সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

২৪ ঘণ্টার রানা দা

ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় হঠাৎ করেই আমি চিৎকার করে ফেললাম সেই বহুদিনের চেনা আমাদের ২৪ ঘণ্টার লাইব্রেরিয়ান রানাদাকে দেখে। যদিও তার কারণ আমি নিজেই জানিনা কিন্তু। উত্তরপাড়ার কাঁঠাল বাগানের রাস্তায় দেখলাম সেই রানাদাকে কতদিন পরে হেঁটে চলেছেন এদিক থেকে ওদিকে। আসলে এটা বোধহয় সেই খবরের তাড়ায় আমি দৌড়ে গিয়ে লাইব্রেরীতে দরজা ঠেলে প্রবেশ করেই চিৎকার করে বলা, রানাদা ওই ছবিটা এক্ষুনি লাগবে দাদা, খবরটা ধরাতে হবে এক্ষুনি দিন আমায়। 


আর রানাদা তাঁর মৃদু হাসি আর ভদ্র মার্জিত ব্যবহার দিয়ে বলতেন একটু অপেক্ষা করতে হবে অভিজিৎ। আমি বের করে দিচ্ছি ছবিটা দাঁড়াও তুমি একটু বসো ওই চেয়ারটায়। বলেই কেমন সুন্দর ধীর পায়ে আর ধীর পদক্ষেপে হেঁটে হেঁটে সেই ছবি খোঁজার কাজ করতেন তিনি সেই পোদ্দার কোর্টের অফিসে পরে সেই অফিস চলে গেল মিডিয়া সিটিতে সেক্টর ফাইভ চত্বরে। মাঝে মাঝেই দেখতাম গানের কলি মুখে ঘুরছে তাঁর। বোধহয় শিষ দিয়ে গান গাইতেন তিনি আনমনে একা একাই। একদম বিন্দাস হাসি নিয়ে কাজ করছেন তিনি। একটু সংষ্কৃতি জগতের মাঝে বেশ স্বচ্ছন্দ বোধ করতেন তিনি। 

আমার যতটা দৌড় আর তাড়া আর অ্যাড্রিনালিন ক্ষরণ আমার সারা শরীরে। ঠিক ততটাই নিশ্চিন্তে ছবি খোঁজার কাজ করছেন তিনি হাসি মুখে বিন্দাস ভাবেই‌ উত্তেজনাহীন ভাবেই। সেই রাতের বেলায় দৌড়ে দৌড়ে সেক্টর ফাইভের অফিস থেকে রাত নটার পর বের হয়ে দৌড়ে বিধাননগর স্টেশন আসা। তারপর রাত পৌনে দশটার ডানকুনি লোকাল ধরে বালি হল্ট ষ্টেশনে পৌঁছে যাওয়া। ধীরে ধীরে নিচে নেমে দৌড়ে আবার মেন লাইনের ট্রেন ধরা দৌড়ে। আমি, শুভ্রনীল, আর রানাদা তিনজনেই এক পথের পথিক যে সেই সময়। আর উত্তরপাড়া এলেই তাঁর অভিজিৎ আসি বলে একগাল হাসি হেসে ট্রেন থেকে নেমে যাওয়া। কোনোদিন রাগ, কোনোদিন কাউকে চিৎকার করে কিছু বলছেন তেমন শুনতে পাইনি আমি কোনো দিন, অন্তত রানাদার মুখে। আমার অল্প কয়েক বছরের চাকরি জীবনে সেই অভিজ্ঞতা হয় হয়নি আমার। 

আজ বহুদিন পর সেই ২৪ ঘণ্টার লাইব্রেরিয়ান রানাদার সাথে দেখা হলো আমার। সেই আকাশ বাংলা থেকে অরিন্দম যখন এই পোদ্দার কোর্টের অফিসে লাইব্রেরীর হেড হয়ে অভীক দত্ত আর অঞ্জন বন্দোপাধ্যায় এর হাত ধরে এলো। আর তারপর অফিসের বড় কর্তাদের স্নেহধন্য এক মেজো কর্তার গাল শুনে চাকরি ছেড়ে তিন গুণ বেশি বেতন নিয়ে অন্য এক বিখ্যাত চ্যানেলে কাজে চলে গেলেন অরিন্দম। আর চাকরি ছাড়ার কারণ দর্শাতে সেই বিখ্যাত লাইব্রেরিয়ান মেজো কর্তার নামে লিখে গেলেন তাঁর খারাপ ব্যবহারের জন্যই চাকরী ছাড়া তাঁর এমনটাই অভিযোগ জানিয়ে চলে গেলেন তিনি। যা নিয়ে পরে অনেক আলোচনা হলেও সেটা ঠিক ধোপে টেকেনি কিন্তু একদমই এই অভিযোগটি। 

