সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

হ্যাপি বার্থডে মেজদি

দত্ত থেকে খোন্দকার। সেই শ্রীরামপুরের চাতরার শীতলা মন্দিরের বাড়ী থেকে শেওড়াফুলির সেই গঙ্গার ধারের ভাড়া বাড়ী। সেই বৈদ্যবাটি পুরসভার পুরপ্রধান দূর্গাচরণ দত্তর মেয়ে হয়ে আকবর আলী খোন্দকার এর হাত ধরে সেই বাম আমলে ঘর ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া। হ্যাঁ, আমাদের সবার সেই মেজদি। শরৎ চন্দ্রের গল্পের মেজদির আজ জন্মদিন। সেই চন্ডীতলার বিধায়ক এর আজ জন্মদিন। ফেসবুকের দেওয়ালে শুভেচ্ছার বার্তার ঢল দেখে মনে হলো সত্যিই তো আকবর দাকে নিয়ে এত কিছু লিখি আমি কই একবার তো মেজদিকে নিয়ে লিখলে হয়।


আর তাই আজ তাঁর জন্মদিনের দিন শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে মনে হলো দু চারটে কথা লিখে ফেলি আরকি টোটো চালকের কলমে। আমার সাদা জীবনের কালো কথায় আমার আঁকিবুঁকি ব্লগের পাতায়। আসলে কিছু কিছু মানুষ কেমন যেন সহজ সরল ব্যবহার করেই হেসেই জীবন কাটিয়ে দেয়। জীবনের মারপ্যাঁচ রাজনীতির মাঠে খেলতে নেমেও কেমন সহজ থাকে তারা। আর এই সহজ সরল ভালো ব্যবহার নিয়েই চলে তাদের জীবন। যে জীবনে সুখ জড়িয়ে আছে একসময় দুঃখ কষ্ট সহ্য করে চলতে হয়েছে তাঁকে। ছেলে মেয়েকে মানুষ করতে হয়েছে তাঁকে। আকবর দা হঠাৎ করেই চলে যাবার পর একা হাতে সবকিছু সামলে চলতে হয়েছে তাঁকে। 

সে যাই হোক মেজদি আমাদের সবার মেজদি। সেই বাড়ী গেলেই জল মিষ্টি বাঁধা। সেই বাড়ী গেলেই পেট পুরে খেতে দেওয়া এটাই যে সেই বাড়ীর রীতি। আর সবার প্রিয় দিদি হয়েই আমাদের কাছে থাকা মেজদির। একদম মাটির তাল হয়েই তিনি বেঁচে থাকতে ভালো বাসেন। সবার সাথে কথা বলতে ভালোবাসেন। হৈ হৈ করতে ভালোবাসেন। দলের টিকিট পেয়েও নিজের দলের লোকরা পছন্দ না করলেও তিনি হাসিমুখে সব কিছুই মেনে নেন। তিনি জানেন মেজদি হয়ে বেঁচে আছেন তিনি তাঁর বড় দিদির ভরসায়। 

সত্যিই তো জীবনের এই ঝড় ঝাপটা সামলে। প্রিয় ভালোবাসার মানুষকে হারিয়ে ছেলে আর মেয়েকে নিয়ে একাই পথ চলা তাঁর। পরিবার পরিজন আর কিছু রাজনীতির বন্ধু সহকর্মী ছাড়া আর কেউ নেই তাঁর। আজ জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে মনে হলো কতদিন যে মেজদির সাথে দেখা হয়নি আমার। কতদিন যে মেজদি,টুলু,রাজু ওদের বাড়ী যাওয়া হয়নি অনেকদিন। কতদিন যে সেই প্লেট ভর্তি করে মিষ্টি খাওয়া হয়নি পেট পুরে। 

আসলে দিন বদলে গেছে যে। সহজ সরল দিনগুলো ছিল এখন অনেক জটিল ঘূর্ণাবর্তে ঘুরপাক খায় সেই সব দিন। হিসেব আর নিকেশ করে চলে তারা। কার সাথে যোগাযোগ করলে লাভ আর কার সাথে যোগাযোগ করলে ক্ষতি সেটাও নিশ্চয়ই ঠিক হয়েই গেছে আগে থেকেই। সে মানুষ, রিপোর্টার, রাজনীতির লোক আর আত্মীয় স্বজন। কিন্তু এত গেলো এই আমলের কথা। সেই পুরোনো আমলের দিনের স্মৃতি যেখানে হিসেব নিকেশ ছাড়াই আমাদের সবার প্রিয় মেজদি হেসে কথা বলতেন। গল্প করতেন। বাড়ীর প্রিয়জনদের খবর নিতেন। কে কেমন আছে জানতেন।
পূজোর সময় সিং দা এসে জামা কাপড় দিত যদিও সেটা গ্রহণ করা নিয়ে আমার অসুবিধা হতো আপত্তি ছিল দরজা থেকে ফিরিয়ে দেওয়া ঠিক নয় বলে একবার সেটা নিয়ে নিতে হয়েছিল। এইসব নানা ঘটনার কথা আজ মনে পড়ে গেলো তাঁর জন্মদিনে। হ্যাপি বার্থডে মেজদি। ভালো থেকো তুমি। ঠিক আগের মতোই সহজ সরল ব্যবহার নিয়ে হাসি নিয়েই থেকো তুমি। বদলে যেও না অন্যদের মত। মেজদি কি বদলে যেতে পারে?

হ্যাপি বার্থডে মেজদি - অভিজিৎ বসু।
পয়লা মে, দু হাজার পঁচিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

জামালপুরের প্রদীপ দা

আজ আমার সাদা জীবনের কালো কথায় বর্ধমানের জামালপুরের সেই দাপুটে ঠোঁট কাটা সাংবাদিক প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় এর কথা। সেই বিখ্যাত সুভাষ তালুকদার এর কাগজ সংবাদে মাত্র এক টাকার কাগজে কাজ করা সংবাদ পত্রিকার দাপুটে সাংবাদিক সেই প্রদীপ দা। সেই মুখ্যমন্ত্রীর সভায় বাঁশের ব্যারিকেডের এপারে দূরে দাঁড়িয়েও যে খবর করা যায় সেটা বড়ো মিডিয়ার সাংবাদিকদের হাসি মুখে দেখিয়ে দিয়ে, আর তাদের খবরের ময়দানে গোল দিয়ে শুধু খবরকে ভালোবেসে ছোটো কাগজে কাজ করে চলা সর্বদা হাসি মুখের সেই আমাদের প্রদীপ চ্যাটার্জী দা।  কোথাও কোনো অন্যায় দেখলেই প্রতিবাদে মুখর হয়ে যাওয়া আর এক দৌড়ে বেরিয়ে পড়া ঝোলা কাঁধে সেই খবরের খোঁজে সেই জামালপুরের প্রত্যন্ত গ্রামের সেই প্রদীপ দা। সেই বিখ্যাত পন্ডিত রবিশঙ্কর আর উদয়শঙ্কর এর আপন মাসতুত ভাই এর ছেলে সেই প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় দাদা। সেই বামদের আমলে জামালপুরের এলাকায় দাপিয়ে খবর করে ছুটে বেড়ানো সেই প্রদীপ দা। সেই তৃণমূল আমলেও একভাবেই ছুটে বেরিয়ে কাজ করা আমাদের সদা ব্যস্ত প্রদীপ দা।  সেই বাবার অসুস্থতার কারনে বড়ো সংবাদ মাধ্যমে কাজ না করেও...

আমার স্যার কাজীদা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ আমার স্যার এর কথা। যার লেখা আজ হঠাৎ চোখে পড়লো একটি কাগজে। আর স্যার এর নামটা দেখেই মনে পড়ে গেলো নানান কথা। হ্যাঁ, সেই কাজী গোলাম গাউস সিদ্দিকী। যাঁর সাথে আমার আলাপ আর দেখা হয়েছিল সেই অজিতদার ফ্রিল্যান্স ছকু খানসামা লেনের ফ্রীল্যান্স প্রেস ক্লাবের অফিসে খুব সম্ভবত। হাসিখুশি বেশ অজাতশত্রু এই মানুষটিকে দেখেই আমার মনে হয়েছিল যে রিপোর্টারদের প্রভূত ক্ষমতা থাকে বোধহয়। তাই পকেটে পেন আর সেই ফোনের ছোট্টো নোটবুক দেখেই আমার মনে হয়, যে ক্ষমতার স্বাদ পাবার জন্য সেই সদ্য গ্র্যাজুয়েশন করে আমার কচি মনে সাংবাদিক হবার বাসনা জাগে সেই সময়।  কোনো প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক নয়, কোনো অফিসে মাছি মারা দশটা পাঁচটার লোয়ার ডিভিশন এর কেরানি নয়, মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ নয়, ল্যাবরেটরিতে টেকনিশিয়ান এর কাজ নয়, এল আই সি বা পোষ্ট অফিস এর এজেন্ট নয়, কোনো মুদি দোকানে হিসেব পত্র লেখার কাজ নয়, স্বাধীন ব্যবসা করা নয়। শুধুই সাংবাদিক হবার স্বাদ।  কাগজে সাদা কালো অক্ষরে নিজের নাম ছাপা হবে, সেই নাম দেখে বুক ফুলে যাবে, পাড়ায় প্রতিবেশীরা সহ স...

কুড়ি থালা দশ টাকা আর রসিক মুলুর জীবন

নাম মুলু হাঁসদা। বাংলা ঝাড়খণ্ড সীমানার চরিচা গ্রাম পঞ্চায়েত এর চর ইচ্ছা রঘুবরপুরের বাসিন্দা মুলু। আজ মুলুর জীবন কথা। গ্রামের নামটা ভারী অদ্ভুত। চর ইচ্ছা রঘুবরপুর। যে গ্রাম অন্য পাঁচটা গ্রামের মতই।সাদামাটা এই গ্রামে দারিদ্র্য, অপুষ্টি আর কর্মহীন জীবনের জলছবি সুস্পষ্ট। আর সেই গ্রামের মহিলারা নিজেদের সংসার রক্ষা করতে গাছের পাতাকে আঁকড়ে ধরে রেখেছে। গাছের পাতা মুলুদের জীবনের জিয়ন কাঠি। যে জিয়ন কাঠিতে তারা ভোর হতেই পেটের টানে চলে যায় জঙ্গলে। খস খস শব্দ করে পায় হেঁটে তারা পাতা তোলে। গাছ থেকে টুপ টাপ করে ঝড়ে পড়া পাতাকে একটা একটা করে নিজের শাড়ির আঁচলে ভরে নেয়। তার পর সব পাতাকে বস্তায় ভরে ঘরে ফেরে।  ঠিক যেভাবে তারা পুকুরে নেমে শামুক গেঁড়ি আর গুগলি তোলে। যে ভাবে তাদের উদর পূর্তি হবে বলে। আর এই পাতাও যে তাদের পেট ভরায়। একটা একটা পাতাকে নিজের সন্তানের মতো আলগোছে ছুঁয়ে বুকে জড়িয়ে ধরে চুমু খায় মুলু, বলে তোরা না থাকলে কি করতাম কে জানে। মাথার ওপর শাল সেগুনের বিশাল আকারের গাছগুলো চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে আর তারা চুপ করে শোনে মুলুর কথা।  একে অপ...

শুভ মকর সংক্রান্তি

মকর মানেই নতুন জামা কাক ভোরে স্নান, রাত্রি জেগে মিঠে সুরে টুসুমণির গান। মকর মানেই পিঠে - পুলির গন্ধে ম - ম হাওয়া, ডুলুং পাড়ে টুসুর মেলায় দল বেঁধে যাওয়া। মকর মানেই মোরগ লড়াই পাহুড় জেতার সুখ, সন্ধ্যা - রাতে মাংস পিঠের স্বাদে ভরা মুখ। মকর মানেই হাতি - ঘোড়ার পুজো করম তলে, সান্ধ্য হাওয়ায় মন উদাসী দিমির দিমির বোলে। আসলে আজ এই মকর সংক্রান্তির দিন, টুসু মেলার দিন, টুসু গানে নিজেকে মাতিয়ে দেবার দিন। অজয় এর ধারে জয়দেব কেঁদুলির মেলায় ভীড়ের মাঝে নিজেকে হারিয়ে দেবার দিন। অজয় এর জলে ডুব দিয়ে স্নান করে পূণ্য অর্জনের দিন। আর নদীর ধারে মোরগ লড়াই এর দিন। আকাশে ঘুড়ি ওড়ানোর দিন, সুতো লাটাই হাতে আকাশ পানে তাকিয়ে থাকার দিন। কেমন যেনো রাশির একটি স্থান থেকে অন্য রাশিতে স্থান পরিবর্তনের দিন। সূর্যের দেবতাকে সকালে উঠে স্নান সেরে প্রণাম জানিয়ে শক্তি সঞ্চয় এর দিন। সূর্যের উত্তর দিকে চলে যাবার দিন। ধীরে ধীরে শীতকাল চলে যাওয়ার দিন।  এই মকর সংক্রান্তি এর ইতিহাস ও ভারতীয় ঐতিহ্যের গভীর শিকড় রয়েছে। এটি কৃষি চক্র এবং ফসল কাটার মৌসুমের সাথে জড়িত। এই মকর সংক্রান্তি চ...