ভেবেছিলাম আট থেকে আশির এই নিজেকে বদলে নেওয়ার দলে ও নাম লেখাবে না একদম কিছুতেই। গুরুগম্ভীর আর সেই অর্থপূর্ণ ভাব বিনিময় করে বেঁচে থাকা আর উচ্চপদে কর্মরত এই ব্যক্তি কী আর নিজেকে খোলস ছেড়ে বদলে নেবে হঠাৎ করেই। কেমন দেখতে লাগে এই নতুন চেহারায় ,সেটা দেখার বাসনা হবে তাঁর। কিন্তু না আমি দেখলাম এই বদলে নেওয়ার আর নিজেকে একটু উল্টেপাল্টে দেখে নেবার লোভ বড়ো ছোঁয়াচে। ঠিক বসন্তের বাতাসে উড়ে বেড়ানো পলাশের শুকনো হাসির মতই।
জানি আমায় কেউ কেউ বলবেন আবার ওকে নিয়ে লেখা। এই লেখা কত নম্বর ভাই। এই ছবি দেখে আর লেখার কি দরকার বাবা তোমার। তিনকাল গিয়ে এককাল ঠেকেছে তোমার। ওকে তেল দিয়ে আর লাভ নেই,চাকরির আশা নেই আর কোনোও তোমার। যেমন আছো তুমি তেমনি থাকো বাবা এই টোটো চালকের বেশ ধরে ঘুরে বেড়িয়ে এই এলোমেলো এলেবেলে বিন্দাস জীবন নিয়ে। আর কতবার এই মুর্শিদাবাদের ভেঙে পড়া সাম্রাজ্যের এক ব্যক্তিকে নিয়ে বার বার লিখবে আর তাঁকে প্রজেক্ট করবে তুমি এইবার তো থামো বাবা। একটু এই শেষ বেলায় হিসেব করে মেপে পা ফেলো মাঠে। না হলে যে গর্তে পড়ে বেঘোরে হাত পা ভাঙবে তোমার। আমি মনে মনে এই সব শুনে অস্ফুটে হাসি আর রাতের অন্ধকারে বলি পাগলের কি বা দিন আর কি বা রাত।
আসলে কি জানেন তো ওর এই ছবিটা দেখে লোভ সামলাতে পারলাম না আমি কিছুতেই। বয়স হলে যা হয় আর কি। রাতের বেলায় সেই ফ্রীজ খুলে মিষ্টি খাবার লোভ। সেই রাতের বেলায় নীল ছবি দেখার লোভ। রাতের বেলায় জেগে থাকার লোভ। রাতের বেলায় মৃত মাছ এর মত ফেসবুকের দেওয়ালে হেলান দিয়ে একটু অপেক্ষা করার লোভ। সত্যিই লোভ বড়োই বিষম বস্তু কি বলেন আপনারা।
আর সেই লোভে পড়েই তো আমার সেই চেনা হলুদ জামা দেখে, ওর হাতের লাল সুতো দেখে, কালো চশমার কাঁচের ভেতর ওর নির্নিমেষ স্থির দৃষ্টির চাওনি দেখে, সেই বুক পকেটে সস্তার বা দামী একটা পেন দেখে। শুধুই ওর সামনের দিকে তাকিয়ে থাকা দেখে। একমনে গালে হাত দিয়ে ভাবা দেখে। পরবর্তী পদক্ষেপ কি হবে সেটা নিয়ে গভীর চিন্তায় ডুবে যাওয়া দেখে। একদম সাজানো গোছানো জীবনকে সুন্দর করে গড়ে তোলা। কঠিন কাজকে তুড়ি মেরে আর নিজের জেদে কঠিনকে সহজ করে ফেলা।
আর তাই তো আমিও এই বুড়ো বয়সে সেই চেনা অবয়বকে আর চেনা মানুষকে বদলে যেতে দেখে কেমন ভয় পেলাম একটু। আবেগকে চেপে রাখতে পারলাম না আমি কোনমতেই। আর তাই নানা লোকের কথা শুনে, বিদ্রুপ শুনবো জেনেও লিখে ফেললাম আমি ওর বদলে যাওয়া সেই বিখ্যাত চেনা ছবির কথা। যে ছবি দেখে মনে মনে ভাবলাম আমি বলি দাদা যেমন আছো তুমি তেমনই থেকো নিজেকে আর বদলাতে যেওনা খুব বেশি। যদিও ওর কথায় বেশ ভালোই লাগছে তো এই বদলে যাওয়ার ছবি।
বদলে যাওয়ার তালিকায় সবাই - অভিজিৎ বসু।
পয়লা এপ্রিল দু হাজার পঁচিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন