সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আমাদের সবার মৃনাল দা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ এক বাবা আর ছেলের লড়াই এর গভীর গোপন কাহিনী। এই সাংবাদিকতার পেশায় এসে কত লড়াই, কত অসম যুদ্ধ, করে যে কেউ সংসার টিকিয়ে রাখতে পারে হাসি মুখে কাউকে কিছুই বুঝতে না দিয়ে। এমন করে কেউ টিকে থাকার চেষ্টা করেন সেটা বোধহয় আমার জানা হয়ে উঠত না কিছুতেই। যদি না এই পেশায় আমি গা ভাসাতাম এমন করে। জীবনের এই নানা টুকরো টুকরো ছবির কোলাজ ভেসে ওঠে এই রাতের অন্ধকারে আচমকা আমার মনের মাঝে। আর আমি চমকে উঠি কেমন করে তাদের সেই কোলাজ দেখে। 


এমন এক চরিত্র, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী হয়ে কেমন আলগোছে, হাসিমুখে, নির্মোহ ভাবে, শুধু নিজের কাঁচা পাকা দাড়িতে হাত বুলিয়ে জীবনটা কাটিয়ে দিলো সে শুধুই আকাশ পানে তাকিয়ে। যে নীল আকাশের গা ঘেঁষে উড়ে যাওয়া সাদা বকের ডানায় লেগে থাকে মেঘের হালকা টুকরো। একদম যেনো সিনেমার পর্দার হিরোর মতোই। দেখে বোঝার উপায় নেই একদম। পেটে খাবার না থাকলেও মুখের হাসিটা অমলিন হয়েই বেঁচে আছে আজও এতোদিন পরেও। আর সেই বিখ্যাত সাদা পাকা নাসিরউদ্দিন স্টাইলের দাড়ি, কালো চুল, আর সব সময় ধোপদুরস্ত ফিটফাট একজন মানুষ। রাত নটা বাজলেই যাকে শ্রীরামপুরে স্টেশন এর কাছে বাটার মোড়ে আড্ডায় পাওয়া যায়। ঝড় জলকে উপেক্ষা করে হাজির তিনি রাতের আড্ডায়। 

হয়তো সারাজীবন তার সাংবাদিকতা করে খুব বেশি লাভ হলো না তার ব্যক্তিগত জীবনে। সংসার আর পরিবারকে সে খুব বেশি সুখের মুখ দেখাতে পারলো না সে কোনোদিনই। তবু সেই কালান্তর, দূরদর্শন, চ্যানেল টেন, আজতক , বর্তমান, টেলিগ্রাফ এমন নানা জায়গায় ঘুরে ঘুরে কাজ করে আর ভেসে ভেসে বেরিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলো এলোমেলো এলেবেলে হয়েই বিন্দাস হয়ে। আমার বেশ জানতে ইচ্ছা করে এইভাবেই কি, এমন নিরাসক্ত হয়ে বেঁচে থাকা যায়। সাদা কালো জীবনের ঘেরা টোপে এমন করে নিস্পৃহ হয়ে আর আলগোছে ফকিরের মতো জীবন কাটানো যায়। কে জানে হয়তো যায়। হয়তো তাঁর পক্ষেই সম্ভব এটা। যা আমি ভাবছি যায়না।

আজ আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায় তাই একাধারে সাংবাদিক, একাধারে শিল্পী, একাধারে শর্ট ফিল্ম ডিরেক্টর, একাধারে সেই শিল্পীর তুলির ছোঁয়ায় ব্লক প্রিন্টের নানা কাপড়ের ডিজাইন তৈরি করা শিল্পী, আবার ক্যামেরার পেছনে চোখ রেখে ছবি করতে সাহায্য করা এক বহুমুখী প্রতিভার মানুষ। আমাদের সবার সেই হাসি মুখের অতি বিনয়ী মৃণাল দা। সেই আজতকের মৃণাল দত্ত, সেই কালান্তর কাগজের রিপোর্টার মৃণাল দত্ত। সেই সাইকেল চালিয়ে এদিক সেদিক ঘুরে খুঁটে খবর সংগ্রহ করা মৃনাল দত্ত। সেই চ্যানেল টেন এর মৃণাল দা। সেই বর্তমানের কাগজে লিখে নাম বের হলে খুশি হয়ে কাগজ পাঠিয়ে দিয়ে দেখতে বলা মৃণাল দা। সেই আমার মেয়ের বৈশাখী নামকরণ করা মৃনাল দা। সেই রোদে জলে ঝড়ে বৃষ্টিতে ভিজে একাকার হয়ে একসাথে তিনজনে আমি, মিন্টে, মৃনালদা খবর করে খালি পেটে ঘরে ফেরা। রাস্তায় এক ভাঁড় চা খেয়ে খিদে মিটিয়ে হাসিমুখে ঘরে এসে বলা আজ সবাই দেখবে এই খবর।

আসলে প্রেমের টান এর থেকেও খবরের টান বড়ই মারাত্মক। জীবন, যৌবন, বার্ধক্যকে পাত্তা না দিয়ে কি করে যে এই পেশায় সেনাবাহিনীর অফিসারদের মতোই কমান্ডারদের মতোই এই সাংবাদিকতার জগতে হাসি মুখে বিরাজ করে সবাই কে জানে। এত কিছু আজ লিখতাম না আমি। শুধু একবছর আগের একটা ছবি দেখে মনে হলো এতগুলো কথা। যার নিজের চোখের জল শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে সে মুছিয়ে দিচ্ছে জগৎ সংসারের প্রভুর চোখের জল নিজের হাতে। 

কিছু কিছু মানুষ বোধহয় এমনই হয়। একটু আত্ম ভোলা আর ফকির টাইপের। মৃণালদা বরাবর তেমন প্রকৃতির একজন মানুষ। তরুণ মুখার্জীদার হাত ধরে এই পেশায় আসার কথা স্বীকার করতে তাঁর কোনো দ্বিধা নেই। আসলে এটাই আর আজকাল কজন স্বীকার করে পুরনো দিনের স্মৃতি আর গভীর গোপন কথা। যা আড়ালে আবডালে রেখে দিয়েই বেশি আনন্দ উপভোগ করে সবাই। কে উপকার করলো তার কথা স্মরণ করে লাভ কি। 

সাংবাদিকতার পেশায় থেকেও বাবা আর ছেলের এখন অন্য জগৎকে আঁকড়ে ধরে এগিয়ে চলা। ভিন্ন জগতে বিচরণ করা আপন ছন্দে। গানের সুরের সৃষ্টির নেশায় মগ্ন এখন মৃনালদার ছেলে। আর নানা ধরনের স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবি করে সৃষ্টির নেশায় মগ্ন তিনি নিজেই। বাবা আর ছেলের এই জুটির গল্প শুনে বেশ ভালো লাগে আমার। নানা জায়গায় পুরস্কার গ্রহণের ডাক পাওয়া। দেশে বিদেশে তাঁদের তৈরি ফিল্ম সম্মানিত হওয়া। অর্থের অভাবে সেই সব জায়গায় যেতে না পারলেও বেশ ভালো লাগে তাঁদের নিজেরও এই স্বীকৃতি দেখে। এই পাওয়া তো কম বড়ো পাওয়া নয় যে। 

যে সাংবাদিকতার নেশা তাঁকে সারাজীবন দৌড় করিয়ে বেরিয়েছে সাইকেল নিয়ে। আজ সেই ফিল্মের নেশা, ক্যামেরার নেশা তাঁকে ছুটিয়ে বেড়ায় এদিক থেকে ওদিক। কখনও ঘাটালের গ্রামে, কখনও লাল পলাশের দেশে পুরুলিয়ায়। আবার কখনও বাঁকুড়ার আদিবাসী গ্রামে ছুটে বেড়ায় তাঁর উদাসী বাউলমন। আগে মনসা পূজো হলেই নিমন্ত্রণ করতেন মৃণালদার মা। আজ মাসিমা নেই। যেতে হতো আমায় সেই দিন। আর সেই দূর্গা পূজোর সময় ঠাকুর দেখতে তারাপুকুর এলাকায় গেলেই আমি ফোন করতাম মৃণালদা আছেন আপনি। আর হাসি মুখে বলতেন দাঁড়াও অভিজিৎ আমি আসছি। বলে হাজির হয়ে যেতেন তিনি পূজোর মাঠে। আর লাইনে দাঁড়িয়ে না থেকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে সব দেখাতেন তিনি হাসিমুখে। কোনোদিন বিরক্ত হতে দেখিনি আমি এর জন্য। সোমা আমি আমার মেয়েকে যত্ন করে প্রতিমা আর মণ্ডপ দেখিযে খুশী হতেন তিনি।
আমার মেয়ের জন্মের সময় শ্রীরামপুর ওয়ালস হাসপাতালে সবার সাথে দাঁড়িয়ে থাকা সেই সারা দুপুর ধরে। পয়লা বৈশাখে জন্ম হয়েছে বলে মেয়ের বৈশাখী নাম দেওয়া। এই সব তো আর ভুলে যাওয়া যাবে না কিছুতেই কোনও দিন কোনো সময়। সেই হাসপাতাল থেকে কিনে আনা বোনকে বাড়ী নিয়ে যেতে হবে তাই বাবার সাইকেল চেপে মৃণালদার ছেলের নন্দী মাঠে ইটিভির অফিসে আসা। বোনকে সে কিনে নিয়ে বাড়ী যাবেই দুপুর বেলায় এই বায়না করা। তারপর অনেক ভুলিয়ে বোনকে পড়ে নিয়ে যাওয়া যাবে বলে তাকে শান্ত করা। আজ মৃণলদার মুখে সেই ছেলেই ধীরে ধীরে গানের জগতে প্রবেশ করে অনেক ওপরে বিচরণ করছে শুনে ভালো লাগলো আমার ভীষণ। 

সত্যিই বাবা আর ছেলের এই যুগলবন্দী ধ্রুপদী জীবনের নাট্য মঞ্চের এই ঠুংরি অনুষ্ঠান বেশ মনোমুগ্ধকর। এই জীবনের দৌড়, এই জীবনের পথে নিজেদের মতো করেই বেঁচে থাকার চেষ্টা করা এটা বেশ ভালো লাগে আমার। কোনও কাউকে কিছু না বলে, নীরবে নিভৃতে ভাঙা পায়ের প্রভুর চোখের জল মুছিয়ে নিজের চোখের জলকে অক্লেশে হাত দিয়ে মুছে বেঁচে থাকার এই নিরন্তর চেষ্টা সত্যিই বেশ বড় ব্যাপার এটা। 

ফিল্মের পর্দায় নায়ক হয়েও কেমন করে যেন জীবনের এই ট্র্যাজেডির একজন মানুষ যে সারাজীবন ধরেই দৌড়ে বেড়ালো। এদিক থেকে ওদিক। ওদিক থেকে সেদিক। চোখে কালো চশমা পরে দিনে রাতে কাউকে বুঝতে না দিয়ে। তাঁর চোখের জলে রাতের অন্ধকারে কতটা বালিশ ভিজে যায় আজও সেটা হয়তো আমরা কেউই জানিনা। তবু সেই কান্নাকে বুকে চেপে নাসিরউদ্দিন শাহ স্টাইলের হাসিমুখ নিয়েই বাটার মোড়ের মৃণাল দা আজও উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতোই জ্বল জ্বল করছে নিজের সপ্রতিভতায় হাসি মুখেই। ভালো থাকবেন দাদা। এমন হাসি মুখে নির্মোহভাবে বাকী জীবনটা কাটিয়ে দিন দাদা। কাউকে পাত্তা না দিয়ে নিজের স্টাইলে ব্যাট করুন। 

আমাদের সবার মৃণাল দা - অভিজিৎ বসু।
এগারো ডিসেম্বর, দু হাজার চব্বিশ।
ছবি সৌজন্যে ফেসবুক।

মন্তব্যসমূহ

  1. 'আমাদের মৃনালদা 'লেখাটি পড়ে ভাই অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।মৃণাল ও ছেলের অনেক না জানা কথা জানতে পারলাম। আপনার লেখার সাবলিলতা মুগ্ধ করলো। মৃণালের সাথে অনেক ছোটবেলা থেকেই চেনা। কিন্তু এখন যোগাযোগ কমে যাওয়ায় অনেক কিছুই জানি না। শ্রদ্ধায় মাথা নত হয় ওর কর্ম কান্ডর কাছে।

    উত্তরমুছুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ইটিভির পিনাকপাণি ঘোষ

কিছু মানুষ কত কাছে থেকেও পাশাপাশি এক জায়গায় বাস করেও একসাথে একসময় কাজ করেও যে কত দূরে রয়ে যান নিজের হাসিমুখ নিয়ে আর সেই চেনা ছন্দ নিয়ে সত্যিই বেশ ভালো মজার ব্যাপার কিন্তু এটা জীবনের মেঠো পথে। সেই ইটিভির বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে ঘুরে ঘুরে স্ট্রীট ফুডের ছবি তোলা আর নানা খবর করে খাওয়া দাওয়ার এপিসোড করে একসময়ে বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে যাওয়া ইটিভি নিউজে। আর আমাদের জেলায় বসে সেইসব হাঁ করে দেখা আর কেমন মনের ভেতর অস্থিরতা তৈরি হওয়া। একেই বলে কলকাতার রাজপথের সাংবাদিক বলে কথা।  সেই যে বার রাষ্ট্রপতি এলেন জয়কৃষ্ণ লাইব্রেরী প্রাঙ্গণে সেই অনুষ্ঠানের বিশেষ কার্ড জোগাড় করে দেওয়ার অনুরোধ করা ইটিভির চাকরি করার সুবাদে। কোনো রকমে সেই কার্ড জোগাড় করে এনে দেওয়া তাঁকে আর তাঁর পরিবারের সদস্যদের জন্য। আর সেই একদিন দুপুর বেলায় খুব সম্ভবত করোনা শেষ পর্বে বালিঘাট স্টেশন থেকে অফিস যাওয়ার সময় এসি পঞ্চাশ এর বাস এর ভিতরে দেখা হওয়ায় কত গল্প করা দুজন মিলে পুরনো দিনের। আবার উত্তরপাড়ার সেই বিখ্যাত চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে গিয়ে হাসি মুখে দেখা হয়ে যাওয়া রাতের বেলায় কাঁঠালবা...

শপিং মলের উদ্বোধনে সিঙ্গুর আন্দোলনের দাপুটে মন্ত্রী

নালিকুল স্টেশন বাজারে একটি শপিং মলের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বেচারাম মান্না হাজির। একসময় যাঁর অন্দোলনের ঠেলায় পড়ে দৌড়ে একপ্রকার পালিয়ে চলে যেতে হয়েছিল সিঙ্গুর থেকে টাটা কোম্পানিকে। যে আন্দোলনের দগদগে ঘা আর সেই স্মৃতি ধীরে ধীরে আজ প্রায় মিলিয়ে যেতে বসেছে আমাদের কাছ থেকে। আজ সেই চাষার ঘরের মানুষ না হলেও সেই কৃষক আর শ্রমিকের ন্যূনতম অধিকার নিয়ে যে আন্দোলন শুরু করে সারাটা জীবন কাটিয়ে দিলেন সেই মানুষটাকেই কেমন যেন আজ শপিং মলের উদ্বোধনে দেখে বেশ ভালই লাগলো আমার।  একদম নালিকুল স্টেশনের কাছে ঝাঁ চকচকে শপিং মল। দোকানে সাজানো জিনিস পত্র। আর সেখানেই আমাদের মাননীয় মন্ত্রী বেচারাম মান্না। একদম কেমন একটু আমার অচেনা লাগলো যেন। সেই মুড়ি খেয়ে আলুর তরকারি বা শশা খেয়ে আন্দোলন শুরু করা জমি আন্দোলন এর অন্যতম পথিকৃৎ নেতা আজ এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। তাহলে টাটা কোম্পানির বিরুদ্ধে যে জমি দখল নিয়ে আন্দোলন সেই আন্দোলন এর মধ্যে ছিল জোর করে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা। যদিও সেখানেও সেই সময়ের শাসকদলের কর্মসংস্থানের যুক্তি।তবে এই নতুন শপিং মলের উদ্বোধনে তো আর ...

