকা নাসিরউদ্দিন স্টাইলের দাড়ি, কালো চুল, আর সব সময় ধোপদুরস্ত ফিটফাট একজন মানুষ। রাত নটা বাজলেই যাকে শ্রীরামপুরে...

শপিং মলের উদ্বোধনে সিঙ্গুর আন্দোলনের দাপুটে মন্ত্রী

নালিকুল স্টেশন বাজারে একটি শপিং মলের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বেচারাম মান্না হাজির। একসময় যাঁর অন্দোলনের ঠেলায় পড়ে দৌড়ে একপ্রকার পালিয়ে চলে যেতে হয়েছিল সিঙ্গুর থেকে টাটা কোম্পানিকে। যে আন্দোলনের দগদগে ঘা আর সেই স্মৃতি ধীরে ধীরে আজ প্রায় মিলিয়ে যেতে বসেছে আমাদের কাছ থেকে। আজ সেই চাষার ঘরের মানুষ না হলেও সেই কৃষক আর শ্রমিকের ন্যূনতম অধিকার নিয়ে যে আন্দোলন শুরু করে সারাটা জীবন কাটিয়ে দিলেন সেই মানুষটাকেই কেমন যেন আজ শপিং মলের উদ্বোধনে দেখে বেশ ভালই লাগলো আমার।  একদম নালিকুল স্টেশনের কাছে ঝাঁ চকচকে শপিং মল। দোকানে সাজানো জিনিস পত্র। আর সেখানেই আমাদের মাননীয় মন্ত্রী বেচারাম মান্না। একদম কেমন একটু আমার অচেনা লাগলো যেন। সেই মুড়ি খেয়ে আলুর তরকারি বা শশা খেয়ে আন্দোলন শুরু করা জমি আন্দোলন এর অন্যতম পথিকৃৎ নেতা আজ এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। তাহলে টাটা কোম্পানির বিরুদ্ধে যে জমি দখল নিয়ে আন্দোলন সেই আন্দোলন এর মধ্যে ছিল জোর করে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা। যদিও সেখানেও সেই সময়ের শাসকদলের কর্মসংস্থানের যুক্তি।তবে এই নতুন শপিং মলের উদ্বোধনে তো আর ...

ভীড়ের মাঝে একা

জীবন জুড়ে শুধুই ভীড় আর ভীড়। নানা ধরনের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় মানুষের গন্ধে, বর্ণে , স্বাদের ভীড়ে আমি একদম একা হয়ে যেতে চাই। যে ভীড় উপচে পড়া রাস্তায় শুধুই হেমন্তের ভোরে শিশিরের ফিসফিস শব্দ, পাখির কিচির মিচির আওয়াজ,ধানসিড়ি ওই নদীটির তীর ধরে ঘুঘুর আকুল মন কেমন করা ডাক, উদাসী শালিকের ঝাঁক বেঁধে উড়ে যাওয়া ওই হেমন্তের হলুদ ধানের মাঠ এর পাশ দিয়ে, হলুদ বসন্ত বৌরীর সেই আমলকীর গাছের পাতায়,আড়ালে আবডালে বসে কেমন যেন আমায় দেখে লজ্জা পাওয়া, আর তারপর চোখ নামিয়ে হঠাৎ করেই তার উড়ে চলে যাওয়া। আর মেঘের কোল ঘেঁষে সেই সাদা বকের, বুনো হাঁসের, আর সেই পানকৌড়ির জলে ভেজা ডানা মেলে উড়ে যাওয়া আকাশ জুড়ে। সত্যিই ওরাও যে ভিড়ের মাঝেই বড়ো একা। একা একাই ওদের যে এই বেঁচে থাকা। কেমন নিপাট হৈ চৈ হুল্লোড়হীন একটা জীবন নিয়ে বেশ মজা করে, আনন্দ করে। আর সেই ভোরের আলোয় আলোকিত হয়ে রাস্তার একপাশে গুটি শুটি মেরে শুয়ে থাকা ওই সাদা কালো ভুলো নামের কুকুরের। যে অন্তত এই সব মানুষদের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় একটু যেনো আলাদা , একটু যেনো অন্য রকমের। একটু একা একাই যেনো ওর এই আলগোছে জীবন কাটিয়...

গৌড় প্রাঙ্গণে আনন্দবাজার

গৌরপ্রাঙ্গনে শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যের আনন্দের মেলা আনন্দবাজার। মহালয়ার ভোরবেলায় ঢাকের বাদ্যি আর সানাইয়ের মন কেমন করা সুরে মেতে উঠলো শান্তিনিকেতনের গৌড়প্রাঙ্গণ। প্রতি বছরের মতো এই বছরও যে হবে আনন্দমেলা আনন্দবাজার। হ্যাঁ সত্যিই যেনো আনন্দের এই হাটে বেচাকেনার পসরা নিয়ে একদিনের জন্য বসে পড়া মন প্রাণ খুলে হৈ হুল্লোড় করে। এই মেলা শুরু হয় 1915 সালের 15 এপ্রিল নববর্ষের দিনে। কিন্তু আগে এই মেলাকে একসময় বলা হতো বৌঠাকুরাণীর হাট। সেই সময় আশ্রমের মহিলারা নিজেদের হাতের তৈরি জিনিস নিয়ে মেলায় বসতেন। মেলার আয়োজন করতেন তারা। আনন্দ করে বেচাকেনা হতো। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময় একবার গরমের ছুটির আগে এমন মেলা নাকি হয়েছিল। যার নাম ছিল আনন্দবাজার। পরে এই মেলার নামে হয়ে যায় আনন্দমেলা। সত্যিই আনন্দের এই মিলন মেলা।  প্রথমদিকে পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের ছেলেমেয়েদের নিয়ে এই মেলা শুরু হয়। পরে ধীরে ধীরে বিশ্বভারতীর সব বিভাগের পড়ুয়ারা এই মেলায় যোগদান করে। এই মেলার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো ছাত্রছাত্রীদের বেচা কেনার লাভের টাকার কিছু অংশ জমা পরে বিশ্বভারতীর সেবা বিভাগে। সেখান থেকে এ...