সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ইটিভির ক্যামেরাম্যান রাও

রাতের বেলায় হাজার হাজার মানুষের ভীড়। আমার এই জানলায় কতো যে এমন চেনা মানুষ ভীড় করে তার ঠিক নেই। আর আমি সমুদ্রের মাঝে নানা চরিত্রের মাঝে নিজেকে কেমন যেনো অসহায় হয়ে হাত পা ছুঁড়ি। তাদেরকে আঁকড়ে ধরি পুরোনো সম্পর্কের জোরে। ঠিক তেমনিই একজন মানুষ সুদূর অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে বাংলায় এসে ক্যামেরা কাঁধে নিয়ে ঘুরে বেড়ালো এই বাংলার মাটিতে। কেমন ইডলি ধোসা আর সম্বর বড়া ছেড়ে মাছে ভাতে অভ্যস্ত হলো নিজে নিজেই হাসি মুখে। আর সেই বিখ্যাত ওর নিজের ভাষা ছেড়ে ভাঙা ভাঙা বাংলায় কথা বলতেও শিখে গেলো নিজের বুকের জোরে। 


সত্যিই এই গোটা জার্নি পথ পেরিয়ে আজ সে কোথায় আমি জানি না আর। সেই ইটিভির কলকাতার তিন নম্বর চৌরঙ্গী স্কোয়ার এর অফিস পড়ে সেই মির্জা গালিব স্ট্রিট এর অফিস ক্যামেরার জমজমাট ডিপার্টমেন্ট। সেই মানস, ফান্টা, সৌমেন, মনোজ, দিলীপ দা তো আজ আর নেই মনে হয়, সেই শুভেন্দু, আর সেই বিখ্যাত ক্যামেরাম্যান আশীষ, জয়, আরও কতজন যে ছিল। আর এদের সবার মাথার উপর ছিলেন দেবাশীষ মৈত্র। 

আর তাদের মাঝেই ভাত খেয়ে ঝিমুনি ধরে চুপ করে বসে থাকা কেভিকে প্রসাদ রাও। আমাদের ক্যামেরাম্যান রাও। হায়দরাবাদ এর সবার সাথে যাঁর হট লাইন বলে অনেকেই মনে করত সেই সময়। ভাঙা বাংলায় কথা বলে নিজে অন্য রাজ্যে থেকে কাজ করতে এসে মিশে যাওয়া এই রাজ্যের মানুষদের সাথে হাসিঠাট্টা করে আর তাদের কাছের জন হয়ে। সেই নানা গল্প আর অ্যাসাইনমেন্টে গিয়ে নানা ধরনের কর্মকাণ্ড ঘটানোর ফলে হাসির খোরাক হয়ে যাওয়া সবার কাছেই নানা সময়ে।

তবু পরিবার নিয়ে সারাজীবন হাসি মুখেই কেমন করে যেন কাটিয়ে দিলো কেভিকে প্রসাদ রাও এই বাংলায়। ওর মুখের অমলিন হাসি দিয়ে জয় করলো সবার মন। ওর দক্ষিণী নায়কের মত ষ্টাইল করে কালো রোদ চশমা পরে হাঁটা চলা দেখে বেশ ভালই লাগত আমারও। আমায় বলতো সে, কিরে বল তুই কিতু। কিছু উচ্চারণ করতে গেলে ওর দাঁত ভেঙে যাবার অবস্থা হতো যেনো।


 তবু কেমন করে যে সে সেই হায়দ্রাবাদ ছেড়ে নিজের জায়গা ছেড়ে এই আমাদের বাঙলাতেই থেকে গেলো ও কে জানে। সত্যিই কতজন যে এমন আড়ালে আবডালে লুকিয়ে আছে। জীবনের নানা অধ্যায়ে হাসি মুখে কখনও বুকের মাঝে কষ্টকে চেপে রেখে বেঁচে আছে আজও তারা সব চুপটি করেই। যাঁদের সাথে দেখা হতো এক সময় প্রতিদিন। আজ তাঁরাই কেমন দূরে সরে গেছে, বহু দূরে। 

সত্যিই এই জীবন আর জীবনের আশেপাশে ঘুরে বেড়ানো মানুষজন বেশ রাতের অন্ধকারে আমার জানলায় ধাক্কা দেয় তারা সব টকটক করে। আমি উঁকি মেরে দেখি তাঁদের সেই চেনা আবছা অবয়ব। বেশ ভালো লাগে আমার। আমি হাত বাড়িয়ে তাদের ধরতে যাই কিন্তু তাঁরা আবছা অন্ধকারে মিলিয়ে যায়। ভালো থেকো তুমি রাও। 

ইটিভির ক্যামেরাম্যান রাও - অভিজিৎ বসু।
ঊনত্রিশ ডিসেম্বর, দু হাজার চব্বিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অ্যাঙ্কর মিমির কথা

'আমরা যদি এই আকালেও স্বপ্ন দেখি কার তাতে কী?' বাহ দারুন সুন্দর এই কথা। স্বপ্ন দেখার কি কোনো সময় হয় নাকি। পঞ্জিকার পাতা উল্টে তিথি নক্ষত্র দেখে কি স্বপ্ন দেখা যায়। যে স্বপ্ন বাঁচার খোরাক জোগায়। যা দেখে এই দৌড় ঝাঁপ করা জীবনে কেমন একটা স্বস্তি মেলে সেই স্বপ্ন সফল হোক বা না হোক। যে কোনোও বয়সে এই স্বপ্ন দেখা যায়। ফেসবুকের পাতায় সেই কথা লেখা দেখে মনে মনে কিছুটা সাহস সঞ্চয় করেই এই রাত দুপুরে ভয়ে কম্পমান হয়েই ওকে নিয়ে লেখার চেষ্টা করা। সেই পোদ্দার কোর্টের অফিসে সেই দুর থেকেই অচেনা জগতের সেই খবরের বিখ্যাত সব নানা ধরনের খবর পাঠিকাদের ভীড়ে তাঁকে দুর থেকে দেখা। একদম অন্য এক গ্রহের বাসিন্দা যেনো। সেই কালামের দোকানে হয়তো কোনোও সময় চা খেতে গিয়ে দেখতে পাওয়া। সেই লিফটের কুঠুরিতে একসাথে ওঠা বা নামা কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখেই। কিন্তু সেই অন্য খবর পড়া অ্যাঙ্কর দের সাথে সহজ সরল ভাবে মিশে যাওয়ার সাহস হয়নি আমার কোনোও দিন তাঁর সাথে। আজ আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায় আমার আঁকিবুঁকি ব্লগের পাতায় সেই ২৪ ঘণ্টার পোদ্দার কোর্টের অফিসের বিখ্যাত অ্যাঙ্কর মিমির কথা। ...

এলোমেলো , এলেবেলে বিন্দাস জীবন ও জন্মদিন

দেখতে দেখতে বছরের পর বছর গড়িয়ে যায়। আসলে এই অচলাবস্থা আর অকর্মণ্য দিনযাপনের একটা জীবন কাটিয়ে দিতে দিতে বেশ আমি কেমন যেন এডজাস্ট করে নিয়েছি নিজের সাথে নিজেরই এক অদ্ভুত সহাবস্থান। আমার জীবনের সাথে ক্রমেই দ্রুত কমতে থাকে যেনো মৃত্যুর দূরত্ব। দীর্ঘ দিনের জীবনের ঘন্টা ধ্বনিতে কেমন অচেনা সুরের সুর মূর্ছনা বেজে ওঠে ঠিক যেনো ওই গির্জার ঘরে জিঙ্গেল বেল, জিঙ্গেল বেল এর সুরের মতই আচমকা রাত বারোটা বাজলেই এই একত্রিশ মে।  যার তাল, লয় আর ছন্দে আন্দোলিত হয় এই জীবন আর জীবনের নানা জলছবি। যে ছবির কোলাজে ধরা পড়ে হাসি কান্না, সুখ আর দুঃখের নানা অনুভব। যে অনুভূতির জারক রসে আমি জারিত হই প্রতি মুহূর্তে। আর তাই তো বোধহয় সেই ছোটবেলার দিন এর কথা মনে পড়ে গেলেই সেই ঝাপসা হয়ে যাওয়া ধূসর হয়ে যাওয়া সেই ছবির সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে ইচ্ছা হয় আমার বড়ো এই আজকের দিনে।  সেই পুরোনো দিনের ভালোবাসার স্পর্শ আর স্মৃতি রোমন্থন করা একটি ছবি। মায়ের নিরাপদ কোলে ঠিক নয় চুপটি করে পাশে বসে আছি আমি একদম ফিট ফাট হয়ে আপন মনে ভদ্র শান্ত ছেলের মতোই যা আমি মোটেও নয়। আজকের সেই এ...