আর তারপর সেই তাঁর অরিন্দমের ছেড়ে যাওয়া জায়গায় চলে এলেন এই হাসিমুখের রানাদা। আর সেই রানাদাকে আজ উত্তরপাড়ায় কাঁঠাল বাগানের গুপির চা এর দোকানে দেখতে পেয়ে আমি আনন্দে আপ্লুত হলাম। যে গুপি অদ্ভুত দক্ষতায় মনে রাখে কে কোন চা খায়। আর অদ্ভুত হাসি দিয়ে সবটাই নিজের হাতে তালুর মধ্য রাখে কঠিন দৃষ্টি দিয়ে। যেনো কোনো ছবি পেয়ে গেছি আমি রানাদাকে না বলেই। তাঁর কাছে কোনোও ছবি না চেয়েই। 

সত্যিই এমনটাই মনে হলো সেই তাঁকে মানে রানাদাকে উত্তরপাড়ার রাস্তায় দেখতে পেয়ে। আনন্দে আমি শুভ্রনীলকে কিছুটা উত্তেজিত হয়ে ফোন করে ফেললাম। ওকে বললাম রানা দা এসেছেন রে। যদিও ওর কোনোও উত্তেজনা নেই। ছবি উঠলো আমাদের দুজনের। ছবিতে হাজির থাকলেন উত্তরপাড়া পুরসভার পুরপ্রধান দিলীপ যাদব আর সেই প্রতিদিনের দীর্ঘদিনের রিপোর্টার দিব্যেন্দু। রাস্তার মাঝে ছবি উঠলো আমাদের সবার।

এটাই তো ভালো লাগার বিষয়। শুনলাম সেই পুরোনো কথা তাঁর অবসর এরপরেও কিছুটা সময় এই লাইব্রেরী সামলানোর কথা বল হয় তাঁকে বেশ কিছু দিন। মাস ছয়েক সেই কাজ করেন রানাদা হাসিমুখে। পরে অন্য লোক নিয়োগ হলে তিনি একদম কর্ম জীবনের অবসরে চলে যান। আর সেই কথা শুনে বেশ ভালো লাগলো আমার। 

সত্যিই রানাদা বেশ মন দিয়ে কাজের টেবিলে কাজ করতেন। সেই বিখ্যাত সব সাংবাদিক কাজ করতেন এই মিডিয়া হাউসে সেই সময়ে সেই স্বর্ণ যুগের জমানায়। আর নানা বিভাগের মাঝে এই লাইব্রেরী একটা অতি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ ছিল। যে বিভাগের নানা বিখ্যাত পুরোনো ছবি খুঁজে দিতে হতো এই রানাদাকে। সেই কাজে তিনি বেশ সিদ্ধহস্ত ছিলেন পরে হাত পাকিয়ে সেই কাজটাই করে ফেলতেন হাসিমুখে। সাংবাদিক না হয়েও কেমন যেন একটা বড় গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতেন তিনি বেশ দায়িত্ব নিয়ে। 

হয়তো খুব দ্রুত সব কিছুই ম্যাজিকের মত অরিন্দমের মতই ছবি বের করে দিতে পারতেন না তিনি। কিন্তু সেটা ছাড়া তাঁর এই দ্রুত এই বিভাগকে নিজের কন্ট্রোলে নিয়ে এসে একটা ভিত তৈরী করেছিলেন তিনি ধীরে ধীরে। যে ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে পড়ে অনেকেই কাজ করছেন এই ২৪ ঘণ্টার লাইব্রেরী বিভাগে। সেই শুভেন্দু, অরিন্দম, চশমা পড়ে একটু মোটা মতন কি নাম বেশ মনে পড়ছে না আমার। কতজন যে ছিল এই বিভাগে। মনে হয় শুভাশীষ হবে।

 সেই আনন্দ বাজার পত্রিকা থেকে অবসর নিয়ে সুজিত দাও কাজ করেছেন এই লাইব্রেরীতে। পরে যদিও তিনি আবার প্রিন্ট এই ফিরে যান কিছুদিন ২৪ ঘণ্টায় কাজ করে। যিনি টিভি চ্যানেলের কাজ এর থেকে কাগজেই বেশি স্বচ্ছন্দ ছিলেন। সেই সদা হাস্যময় একটু ধীর প্রকৃতির কাজ চালিয়ে নেওয়া রানা দা আজ আমার সাদা জীবনের কালো কথায়। সেই আমার আঁকিবুঁকি ব্লগে। 

সেই উত্তরপাড়ার কাঁঠাল বাগানের রাস্তায় তাঁকে হাঁটতে দেখে আমি উত্তেজিত হলাম এমনিই। যেনো নিজের সেই চেনা ফেলে আসা টুকরো মুখ এর সন্ধান পেলাম আমি কতদিন পর। যাঁদের সাথে একসময়ে একসাথে কাজ করেছি। দৌড়েছি খবরের প্রয়োজনে। একসাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেছি আমরা একটাগোটা দল হয়ে। আজ সেই দল ভেঙে গেছে অনেক আগেই। মানুষটাও অবসরে চলে গেছেন। আমিও বহুদিন ধরেই অবসরে দিন যাপন করছি। তবুও তাঁকে দেখে আমার এই অবসর জীবন কেটে বেরিয়ে এলাম আমি আজ। ভালো থাকবেন আপনি দাদা। এমন হাসিমুখে আনন্দে অবসর জীবন কাটান। ভালো থাকুন। 

২৪ ঘণ্টার রানা দা - অভিজিৎ বসু।
পয়লা ফেব্রুয়ারি, দু হাজার পঁচিশ।
ছবি সৌজন্য নিজের মোবাইল ক্যামেরায় তোলা।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

জামালপুরের প্রদীপ দা

আজ আমার সাদা জীবনের কালো কথায় বর্ধমানের জামালপুরের সেই দাপুটে ঠোঁট কাটা সাংবাদিক প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় এর কথা। সেই বিখ্যাত সুভাষ তালুকদার এর কাগজ সংবাদে মাত্র এক টাকার কাগজে কাজ করা সংবাদ পত্রিকার দাপুটে সাংবাদিক সেই প্রদীপ দা। সেই মুখ্যমন্ত্রীর সভায় বাঁশের ব্যারিকেডের এপারে দূরে দাঁড়িয়েও যে খবর করা যায় সেটা বড়ো মিডিয়ার সাংবাদিকদের হাসি মুখে দেখিয়ে দিয়ে, আর তাদের খবরের ময়দানে গোল দিয়ে শুধু খবরকে ভালোবেসে ছোটো কাগজে কাজ করে চলা সর্বদা হাসি মুখের সেই আমাদের প্রদীপ চ্যাটার্জী দা।  কোথাও কোনো অন্যায় দেখলেই প্রতিবাদে মুখর হয়ে যাওয়া আর এক দৌড়ে বেরিয়ে পড়া ঝোলা কাঁধে সেই খবরের খোঁজে সেই জামালপুরের প্রত্যন্ত গ্রামের সেই প্রদীপ দা। সেই বিখ্যাত পন্ডিত রবিশঙ্কর আর উদয়শঙ্কর এর আপন মাসতুত ভাই এর ছেলে সেই প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় দাদা। সেই বামদের আমলে জামালপুরের এলাকায় দাপিয়ে খবর করে ছুটে বেড়ানো সেই প্রদীপ দা। সেই তৃণমূল আমলেও একভাবেই ছুটে বেরিয়ে কাজ করা আমাদের সদা ব্যস্ত প্রদীপ দা।  সেই বাবার অসুস্থতার কারনে বড়ো সংবাদ মাধ্যমে কাজ না করেও...

আমার স্যার কাজীদা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ আমার স্যার এর কথা। যার লেখা আজ হঠাৎ চোখে পড়লো একটি কাগজে। আর স্যার এর নামটা দেখেই মনে পড়ে গেলো নানান কথা। হ্যাঁ, সেই কাজী গোলাম গাউস সিদ্দিকী। যাঁর সাথে আমার আলাপ আর দেখা হয়েছিল সেই অজিতদার ফ্রিল্যান্স ছকু খানসামা লেনের ফ্রীল্যান্স প্রেস ক্লাবের অফিসে খুব সম্ভবত। হাসিখুশি বেশ অজাতশত্রু এই মানুষটিকে দেখেই আমার মনে হয়েছিল যে রিপোর্টারদের প্রভূত ক্ষমতা থাকে বোধহয়। তাই পকেটে পেন আর সেই ফোনের ছোট্টো নোটবুক দেখেই আমার মনে হয়, যে ক্ষমতার স্বাদ পাবার জন্য সেই সদ্য গ্র্যাজুয়েশন করে আমার কচি মনে সাংবাদিক হবার বাসনা জাগে সেই সময়।  কোনো প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক নয়, কোনো অফিসে মাছি মারা দশটা পাঁচটার লোয়ার ডিভিশন এর কেরানি নয়, মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ নয়, ল্যাবরেটরিতে টেকনিশিয়ান এর কাজ নয়, এল আই সি বা পোষ্ট অফিস এর এজেন্ট নয়, কোনো মুদি দোকানে হিসেব পত্র লেখার কাজ নয়, স্বাধীন ব্যবসা করা নয়। শুধুই সাংবাদিক হবার স্বাদ।  কাগজে সাদা কালো অক্ষরে নিজের নাম ছাপা হবে, সেই নাম দেখে বুক ফুলে যাবে, পাড়ায় প্রতিবেশীরা সহ স...

কুড়ি থালা দশ টাকা আর রসিক মুলুর জীবন

নাম মুলু হাঁসদা। বাংলা ঝাড়খণ্ড সীমানার চরিচা গ্রাম পঞ্চায়েত এর চর ইচ্ছা রঘুবরপুরের বাসিন্দা মুলু। আজ মুলুর জীবন কথা। গ্রামের নামটা ভারী অদ্ভুত। চর ইচ্ছা রঘুবরপুর। যে গ্রাম অন্য পাঁচটা গ্রামের মতই।সাদামাটা এই গ্রামে দারিদ্র্য, অপুষ্টি আর কর্মহীন জীবনের জলছবি সুস্পষ্ট। আর সেই গ্রামের মহিলারা নিজেদের সংসার রক্ষা করতে গাছের পাতাকে আঁকড়ে ধরে রেখেছে। গাছের পাতা মুলুদের জীবনের জিয়ন কাঠি। যে জিয়ন কাঠিতে তারা ভোর হতেই পেটের টানে চলে যায় জঙ্গলে। খস খস শব্দ করে পায় হেঁটে তারা পাতা তোলে। গাছ থেকে টুপ টাপ করে ঝড়ে পড়া পাতাকে একটা একটা করে নিজের শাড়ির আঁচলে ভরে নেয়। তার পর সব পাতাকে বস্তায় ভরে ঘরে ফেরে।  ঠিক যেভাবে তারা পুকুরে নেমে শামুক গেঁড়ি আর গুগলি তোলে। যে ভাবে তাদের উদর পূর্তি হবে বলে। আর এই পাতাও যে তাদের পেট ভরায়। একটা একটা পাতাকে নিজের সন্তানের মতো আলগোছে ছুঁয়ে বুকে জড়িয়ে ধরে চুমু খায় মুলু, বলে তোরা না থাকলে কি করতাম কে জানে। মাথার ওপর শাল সেগুনের বিশাল আকারের গাছগুলো চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে আর তারা চুপ করে শোনে মুলুর কথা।  একে অপ...

শুভ মকর সংক্রান্তি

মকর মানেই নতুন জামা কাক ভোরে স্নান, রাত্রি জেগে মিঠে সুরে টুসুমণির গান। মকর মানেই পিঠে - পুলির গন্ধে ম - ম হাওয়া, ডুলুং পাড়ে টুসুর মেলায় দল বেঁধে যাওয়া। মকর মানেই মোরগ লড়াই পাহুড় জেতার সুখ, সন্ধ্যা - রাতে মাংস পিঠের স্বাদে ভরা মুখ। মকর মানেই হাতি - ঘোড়ার পুজো করম তলে, সান্ধ্য হাওয়ায় মন উদাসী দিমির দিমির বোলে। আসলে আজ এই মকর সংক্রান্তির দিন, টুসু মেলার দিন, টুসু গানে নিজেকে মাতিয়ে দেবার দিন। অজয় এর ধারে জয়দেব কেঁদুলির মেলায় ভীড়ের মাঝে নিজেকে হারিয়ে দেবার দিন। অজয় এর জলে ডুব দিয়ে স্নান করে পূণ্য অর্জনের দিন। আর নদীর ধারে মোরগ লড়াই এর দিন। আকাশে ঘুড়ি ওড়ানোর দিন, সুতো লাটাই হাতে আকাশ পানে তাকিয়ে থাকার দিন। কেমন যেনো রাশির একটি স্থান থেকে অন্য রাশিতে স্থান পরিবর্তনের দিন। সূর্যের দেবতাকে সকালে উঠে স্নান সেরে প্রণাম জানিয়ে শক্তি সঞ্চয় এর দিন। সূর্যের উত্তর দিকে চলে যাবার দিন। ধীরে ধীরে শীতকাল চলে যাওয়ার দিন।  এই মকর সংক্রান্তি এর ইতিহাস ও ভারতীয় ঐতিহ্যের গভীর শিকড় রয়েছে। এটি কৃষি চক্র এবং ফসল কাটার মৌসুমের সাথে জড়িত। এই মকর সংক্রান্তি চ...