সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

এক হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকের গল্প

হোমিওপ্যাথি না এলোপ্যাথি। এই লড়াই ঠিক বলবো না এই অসম একটা দড়ি টানাটানি চলে দীর্ঘদিন ধরেই আমাদের এই কোন চিকিৎসা করবো সেটা নিয়ে। তবে বর্তমান এই প্রবল এলোপ্যাথির দাপটে আমরা সব একদম মোহাচ্ছন্ন হয়ে গেছি বলা যায়। যে কোনো কিছু হলেই পাড়ার ওষুধের দোকানে ছুটে যাওয়া আর সেখান থেকে যা হোক কিছু মেডিসিন কিনে খেয়ে নেওয়া। পঞ্চাশ টাকা বা একশো টাকাতে চিকিৎসার ওষুধ মিলে গেলো আর চিন্তা কি। তাহলে আর সেই 
আদ্যিকালের বদ্দি বুড়োর কাছে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা নিয়ে ওর ওষুধ খেয়ে আর কি হবে।

 কিন্তু এই ধারনাটা একটু বদলে গেলো আমার জামালপুরের এই প্রত্যন্ত গ্রামে গিয়ে। সেখানে এক চিকিৎসকের সাথে আলাপ হয়ে। দীর্ঘদিন বিদেশে কাটিয়েও দেশের টানে দেশে ফিরে আসা তাঁর ঘরকে আর গ্রামকে ভালোবেসে। মাটির গন্ধকে ভালোবেসে। যেটা আজকাল দেখাই যায়না একদম। বাড়ীর সবাই এলোপ্যাথি চিকিৎসক হলেও নিজেই কেমন একটু অন্য পথে হেঁটে দেখতে চাইলেন তিনি। আর পুরোটাই নিজের রিসার্চ এর মাধ্যমে হাতে কলমে কাজ করে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা করে সাফল্য পেতে শুরু করলেন তিনি ধীরে ধীরে। ছড়িয়ে পড়লো তাঁর নাম। 

 আজ আমার সাদা জীবনের কালো কথায় তেমন এক হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকের কথা। আমার আঁকিবুঁকি ব্লগে সেই ডাক্তার এর নানা কথা। ডাক্তার সৌমাল্য চট্টোপাধ্যায়। শহুরে জীবনের ছোঁয়া থেকে একটু দূরে গিয়ে কলকাতা থেকে প্রায় একশো কিলোমিটার বেশি দূরের গ্রামে গিয়েও তিনি চিকিৎসা করছেন গ্রামের অতি সাধারণ মানুষের জন্য। কলকাতার সল্টলেকে আর বরানগর এও বসেন তিনি। 

আসলে কিছু কিছু মানুষের জীবন দর্শন তাঁর জীবনের লক্ষ্য একদমই ভিন্ন। শুধুই টাকার পিছনে ছোটা নয়। শিকড়কে ভুলে গিয়ে শুধুই দৌড়ে যাওয়া নয়। শুধুই টাকা কামানো জীবনের লক্ষ্য নয়। আর গ্রাম ছেড়ে শহর, শহর ছেড়ে বিদেশে পৌঁছে গিয়ে জীবন কাটিয়ে দেওয়া নয়। তিনি একটু অন্য ভাবে জীবন কাটাতে চান মানুষের জন্য কিছু করতে চান। আর তাই আমি তাঁর কথা শুনে গেছিলাম দেখা করতে একটু অন্যরকম ডাক্তারের চেম্বারে। সেই একদম গ্রামের বাড়িতে বসে কলকাতা থেকে এসে অক্সিজেন পাবেন বলে হাসিমুখে সকাল থেকে রাত অবধি চিকিৎসা করছেন তিনি। দুরদুরান্ত থেকে আসা মানুষদের। একদম আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহণ করে। 

প্রথমে দেখে একটু কেমন যেনো মনে হলো এই গ্রামে এমন একজন মানুষের কাছে আর কতজন আসবেন তাঁকে দেখাতে। ভুল ভাঙল আমার সেই ওনার রাত এগারোটার পর অ্যাপয়েন্টমেন্ট পাবার পর বুঝলাম না ব্যাপারটা বেশ ভালই। একদম আপটুডেট ব্যবস্থা নিয়ে অ্যাপস এর মাধ্যমে বুকিং করে সেই বুকিং কনফার্ম করে দিব্যি কাজ করে চলেছেন তিনি নিয়ম মেনেই ঘড়ি ধরেই চুপচাপ। আর প্রত্যন্ত জামালপুর গ্রামে বসেও তাঁর কাছে ছুটে আসছেন অনেকেই। বর্তমানে ক্যান্সার নিয়েও রিসার্চ করছেন তিনি। 

জামালপুরের সুন্দর গ্রাম্য পরিবেশে এই চেম্বার শান্ত নির্জন জায়গায়। ট্রেন পথে মশাগ্রাম স্টেশন থেকে এই চিকিৎসকের চেম্বারে যাওয়া যায় টোটো করে। আবার মেমারি তারকেশ্বর রুটের বাস করেও জামালপুর বিডিও অফিস পার করেও যাওয়া যায় ওনার চেম্বার। খুব যে একদম ভীড় উপচে পড়ছে এমনটা কিন্তু নয়। তবু বেশ চাপ আছে এই চেম্বারে। একটা রেফারেন্স ছিল বলেই ওনার কাছে পৌঁছানো গেলো বেশ সহজেই হাসিমুখে ওনার দরজা ঠেলে। কিন্তু প্রফেশনাল চিকিৎসকের মত নয় তিনি। একটু বিদেশের মাটিতে পা দিয়ে এসে দামী কোর্ট প্যান্ট পরে ঘেরাটোপে বন্দী নয় এই ডাক্তারের জীবন আর তাঁর সহজ সরল জীবনের দর্শন। কেমন সহজ সরল ভাবেই মিশে যাওয়া, কথা বলা চেনা অচেনা রোগীর সাথে আপনজনের মতই হাসিমুখে তাঁর কুশল নেওয়া।

আর তাই বোধহয় আমার মনে হলো এই হোমিওপ্যাথি চিকিৎসককে নিয়ে কিছু লিখলে হয়। যা আমি নানা জনকে নিয়েই লিখি নানা সময়ে। এলোপ্যাথির দাপটে যেখানে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা প্রায় কোণঠাসা হয়ে গেছে শুধুই একশ্রেনীর পুঁজিপতি ব্যবসায়ী দলের সাথে অসম এক শ্রেনীর খেটে খাওয়া মানুষের এই অসম লড়াই। যে লড়াইয়ে শামিল হয়ে ক্রমেই‌ কোণঠাসা হয়ে পড়ছে এই সুয়োরানী আর দুয়োরানীর গল্পের সেই দুয়োরানী। তবু ক্ষতিকি দুয়োরানীর ইমেজ নিয়ে হাসি মুখে ঘুরে বেড়াতে তাঁর কষ্ট বা আফশোষ নেই কোনোও দুঃখ নেই।

আর তাই ওনার সাথে কথা বলে ওনার বিশেষ পদ্ধতির চিকিৎসা নিয়ে ভালো হয়ে যাওয়া রোগীদের সফল হয়ে যাওয়া রোগীদের গল্পের স্টোরি দেখলাম এই ওনার চেম্বারে বসে দেওয়ালে ঝোলানো টিভিতে। সব সাকসেস এর গল্প। যা চলছে তার ইউটিউবে আপলোড হয়ে। যা দেখে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও বোর হবেন না চেম্বারে আসা রোগীরা। বিরক্ত হবেন না বরঞ্চ একটু আশার আলো দেখতে পাবেন যে তাহলে সেও সুস্থ হবে এই এক রকমের রোগ থেকে। কলকাতার চেম্বারে একটু খরচ বেশি যেটা গ্রামের মেঠো চেম্বারে একটু কম। কারণ ওষুধের কিছু ছাড় দেওয়া হয় বেশি করে এই জামালপুরের চেম্বারে। তবে একদম আপটুডেট ব্যবস্থা আর কি এই হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকের চেম্বারে। 

মাঝে মাঝেই তিনি হাসিমুখে গ্রামের মানুষ এর সাথে কথা বলছেন। মুখে কপট গাম্ভীর্য এনে নয় একদম আন্তরিক হয়ে মানবিক হয়ে। যেটা বোধহয় দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলা এই এলোপ্যাথি চিকিৎসকদের কাছে পাওয়া একটু মুশকিল বটে। আমার সাথেও গল্প হলো ওনার দীর্ঘ সময়। মুঠোফোনে ছবি তুলে নিলাম আমি ওনার সাথে। গল্প হলো আমার জাপানী ভাষা নিয়ে পড়া লাজুক মেয়ের সাথেও। বেশ ঘরোয়া ব্যাপার আর কি। 

আর তাই যে বিদেশে পড়া করা উচ্চ ডিগ্রী পাওয়া ডাক্তারের কাছে একটা ভয় নিয়ে হাজির হলাম আমি আমার একটু যেতে দেরী হয়ে গেছে বলে সেই ডাক্তারের কাছেই কেমন যেন বন্ধু হয়ে গেলাম বেশ অল্প সময়ের মধ্য আলাপ হয়ে। আজকাল কে আর তার গণ্ডি ছাড়িয়ে বন্ধু হয়। সবাই যে নিজেকে ঘেরাটোপে বন্দী রেখে চলতেই পছন্দ করেন। কিন্তু এই ডাক্তার সৌমাল্য চট্টোপাধ্যায় একটু অন্য ঘরানার। অন্য ধরনের একজন মানুষ।

 যিনি শুধুই নিজের ব্যবসা আর প্রতিপত্তি বৃদ্ধির নেশায় না দৌড়ে এই দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলা আর ব্যবসা ফেঁদে ব্যবসা করা চিকিৎসকদের থেকে একটু আলাদা ধরনের মানুষ। আর তাই তাঁর কথা লিখে ফেললাম আমি আমার এই আঁকিবুঁকি ব্লগে। ভালো থাকবেন ডাক্তারবাবু। শহুরে জীবনের হাতছানি এড়িয়ে গ্রামের মেঠো পথে হেঁটে বেড়ানোর জন্য ধন্যবাদ আপনাকে। এই দ্রুত গতিতে বদলে যাওয়া যুগে শিকড়কে না ভুলে আপনি বেশ ভালোই করেছেন। শিকড়ের টানে গ্রামের মেঠো বাড়ীতে ফিরে আসা, মাটির গন্ধ মেখে শ্বাসপ্রশ্বাস নেওয়া, আর জীবনকে উপভোগ করা আর গ্রামের মানুষদের চিকিৎসা করা এটাই বা কম কী। ভালো থাকবেন আপনি। 

এক হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক এর গল্প - অভিজিৎ বসু।
উনত্রিশ জানুয়ারী, দু হাজার পঁচিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

জামালপুরের প্রদীপ দা

আজ আমার সাদা জীবনের কালো কথায় বর্ধমানের জামালপুরের সেই দাপুটে ঠোঁট কাটা সাংবাদিক প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় এর কথা। সেই বিখ্যাত সুভাষ তালুকদার এর কাগজ সংবাদে মাত্র এক টাকার কাগজে কাজ করা সংবাদ পত্রিকার দাপুটে সাংবাদিক সেই প্রদীপ দা। সেই মুখ্যমন্ত্রীর সভায় বাঁশের ব্যারিকেডের এপারে দূরে দাঁড়িয়েও যে খবর করা যায় সেটা বড়ো মিডিয়ার সাংবাদিকদের হাসি মুখে দেখিয়ে দিয়ে, আর তাদের খবরের ময়দানে গোল দিয়ে শুধু খবরকে ভালোবেসে ছোটো কাগজে কাজ করে চলা সর্বদা হাসি মুখের সেই আমাদের প্রদীপ চ্যাটার্জী দা।  কোথাও কোনো অন্যায় দেখলেই প্রতিবাদে মুখর হয়ে যাওয়া আর এক দৌড়ে বেরিয়ে পড়া ঝোলা কাঁধে সেই খবরের খোঁজে সেই জামালপুরের প্রত্যন্ত গ্রামের সেই প্রদীপ দা। সেই বিখ্যাত পন্ডিত রবিশঙ্কর আর উদয়শঙ্কর এর আপন মাসতুত ভাই এর ছেলে সেই প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় দাদা। সেই বামদের আমলে জামালপুরের এলাকায় দাপিয়ে খবর করে ছুটে বেড়ানো সেই প্রদীপ দা। সেই তৃণমূল আমলেও একভাবেই ছুটে বেরিয়ে কাজ করা আমাদের সদা ব্যস্ত প্রদীপ দা।  সেই বাবার অসুস্থতার কারনে বড়ো সংবাদ মাধ্যমে কাজ না করেও...

আমার স্যার কাজীদা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ আমার স্যার এর কথা। যার লেখা আজ হঠাৎ চোখে পড়লো একটি কাগজে। আর স্যার এর নামটা দেখেই মনে পড়ে গেলো নানান কথা। হ্যাঁ, সেই কাজী গোলাম গাউস সিদ্দিকী। যাঁর সাথে আমার আলাপ আর দেখা হয়েছিল সেই অজিতদার ফ্রিল্যান্স ছকু খানসামা লেনের ফ্রীল্যান্স প্রেস ক্লাবের অফিসে খুব সম্ভবত। হাসিখুশি বেশ অজাতশত্রু এই মানুষটিকে দেখেই আমার মনে হয়েছিল যে রিপোর্টারদের প্রভূত ক্ষমতা থাকে বোধহয়। তাই পকেটে পেন আর সেই ফোনের ছোট্টো নোটবুক দেখেই আমার মনে হয়, যে ক্ষমতার স্বাদ পাবার জন্য সেই সদ্য গ্র্যাজুয়েশন করে আমার কচি মনে সাংবাদিক হবার বাসনা জাগে সেই সময়।  কোনো প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক নয়, কোনো অফিসে মাছি মারা দশটা পাঁচটার লোয়ার ডিভিশন এর কেরানি নয়, মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ নয়, ল্যাবরেটরিতে টেকনিশিয়ান এর কাজ নয়, এল আই সি বা পোষ্ট অফিস এর এজেন্ট নয়, কোনো মুদি দোকানে হিসেব পত্র লেখার কাজ নয়, স্বাধীন ব্যবসা করা নয়। শুধুই সাংবাদিক হবার স্বাদ।  কাগজে সাদা কালো অক্ষরে নিজের নাম ছাপা হবে, সেই নাম দেখে বুক ফুলে যাবে, পাড়ায় প্রতিবেশীরা সহ স...

কুড়ি থালা দশ টাকা আর রসিক মুলুর জীবন

নাম মুলু হাঁসদা। বাংলা ঝাড়খণ্ড সীমানার চরিচা গ্রাম পঞ্চায়েত এর চর ইচ্ছা রঘুবরপুরের বাসিন্দা মুলু। আজ মুলুর জীবন কথা। গ্রামের নামটা ভারী অদ্ভুত। চর ইচ্ছা রঘুবরপুর। যে গ্রাম অন্য পাঁচটা গ্রামের মতই।সাদামাটা এই গ্রামে দারিদ্র্য, অপুষ্টি আর কর্মহীন জীবনের জলছবি সুস্পষ্ট। আর সেই গ্রামের মহিলারা নিজেদের সংসার রক্ষা করতে গাছের পাতাকে আঁকড়ে ধরে রেখেছে। গাছের পাতা মুলুদের জীবনের জিয়ন কাঠি। যে জিয়ন কাঠিতে তারা ভোর হতেই পেটের টানে চলে যায় জঙ্গলে। খস খস শব্দ করে পায় হেঁটে তারা পাতা তোলে। গাছ থেকে টুপ টাপ করে ঝড়ে পড়া পাতাকে একটা একটা করে নিজের শাড়ির আঁচলে ভরে নেয়। তার পর সব পাতাকে বস্তায় ভরে ঘরে ফেরে।  ঠিক যেভাবে তারা পুকুরে নেমে শামুক গেঁড়ি আর গুগলি তোলে। যে ভাবে তাদের উদর পূর্তি হবে বলে। আর এই পাতাও যে তাদের পেট ভরায়। একটা একটা পাতাকে নিজের সন্তানের মতো আলগোছে ছুঁয়ে বুকে জড়িয়ে ধরে চুমু খায় মুলু, বলে তোরা না থাকলে কি করতাম কে জানে। মাথার ওপর শাল সেগুনের বিশাল আকারের গাছগুলো চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে আর তারা চুপ করে শোনে মুলুর কথা।  একে অপ...

শুভ মকর সংক্রান্তি

মকর মানেই নতুন জামা কাক ভোরে স্নান, রাত্রি জেগে মিঠে সুরে টুসুমণির গান। মকর মানেই পিঠে - পুলির গন্ধে ম - ম হাওয়া, ডুলুং পাড়ে টুসুর মেলায় দল বেঁধে যাওয়া। মকর মানেই মোরগ লড়াই পাহুড় জেতার সুখ, সন্ধ্যা - রাতে মাংস পিঠের স্বাদে ভরা মুখ। মকর মানেই হাতি - ঘোড়ার পুজো করম তলে, সান্ধ্য হাওয়ায় মন উদাসী দিমির দিমির বোলে। আসলে আজ এই মকর সংক্রান্তির দিন, টুসু মেলার দিন, টুসু গানে নিজেকে মাতিয়ে দেবার দিন। অজয় এর ধারে জয়দেব কেঁদুলির মেলায় ভীড়ের মাঝে নিজেকে হারিয়ে দেবার দিন। অজয় এর জলে ডুব দিয়ে স্নান করে পূণ্য অর্জনের দিন। আর নদীর ধারে মোরগ লড়াই এর দিন। আকাশে ঘুড়ি ওড়ানোর দিন, সুতো লাটাই হাতে আকাশ পানে তাকিয়ে থাকার দিন। কেমন যেনো রাশির একটি স্থান থেকে অন্য রাশিতে স্থান পরিবর্তনের দিন। সূর্যের দেবতাকে সকালে উঠে স্নান সেরে প্রণাম জানিয়ে শক্তি সঞ্চয় এর দিন। সূর্যের উত্তর দিকে চলে যাবার দিন। ধীরে ধীরে শীতকাল চলে যাওয়ার দিন।  এই মকর সংক্রান্তি এর ইতিহাস ও ভারতীয় ঐতিহ্যের গভীর শিকড় রয়েছে। এটি কৃষি চক্র এবং ফসল কাটার মৌসুমের সাথে জড়িত। এই মকর সংক্রান্তি চ...