যা দেখি…প্রতিদিন মনে পড়ে কত… স্মৃতির পথ ধরে হাঁটি… লিখি…

ইটিভির অ্যাঙ্কর অঙ্কুর

ভাবা যায় এই ভুবন ভোলানো হাসিমুখের বিখ্যাত অ্যাঙ্করও নকল হতে পারে নাকি কোনোভাবে। হতেই পারে না একদম এটা। কোনোভাবেই এটা মেনে নেওয়া যায় না আর বিশ্বাস করাও যায় না। ওর এই পোস্ট দেখে সেটাই মনে হলো আমার সবার প্রথমেই। আসলে এই জীবনের পথে হাঁটতে হাঁটতে আসল আর নকলের এই গা ঘেঁষাঘেঁষির ভীড়ে পার্থক্য বোঝাই যে দায়। কে আসল বন্ধু আর কে নকল বন্ধু সেটাই বোঝা মুশকিল। সেটাকে নির্ধারণ করা যে বড়ই দুষ্কর কাজ। সেটাই যে আজকাল আর ঠিক করে ঠাওর করতে পারি না আমি এই বুড়ো বয়সে এসে।  আজ সাদা জীবনের কালো কথায় আমার এই আঁকিবুঁকি ব্লগে তাই সেই যার কোলে চেপে বাসে করে জীবনে প্রথম বার দুরু দুরু বুকে রামোজি ফিল্ম সিটিতে গিয়েছিলাম আমি বেশ ভয়ে আর আতঙ্কে যদি চেয়ারম্যান এর সামনে যেতে হয় আর ইংরাজিতে কথা বলতে হয় এই ভয়ে। সেই ভীড় বাসে বসতে জায়গা না পেয়ে সেই তাঁর কথা। সেই যে সারাদিন অফিস করে হায়দরাবাদ এর বাংলা ডেস্ক থেকে ধ্রুব রাতে ওর বাড়িতে ভাত খাবার জন্য নেমতন্ন করলো আমায় গরম ভাত, ডাল আর আলুভাজা রান্না করলো রূপা ওর শরীর খারাপ নিয়েও সেদিন কত কষ্ট করে। সেই খেতে দেবার সময় ওদের ঘরে খাবা...

বিনোদন রিপোর্টার দেবপ্রিয়

দেবপ্রিয় দত্ত মজুমদার। ওর সাথে কোথাও একসাথে কাজ করা হয়নি আমার। ওর খবরের ফিল্ড একদম আলাদা এন্টারটেনমেন্ট। আর আমার শুধুই সাধারণ খবর। কখনও জেলার খবর,আর কলকাতার খবর। রাজনীতির খবর নিয়েই ঘুরে বেড়ানো। তবু কেনো জানিনা ওর শান্তিনিকেতনে আসার খবর শুনেই ওকে সাহস করে আমার নম্বর দিলাম। এমনি কোনোও কারণ ছাড়াই যদি যোগাযোগ হয়। যদি দেখা হয়। কলকাতার গন্ধ আছে। মিডিয়ার একটা বলয় গায়ে জড়িয়ে আছে। আর কি শুধুই যদি দেখা হয়ে যায় এই আশায়।  চমক অপেক্ষা করেছিল আমার জন্য। পরদিন ফোনে যোগাযোগ করলো ও নিজেই। কথা হলো দু চারটে আমাদের। কোথায় থাকো তুমি জিজ্ঞাসা করলো। আর সত্যিই আমি টোটো চালকের কাজ করি কি না যেটা নিয়ে ওর নিজেরও একটা সন্দেহ ছিল মনে মনে সেটা পরিষ্কার করে দিলাম আমি ওকে। কিন্তু যেনো কতদিনের চেনা একজন মানুষ। কত আপন ছন্দে কথা বলা ওর। যেটা আমায় আকর্ষিত করলো বেশ। ওর অনুষ্ঠান যেটা হচ্ছে শান্তিনিকেতনে সেখানে আমার মতো একজন বাতিল মানূষকে আসতে বললো ও নিমন্ত্রণ জানালো সপরিবারে।  আমি একটু আবেগ প্রবণ মানুষ। আমি চলে গেলাম সেই অনুষ্ঠানে ওর আমন্ত্রণে। যা সচরাচর আমি কো...