সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

বিধানসভায় ধুন্ধুমার, ধনধান্যে "দোলি"! .... কেন?

বিধানসভায় ধুন্ধুমার, ধনধান্যে "দোলি"! .... কেন?


নীল দিগন্তে ওই ফুলের আগুন লাগল, বসন্তে সৌরভের শিখা জাগল। এই কথা তো কবির কথা। সত্যিই কত সুন্দর কথা তিনি লিখলেন এই বসন্তের ঋতুকে স্মরণ করে। সত্যিই তো নীল দিগন্তে যে ফুলের আগুন কোনোদিন লাগতে পারে সেটাই বোধহয় তিনি বুঝতে পেরেছিলেন আজ থেকে এত বছর আগেও। যে আগুনে পুড়ে মরতে বড়ো ভয় লাগতে পারে কোনো সময়। আর তাই কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখলেন এই বিখ্যাত গান। যে গান আমাদের কানের ভিতর দিয়া মরমে পশিল গো। 

তবে আমি ফুলের আগুন না দেখতে পেলেও যেটা আজ বিধানসভার অন্দরে দেখতে পেলাম সেটাও কি কম বড়ো আগুন। যে আগুন ধিকি ধিকি করে জ্বলতে জ্বলতে কেমন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে আজ রাজ্যের চারিদিকেই। যে আগুন যে শুধু বসন্তের লাল পলাশ ফুলের হাসিমাখা ভোরে ঘুম ভেঙে উঠে আমি দেখতে পাচ্ছি সেটা নয়। সেই আগুন বসন্ত, শীত, শরৎ আর হেমন্ত আর বর্ষাতেও সমানভাবেই ছড়িয়ে পড়ছে এদিক থেকে ওদিক। পাহাড় থেকে সমুদ্রে। উত্তর থেকে দক্ষিণে। হুগলী থেকে হাওড়া। কাকদ্বীপ থেকে কুচবিহার। বসিরহাট থেকে মাদারিহাট রাজ্যের সর্বত্রই। 

সেই আগুনের লেলিহান শিখা ছড়িয়ে পড়ছে বিধানসভার অন্দরে। একপক্ষের হাতে হিন্দুত্বের ট্রাম্প কার্ড আর অন্য পক্ষের হাতে সংখ্যালঘুর টেক্কা। সেই নিয়েই চলছে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা। যে যুদ্ধ সত্যিকার শুরু হলে আমরা কে কোথায় থাকবো কেউ জানি না। শুধু ভোটের রাজনীতি করতে গিয়েই এই আগুন নিয়ে খেলা। আর তাই বোধহয় আজ ধনধান্যে "দোলি" উৎসব পালন করা হলো। নাচে গানে মেতে উঠলেন অনেকেই। বসন্ত উৎসবে যোগ দিলেন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ধনধান্যে অডিটোরিয়ামে হলো এই অনুষ্ঠান। বুধবার সন্ধ্যায় ঠিক দোল উৎসবের আগেই এই "দোলি" উৎসব পালন করা হলো। আয়োজক কলকাতা কর্পোরেশন।

 সত্যিই অসাধারণ এই অনুষ্ঠান। নাচে, গানে মেতে উঠলেন সকলেই। ডান্ডিয়া হাতে মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং যোগ দিলেন এই অনুষ্ঠানে। একদম যেনো ফিরে গেলেন সেই বসন্তের রঙিন ছোঁয়ায় অতীত দিনে। বেশ ভালো লাগলো দেখে আমার। সত্যিই ৩৪ বছরের বাম শাসনে এই "দোলি" উৎসব কি চোখে পড়েছে। ঠিক মনে পড়ছে না তো আমার। যদিও বয়স হচ্ছে তো ভুলে যাই স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে অনেক কিছুই হারিয়ে যায় আর কি আজকাল। কিন্তু জ্যোতি বসুর আমলে, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের আমলে এই "দোলি" উৎসব নৈব্য নৈব্য চ। আচ্ছা এই "দোলি" কেনো? আমি কি ভুল লিখলাম। হোলি শুনেছি, দোল শুনেছি কিন্তু "দোলি" কি ঠিক লিখলাম তো। না হলে আবার সব রে রে করে উঠবে এই বলে যে ভুল লেখার জন্য মাশুল না দিতে হয় আমায় আবার দিনকাল যা পড়েছে।

