সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আমাদের সুমন গাঙ্গুলী

কখনও পকেটে পেন আর হাতে নোটবুক নিয়ে দ্রুত খবর নোট করে হাসি মুখের সাংবাদিক মহাকরণে। আবার কখনও রাজনৈতিক দলের হয়ে টিভির বিতর্কের শো তে বসে গলার শিরা ফুলিয়ে আর হাত তুলে যুক্তি তর্কের শক্ত জাল বোনার চেষ্টা করা দুর্বল দলের প্রতিনিধিত্ব করেও। আবার কখনও পাহাড়ের নেতার সাথে গিয়ে মিটিং করা। রোশন গিরি বা অন্য কারুর সঙ্গে। আবার কোনও সময় দিল্লির কোনও কংগ্রেসের নেতা এলেই হাসিমুখে তাঁর সাথেও সেলফি তোলা। 

রাজ্যের তৃণমূল সরকারের কোনো সময় কড়া সমালোচনা করা। আবার কোনও সময় নিজে সাংবাদিক হয়েও সাংবাদিকদের নানা ধরনের তাঁদের অবস্থান নিয়ে কঠিন মন্তব্য করে ফেসবুকে পোস্ট করা। আর এই সবের মাঝেই নানা গানের মঞ্চে দাঁড়িয়ে গলা ছেড়ে প্রাণ খুলে মন দিয়ে গান গাওয়া। কোনটা ছেড়ে আর কোনটা বলবো আমি। সত্যিই অসাধারণ এই রিপোর্টার কাম রাজনীতির বিতর্কের শো তে অংশ নেওয়া কংগ্রেসের দলের গেস্ট, থেকে শুরু করে গায়ক সুমন গাঙ্গুলী। আমাদের সবার সেই হাসি মুখের সুমন। আজ সাদা জীবনের কালো কথায় সেই নানা গুণের অধিকারী সেই কল্যানী থেকে ট্রেন ধরে কলকাতায় আসা সব সময় ব্যস্ত সেই সুমনের কথা।

 যে কোনও কাজ করে দেবে বলে হাসি মুখে হ্যাঁ বলা সেই সুমন। সেই হঠাৎ মাঝে মাঝেই ফোনে বলা দাদা একটা কিছু করার চেষ্টা চলছে। দেখো তুমি হলেই তোমায় খবর দেবো আমি ঠিক সময়েই। সেই শান্তিনিকেতন এসে ওর আমায় হঠাৎ করেই ফোন করা। আমার রতনপল্লীর বাড়ীতে বসে গল্প করা আর আড্ডা মারা। দাদা আমি আসছি বলে বিরাট কালো বোলেরো গাড়ী হাঁকিয়ে চলে আসা আমার বাড়ীর সামনে। এইসব দেখে আমার বেশ ভালোই লাগে কিন্তু।

 আসলে সুমন এর মতো বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী আর কজন হয় বলুন তো এই আমলে। ও কোনো সময় গৌহাটি, কোনো সময় ত্রিপুরা, আবার কোনো সময় মেঘালয় পাহাড়ের রাজ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে ওর নিজের মোবাইল নিয়ে আর নানা লোকের নানা ধরনের 
কাজ নিয়ে। সত্যিই কত যে ও বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী কে জানে। আমার ওকে দেখে মাঝে মাঝেই বেশ হিংসাও হয় আর কি। কেন যে আমি ওর মতো দু একটা প্রতিভার অধিকারী হতেও পারলাম না কে জানে।