ভীড়ের মাঝে একা

জীবন জুড়ে শুধুই ভীড় আর ভীড়। নানা ধরনের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় মানুষের গন্ধে, বর্ণে , স্বাদের ভীড়ে আমি একদম একা হয়ে যেতে চাই। যে ভীড় উপচে পড়া রাস্তায় শুধুই হেমন্তের ভোরে শিশিরের ফিসফিস শব্দ, পাখির কিচির মিচির আওয়াজ,ধানসিড়ি ওই নদীটির তীর ধরে ঘুঘুর আকুল মন কেমন করা ডাক, উদাসী শালিকের ঝাঁক বেঁধে উড়ে যাওয়া ওই হেমন্তের হলুদ ধানের মাঠ এর পাশ দিয়ে, হলুদ বসন্ত বৌরীর সেই আমলকীর গাছের পাতায়,আড়ালে আবডালে বসে কেমন যেন আমায় দেখে লজ্জা পাওয়া, আর তারপর চোখ নামিয়ে হঠাৎ করেই তার উড়ে চলে যাওয়া। আর মেঘের কোল ঘেঁষে সেই সাদা বকের, বুনো হাঁসের, আর সেই পানকৌড়ির জলে ভেজা ডানা মেলে উড়ে যাওয়া আকাশ জুড়ে। সত্যিই ওরাও যে ভিড়ের মাঝেই বড়ো একা। একা একাই ওদের যে এই বেঁচে থাকা। কেমন নিপাট হৈ চৈ হুল্লোড়হীন একটা জীবন নিয়ে বেশ মজা করে, আনন্দ করে। আর সেই ভোরের আলোয় আলোকিত হয়ে রাস্তার একপাশে গুটি শুটি মেরে শুয়ে থাকা ওই সাদা কালো ভুলো নামের কুকুরের। যে অন্তত এই সব মানুষদের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় একটু যেনো আলাদা , একটু যেনো অন্য রকমের। একটু একা একাই যেনো ওর এই আলগোছে জীবন কাটিয়...

গৌড় প্রাঙ্গণে আনন্দবাজার

গৌরপ্রাঙ্গনে শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যের আনন্দের মেলা আনন্দবাজার। মহালয়ার ভোরবেলায় ঢাকের বাদ্যি আর সানাইয়ের মন কেমন করা সুরে মেতে উঠলো শান্তিনিকেতনের গৌড়প্রাঙ্গণ। প্রতি বছরের মতো এই বছরও যে হবে আনন্দমেলা আনন্দবাজার। হ্যাঁ সত্যিই যেনো আনন্দের এই হাটে বেচাকেনার পসরা নিয়ে একদিনের জন্য বসে পড়া মন প্রাণ খুলে হৈ হুল্লোড় করে। এই মেলা শুরু হয় 1915 সালের 15 এপ্রিল নববর্ষের দিনে। কিন্তু আগে এই মেলাকে একসময় বলা হতো বৌঠাকুরাণীর হাট। সেই সময় আশ্রমের মহিলারা নিজেদের হাতের তৈরি জিনিস নিয়ে মেলায় বসতেন। মেলার আয়োজন করতেন তারা। আনন্দ করে বেচাকেনা হতো। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময় একবার গরমের ছুটির আগে এমন মেলা নাকি হয়েছিল। যার নাম ছিল আনন্দবাজার। পরে এই মেলার নামে হয়ে যায় আনন্দমেলা। সত্যিই আনন্দের এই মিলন মেলা।  প্রথমদিকে পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের ছেলেমেয়েদের নিয়ে এই মেলা শুরু হয়। পরে ধীরে ধীরে বিশ্বভারতীর সব বিভাগের পড়ুয়ারা এই মেলায় যোগদান করে। এই মেলার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো ছাত্রছাত্রীদের বেচা কেনার লাভের টাকার কিছু অংশ জমা পরে বিশ্বভারতীর সেবা বিভাগে। সেখান থেকে এ...