 না, না, ভুল নয় একদম ঠিক লিখেছি আমি। হোলি আর দোল এর মিশ্রণে তৈরি হলো এই রাজ্যে "দোলি" উৎসব। যে দোল হিন্দুদের পবিত্র উৎসব। যে দোল এর দোলযাত্রা একটি জনপ্রিয় ও তাৎপর্যপূর্ণ হিন্দু উৎসব। যা বসন্ত, প্রেম এবং রঙের উৎসব নামেও পরিচিত এটি ৷ এটি রাধা ও কৃষ্ণের শাশ্বত ও ঐশ্বরিক প্রেম উদযাপন করে। আর এই হোলিকা দহন অশুভ শক্তির বিপরীতে শুভের জয় নির্দেশিত করে। রাক্ষস রাজা হিরণ্যকশিপুর পুত্র প্রহ্লাদ ছিলেন পরম বিষ্ণুভক্ত। সেই কারণে প্রহ্লাদকে হত্যা করার জন্য হিরণ্যকশিপুর বোন হোলিকা প্রহ্লাদকে আগুনে নিক্ষেপ করার পরিকল্পনা করেন। বিষ্ণুর কৃপায় আগুন প্রহ্লাদকে স্পর্শ করতে না পারলেও সেই আগুনে পুড়ে মারা যান হোলিকা। তার তাই হোলি হল অশুভ শক্তির পরাজয় ও শুভ শক্তির জয়ের প্রতীক। তাই হোলির আগেরদিন হোলিকা দহন পালন করা হয়। যা নন বেঙ্গলি হিন্দুদের পবিত্র উৎসব। 

তাহলে দোল আর হোলি মিলে মিশে একাকার হয়ে আছে আমাদের জীবনে।‌ যে জীবনে জড়িয়ে আছে রাজনীতির ঘূর্ণাবর্ত আমাদের সবার কাছে। যে কারণে এই বার প্রথম রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই "দোলি" উৎসব পালন করলেন সরকারী ভাবে কার্ড ছাপিয়ে নানা অনুষ্ঠান করে। একদম মেপে মেপে পা ফেলে। হিসেব করে ইঞ্চি মেপে। যে হিসেবে খুব একটা ভুল তিনি তাঁর এই সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে খুব একটা করেন না কোনওদিন। সেটা তাঁর সবথেকে বড় প্লাস পয়েন্ট। রাজনৈতিক প্রত্যুতপন্নমতিত্বে তিনি অন্য অনেকের থেকে যে এগিয়ে সেটাই বুঝিয়ে দেন তিনি বারবার। বিরোধী রাজনৈতিক দল যদি হিন্দুত্বের ট্রাম্প কার্ড খেলে ভোটে জয়ী হতে চায়, রাজ্য দখল করতে চায় তাহলে তাঁর আর সংখ্যালঘু টেক্কা হাতে আছেই। খাতায় কলমে ২৮ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোট কিন্তু আসলে সেটা প্রায় ৩৪ শতাংশ তো বটেই। সেটা নিয়েই তো এতদিন নিশ্চিন্ত ছিলেন তিনি।

 কিন্তু ওই যে একেবারে ফিতে ফেলে খেলার মাঠে মেপে পা ফেলে চলতে তিনি খুব ভালোবাসেন। তিনি জানেন শুধু সংখ্যালঘু ভোট নয় এইবার একটু ওই হিন্দুত্ব হিন্দুত্ব বলে যাঁরা চিৎকার করে ভোট চায়, যাঁরা রাজ্যে হিন্দুরা বিপদে আছে, খুব বিপন্ন বলে আওয়াজ তোলে। ঠিক তাদের মুখে জবাব দিতেই এই লাঠি হাতে নেমে পড়লেন তিনি হাসিমুখে মঞ্চে। ডান্ডিয়া নেচে কাছে টানলেন বাকি ওই নন বাঙালি হিন্দুদের। যাঁদের এতদিন একটি বিশেষ রাজনৈতিক দল একমাত্র তাদের সম্পত্তি বলেই দাবি করতেন। কিন্তু তাদের এই হোলি অনুষ্ঠান এর আগেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মাস্টারস্ট্রোক। একবারে বুঝিয়ে দেওয়া বিরোধী দল বিজেপিকে যে তিনিও আজ এই "দোলি" করে কাছে টেনে নিলেন ওই বিশেষ সম্প্রদায়ের মানুষদের। বার্তা দিলেন আমি তোমাদেরই লোক। যেটা ভোটের অংকে খুব জরুরি বিষয়।

 আর তাই ওই দূরের নীল দিগন্তে ফুলের আগুন লাগার আগেই বিধানসভা ভোটের ঠিক এক বছর আগেই তিনি সেটা বুঝতে পেরে রাজ্যে নতুন এই বাঙালি হিন্দুদের পবিত্র দোল আর নন বাঙালি হিন্দুদের পবিত্র হোলিকে এক সুতোয় মালা গেঁথে তৈরি করলেন এই "দোলি" উৎসব। যাতে আর সামনের ভোটের মরশুমে নির্বিঘ্নে তিনি শিল্ড জয় করতে পারেন হাসিমুখে। জয় মা মাটি মানুষের জয়। জয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয়।

বিধানসভায় ধুন্ধুমার, ধনধান্যে "দোলি"! .... কেন?
অভিজিৎ বসু।
তেরো মার্চ, দু হাজার পঁচিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ইটিভির পিনাকপাণি ঘোষ

কিছু মানুষ কত কাছে থেকেও পাশাপাশি এক জায়গায় বাস করেও একসাথে একসময় কাজ করেও যে কত দূরে রয়ে যান নিজের হাসিমুখ নিয়ে আর সেই চেনা ছন্দ নিয়ে সত্যিই বেশ ভালো মজার ব্যাপার কিন্তু এটা জীবনের মেঠো পথে। সেই ইটিভির বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে ঘুরে ঘুরে স্ট্রীট ফুডের ছবি তোলা আর নানা খবর করে খাওয়া দাওয়ার এপিসোড করে একসময়ে বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে যাওয়া ইটিভি নিউজে। আর আমাদের জেলায় বসে সেইসব হাঁ করে দেখা আর কেমন মনের ভেতর অস্থিরতা তৈরি হওয়া। একেই বলে কলকাতার রাজপথের সাংবাদিক বলে কথা।  সেই যে বার রাষ্ট্রপতি এলেন জয়কৃষ্ণ লাইব্রেরী প্রাঙ্গণে সেই অনুষ্ঠানের বিশেষ কার্ড জোগাড় করে দেওয়ার অনুরোধ করা ইটিভির চাকরি করার সুবাদে। কোনো রকমে সেই কার্ড জোগাড় করে এনে দেওয়া তাঁকে আর তাঁর পরিবারের সদস্যদের জন্য। আর সেই একদিন দুপুর বেলায় খুব সম্ভবত করোনা শেষ পর্বে বালিঘাট স্টেশন থেকে অফিস যাওয়ার সময় এসি পঞ্চাশ এর বাস এর ভিতরে দেখা হওয়ায় কত গল্প করা দুজন মিলে পুরনো দিনের। আবার উত্তরপাড়ার সেই বিখ্যাত চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে গিয়ে হাসি মুখে দেখা হয়ে যাওয়া রাতের বেলায় কাঁঠালবা...