তবু সেই সব সময় হাসি মুখে গলায় উড়নি দিয়ে, দ্রুত হেঁটে চলেছে এদিক থেকে ওদিক কংগ্রেসের ঝাণ্ডা ধরে। আবার মহাকরণে সব মন্ত্রীর সাথে কি সুন্দর মধুর সম্পর্ক ওর। যখন সাংবাদিকতা করতাম দেখতাম সেই সব দৃশ্য। যা অবলোকন করে বেশ ভালই লাগত কিন্তু আমার। কিন্তু বেশ সিনিওরদের সম্মান দেওয়া, হাসিমুখে যে যা বলছে টিকা টিপ্পনী কেটে সবটাই ও মেনে নিত হাসি মুখে দাদা কি যে বোলো তুমি। এই বলে আবার সেই চটি পড়া আর কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে কোনো সময় মন্ত্রী অরূপ রায় বা কোন সময় ইন্দ্রনীল সেনের ঘরে গিয়ে জমিয়ে আড্ডা দেওয়া। আর ববি হাকিম মহাকরণে এলেই পেছন পেছন তাঁর ঘরে সব সাংবাদিকের ডাক পড়ার আগেই কেমন করে পৌঁছে যাওয়া। যতদূর সম্ভব খবর ৩৬৫ তে কাজ করত ও সেই সময়ে। 

আজ আমার ওর ফেসবুকের একটি পোস্ট দেখে মনে হলো আমার সাদা জীবনের কালো কথায় এমন কত জন যে ছিল সেই আমলে তার মাঝে আজও জ্বল জ্বল করছে আমাদের সবার সেই হাসিমুখের সুমন গাঙ্গুলী। সত্যিই বহুদিন ওকে ফোন করা হয়নি। ওর গলা শোনা হয়নি আমার। ওর গান শোনা হয়নি। সেই প্রেস ক্লাবের আড্ডায় একদিন দেখা হলো। বললো দাদা কোনো খবর পেলে দিও কিন্তু। আমিও ওকে বললাম কাজের কথা জানলে বলিস ভাই।

 এমন সুন্দর সম্পর্কের সহজ সরল ব্যবহার আর ভালো মনের মানুষ এর কথা কি ভুলে যাওয়া যায়। আর তাই আমি সেই জন্য ওর কথা লিখে ফেললাম আমার আঁকিবুঁকি ব্লগে। আমার সাদা জীবনের কালো কথায়। ভালো থেকো তুমি সুমন। এইভাবেই সহজ সরল ভাবে এগিয়ে চল তুই। সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলে। ভালো থাকিস ভাই। 

আমাদের সুমন গাঙ্গুলী - অভিজিৎ বসু।
ঊনত্রিশ ডিসেম্বর দু হাজার চব্বিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ইটিভির পিনাকপাণি ঘোষ

কিছু মানুষ কত কাছে থেকেও পাশাপাশি এক জায়গায় বাস করেও একসাথে একসময় কাজ করেও যে কত দূরে রয়ে যান নিজের হাসিমুখ নিয়ে আর সেই চেনা ছন্দ নিয়ে সত্যিই বেশ ভালো মজার ব্যাপার কিন্তু এটা জীবনের মেঠো পথে। সেই ইটিভির বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে ঘুরে ঘুরে স্ট্রীট ফুডের ছবি তোলা আর নানা খবর করে খাওয়া দাওয়ার এপিসোড করে একসময়ে বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে যাওয়া ইটিভি নিউজে। আর আমাদের জেলায় বসে সেইসব হাঁ করে দেখা আর কেমন মনের ভেতর অস্থিরতা তৈরি হওয়া। একেই বলে কলকাতার রাজপথের সাংবাদিক বলে কথা।  সেই যে বার রাষ্ট্রপতি এলেন জয়কৃষ্ণ লাইব্রেরী প্রাঙ্গণে সেই অনুষ্ঠানের বিশেষ কার্ড জোগাড় করে দেওয়ার অনুরোধ করা ইটিভির চাকরি করার সুবাদে। কোনো রকমে সেই কার্ড জোগাড় করে এনে দেওয়া তাঁকে আর তাঁর পরিবারের সদস্যদের জন্য। আর সেই একদিন দুপুর বেলায় খুব সম্ভবত করোনা শেষ পর্বে বালিঘাট স্টেশন থেকে অফিস যাওয়ার সময় এসি পঞ্চাশ এর বাস এর ভিতরে দেখা হওয়ায় কত গল্প করা দুজন মিলে পুরনো দিনের। আবার উত্তরপাড়ার সেই বিখ্যাত চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে গিয়ে হাসি মুখে দেখা হয়ে যাওয়া রাতের বেলায় কাঁঠালবা...

আমাদের সবার মৃনাল দা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ এক বাবা আর ছেলের লড়াই এর গভীর গোপন কাহিনী। এই সাংবাদিকতার পেশায় এসে কত লড়াই, কত অসম যুদ্ধ, করে যে কেউ সংসার টিকিয়ে রাখতে পারে হাসি মুখে কাউকে কিছুই বুঝতে না দিয়ে। এমন করে কেউ টিকে থাকার চেষ্টা করেন সেটা বোধহয় আমার জানা হয়ে উঠত না কিছুতেই। যদি না এই পেশায় আমি গা ভাসাতাম এমন করে। জীবনের এই নানা টুকরো টুকরো ছবির কোলাজ ভেসে ওঠে এই রাতের অন্ধকারে আচমকা আমার মনের মাঝে। আর আমি চমকে উঠি কেমন করে তাদের সেই কোলাজ দেখে।  এমন এক চরিত্র, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী হয়ে কেমন আলগোছে, হাসিমুখে, নির্মোহ ভাবে, শুধু নিজের কাঁচা পাকা দাড়িতে হাত বুলিয়ে জীবনটা কাটিয়ে দিলো সে শুধুই আকাশ পানে তাকিয়ে। যে নীল আকাশের গা ঘেঁষে উড়ে যাওয়া সাদা বকের ডানায় লেগে থাকে মেঘের হালকা টুকরো। একদম যেনো সিনেমার পর্দার হিরোর মতোই। দেখে বোঝার উপায় নেই একদম। পেটে খাবার না থাকলেও মুখের হাসিটা অমলিন হয়েই বেঁচে আছে আজও এতোদিন পরেও। আর সেই বিখ্যাত সাদা পাকা নাসিরউদ্দিন স্টাইলের দাড়ি, কালো চুল, আর সব সময় ধোপদুরস্ত ফিটফাট একজন মানুষ। রাত নটা বাজলেই যাকে শ্রীরামপুরে...

শপিং মলের উদ্বোধনে সিঙ্গুর আন্দোলনের দাপুটে মন্ত্রী

নালিকুল স্টেশন বাজারে একটি শপিং মলের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বেচারাম মান্না হাজির। একসময় যাঁর অন্দোলনের ঠেলায় পড়ে দৌড়ে একপ্রকার পালিয়ে চলে যেতে হয়েছিল সিঙ্গুর থেকে টাটা কোম্পানিকে। যে আন্দোলনের দগদগে ঘা আর সেই স্মৃতি ধীরে ধীরে আজ প্রায় মিলিয়ে যেতে বসেছে আমাদের কাছ থেকে। আজ সেই চাষার ঘরের মানুষ না হলেও সেই কৃষক আর শ্রমিকের ন্যূনতম অধিকার নিয়ে যে আন্দোলন শুরু করে সারাটা জীবন কাটিয়ে দিলেন সেই মানুষটাকেই কেমন যেন আজ শপিং মলের উদ্বোধনে দেখে বেশ ভালই লাগলো আমার।  একদম নালিকুল স্টেশনের কাছে ঝাঁ চকচকে শপিং মল। দোকানে সাজানো জিনিস পত্র। আর সেখানেই আমাদের মাননীয় মন্ত্রী বেচারাম মান্না। একদম কেমন একটু আমার অচেনা লাগলো যেন। সেই মুড়ি খেয়ে আলুর তরকারি বা শশা খেয়ে আন্দোলন শুরু করা জমি আন্দোলন এর অন্যতম পথিকৃৎ নেতা আজ এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। তাহলে টাটা কোম্পানির বিরুদ্ধে যে জমি দখল নিয়ে আন্দোলন সেই আন্দোলন এর মধ্যে ছিল জোর করে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা। যদিও সেখানেও সেই সময়ের শাসকদলের কর্মসংস্থানের যুক্তি।তবে এই নতুন শপিং মলের উদ্বোধনে তো আর ...

ভীড়ের মাঝে একা

জীবন জুড়ে শুধুই ভীড় আর ভীড়। নানা ধরনের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় মানুষের গন্ধে, বর্ণে , স্বাদের ভীড়ে আমি একদম একা হয়ে যেতে চাই। যে ভীড় উপচে পড়া রাস্তায় শুধুই হেমন্তের ভোরে শিশিরের ফিসফিস শব্দ, পাখির কিচির মিচির আওয়াজ,ধানসিড়ি ওই নদীটির তীর ধরে ঘুঘুর আকুল মন কেমন করা ডাক, উদাসী শালিকের ঝাঁক বেঁধে উড়ে যাওয়া ওই হেমন্তের হলুদ ধানের মাঠ এর পাশ দিয়ে, হলুদ বসন্ত বৌরীর সেই আমলকীর গাছের পাতায়,আড়ালে আবডালে বসে কেমন যেন আমায় দেখে লজ্জা পাওয়া, আর তারপর চোখ নামিয়ে হঠাৎ করেই তার উড়ে চলে যাওয়া। আর মেঘের কোল ঘেঁষে সেই সাদা বকের, বুনো হাঁসের, আর সেই পানকৌড়ির জলে ভেজা ডানা মেলে উড়ে যাওয়া আকাশ জুড়ে। সত্যিই ওরাও যে ভিড়ের মাঝেই বড়ো একা। একা একাই ওদের যে এই বেঁচে থাকা। কেমন নিপাট হৈ চৈ হুল্লোড়হীন একটা জীবন নিয়ে বেশ মজা করে, আনন্দ করে। আর সেই ভোরের আলোয় আলোকিত হয়ে রাস্তার একপাশে গুটি শুটি মেরে শুয়ে থাকা ওই সাদা কালো ভুলো নামের কুকুরের। যে অন্তত এই সব মানুষদের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় একটু যেনো আলাদা , একটু যেনো অন্য রকমের। একটু একা একাই যেনো ওর এই আলগোছে জীবন কাটিয়...

গৌড় প্রাঙ্গণে আনন্দবাজার

গৌরপ্রাঙ্গনে শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যের আনন্দের মেলা আনন্দবাজার। মহালয়ার ভোরবেলায় ঢাকের বাদ্যি আর সানাইয়ের মন কেমন করা সুরে মেতে উঠলো শান্তিনিকেতনের গৌড়প্রাঙ্গণ। প্রতি বছরের মতো এই বছরও যে হবে আনন্দমেলা আনন্দবাজার। হ্যাঁ সত্যিই যেনো আনন্দের এই হাটে বেচাকেনার পসরা নিয়ে একদিনের জন্য বসে পড়া মন প্রাণ খুলে হৈ হুল্লোড় করে। এই মেলা শুরু হয় 1915 সালের 15 এপ্রিল নববর্ষের দিনে। কিন্তু আগে এই মেলাকে একসময় বলা হতো বৌঠাকুরাণীর হাট। সেই সময় আশ্রমের মহিলারা নিজেদের হাতের তৈরি জিনিস নিয়ে মেলায় বসতেন। মেলার আয়োজন করতেন তারা। আনন্দ করে বেচাকেনা হতো। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময় একবার গরমের ছুটির আগে এমন মেলা নাকি হয়েছিল। যার নাম ছিল আনন্দবাজার। পরে এই মেলার নামে হয়ে যায় আনন্দমেলা। সত্যিই আনন্দের এই মিলন মেলা।  প্রথমদিকে পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের ছেলেমেয়েদের নিয়ে এই মেলা শুরু হয়। পরে ধীরে ধীরে বিশ্বভারতীর সব বিভাগের পড়ুয়ারা এই মেলায় যোগদান করে। এই মেলার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো ছাত্রছাত্রীদের বেচা কেনার লাভের টাকার কিছু অংশ জমা পরে বিশ্বভারতীর সেবা বিভাগে। সেখান থেকে এ...