সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ইটিভির অ্যাঙ্কর অঙ্কুর

ভাবা যায় এই ভুবন ভোলানো হাসিমুখের বিখ্যাত অ্যাঙ্করও নকল হতে পারে নাকি কোনোভাবে। হতেই পারে না একদম এটা। কোনোভাবেই এটা মেনে নেওয়া যায় না আর বিশ্বাস করাও যায় না। ওর এই পোস্ট দেখে সেটাই মনে হলো আমার সবার প্রথমেই। আসলে এই জীবনের পথে হাঁটতে হাঁটতে আসল আর নকলের এই গা ঘেঁষাঘেঁষির ভীড়ে পার্থক্য বোঝাই যে দায়। কে আসল বন্ধু আর কে নকল বন্ধু সেটাই বোঝা মুশকিল। সেটাকে নির্ধারণ করা যে বড়ই দুষ্কর কাজ। সেটাই যে আজকাল আর ঠিক করে ঠাওর করতে পারি না আমি এই বুড়ো বয়সে এসে। 


আজ সাদা জীবনের কালো কথায় আমার এই আঁকিবুঁকি ব্লগে তাই সেই যার কোলে চেপে বাসে করে জীবনে প্রথম বার দুরু দুরু বুকে রামোজি ফিল্ম সিটিতে গিয়েছিলাম আমি বেশ ভয়ে আর আতঙ্কে যদি চেয়ারম্যান এর সামনে যেতে হয় আর ইংরাজিতে কথা বলতে হয় এই ভয়ে। সেই ভীড় বাসে বসতে জায়গা না পেয়ে সেই তাঁর কথা। সেই যে সারাদিন অফিস করে হায়দরাবাদ এর বাংলা ডেস্ক থেকে ধ্রুব রাতে ওর বাড়িতে ভাত খাবার জন্য নেমতন্ন করলো আমায় গরম ভাত, ডাল আর আলুভাজা রান্না করলো রূপা ওর শরীর খারাপ নিয়েও সেদিন কত কষ্ট করে। সেই খেতে দেবার সময় ওদের ঘরে খাবার চেয়ারটা একটু রূপার শরীরে ধাক্কা লেগে গেলো। উদ্বিগ্ন মুখে ধ্রুবর জিজ্ঞাসা কিছু লাগেনি তো তোমার ধাক্কা। সত্যিই কি ভালো যে ছিল সেই সব দিনগুলো। 

আর রাতে অফিস থেকে ফিরে ওই এক অ্যাপার্টমেন্টে এসে যার বাড়িতে গেলাম সেই যে ওর মার সাথে আলাপ করিয়ে দিয়ে বলল আমাদের হুগলীর রিপোর্টার মা। আর সেই সুন্দর চেহারার একটা সাদা মিষ্টি খেতে দিলেন মাসিমা সাদা কাঁচের বাটিতে, খিদে পেটে অমৃত লেগেছিল সেটা সেই মুহূর্তে আমার। আর সেই তিন নম্বর চৌরঙ্গী স্কোয়ার এর অফিসে আশীষ ঘোষদার সাথে দুজনে একসাথে দেখা করতে এলো হাসি হাসি মুখ করে বায়োডাটা দিয়ে গেলো ওরা দুজনে সেদিন আমি ছিলাম কলকাতার ধর্মতলার অফিসে। আর সেই পূজোর সময় খড়দায় আড্ডা দেওয়া কত মজা করা আমার বউ আর মেয়ে গেছিলো একবার। হ্যাঁ, সেই সুন্দর হাসিমুখের আর ভালো মনের মানুষ সেই অঙ্কুর ভট্টাচার্য্যের কথা আজ আমার এই আঁকিবুঁকি ব্লগে। আমার সাদা জীবনের কালো কথায় সেই ইটিভি বাংলার অ্যাঙ্কর অঙ্কুর এর কথা। 

আসলে জীবন তো এমনিই হারিয়ে যাওয়া আর ভুলে যাওয়া মানুষ বোধহয় এইভাবেই ফিরে আসেন আমাদের কাছে হঠাৎ করেই। কখনও নকল হয়ে আবার কোনো সময় আসল হয়েও। আর তাই সেই ওর একটা সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্ট দেখেই মনে পড়ে গেলো আমার নানা ফেলে আসা দিনের কথা যে অতীত হাতড়ে আমি বেঁচে আছি আজ এই টোটো চালকের জীবন নিয়ে। যে জীবনের মাঝে এমন কত যে মানুষের সাথে যোগাযোগ আলাপ পরিচয় আর বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছে তার ঠিক নেই। 

সেই হায়দরাবাদ এর রুখাসুখা জীবন। সেই কিছু বাংলার ছেলে আর মেয়ে সবাই মিলে একসাথে ঝাঁপিয়ে পড়া পেটের টানে আর কাজের নেশায় খুব কম টাকায়। সেই ইটিভি বাংলার পাঁচ মিনিটের খবর আর সারাদিন তিনটে বা চারটে বুলেটিন এর জন্য কত দৌড় ঝাঁপ করা সবাই মিলে একসাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে। সেই ইডলি ধোসা আর বড়া নিয়ে ছুটে চলা জীবনের মাঝেই কত গল্প, কত হাসি, কত কান্না, কত প্রেম, কত বিরহ আর কত যন্ত্রণা যে লুকিয়ে ছিল সেই সময় কে জানে। আমরা দূরে থেকে কি আর সেসব বুঝতে পেরেছি কোনসময়, কোনোদিন কোনোভাবে না, পারিনি সেসব কিছুই বুঝতে। 

হঠাৎ করেই সেই ভরপুর ইটিভির ভেঙে যাওয়া সংসার ছেড়ে সেখান থেকে কোলকাতায় ফিরে আসা ওর। নিউজ টাইম চ্যানেলের একদম পরিচিত হাসিমুখ এর চেনা মুখ এর বিশেষ অ্যাঙ্কর হয়ে যাওয়া। সেই ইটিভির রাত এগারোটার এই দেশ এই সময়ের জনপ্রিয় মুখ থেকে সর্বক্ষণ খবর হওয়া একটি চ্যানেলের বিখ্যাত মুখ হয়ে যাওয়া ধীরে ধীরে। নিজের কাজের জোরে আর নিজের কর্মদক্ষতায়। মাঝে মাঝে যোগাযোগ হতো আমার সাথে ওর। হঠাৎ করেই ফোন করে ফেলতাম আমি যেমন সবাইকেই করে ফেলি আর কি যেটা আমার খুব বাজে অভ্যাস। তারপর যে যার মতই ছিটকে যাওয়া এদিক ওদিক। হঠাৎ একদিন দেখলাম ওকে পোদ্দার কোর্টের অফিসে। সেক্টর ফাইভ এর চত্বর ছেড়ে মধ্য কলকাতায় চলে আসা গুটি গুটি পায়ে। সেই বিখ্যাত ছেড়ে যাওয়া ২৪ ঘণ্টার অফিসে কলকাতা টিভির অফিসে দেখলাম। ভালো লাগলো ওকে দেখে।

কিন্তু তার মাঝেই ওর এই পোস্ট ডোন্ট এক্সেপ্ট দিস। কারণ এটা ওর ফেক প্রোফাইল। সত্যিই অসাধারণ এই ওর আবেদন দেখেই এতগুলো কথা মনে পড়ে গেলো আমার। সেই মাসীমার হঠাৎ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া। তারপর পূজোর আগে ওর মাকে ঘরে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া সুস্থ করে। ওর উদ্বিগ্ন মুখে স্বস্তির নিঃশ্বাস। সেদিন কত কিছুই মনে পড়ে গেলো আমার। আমার মাও অসুস্থ হলেন আর ঘরে ফেরাতে পারিনি আমি কিছুতেই অঙ্কুর। মা চলে গেলেন আমায় ছেড়ে। 

সত্যিই জীবন বড়ই অদ্ভুত আর স্মৃতিকাতর। সেই ফেলে আসা দিনগুলো বড্ড ভালো ছিল কি বলো। সেই হায়দরাবাদ এর কষ্টের জীবন। সেই ক্যান্টিনে দুপুরে কষ্ট করে ভাত খাওয়া। একটা সিগারেট দুজন মিলে ভাগ করে খাওয়া সেই স্মোকিং জোনে গিয়ে। সেই বিকেল হলেই চা আর সিঙ্গারা খেতে যাওয়া ক্যান্টিনে দল বেঁধে। একটা ডিমকে দুজনে ভাগ করে খাওয়া। সেই সিদ্ধার্থ সরকারের বা স্যার এর স্নেহ মিশ্রিত বকা খাওয়া। সেই সরস্বতী পূজো করা, কালী পূজো করা আর তার মাঝে ইটিভি বাংলার সেই চাকা ঘোরা আর সেই খবর শুরুর আগের সেই মন কেমন করা সুর কানে আসা। সেই রাত নটার খবর। সেই ছটার খবর। আর সেই সাতটার বিখ্যাত আমার বাংলা। সেই ভোটের সময় ঝাঁপিয়ে পড়ে কাজ করা সবাই মিলে জেলা, কলকাতা, হায়দরাবাদ সব একসাথে একজোট হয়ে। সত্যিই অসাধারণ ছিল সেই সব দিন গুলো কি বোলো একটা ভরা সংসার যেনো। 

ভাগ্যিস তোমার এই ফেক প্রোফাইল কেউ পোস্ট করলো তাই তো আমার চারপাশে ভীড় করে থাকা নানা কথা কিলবিল করে বেরিয়ে পড়লো আজ এই রাতের বেলায়। ফেলে আসা জীবনের এই সাংবাদিক জীবনের সেই দিনগুলো বেশ ভালই ছিল কি বলো। ভালো থেকো তুমি। এমন হাজার কষ্টকে বুকে চেপে হাসি মুখে থাকার নিদানটা পারলে আমাকেও দেখা হলে দিও কোনোওদিন। আমাদের এই অমলিন মেঠো সম্পর্ক বজায় থাকুক আসল হয়েই নকলের ছদ্মবেশে নয়। 

ইটিভির অ্যাঙ্কর অঙ্কুর - অভিজিৎ বসু।
ত্রিশ জানুয়ারী দু হাজার পঁচিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অ্যাঙ্কর মিমির কথা

'আমরা যদি এই আকালেও স্বপ্ন দেখি কার তাতে কী?' বাহ দারুন সুন্দর এই কথা। স্বপ্ন দেখার কি কোনো সময় হয় নাকি। পঞ্জিকার পাতা উল্টে তিথি নক্ষত্র দেখে কি স্বপ্ন দেখা যায়। যে স্বপ্ন বাঁচার খোরাক জোগায়। যা দেখে এই দৌড় ঝাঁপ করা জীবনে কেমন একটা স্বস্তি মেলে সেই স্বপ্ন সফল হোক বা না হোক। যে কোনোও বয়সে এই স্বপ্ন দেখা যায়। ফেসবুকের পাতায় সেই কথা লেখা দেখে মনে মনে কিছুটা সাহস সঞ্চয় করেই এই রাত দুপুরে ভয়ে কম্পমান হয়েই ওকে নিয়ে লেখার চেষ্টা করা। সেই পোদ্দার কোর্টের অফিসে সেই দুর থেকেই অচেনা জগতের সেই খবরের বিখ্যাত সব নানা ধরনের খবর পাঠিকাদের ভীড়ে তাঁকে দুর থেকে দেখা। একদম অন্য এক গ্রহের বাসিন্দা যেনো। সেই কালামের দোকানে হয়তো কোনোও সময় চা খেতে গিয়ে দেখতে পাওয়া। সেই লিফটের কুঠুরিতে একসাথে ওঠা বা নামা কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখেই। কিন্তু সেই অন্য খবর পড়া অ্যাঙ্কর দের সাথে সহজ সরল ভাবে মিশে যাওয়ার সাহস হয়নি আমার কোনোও দিন তাঁর সাথে। আজ আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায় আমার আঁকিবুঁকি ব্লগের পাতায় সেই ২৪ ঘণ্টার পোদ্দার কোর্টের অফিসের বিখ্যাত অ্যাঙ্কর মিমির কথা। ...

এলোমেলো , এলেবেলে বিন্দাস জীবন ও জন্মদিন

দেখতে দেখতে বছরের পর বছর গড়িয়ে যায়। আসলে এই অচলাবস্থা আর অকর্মণ্য দিনযাপনের একটা জীবন কাটিয়ে দিতে দিতে বেশ আমি কেমন যেন এডজাস্ট করে নিয়েছি নিজের সাথে নিজেরই এক অদ্ভুত সহাবস্থান। আমার জীবনের সাথে ক্রমেই দ্রুত কমতে থাকে যেনো মৃত্যুর দূরত্ব। দীর্ঘ দিনের জীবনের ঘন্টা ধ্বনিতে কেমন অচেনা সুরের সুর মূর্ছনা বেজে ওঠে ঠিক যেনো ওই গির্জার ঘরে জিঙ্গেল বেল, জিঙ্গেল বেল এর সুরের মতই আচমকা রাত বারোটা বাজলেই এই একত্রিশ মে।  যার তাল, লয় আর ছন্দে আন্দোলিত হয় এই জীবন আর জীবনের নানা জলছবি। যে ছবির কোলাজে ধরা পড়ে হাসি কান্না, সুখ আর দুঃখের নানা অনুভব। যে অনুভূতির জারক রসে আমি জারিত হই প্রতি মুহূর্তে। আর তাই তো বোধহয় সেই ছোটবেলার দিন এর কথা মনে পড়ে গেলেই সেই ঝাপসা হয়ে যাওয়া ধূসর হয়ে যাওয়া সেই ছবির সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে ইচ্ছা হয় আমার বড়ো এই আজকের দিনে।  সেই পুরোনো দিনের ভালোবাসার স্পর্শ আর স্মৃতি রোমন্থন করা একটি ছবি। মায়ের নিরাপদ কোলে ঠিক নয় চুপটি করে পাশে বসে আছি আমি একদম ফিট ফাট হয়ে আপন মনে ভদ্র শান্ত ছেলের মতোই যা আমি মোটেও নয়। আজকের সেই এ...

যা দেখি…প্রতিদিন মনে পড়ে কত… স্মৃতির পথ ধরে হাঁটি… লিখি…

বিনোদন রিপোর্টার দেবপ্রিয়

দেবপ্রিয় দত্ত মজুমদার। ওর সাথে কোথাও একসাথে কাজ করা হয়নি আমার। ওর খবরের ফিল্ড একদম আলাদা এন্টারটেনমেন্ট। আর আমার শুধুই সাধারণ খবর। কখনও জেলার খবর,আর কলকাতার খবর। রাজনীতির খবর নিয়েই ঘুরে বেড়ানো। তবু কেনো জানিনা ওর শান্তিনিকেতনে আসার খবর শুনেই ওকে সাহস করে আমার নম্বর দিলাম। এমনি কোনোও কারণ ছাড়াই যদি যোগাযোগ হয়। যদি দেখা হয়। কলকাতার গন্ধ আছে। মিডিয়ার একটা বলয় গায়ে জড়িয়ে আছে। আর কি শুধুই যদি দেখা হয়ে যায় এই আশায়।  চমক অপেক্ষা করেছিল আমার জন্য। পরদিন ফোনে যোগাযোগ করলো ও নিজেই। কথা হলো দু চারটে আমাদের। কোথায় থাকো তুমি জিজ্ঞাসা করলো। আর সত্যিই আমি টোটো চালকের কাজ করি কি না যেটা নিয়ে ওর নিজেরও একটা সন্দেহ ছিল মনে মনে সেটা পরিষ্কার করে দিলাম আমি ওকে। কিন্তু যেনো কতদিনের চেনা একজন মানুষ। কত আপন ছন্দে কথা বলা ওর। যেটা আমায় আকর্ষিত করলো বেশ। ওর অনুষ্ঠান যেটা হচ্ছে শান্তিনিকেতনে সেখানে আমার মতো একজন বাতিল মানূষকে আসতে বললো ও নিমন্ত্রণ জানালো সপরিবারে।  আমি একটু আবেগ প্রবণ মানুষ। আমি চলে গেলাম সেই অনুষ্ঠানে ওর আমন্ত্রণে। যা সচরাচর আমি কো...