আমাদের সবার মৃনাল দা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ এক বাবা আর ছেলের লড়াই এর গভীর গোপন কাহিনী। এই সাংবাদিকতার পেশায় এসে কত লড়াই, কত অসম যুদ্ধ, করে যে কেউ সংসার টিকিয়ে রাখতে পারে হাসি মুখে কাউকে কিছুই বুঝতে না দিয়ে। এমন করে কেউ টিকে থাকার চেষ্টা করেন সেটা বোধহয় আমার জানা হয়ে উঠত না কিছুতেই। যদি না এই পেশায় আমি গা ভাসাতাম এমন করে। জীবনের এই নানা টুকরো টুকরো ছবির কোলাজ ভেসে ওঠে এই রাতের অন্ধকারে আচমকা আমার মনের মাঝে। আর আমি চমকে উঠি কেমন করে তাদের সেই কোলাজ দেখে।  এমন এক চরিত্র, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী হয়ে কেমন আলগোছে, হাসিমুখে, নির্মোহ ভাবে, শুধু নিজের কাঁচা পাকা দাড়িতে হাত বুলিয়ে জীবনটা কাটিয়ে দিলো সে শুধুই আকাশ পানে তাকিয়ে। যে নীল আকাশের গা ঘেঁষে উড়ে যাওয়া সাদা বকের ডানায় লেগে থাকে মেঘের হালকা টুকরো। একদম যেনো সিনেমার পর্দার হিরোর মতোই। দেখে বোঝার উপায় নেই একদম। পেটে খাবার না থাকলেও মুখের হাসিটা অমলিন হয়েই বেঁচে আছে আজও এতোদিন পরেও। আর সেই বিখ্যাত সাদা পাকা নাসিরউদ্দিন স্টাইলের দাড়ি, কালো চুল, আর সব সময় ধোপদুরস্ত ফিটফাট একজন মানুষ। রাত নটা বাজলেই যাকে শ্রীরামপুরে...

শপিং মলের উদ্বোধনে সিঙ্গুর আন্দোলনের দাপুটে মন্ত্রী

নালিকুল স্টেশন বাজারে একটি শপিং মলের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বেচারাম মান্না হাজির। একসময় যাঁর অন্দোলনের ঠেলায় পড়ে দৌড়ে একপ্রকার পালিয়ে চলে যেতে হয়েছিল সিঙ্গুর থেকে টাটা কোম্পানিকে। যে আন্দোলনের দগদগে ঘা আর সেই স্মৃতি ধীরে ধীরে আজ প্রায় মিলিয়ে যেতে বসেছে আমাদের কাছ থেকে। আজ সেই চাষার ঘরের মানুষ না হলেও সেই কৃষক আর শ্রমিকের ন্যূনতম অধিকার নিয়ে যে আন্দোলন শুরু করে সারাটা জীবন কাটিয়ে দিলেন সেই মানুষটাকেই কেমন যেন আজ শপিং মলের উদ্বোধনে দেখে বেশ ভালই লাগলো আমার।  একদম নালিকুল স্টেশনের কাছে ঝাঁ চকচকে শপিং মল। দোকানে সাজানো জিনিস পত্র। আর সেখানেই আমাদের মাননীয় মন্ত্রী বেচারাম মান্না। একদম কেমন একটু আমার অচেনা লাগলো যেন। সেই মুড়ি খেয়ে আলুর তরকারি বা শশা খেয়ে আন্দোলন শুরু করা জমি আন্দোলন এর অন্যতম পথিকৃৎ নেতা আজ এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। তাহলে টাটা কোম্পানির বিরুদ্ধে যে জমি দখল নিয়ে আন্দোলন সেই আন্দোলন এর মধ্যে ছিল জোর করে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা। যদিও সেখানেও সেই সময়ের শাসকদলের কর্মসংস্থানের যুক্তি।তবে এই নতুন শপিং মলের উদ্বোধনে তো আর ...

ভীড়ের মাঝে একা

জীবন জুড়ে শুধুই ভীড় আর ভীড়। নানা ধরনের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় মানুষের গন্ধে, বর্ণে , স্বাদের ভীড়ে আমি একদম একা হয়ে যেতে চাই। যে ভীড় উপচে পড়া রাস্তায় শুধুই হেমন্তের ভোরে শিশিরের ফিসফিস শব্দ, পাখির কিচির মিচির আওয়াজ,ধানসিড়ি ওই নদীটির তীর ধরে ঘুঘুর আকুল মন কেমন করা ডাক, উদাসী শালিকের ঝাঁক বেঁধে উড়ে যাওয়া ওই হেমন্তের হলুদ ধানের মাঠ এর পাশ দিয়ে, হলুদ বসন্ত বৌরীর সেই আমলকীর গাছের পাতায়,আড়ালে আবডালে বসে কেমন যেন আমায় দেখে লজ্জা পাওয়া, আর তারপর চোখ নামিয়ে হঠাৎ করেই তার উড়ে চলে যাওয়া। আর মেঘের কোল ঘেঁষে সেই সাদা বকের, বুনো হাঁসের, আর সেই পানকৌড়ির জলে ভেজা ডানা মেলে উড়ে যাওয়া আকাশ জুড়ে। সত্যিই ওরাও যে ভিড়ের মাঝেই বড়ো একা। একা একাই ওদের যে এই বেঁচে থাকা। কেমন নিপাট হৈ চৈ হুল্লোড়হীন একটা জীবন নিয়ে বেশ মজা করে, আনন্দ করে। আর সেই ভোরের আলোয় আলোকিত হয়ে রাস্তার একপাশে গুটি শুটি মেরে শুয়ে থাকা ওই সাদা কালো ভুলো নামের কুকুরের। যে অন্তত এই সব মানুষদের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় একটু যেনো আলাদা , একটু যেনো অন্য রকমের। একটু একা একাই যেনো ওর এই আলগোছে জীবন কাটিয়...

গৌড় প্রাঙ্গণে আনন্দবাজার

গৌরপ্রাঙ্গনে শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যের আনন্দের মেলা আনন্দবাজার। মহালয়ার ভোরবেলায় ঢাকের বাদ্যি আর সানাইয়ের মন কেমন করা সুরে মেতে উঠলো শান্তিনিকেতনের গৌড়প্রাঙ্গণ। প্রতি বছরের মতো এই বছরও যে হবে আনন্দমেলা আনন্দবাজার। হ্যাঁ সত্যিই যেনো আনন্দের এই হাটে বেচাকেনার পসরা নিয়ে একদিনের জন্য বসে পড়া মন প্রাণ খুলে হৈ হুল্লোড় করে। এই মেলা শুরু হয় 1915 সালের 15 এপ্রিল নববর্ষের দিনে। কিন্তু আগে এই মেলাকে একসময় বলা হতো বৌঠাকুরাণীর হাট। সেই সময় আশ্রমের মহিলারা নিজেদের হাতের তৈরি জিনিস নিয়ে মেলায় বসতেন। মেলার আয়োজন করতেন তারা। আনন্দ করে বেচাকেনা হতো। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময় একবার গরমের ছুটির আগে এমন মেলা নাকি হয়েছিল। যার নাম ছিল আনন্দবাজার। পরে এই মেলার নামে হয়ে যায় আনন্দমেলা। সত্যিই আনন্দের এই মিলন মেলা।  প্রথমদিকে পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের ছেলেমেয়েদের নিয়ে এই মেলা শুরু হয়। পরে ধীরে ধীরে বিশ্বভারতীর সব বিভাগের পড়ুয়ারা এই মেলায় যোগদান করে। এই মেলার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো ছাত্রছাত্রীদের বেচা কেনার লাভের টাকার কিছু অংশ জমা পরে বিশ্বভারতীর সেবা বিভাগে। সেখান থেকে এ...