ভারত পাক যুদ্ধের বাতাবরণে এ এক নতুন করে আঁকড়ে ধরা তাঁকে। নতুন করে কাছে পাওয়ার চেষ্টা করা তাঁকে। তাঁর আদর্শ, তাঁর দেশপ্রেম এখনও উজ্বল ভাস্বর হয়েই বিরাজ করে মানুষের মনে। তিনি আজও হারিয়ে যাননি আমাদের মন থেকে। তিনি আজও সেই আমাদের মনের মণিকোঠায় বেঁচে আছেন স্বাধীনতার এত বছর পরেও। হ্যাঁ, তিনি আমাদের সেই আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠনের মূল চালিকাশক্তি। সেই তোমরা আমায় রক্ত দাও আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেবো স্লোগানের মালিক নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু। স্বাধীনতার এতো বছর অতিক্রান্ত হবার পরেও তাঁর জীবনী, তাঁর বই, তাঁর আদর্শের কথা জানতে তাঁর বইকেই আঁকড়ে ধরলো সদ্য মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করা পড়ুয়ারা। যাদের কচিমনে এখনো ভারত পাক যুদ্ধের দামামা রিনরিন করে বাজে। যাদের কচি মনে দেশের স্বাধীনতার এতদিন পর হয়তো সেই দেশের জন্য আন্দোলন এর কথা মনে পড়ে যায় আবার নতুন করে।
আর তাই বোধহয় এই হুগলীর উত্তরপাড়া শহরের সমস্ত স্কুলের কৃতী ছাত্রছাত্রীদের হাতে বিখ্যাত ব্যক্তিদের আত্মজীবনী তুলে দিলো এই উত্তরপাড়া কোতরং পুরসভা। ভবিষ্যৎ জীবনে যাতে দেশের স্বাধীনতার ইতিহাসকে, সেই সব মানুষদের কথা জানতে পারে তাঁরা। প্রায় ৯৪ জনকে এই নানা বই তুলে দিলো উত্তরপাড়া পুরসভা। যেখানে ছিল নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু, মহাত্মা গান্ধী, স্বামী বিবেকানন্দ , এপিজে আবদুল কালাম, সুধা মূর্তির আত্মজীবনী মূলক বই। যা ছাত্রছাত্রীদের নিজের ইচ্ছামত তুলে দেওয়া হয় কৃতী ছাত্রছাত্রীদের হাতে। বিশেষত ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষাক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়ার জন্য আরো উৎসাহিত করার জন্যই পুরসভার পক্ষ থেকে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়।
কিন্তু আশ্চর্য্য এটাই যে ভারত পাক যুদ্ধের এই পটভূমিতে ছাত্রছাত্রীরা সেই নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর জীবনী আর তাঁর আদর্শের বইকেই আঁকড়ে ধরলো বেশি করে অন্য বইয়ের থেকে। এই সব সদ্য পাশ করা ছাত্রছাত্রীরা আজও কেমন করে এই হারিয়ে যাওয়া মানুষটার জন্য আজও কেমন করে আকুল হলো আর ব্যাকুল হলো। আর তাই সব বইকে হারিয়ে দিয়ে তারা নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর জীবনের বইকে বেশি করে সংগ্রহ করলো। ঘরে নিয়ে গেল নেতাজীর জীবন ও আদর্শকে।
উত্তরপাড়া কোতরং পুরসভার চেয়ারম্যান দিলীপ যাদব জানান, শহরের কৃতী ছাত্র-ছাত্রীদের তাদের জীবনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য উৎসাহ দেওয়া পুর বোর্ডের দায়িত্ব ও কর্তব্য। এছাড়া বিভিন্ন বিখ্যাত ব্যক্তি ও মনীষীদের আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে তুলে দেওয়া প্রসঙ্গে দিলীপ যাদব বলেন, স্বামী বিবেকানন্দ, মহাত্মা গান্ধী, এপিজে আবদুল কালাম, নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু, সুধা মূর্তি এনারা কেউ মনীষী, আবার দেশসেবার ক্ষেত্রে কারুর অবদান সর্বজন বিদিত। এদের জীবনের আদর্শ, শিক্ষা, কাজ সম্পর্কে আগামী প্রজন্ম জানতে পারলে তারা অনেক বেশি সমৃদ্ধ হবে।
তাই তাদের হাতে এই সব বিখ্যাত ব্যক্তিদের আত্মজীবনী তুলে দেওয়া হয়। শুধু তাই নয় প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রী তারা আদর্শগত ভাবে কোন বিখ্যাত ব্যক্তির জীবনী জানতে চান এটা জানার পর তাদের পছন্দ মতো সেই সকল ব্যক্তির জীবনীমূলক গ্রন্থটি তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এইবার নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর বই বেশি করে নিয়েছে এই এলাকার সফল কৃতি ছাত্রছাত্রীরা। নেতাজীর জীবন তাঁর আদর্শ আজকের দিনে এই নতুন প্রজন্মের ছেলে মেয়েদের কাছে সমান জনপ্রিয়। এটা ভালো লাগছে সেই কাজটা করতে পেরেছে তাদের পুরসভা।
সত্যিই যুদ্ধের বাতাবরণে এ এক নতুন ছবি। হারিয়ে যাওয়া নেতাজীকে আঁকড়ে ধরতে চায় নতুন প্রজন্মের দেশের নব্য প্রজন্মের ভবিষ্যৎ এর নাগরিকরা। যাঁরা আজও মনে করেন নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর দেশপ্রেম আর আন্দোলন এখনও তাদের কচি মনকে মোহিত করে আকৃষ্ট করে। তাই বোধহয় আজাদ হিন্দ ফৌজের সৃষ্টিকর্তা নেতাজিকে আঁকড়ে ধরা এই পাশ করা পড়ুয়াদের।
নেতাজীর আজাদ হিন্দ ফৌজের টানে এই প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা - অভিজিৎ বসু।
ষোলো মে, দু হাজার পঁচিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন