সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

এক টোটো চালকের চিঠি

কদিন ধরেই ভাবছিলাম বোকা বাক্সের পর্দায় এত বিচিত্র মুখের সমাহার কিন্তু এই মুখটা যে কেনো হঠাৎ করেই অন্তরালে চলে গেলো কে জানে। বাংলা টিভি চ্যানেলের জন্য এমন একটা সুন্দর মুখ মেলা ভার। যে মুখ দিয়ে অনেক কিছুই জয় করা যায়। সিনেমার পর্দায় দেখা সেই জিতেন্দ্র। কিন্তু সেই মানুষটা চিঠি লেখার জন্য ঠিকানা দিয়েছেন। সেই চিঠিতে যে যা ইচ্ছা লিখতে পারে তাকে। গালমন্দ করতে পারে। এমনকি ভালো কথাও বলা যাবে। পাহাড়ের দেশের মানুষ বলেই বোধহয় এমন আজব ইচ্ছা ওর। 


কবে কোথায় দেখা হয়েছিল আজ আর মনে পড়ে না আমার। সেই মহুয়ার অফিসে চাকরির সময় সিটি অফিসে। আমি সেই সময় কাজ করতাম ইটিভি নিউজ বাংলায়। মহুয়ার সিটি অফিস মির্জা গালিব স্ট্রীট এর কাছেই। সেই ঝকঝকে কর্পোরেট লুক এর সুন্দর রিপোর্টার। ভালো ব্যবহার, কি খবর আছে জানলে বিরক্তি নেই কোনও। অন্য কোনো ভুল খবর দিয়ে ক্রাইম রিপোর্টার হিসেবে বোকা বানিয়ে দেওয়া নেই। সেই সন্ধ্যার পরে রাস্তার ওপর চা খেতে খেতে আড্ডা মারা। কত যে স্মৃতি জড়িয়ে আছে ওর সাথে। 

বেশ ভালই লাগত আমার ওকে। কোনো দিন আমি অসুন্দর আর ও সুন্দর সেই নিয়ে কোনো হীনমন্যতায় ভুগতে হয়নি আমায়। ও বড়ো রিপোর্টার সুন্দর নিউজ রুম দিতে পারে আমি পারি না সেটা নিয়েও দুঃখ হয়নি কোনোদিন আমার। ওর সাথে কথা বলার জন্য জুনিয়র সুন্দরী মহিলা রিপোর্টাররা ছট ফট করে আর আমার এই বিষ থোবরা কেলানে মার্কা মুখের দিকে কেউ ঘুরেও তাকায় না। কথা বলা তো দুর অস্ত। সত্যিই কি যে গ্ল্যামার ওর উপচে পড়ছে আজও। যা আজও দেখে মনে হয় বলি ফোন করে দাদা কি রহস্য এর বলো তুমি। কিন্তু না, সাদা বাড়ির ওই রিপোর্টারকে ফোনে এই কথা বলার সাহস হয়না এই টোটো চালকের। যদিও আমাদের দুজনের একটা পাহাড়ি ঝর্নার মত সহজ সরল সম্পর্ক। যে সম্পর্কে কোনো জটিলতা নেই। যা আজও বিদ্যমান।

সেই মানুষটার ওই পোস্ট দেখে মনে হলো কিছু লেখা দরকার। হ্যাঁ, সেই আমাদের সবার প্রিয় হাসিখুশি উজ্জ্বল মুখের শিবাজী দে সরকার। সেই চিত্র, সপ্তর্ষি, শিবাজী আর লোহা। একে অপরের অভিন্ন হৃদয় জুটি বন্ধু। ওদের দেখেছি আমি ভবানী ভবনের করিডোরে ঘুরতে। সেই চায়ের দোকানে ঘুগনি রুটি খেতে। সেই হাতে হাত মিলিয়ে খবর করতে। রিপোর্টার হিসেবে শিবাজী অত্যন্ত ভালো একজন রিপোর্টার। যার নেটওয়ার্ক বেশ মজবুত। যার সোর্স খুব ভালো। যার সাথে থানার ওসি, কনস্টেবল আর বড়ো কর্তাদের ভালো সুসম্পর্ক। বহুদিন ওর সাথে আর দেখাই হয়না আমার। কথাও হয়না আর। 

