দাদা এই মাসে একটু বেড়ে গেলো যে। আমি বললাম দাদা কি করবো পূজোর মাস একটু তো বিল বেড়েই যাবে দাদা এই বলে একপ্রকার ভয়ে ভয়ে হাত জোড় করে ক্ষমা চাওয়ার ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে আছি আমি। দাদা এটা আমি বলেছি বস কে বা এডিটরকে। এটা শুনে একটু চুপ করে গেলেও ওর মনটা ঠিক খুশী হতো না কিছুতেই। জেলার মাসের বিলে টাকার পরিমাণ যে বেড়ে গেছে আগের মাসের থেকে সেটাই হলো আসল কথা। সে বস বা মালিক যাঁকেই বলা হোক কিছুতেই খুশী হতেন না তিনি। আর তাতেই মাথা খারাপ হয়ে গেছে আমাদের সবার চেনা প্রিয় ওমঙজির। সেই ওমঙ ঝুনঝুনওলা। সেই জি ২৪ ঘণ্টার লক্ষীর ভাণ্ডার এর মূল কারিগর আমাদের সেই ঝুনঝুনওয়ালা। যাঁর আজ দেখলাম জন্মদিন।
সেই ধীরে সুস্থে হেঁটে হাতে কাগজ নিয়ে স্ট্রিঙ্গারদের কত বিল হলো সেটা বলতে যাওয়া কাঁচের ঘরে এডিটর এর কাছে। তারপর ধীরে ধীরে নিজের ঘরে ফিরে যাওয়া আমায় দেখতে দেখতে। আর বলা, দাদা দেখিয়ে সামনের মাসে একটু কম করে দেবেন দাদা। সেই মিষ্টি কথাবার্তায় আর মধুর সম্পর্ক কাটিয়ে ছিলাম একসময় আমি তাঁদের সাথে। বেশ ভালই সম্পর্ক কিন্তু ছিল ওদের সাথে। সেই মুন্না, মহাদেব, আর ওমঙজির তিন জনের সুখের সংসার। সেই একসাথে দুপুর বেলায় টিফিন খেতে বসা ওদের আসআর খেতে খেতে সুখ দুঃখের গল্প করা। এর কৌটো ওর কৌটো থেকে ভাগ করে দুপুরে খাওয়া।আমার বেশ দেখে মজা লাগতো। নিউজ এর লোকদের মধ্যে এমন বন্ধুত্ব অটুট না থাকলেও এই তিনজনের বন্ধুত্ব বেশ ভালই ছিল সেই সময়।
আজ খাতায় কলমে সেই তাঁর বিখ্যাত অ্যাকাউন্টেন্ট এর জন্মদিন উপলক্ষে মনে পড়ে গেলো নানা এমন কথা। সেই লক ডাউন এর সময় সেই মেপে মেপে টাকা দেওয়া হবে জেলার রিপোর্টারদের। সেই যা বলে দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে বিল পাস করতে হবে। সেই টাকায় বিল পাস করে আমার বেশ বুক ফুলিয়ে ওমঙ এর টেবিলে দাঁড়িয়ে থাকা গর্বের সঙ্গে। আর ওর সেই চেনা হাসি মুখে বলা দাদা ঠিক আছে বহুত আচ্ছা দাদা। সেই মাসের বিল করা, সেই অ্যাসাইনমেন্টের টেবিলে ডিউটি করা, সেই বিখ্যাত অফ বিট ২৪ এর সময়ের আগেই বিখ্যাত অ্যাঙ্কর এর টেবিলে গেস্ট লিস্ট পৌঁছে দেওয়া, সেই দৌড়ে দৌড়ে নটায় অফিস থেকে বেরিয়ে শেষ ডানকুনি লোকাল ধরা, আর না হলে সেই শেষ এস টুয়েলভ বাস এর জন্য অপেক্ষা করা রাত দশটার পরে। এইসব নিয়েই তো ছিল আমার সেই ব্যস্ত মিডিয়ার জীবন।
যে জীবনের স্মৃতির উত্তাপ আমায় বেশ উত্তপ্ত করে মাঝে মাঝেই এই এতদিন পরেও এই বুড়ো বয়সেও। আর আজ তাই ওর জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে সেই সব কথাই লিখে ফেললাম আমি আজ। শুভ জন্মদিন দাদা। হ্যাপি বার্থডে দাদা। ভালো থেকো তুমি। আর কোনোদিন জেলার বিলে বেশি টাকা দিয়ে দিয়েছি বলে তোমার কাছে কথা শুনতে হবে না আর। সেই বিলের কাগজ নিয়ে তোমায় দৌড়ে এডিটর এর ঘরে ঢুকে মিটিং করতে হবে না আর। আমিও আর চিন্তায় থাকবো না কি করবো এই জেলার বিল নিয়ে। যার জন্য আমায় চাকরি ছেড়ে দিতে হলো এক সময়। কবে কাজ ছাড়বো তার জবাবদিহি করতে করতেই। যাক সেই সব পুরোনো দিনের সাদা জীবনের কালো কথা। আজ তোমার জন্মদিনে ফুলেল শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা।
শুভ জন্মদিন ওমঙজি - অভিজিৎ বসু।
২৬ মে, দু হাজার পঁচিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন