সেই বহরমপুর শহরে এক সন্ধ্যায় ইটিভির বিখ্যাত জেলার বুলেটিন আমার বাংলায় রক্ত বেচা দালাল চক্রের একটি খবর করে সেই চক্রের পর্দা ফাঁস করে হৈ চৈ ফেলে দিলো এক জেলার ডাকাবুকো রিপোর্টার। সেই জেলার রিপোর্টার হলেও ধীরে ধীরে সুমন চট্টোপাধ্যায় এর নজরে পড়ে স্টার আনন্দে যোগ দিয়ে নানা খবর করে দেশের দর্শকের কাছে পৌঁছে যাওয়া ধীরে সুস্থে একদম চুপ করে কাউকে কিছুই বুঝতে না দিয়ে।
সেই প্রথমে প্রিন্ট মিডিয়ার থেকে ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে পৌঁছে হাসি মুখেই তিরিশ বছর ধরেই বাংলা মিডিয়াতে দাপটে কাজ করা তাঁর। আর নিজের দক্ষতায় ধীরে ধীরে সেই সময়ের বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছের জন হয়ে যাওয়া নিজের যোগ্যতা আর জনসংযোগ করেই। যিনি বর্তমানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তাঁর কাছের জন আর ভালোবাসার জন হয়ে যাওয়া তাঁর নিজের কৃতিত্বেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সাংবাদিক হয়ে দেশে বিদেশে ঘুরে বেড়ানো তাঁর সাথেই। এই দীর্ঘ জার্নি পথে রয়েছে অনেক চড়াই আর উৎরাই। রয়েছে অনেক দুঃখ কষ্ট আর যন্ত্রণা আর ভালবাসা। এই সব কিছু নিয়েই তো এই এক সাংবাদিকের জীবনের তিনটি দশক পার। যে কথা আজ তিনি নিজেই লিখলেন তাঁর নিজের পোস্টে।
সেই মহাকরণের বারান্দায়, সেই রাজভবনের লনে, সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফর সঙ্গী হয়ে জেলায় জেলায় ঘুরে বেড়ানো তাঁর নানা আন্দোলনের সাক্ষী হয়ে। আবার কখনও বিদেশের রাস্তায়। কখনও বার্সিলোনা বা কোনো সময় মাদ্রিদ শহরে। কোনও সময় লন্ডনের টেমস নদীর ধারে হাসিমুখে ঘুরে বেড়ানো তাঁর। সত্যিই অসাধারণ এই সাংবাদিক জীবন। অসাধারণ এই জীবনের নানা অভিজ্ঞতা। যে অভিজ্ঞতার ঝুলি আজ অনেকটাই পরিপূর্ণ এই তিন দশকের পর।
সেই জেলার রিপোর্টার থেকে একটা নির্দিষ্ট গন্তব্যে ঠিক মেপে হাসি মুখেই পৌঁছে যাওয়া ফিতে দিয়ে মেপে একদম চুপ চাপ করেই। সেই বিখ্যাত শুধু নয় প্রখ্যাত এই সাংবাদিকের জীবনের তিরিশ বছর পূর্তিতে আমি কিছু লিখতে পারছি তাঁর সমন্ধে এটাই আমার কাছে অনেক বড়ো প্রাপ্তি আমার জীবনে। এই তো কিছুদিন আগেই এক সন্ধ্যায় প্রেস ক্লাবের রাস্তায় দেখা হলো আমাদের দুজনের। শুধু আলো আঁধারি রাস্তায় পাশ কাটিয়ে চলে যাওয়া শুধু মৃদু হেসে আর একে অপরকে চিনতে পেরে একটু চেনার চেষ্টা করে মাত্র। এটাই তো স্বাভাবিক ঘটনা। টোটো চালকের জীবনে এর থেকে বেশী প্রাপ্তি আর কি হতে পারে।