ওর এই মাঝে মাঝে ওর পাহাড়ি জায়গার নানা ছবি দেখে মনে হয় ও বোধহয় এই শহরে বেশ ক্লান্ত হয়ে পড়েছে ট্রাম যাত্রার মতই। আলসেমি ওকে ঘিরে ধরেছে। ওর মনে হয় একটু মুক্তির স্বাদ পেতে বড়ো ইচ্ছা হয়। তাই শহুরে এই জীবন ছেড়ে বারবার ছুটে যেতে চায় সেই ওর ফেলে আসা অতীত দিনের স্মৃতি ঝলমল রাস্তায়। যে রাস্তায় নানা টুকরো টুকরো ছবি ওর মনের মণিকোঠায় আজও বেঁচে আছে। হাফিয়ে উঠেছে বোধহয় এই শহরে থাকতে থাকতে। না হলে কি আর আজকাল কেউ চিঠি লিখতে বলে তাকে। গাল দিয়ে চিঠি, ভালোবেসে চিঠি। চিঠি লেখার পাট যে কবেই উঠে গেছে। চিঠি যে মানুষের মনের আয়না। যে আয়নায় নিজেকে দেখতে চেয়ে ওর এই আবেদন দেখে বেশ মজা লাগলো আমার। 

একজন মানুষ এই দ্রুত ছুটে যাওয়ার যুগে, দ্রুত বদলে যাওয়ার যুগে, নিজেকে দ্রুত একে অপরকে হারিয়ে দিয়ে এগিয়ে চলে যাওয়ার যুগে কেমন চিঠি লিখে তাকে জানাতে বলছে। সত্যিই অসাধারণ এই পোস্ট দেখে কিছুটা ভয়ে,আর কিছুটা অবাক হয়ে এই চিঠি লিখে ফেললাম আমি তাকে। জানিনা এই চিঠি ওর মেলবক্সে কোনোদিন পৌঁছবে কি না। জানিনা এই টোটো চালকের লেখা চিঠি পড়ে ওর কোনোদিন আমার কথা মনে পড়বে কি না। 

শুধু এটা জানি আমার মত একজন ছোটো মানুষের লেখা এই চিঠি পরে ও নিশ্চয়ই আমায় গাল দেবে আর হেসে বলবে আরে অভিজিৎ বলো কি খবর তোমার। সেই যেদিন মহাকরণে শুনলাম শিবাজী দে সরকার আনন্দবাজার পত্রিকায় জয়েন করেছে সত্যিই বেশ ভালো লেগেছিল আমার। রঞ্জন দার সেনগুপ্ত হাত ধরে নাকি ওর প্রবেশ ঘটে এই কাগজে। একজন চেনা মানুষ সাদা বাড়ির দরজায় পা দিলো বেশ গর্বের কথা এটা। 


সেই লোহার সাথে নানা মজা করা, সেই চিত্রদীপ , সপ্তর্ষি আর শিবাজীর সেই ভবানী ভবনের গ্যারেজের কাছে দাঁড়িয়ে খবর হয়ে যাবার পর সন্ধ্যায় গল্প করা। আমার মত ডেঙ্গো ডোঙ্গলা রিপোর্টার না হলেও তাকে ডেকে চা খেতে বলা। এইসব স্মৃতিকি ভুলে থাকা যায়। না ভোলা উচিৎ। ভালো থেকো তুমি। যে সিনড্রোম তোমায় আহত করুক আর অ্যাটাক করুক তুমি ঠিক আগের মতই আন্তরিক হয়ে সবার সাথে মিলে মিশে হাসি খুশি হয়ে বিন্দাস জীবন কাটিয়ে যাও।

 জীবনের এই হাজারো ঝড় ঝাপটার মাঝে নিজেকে একা ভেব না তুমি। দেখবে তোমার আশেপাশে এমন অনেক টোটো চালক, রিক্সাওলা, বাজার ওলা, চায়ের দোকানে কাজ করা সাধারণ নগণ্য মানুষ আছে যারা তোমার ফ্যান। যারা তোমায় চিঠি লিখতে না পারলেও মনে মনে খুব ভালোবাসে তোমায়। তারা জানে যে এই সাদা বাড়ীর আপাত কঠিন গ্ল্যামার বয় এর একটা সুন্দর পাহাড়ী ঝর্নার মত মন আছে। যে মনের মাঝে এখনো নানা লেখা চিঠি পড়তে ইচ্ছা হয় তার। যে মনের মাঝে মাঝেই হারিয়ে যেতে ইচ্ছা হয় ওই পাহাড়ের কোলে, ঝর্ণার ধারে। ওই পুরোনো দিনে ফিরে যেতে ইচ্ছা হয় তার বারবার। 

চিঠি তো মানুষের মনের আয়না। সেই আয়নায় নিজেকে দেখো দেখবে জীবন বড়োই সুন্দর। প্রাপ্তি আর অপ্রাপ্তির মাঝে কেমন সুন্দর নিটোল এক জীবনকে সঙ্গে নিয়ে বাস করি আমরা সকলেই। যে জীবনে হাসি, কান্না, শোক, দুঃখ, জ্বালা, যন্ত্রণা সুখ আর অসুখ সব একসাথে পাশাপাশি গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকে। এদেরকে সঙ্গে নিয়েই তো আমাদের বেঁচে থাকা।

এক টোটো চালকের চিঠি - অভিজিৎ বসু।
চব্বিশ নভেম্বর, দু হাজার চব্বিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।

মন্তব্যসমূহ

  1. ‘কর্নেলকে কেউ লেখে না’- মার্কেসের সেই অমোঘ উপন্যাসের নামটাই যেন আজ আমাদের চরম বাস্তবতা।এই শত ব্যস্তময় সময়ে কেউ কাউকে চিঠি লেখে না।অথচ চিঠি পেতে আকুল কত মানুষ।এসএমএস, হোয়াটস অ্যাপের ডিজিটাল দেওয়া নেওয়া ছুঁতেই পারে না আমাদের মন।এই আবহে চিঠির আকুতির বিনিময়ে অভিজিত বসুর লেখা বেশ অন্যরকম।

    উত্তরমুছুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

জামালপুরের প্রদীপ দা

আজ আমার সাদা জীবনের কালো কথায় বর্ধমানের জামালপুরের সেই দাপুটে ঠোঁট কাটা সাংবাদিক প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় এর কথা। সেই বিখ্যাত সুভাষ তালুকদার এর কাগজ সংবাদে মাত্র এক টাকার কাগজে কাজ করা সংবাদ পত্রিকার দাপুটে সাংবাদিক সেই প্রদীপ দা। সেই মুখ্যমন্ত্রীর সভায় বাঁশের ব্যারিকেডের এপারে দূরে দাঁড়িয়েও যে খবর করা যায় সেটা বড়ো মিডিয়ার সাংবাদিকদের হাসি মুখে দেখিয়ে দিয়ে, আর তাদের খবরের ময়দানে গোল দিয়ে শুধু খবরকে ভালোবেসে ছোটো কাগজে কাজ করে চলা সর্বদা হাসি মুখের সেই আমাদের প্রদীপ চ্যাটার্জী দা।  কোথাও কোনো অন্যায় দেখলেই প্রতিবাদে মুখর হয়ে যাওয়া আর এক দৌড়ে বেরিয়ে পড়া ঝোলা কাঁধে সেই খবরের খোঁজে সেই জামালপুরের প্রত্যন্ত গ্রামের সেই প্রদীপ দা। সেই বিখ্যাত পন্ডিত রবিশঙ্কর আর উদয়শঙ্কর এর আপন মাসতুত ভাই এর ছেলে সেই প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় দাদা। সেই বামদের আমলে জামালপুরের এলাকায় দাপিয়ে খবর করে ছুটে বেড়ানো সেই প্রদীপ দা। সেই তৃণমূল আমলেও একভাবেই ছুটে বেরিয়ে কাজ করা আমাদের সদা ব্যস্ত প্রদীপ দা।  সেই বাবার অসুস্থতার কারনে বড়ো সংবাদ মাধ্যমে কাজ না করেও...

আমার স্যার কাজীদা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ আমার স্যার এর কথা। যার লেখা আজ হঠাৎ চোখে পড়লো একটি কাগজে। আর স্যার এর নামটা দেখেই মনে পড়ে গেলো নানান কথা। হ্যাঁ, সেই কাজী গোলাম গাউস সিদ্দিকী। যাঁর সাথে আমার আলাপ আর দেখা হয়েছিল সেই অজিতদার ফ্রিল্যান্স ছকু খানসামা লেনের ফ্রীল্যান্স প্রেস ক্লাবের অফিসে খুব সম্ভবত। হাসিখুশি বেশ অজাতশত্রু এই মানুষটিকে দেখেই আমার মনে হয়েছিল যে রিপোর্টারদের প্রভূত ক্ষমতা থাকে বোধহয়। তাই পকেটে পেন আর সেই ফোনের ছোট্টো নোটবুক দেখেই আমার মনে হয়, যে ক্ষমতার স্বাদ পাবার জন্য সেই সদ্য গ্র্যাজুয়েশন করে আমার কচি মনে সাংবাদিক হবার বাসনা জাগে সেই সময়।  কোনো প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক নয়, কোনো অফিসে মাছি মারা দশটা পাঁচটার লোয়ার ডিভিশন এর কেরানি নয়, মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ নয়, ল্যাবরেটরিতে টেকনিশিয়ান এর কাজ নয়, এল আই সি বা পোষ্ট অফিস এর এজেন্ট নয়, কোনো মুদি দোকানে হিসেব পত্র লেখার কাজ নয়, স্বাধীন ব্যবসা করা নয়। শুধুই সাংবাদিক হবার স্বাদ।  কাগজে সাদা কালো অক্ষরে নিজের নাম ছাপা হবে, সেই নাম দেখে বুক ফুলে যাবে, পাড়ায় প্রতিবেশীরা সহ স...

কুড়ি থালা দশ টাকা আর রসিক মুলুর জীবন

নাম মুলু হাঁসদা। বাংলা ঝাড়খণ্ড সীমানার চরিচা গ্রাম পঞ্চায়েত এর চর ইচ্ছা রঘুবরপুরের বাসিন্দা মুলু। আজ মুলুর জীবন কথা। গ্রামের নামটা ভারী অদ্ভুত। চর ইচ্ছা রঘুবরপুর। যে গ্রাম অন্য পাঁচটা গ্রামের মতই।সাদামাটা এই গ্রামে দারিদ্র্য, অপুষ্টি আর কর্মহীন জীবনের জলছবি সুস্পষ্ট। আর সেই গ্রামের মহিলারা নিজেদের সংসার রক্ষা করতে গাছের পাতাকে আঁকড়ে ধরে রেখেছে। গাছের পাতা মুলুদের জীবনের জিয়ন কাঠি। যে জিয়ন কাঠিতে তারা ভোর হতেই পেটের টানে চলে যায় জঙ্গলে। খস খস শব্দ করে পায় হেঁটে তারা পাতা তোলে। গাছ থেকে টুপ টাপ করে ঝড়ে পড়া পাতাকে একটা একটা করে নিজের শাড়ির আঁচলে ভরে নেয়। তার পর সব পাতাকে বস্তায় ভরে ঘরে ফেরে।  ঠিক যেভাবে তারা পুকুরে নেমে শামুক গেঁড়ি আর গুগলি তোলে। যে ভাবে তাদের উদর পূর্তি হবে বলে। আর এই পাতাও যে তাদের পেট ভরায়। একটা একটা পাতাকে নিজের সন্তানের মতো আলগোছে ছুঁয়ে বুকে জড়িয়ে ধরে চুমু খায় মুলু, বলে তোরা না থাকলে কি করতাম কে জানে। মাথার ওপর শাল সেগুনের বিশাল আকারের গাছগুলো চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে আর তারা চুপ করে শোনে মুলুর কথা।  একে অপ...

শুভ মকর সংক্রান্তি

মকর মানেই নতুন জামা কাক ভোরে স্নান, রাত্রি জেগে মিঠে সুরে টুসুমণির গান। মকর মানেই পিঠে - পুলির গন্ধে ম - ম হাওয়া, ডুলুং পাড়ে টুসুর মেলায় দল বেঁধে যাওয়া। মকর মানেই মোরগ লড়াই পাহুড় জেতার সুখ, সন্ধ্যা - রাতে মাংস পিঠের স্বাদে ভরা মুখ। মকর মানেই হাতি - ঘোড়ার পুজো করম তলে, সান্ধ্য হাওয়ায় মন উদাসী দিমির দিমির বোলে। আসলে আজ এই মকর সংক্রান্তির দিন, টুসু মেলার দিন, টুসু গানে নিজেকে মাতিয়ে দেবার দিন। অজয় এর ধারে জয়দেব কেঁদুলির মেলায় ভীড়ের মাঝে নিজেকে হারিয়ে দেবার দিন। অজয় এর জলে ডুব দিয়ে স্নান করে পূণ্য অর্জনের দিন। আর নদীর ধারে মোরগ লড়াই এর দিন। আকাশে ঘুড়ি ওড়ানোর দিন, সুতো লাটাই হাতে আকাশ পানে তাকিয়ে থাকার দিন। কেমন যেনো রাশির একটি স্থান থেকে অন্য রাশিতে স্থান পরিবর্তনের দিন। সূর্যের দেবতাকে সকালে উঠে স্নান সেরে প্রণাম জানিয়ে শক্তি সঞ্চয় এর দিন। সূর্যের উত্তর দিকে চলে যাবার দিন। ধীরে ধীরে শীতকাল চলে যাওয়ার দিন।  এই মকর সংক্রান্তি এর ইতিহাস ও ভারতীয় ঐতিহ্যের গভীর শিকড় রয়েছে। এটি কৃষি চক্র এবং ফসল কাটার মৌসুমের সাথে জড়িত। এই মকর সংক্রান্তি চ...