সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

এলোমেলো জীবনের এলেবেলে কথা

জীবনের আঁকাবাঁকা পথ ধরে আমার এগিয়ে চলা। যে পথে নানা চড়াই আর উৎরাই। যে পথ কখনও কাঁদায় আবার কখনও হাসায়। যে পথ আবার কখনও কখনও জোনাকির আলো মাখা গায়ে উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে পথ দেখায়। যে পথের বাঁকে আমার হারিয়ে যেতে ইচ্ছা করে ওই ফাঁকা রাস্তায়। যেখানে কেউ নেই। যেখানে আমি একা একদম একা। সত্যিই তো জীবনের এই হাজার ভীড়ের মাঝে আমরা সবাই যে বড়ো একা। 

আমার সাদা জীবনের কালো কথায় আমার নিজের কথা বলতে ইচ্ছা হলো আজ। সেই যে কথা শুরু করে ছিলাম আমি একদিন আলগোছে। যে কথা বলতে গিয়ে আমি অনেকের কাছেই হাসির পাত্র হলাম। সেই জীবনের কথা। যে জীবনের সাথে লেপ্টে ছিল একদিন নিশ্চিত একটা ভরপুর সুখের জীবন। যে জীবনের চারিধারে কালো টলটল করা পুকুরে দুপুর বেলায় নিশ্চিন্তে ঘাই মারতো মাছ। পুকুর ধারে বসে মাছের খেলা দেখতে বড়ো ভালো লাগে আমার। আর মাথার ওপর খোলা আকাশে চক্কর কাটতো চিল আর সাদা বকের দল। যাদের ডানায় লেপ্টে থাকতো সুখের আবেশ। 

আসলে জীবন মানে তো ধরাবাঁধা একটা একশো মিটারের ট্র্যাকে দৌড়ে যাওয়া। কারুর ফার্স্ট হওয়া, কারুর দ্বিতীয় বা তৃতীয় হওয়া। আর কারুর শুধুই এলোমেলো এলেবেলে বিন্দাস জীবনকে আঁকড়ে ধরে সবার শেষে পৌঁছে যাওয়া দৌড় শেষ করে। যে জীবনের কোনোও তাড়া নেই। যে জীবনের কোনোও আওয়াজ নেই। যে জীবনের কোনোও ঢক্কা নিনাদ নেই। যে জীবনের কোনো মই ধরে ওপরে ওঠা নেই। যে জীবনের একে অপরকে ঠেলে ফেলে দিয়ে এগিয়ে যাওয়া নেই। শুধু মাত্র জীবনকে দেখো এই জীবনই হলো বড়ো শিক্ষক। সেই শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের কথাকে আঁকড়ে ধরে এগিয়ে চলা আছে। যে চলার মধ্যে কোনোও দুঃখ, কষ্ট, মান, অপমান আর অভিমান কিছুই নেই।

আজ তাই শহুরে ভোরের আলো গায়ে মেখে জীবনের এই ছন্দময় গদ্যকে সম্বল করেই আমার এগিয়ে চলা। জানিনা আমি কোথায় যাব। তবু সেই আঁকাবাঁকা পথ ধরে আঁকিবুঁকি ব্লগের পাতায় সাদা জীবনের কালো কথায় আমার এগিয়ে চলা ধীর পায়ে। ফুরিয়ে আসা মোমবাতির আলোয় দ্রুত গতিতে কমছে সেই চড়াই আর উৎরাই এর জীবনের ভালোবাসার উত্তাপ। তবু আমি কেনো জানিনা এই মায়াময় জীবনকে বড়োই ভালবাসি। যে জীবন আমায় কখনও কাঁদায়, কখনও হাসায়। আবার কখনও কখনও হঠাৎ করেই অন্ধকার পথের ধারে জোনাকির নরম আলো ছড়িয়ে দেয়। যে আলোর ওম গায়ে মেখে আমি এলোমেলো এলেবেলে বিন্দাস জীবনে ঘুরে বেড়াই এদিক ওদিক। 

যেখানে সেই কঙ্কালীতলার মন্দিরের গাছ এর ছায়া, মন্দিরের ঘন্টা ধ্বনি, সেই মংলা আর সিপ্পুর জিনিস বিক্রি করার আশায় বুক বেঁধে বসে থাকা জামা নিয়ে একতারা নিয়ে,ওদের মাঝে আমার সেই বোলপুর থেকে সাইকেল চালিয়ে পৌঁছে যাওয়া। কালো প্লাস্টিক পেতে মেয়ের হাতে তৈরি জিনিস নিয়ে বসে থাকা খদ্দের এর আশায়। আর ফেরার পথে তালগাছের নিচ থেকে তাল তুলে বাড়ী ফেরা। সর্ষে ক্ষেতের মাঝে তখন কালো ফিঙের আপনমনে দৌড়ে যাওয়া সেই সর্ষে ফুলের গন্ধ গায়ে মেখে।

সত্যিই জীবন বড়ই অদ্ভুত। যে জীবনে ভালবাসার নরম উত্তাপ। হিংসা আর পরশ্রীকাতরতার ছোঁয়া একসাথেই বসবাস করে কেমন যেন পাশাপাশি গা ঘেঁষাঘেঁষি করেই। যে জীবন আমায় ভাবতে শেখায় নতুন করে। যে জীবন আমায় মানুষকে চিনতে শেখায় নতুন করে। যে টোটো চালকের জীবন, যে গতি হারিয়ে পথ ভুলে এলোমেলো এলেবেলে বিন্দাস জীবন কেমন করে যে আবার গতি পায় কে জানে।

 সত্যিই অসাধারণ এই জীবন যে জীবনের প্রেমে পড়তে ইচ্ছা হয় আমার এই বুড়ো বয়সেও। যে জীবনে নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখতে ইচ্ছা হয় আমার এই শেষ বেলাতেও। পড়ন্ত সূর্যের আলো গায়ে মেখে বেঁচে থাকতে ইচ্ছা হয় আমার আবার। যে বাঁচার সুখই আলাদা। দুঃখের জড়োয়া গায়ে জড়িয়ে সুখের উত্তাপকে গ্রহণ করতে যে বেশ ভালই লাগে আমার। 

এলোমেলো জীবনের এলেবেলে কথা - অভিজিৎ বসু।
কুড়ি এপ্রিল দু হাজার পঁচিশ।

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অ্যাঙ্কর মিমির কথা

'আমরা যদি এই আকালেও স্বপ্ন দেখি কার তাতে কী?' বাহ দারুন সুন্দর এই কথা। স্বপ্ন দেখার কি কোনো সময় হয় নাকি। পঞ্জিকার পাতা উল্টে তিথি নক্ষত্র দেখে কি স্বপ্ন দেখা যায়। যে স্বপ্ন বাঁচার খোরাক জোগায়। যা দেখে এই দৌড় ঝাঁপ করা জীবনে কেমন একটা স্বস্তি মেলে সেই স্বপ্ন সফল হোক বা না হোক। যে কোনোও বয়সে এই স্বপ্ন দেখা যায়। ফেসবুকের পাতায় সেই কথা লেখা দেখে মনে মনে কিছুটা সাহস সঞ্চয় করেই এই রাত দুপুরে ভয়ে কম্পমান হয়েই ওকে নিয়ে লেখার চেষ্টা করা। সেই পোদ্দার কোর্টের অফিসে সেই দুর থেকেই অচেনা জগতের সেই খবরের বিখ্যাত সব নানা ধরনের খবর পাঠিকাদের ভীড়ে তাঁকে দুর থেকে দেখা। একদম অন্য এক গ্রহের বাসিন্দা যেনো। সেই কালামের দোকানে হয়তো কোনোও সময় চা খেতে গিয়ে দেখতে পাওয়া। সেই লিফটের কুঠুরিতে একসাথে ওঠা বা নামা কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখেই। কিন্তু সেই অন্য খবর পড়া অ্যাঙ্কর দের সাথে সহজ সরল ভাবে মিশে যাওয়ার সাহস হয়নি আমার কোনোও দিন তাঁর সাথে। আজ আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায় আমার আঁকিবুঁকি ব্লগের পাতায় সেই ২৪ ঘণ্টার পোদ্দার কোর্টের অফিসের বিখ্যাত অ্যাঙ্কর মিমির কথা। ...

এলোমেলো , এলেবেলে বিন্দাস জীবন ও জন্মদিন

দেখতে দেখতে বছরের পর বছর গড়িয়ে যায়। আসলে এই অচলাবস্থা আর অকর্মণ্য দিনযাপনের একটা জীবন কাটিয়ে দিতে দিতে বেশ আমি কেমন যেন এডজাস্ট করে নিয়েছি নিজের সাথে নিজেরই এক অদ্ভুত সহাবস্থান। আমার জীবনের সাথে ক্রমেই দ্রুত কমতে থাকে যেনো মৃত্যুর দূরত্ব। দীর্ঘ দিনের জীবনের ঘন্টা ধ্বনিতে কেমন অচেনা সুরের সুর মূর্ছনা বেজে ওঠে ঠিক যেনো ওই গির্জার ঘরে জিঙ্গেল বেল, জিঙ্গেল বেল এর সুরের মতই আচমকা রাত বারোটা বাজলেই এই একত্রিশ মে।  যার তাল, লয় আর ছন্দে আন্দোলিত হয় এই জীবন আর জীবনের নানা জলছবি। যে ছবির কোলাজে ধরা পড়ে হাসি কান্না, সুখ আর দুঃখের নানা অনুভব। যে অনুভূতির জারক রসে আমি জারিত হই প্রতি মুহূর্তে। আর তাই তো বোধহয় সেই ছোটবেলার দিন এর কথা মনে পড়ে গেলেই সেই ঝাপসা হয়ে যাওয়া ধূসর হয়ে যাওয়া সেই ছবির সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে ইচ্ছা হয় আমার বড়ো এই আজকের দিনে।  সেই পুরোনো দিনের ভালোবাসার স্পর্শ আর স্মৃতি রোমন্থন করা একটি ছবি। মায়ের নিরাপদ কোলে ঠিক নয় চুপটি করে পাশে বসে আছি আমি একদম ফিট ফাট হয়ে আপন মনে ভদ্র শান্ত ছেলের মতোই যা আমি মোটেও নয়। আজকের সেই এ...

যা দেখি…প্রতিদিন মনে পড়ে কত… স্মৃতির পথ ধরে হাঁটি… লিখি…

ইটিভির অ্যাঙ্কর অঙ্কুর

ভাবা যায় এই ভুবন ভোলানো হাসিমুখের বিখ্যাত অ্যাঙ্করও নকল হতে পারে নাকি কোনোভাবে। হতেই পারে না একদম এটা। কোনোভাবেই এটা মেনে নেওয়া যায় না আর বিশ্বাস করাও যায় না। ওর এই পোস্ট দেখে সেটাই মনে হলো আমার সবার প্রথমেই। আসলে এই জীবনের পথে হাঁটতে হাঁটতে আসল আর নকলের এই গা ঘেঁষাঘেঁষির ভীড়ে পার্থক্য বোঝাই যে দায়। কে আসল বন্ধু আর কে নকল বন্ধু সেটাই বোঝা মুশকিল। সেটাকে নির্ধারণ করা যে বড়ই দুষ্কর কাজ। সেটাই যে আজকাল আর ঠিক করে ঠাওর করতে পারি না আমি এই বুড়ো বয়সে এসে।  আজ সাদা জীবনের কালো কথায় আমার এই আঁকিবুঁকি ব্লগে তাই সেই যার কোলে চেপে বাসে করে জীবনে প্রথম বার দুরু দুরু বুকে রামোজি ফিল্ম সিটিতে গিয়েছিলাম আমি বেশ ভয়ে আর আতঙ্কে যদি চেয়ারম্যান এর সামনে যেতে হয় আর ইংরাজিতে কথা বলতে হয় এই ভয়ে। সেই ভীড় বাসে বসতে জায়গা না পেয়ে সেই তাঁর কথা। সেই যে সারাদিন অফিস করে হায়দরাবাদ এর বাংলা ডেস্ক থেকে ধ্রুব রাতে ওর বাড়িতে ভাত খাবার জন্য নেমতন্ন করলো আমায় গরম ভাত, ডাল আর আলুভাজা রান্না করলো রূপা ওর শরীর খারাপ নিয়েও সেদিন কত কষ্ট করে। সেই খেতে দেবার সময় ওদের ঘরে খাবা...

বিনোদন রিপোর্টার দেবপ্রিয়

দেবপ্রিয় দত্ত মজুমদার। ওর সাথে কোথাও একসাথে কাজ করা হয়নি আমার। ওর খবরের ফিল্ড একদম আলাদা এন্টারটেনমেন্ট। আর আমার শুধুই সাধারণ খবর। কখনও জেলার খবর,আর কলকাতার খবর। রাজনীতির খবর নিয়েই ঘুরে বেড়ানো। তবু কেনো জানিনা ওর শান্তিনিকেতনে আসার খবর শুনেই ওকে সাহস করে আমার নম্বর দিলাম। এমনি কোনোও কারণ ছাড়াই যদি যোগাযোগ হয়। যদি দেখা হয়। কলকাতার গন্ধ আছে। মিডিয়ার একটা বলয় গায়ে জড়িয়ে আছে। আর কি শুধুই যদি দেখা হয়ে যায় এই আশায়।  চমক অপেক্ষা করেছিল আমার জন্য। পরদিন ফোনে যোগাযোগ করলো ও নিজেই। কথা হলো দু চারটে আমাদের। কোথায় থাকো তুমি জিজ্ঞাসা করলো। আর সত্যিই আমি টোটো চালকের কাজ করি কি না যেটা নিয়ে ওর নিজেরও একটা সন্দেহ ছিল মনে মনে সেটা পরিষ্কার করে দিলাম আমি ওকে। কিন্তু যেনো কতদিনের চেনা একজন মানুষ। কত আপন ছন্দে কথা বলা ওর। যেটা আমায় আকর্ষিত করলো বেশ। ওর অনুষ্ঠান যেটা হচ্ছে শান্তিনিকেতনে সেখানে আমার মতো একজন বাতিল মানূষকে আসতে বললো ও নিমন্ত্রণ জানালো সপরিবারে।  আমি একটু আবেগ প্রবণ মানুষ। আমি চলে গেলাম সেই অনুষ্ঠানে ওর আমন্ত্রণে। যা সচরাচর আমি কো...