সেই কালীঘাটের বাড়িতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘরে তখন মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ার পাননি তিনি হাসিমুখে তাঁর পছন্দের রিপোর্টারদের ঘরে ঢোকার কোনোও বাধা ছিল না সেই সময়ে। ক্যামেরা নিয়ে ঘরে গেলে দু চার কথা বাইট পাওয়া যেতো তাঁর একদম সামনে থেকে দাঁড়িয়ে। এতো কড়াকড়ি আর বাধা নিষেধ ছিল না সেই সময় কালীঘাটের অন্দরে। সবাই প্রবেশ করলেও পরে আমিও ছোট্ট ঘরে প্রবেশ করতেই মুকুল রায় এর কথা কি রে অভিজিৎ তুই এখানে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে দেখেই চিনতে পারা।আমার উত্তর সিঙ্গুর থেকে সোজা আমিও কলকাতা চলে এসেছি বদলি হয়ে। আর সেটা শুনে দিদির মৃদু হাসি। মুকুল রায় এর আমাকে চিনতে পেরে হেসে ফেলা আমার কথা শুনে।
আজকালের সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ভারী রাশভারী বিখ্যাত সাংবাদিক যাঁর চেয়ার কালীঘাটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ীতে নির্দিষ্ট থাকতো, সেই দীপঙ্কর দাশগুপ্তের আমায় কঠোর দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখা পারলে তিনি ভস্ম করে দেবেন। যদিও সেই রিপোর্টার এর বিদেশ ভ্রমণের পড়ে সেই দৃষ্টি অনেকটাই বদলে যায় বেশ কিছুদিন। সত্যিই বেশ ভালো লাগলো সেদিন আমার কালীঘাটের বাড়িতে। বাইট হবার পর বেরিয়ে এসে ওর সেই হাসিমুখে প্রশ্ন কি খবর ভালো তো? বলে অল্প কথা বলা ওর পুরোনো ছেড়ে আসা চ্যানেলের এক পাতি রিপোর্টার এর সাথে এক নম্বর চ্যানেলের রিপোর্টার এর। বেশ ভালো লাগলো সেদিন আমার।
সেই মহাকরণের বারন্দায় বসে অমিত মিত্রের ঘরের সামনে বসে পুরোনো দিনের নানা কথা আর স্মৃতির পাতা উল্টে সময় কাটানো দুজনের এক সন্ধ্যায়। আর মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিদি বের হবেন খবর পেলেই কেমন তাড়াতাড়ি করে রেডি হয়ে যাওয়া ওর। এইভাবেই সেই বহরমপুরের ইটিভির অফিস, সেই রাজপথ এর অফিস আর শিয়ালদহ স্টেশন এর কাছের বঙ্গলোক এর অফিস, সেই ইটিভির তিন নম্বর চৌরঙ্গী স্কোয়ার এর অফিস, পরে সেই বিখ্যাত স্টার আনন্দের অফিসে কাজ করা ওর হাসি মুখে।
এই দীর্ঘ দিনের তিরিশ বছরে জার্নি করে আজ বোধহয় ওর সব থেকে আনন্দের দিন। আর তাই স্মৃতির পাতা উল্টে পাল্টে নানা ঘটনার উল্লেখ করার দিন। যে দিনগুলো বেশ আনন্দ দেয় তাঁকে আজও এতদিন পরেও। যেদিনের নানা ঘটনা তাঁকে আজও বেঁচে থাকার আর খবরের টানে দৌড়ে বেড়ানোর রসদ দেয় আজও। হাসিমুখে তাঁকে খবরের নেশায় আচ্ছন্ন করে রাখে আজও এই এতোদিন পরেও এই বয়সে পৌঁছেও। আর তাই বোধহয় আজ সেই খবরের এই দৌড়ের জীবন কাটিয়ে দিয়ে তিরিশ বছর পর ঘাড় ঘুরিয়ে একটু ফিরে দেখা। ফেলে আসা পথকে একটু দুচোখ ভরে নিরীক্ষণ করা। আর সামনের দিকে এগিয়ে চলা হাসিমুখে। ভালো থেকো তুমি। চরৈবতি চরৈবতি। আমার সাদা জীবনের কালো কথায় আর আঁকিবুঁকি ব্লগে সেই কথাই লিখে ফেললাম আমি।
ইটিভির আশাবুল হোসেন - অভিজিৎ বসু।
আট ফেব্রুয়ারী, দু হাজার পঁচিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন