নাম সাজি জন। বর্তমান নিবাস অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন এর শহরে। বর্তমানে ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে কর্মরত সাজি জন। সেই হাসি মুখের সাজি ছিল ইটিভির সেই প্রথম আমলের একজন বিখ্যাত সৈনিক। একজন কঠোর পরিশ্রমী মানুষ। আর খুব ভালো প্রোডিউসার। কিন্তু কোনো কাজ করতেই ওর কিছু মনে হতো না কোনোদিন। কোনও কাজকে ও ছোটো বলে মনেই করেনি কোনোদিনই।
আর তাই ও কলকাতা থেকে এসে জেলায় সেই ইটিভির বিখ্যাত অনুষ্ঠান হট্টমেলার মাঠে হুগলীর সেই শ্রীরামপুরের এসডিও অফিসের মাঠে বা কোর্টের মাঠে বেলা দুটোয় মেলা উদ্বোধন হবার কথা কিন্তু স্টল তৈরি হলেও মাঠ পরিষ্কার না হওয়ায় সে নিজেই ঝাঁটা নিয়ে মাঠ পরিষ্কার করতে নেমে পড়ে হাসি মুখেই সবার সামনে। মাঠে হাজির আমরা তখন সবাই বেশ অবাক।ইটিভির হট্টমেলা জেলায় জেলায় সেই সময় সত্যিই হৈ চৈ আর হুল্লোড় ফেলে দেয়। সব নানা খেলা আর বিনোদনের স্টলে উপচে পড়া ভীড় জমে যায় সেই মেলায়।
সত্যিই আজকাল এর সেই বিখ্যাত সব নানা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট এর নানা অনুষ্ঠানকে দশ গোল দিয়েই আদ্দ্যিকালের সেই পুরোনো দিনের হট্টমেলা কিন্তু ছিল সুপার আর সুপারহিট। আর সেই হট্টমেলার আয়োজনে মাঠে ঝাঁটা হাতে ঝাঁপিয়ে পড়েছে দীর্ঘদেহী সাজি। কোনো রকম কিছু অহংকার, নিজের পদ নিয়ে আত্মগর্ব, কলকাতার বাবু বলে জেলায় এসে পকেটে হাত দিয়ে ঘুরে বেড়ানো কেমন যেন ওর মধ্যে এইসব বিষয়গুলো ছিলই না একদম কোনদিনই।
আর তাই আজ এতদিন পরেও সেই সুদূর মেলবোর্ন শহরে চলে গেলেও আমার মনে পরে গেলো সাজির কথা। আমি জানিনা কলকাতায় ওর বাড়ি কোথায় ছিল সেটাও। তবু আজও আমার মনে আছে ওর সেই দীর্ঘদেহী লম্বা চেহারা। সেই মুখের অমলিন বন্ধুত্বের হাসি। কত বছর পর একদিন কলকাতায় দেখা হতেই অভিজিৎ দা বলে ওর জড়িয়ে ধরা। এতো দূরে চলে গিয়েও কেমন করে যেন আপন করে নেওয়া। নিজের আত্মীয় স্বজন পরিজন কিছুই নয়। শুধুই এক জায়গায় কিছুদিনের কাজ করা। আর তার মাঝেই এমন সম্পর্ক তৈরি হয়ে যাওয়া।
ও বোধহয় সেই কৃষ্ণকিশোর ঘোষ এর এর বিখ্যাত শো খাসখবরের পর খোঁজ খবরের টিমের শেষ টিমের সদস্যও ছিল সাজি জন। সেখানেও কিছুদিন কাজ করেছে ও। ওর প্রোডাকশন এর সেন্স ছিল খুব অসাধারণ। হ্যাঁ, এমন কত যে ওর গুণ ছিল সেটা হয়তো আজও অজানা রয়ে গেছে আমাদের অনেকের কাছেই।
আর ওর সেই দেশ ছেড়ে মেলবোর্ন শহরে চলে যাওয়া। ওর ভিক্টোরিয়া হসপিটালে কাজে যোগ দেওয়া। যতদূর সম্ভব ওদের প্রেম করে বিয়ে হয় মনে হয়। সেই সময় ইটিভিতে এন্টারটেইনমেন্ট এর নির্ভীক সেনগুপ্ত ছিল বোধহয়। আর সেই সাজি কত যে এমন নানাজন ছিল সেই সময় কে জানে। সত্যিই এই সাদা জীবনের কালো কথায় আমার সেই হারিয়ে যাওয়া সাজির কথা মনে পড়ে গেলো। যে আজ দেশ ছেড়ে, দেশের সীমানা ছেড়ে অনেক অনেক দূরে চলে গেছে। তবু আজও কেমন করে যেন নীল সাগরপারে চলে গিয়েও আমার মনে পড়ে গেলো ওর কথা। ওর সেই হাসি মুখের কথা। আর তাই আমি আমার ব্লগে আর আমার সাদা জীবনের কালো কথায় লিখে ফেললাম সেই হারিয়ে যাওয়া সাজি জনের কথা। ভালো থেকো তুমি সাজি। সাগরপাড়ে তুমি ভালো থেকো।
ইটিভির সাজি জন - অভিজিৎ বসু।
ঊনত্রিশ ডিসেম্বর, দু হাজার চব্বিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন