সানির কথা আমার মনেই ছিল না একদম। সত্যিই বলতে কি মনে থাকার কথাও নয়। আমি বর্ধমান যাবো কিন্তু সানিকে আর বলিনি সেকথা তাই। হঠাৎ করেই গাড়িতে যেতে যেতে একটা ফোন এলো আমার কাছে দাদা তুমি বর্ধমান জামালপুরে আসছো আর আমায় জানালে না একবার। কে? দাদা আমি মহম্মদ খান বলছি বর্ধমান থেকে। মনে পড়ে গেলো ওর কথা।
হ্যাঁ, সত্যিই তো সেই এন কে টিভির গোড়ার দিকে লোক নিয়োগ চলছে জেলায় আর কলকাতায় জোর কদমে। সেই জেলায় জেলায় রিপোর্টার নেওয়া হবে। বর্ধমানে কাকে নেবো ফোন করলাম ২৪ ঘণ্টার পার্থ আর অরূপকে। ওরা দুজনেই বললো দাদা সানিকে নাও ভালো ছেলে। আমাদের সাথে থাকে। কথায় কথায় জানলাম জামালপুরে বাড়ী ওর। কিন্তু বর্ধমানে ঘর ভাড়া নিয়ে বসবাস করে। কাজ হলে বর্ধমান থেকেই করবে কাজ। কিছুটা নিমরাজি ছিলাম আমি। পরে ওকে নিলাম সেই গৌহাটির বাংলা চ্যানেলে এন কে বাংলা টিভিতে।
যাকগে কি আর হবে যখন পার্থ আর অরূপ বলছে হয়ে যাবে নিশ্চয়ই। এই ভরসায় সানিকে রিপোর্টার করে নিলাম আমি বর্ধমানের। সেই রোগা পাতলা চেহারা মহম্মদ খান যার নাম সেই সানি বর্ধমানের রিপোর্টার হয়ে গেলো। একটু সন্দেহ ছিল পারবে তো কাজটা করতে। নিয়ে তো নিলাম আমি ওকে। কিন্তু না সানি আমার মুখ রক্ষা করেছে কিন্তু বেশ ভালই।
সেই সানি ছুটে চলে এলো খবর পেয়েই জামালপুরে এসেছি শুনে আমি। দাদা খবর পেলাম আমি তুমি এসেছো। আমার বেশ মনটা ভরে গেলো ওর এই কথাগুলো শুনে। সত্যিই তো কে আর আজকাল খবর রাখে আমার। মনে রাখে আর এভাবেই ছুটে আসে দুরদুরান্ত থেকে। এটাই বোধহয় জেলার সহজ সরলতা আর নৈকট্য বজায় রাখা দুটি সম্পর্কের। সে সম্পর্ক পুরনো হোক ক্লিশে হোক বা দূরে সরে যাওয়া সম্পর্ক হোক।
সেই সেক্টর ফাইভের কলেজ মোড়ের অফিসে চ্যানেলের লোগো আনতে গেছিলো মহম্মদ খান। একদল বেঁধে সবাইমিলে লোগো আনতে। খাতায় সই করে লোগো নেওয়া। হৈ হুল্লোর করে অফিসে ছবি তুলে নেওয়া। কি সুন্দর করে দিনগুলো কেটেছিল আমার সেই সময়। কতদূরের সম্পর্কও কত কাছের হয়ে যায়। আবার কত কাছের বহুদিনের সম্পর্কও গভীর গোপন ভালোবাসার সম্পর্ক দূরের হয়ে যায় নিজেদের অজান্তেই।
এই সানিকে তো আমি চিনতাম না। খুব অল্প দিনে ওকে চিনলাম আমি। বর্ধমানের রিপোর্টার হয়ে। সেই বর্ধমানের পার্থ আর অরূপ এর হাত ধরেই ওর এই খবরের জগতে পা দেওয়া। সেই সানি এখন বিরাট সাংবাদিক হয়েও মনে রেখেছে আমায় এটাই বা কম পাওয়া কি এই জীবনে।
এই জীবনে সানির মত, মহম্মদ খান এর মত ছেলেরা আছে বলেই হয়তো জীবনটা বেশ ভাল লাগে। খান এর সাথে বোস এর অমলিন এই মেঠো সম্পর্ক টিকে থাক।তাই তো মনে হয় আমার কোথা থেকে যে সানি চলে এলো কে জানে। ভালো থাক ভাই। মন দিয়ে আর মাথা উঁচু করে কাজ কর।
বর্ধমানের রিপোর্টার সানি - অভিজিৎ বসু।
একত্রিশ জানুয়ারী দু হাজার পঁচিশ।।
ছবি নিজের ক্যামেরায় তোলা।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন