সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

টিভি সাংবাদিক অনির্বাণ

বাংলা সংবাদপত্র জগতে যেমন উত্তম কুমার হিসেবে গণ্য হতো একসময় তার নাম। আর ঠিক সংবাদপত্র জগৎ ছেড়ে টিভি চ্যানেলের জগতেও তিনি উত্তম কুমার হিসেবেই কাজ করেন। আসলে কেউ কেউ বোধহয় এইভাবেই হাসি মুখেই দাপটে কাজ করে যান যে কোনো জায়গায়। সে কাগজ বা টিভি যে কোনো মিডিয়ায় হোক। তার সাথে যে খুব বেশি কাজ করেছি আমি সেটা নয়। খুব বেশি যে ঘনিষ্টতা ছিল তাঁর সাথে সেটা নয়। 


কিন্তু আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায় আমার আঁকিবুঁকি ব্লগের ছন্দময় পাতায় আজ ভোর বেলায় ঘুম ভেঙে হঠাৎ করেই মনে হলো তার কথা। সেই কাগজের লেখার জগৎ ছেড়ে একেবারে এগিয়ে চলা একটি চ্যানেলে যোগ দেওয়া। যদিও তার আগে তাঁর চ্যানেল টেন এ কাজ করা তার। বেশ মিতভাষী, স্মিত হেসে মেপে কম কথা বলা একজন শুভদ্র সাংবাদিক সে। সেই চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী পুজোয় লাইভ করতে দেখে ওকে দেখে দাঁড়িয়ে পড়া আমার। চিনতে পেরে এগিয়ে এসে কথা বলা। যা সাধারনত সচরাচর ব্রান্ড অ্যাম্বাসেডর হলে বা বড়ো চ্যানেলের বিখ্যাত সাংবাদিক হলে একটা ঘেরা টোপে বন্দী হয়ে যায় সবাই কিছুতেই আর চিনতে চায় না কাউকেই। সেটা অবশ্য ওর ক্ষেত্রে দেখিনি আমি। 

অল্প কিছু সময় ওর সাথে কাগজে চাকরির সুবাদে দু চারটে কথা হতো আমার সঙ্গে। কিন্তু এই মিডিয়ার জগতে ঝাঁপ দেওয়া অনেকের মাঝে একটু যেনো বেমানান। একদম বিপরীত মেরুর একজন সাংবাদিক। সত্যিই বলতে কি ওর বেশ ফ্যান আমি। কলকাতা শহরে টিভি চ্যানেলে যে দু একজন এর ভক্ত আমি তার মধ্যে সন্দীপ সরকার এর নাম করতেই হয় ওর কাজের আমি ফ্যান এটা বলতে কোনোও দ্বিধা নেই আমার সর্বসমক্ষে। আর তারপর এই ঝকঝকে সুন্দর রিপোর্টার অনির্বাণ। আসলে সুন্দর মুখ ছাড়া কী আর চ্যানেল চলে। 

আর তাই আজ ওর কথা লিখতে ইচ্ছা হলো আমার। হয়তো কেউ কেউ বলবেন এটা হলো তেলা মাথায় তেল দেওয়া দাদা। আসলে সেটা নয় ঠিক ওর এই নানা ছবি, উজ্জ্বল মুখের অন্তর্ভেদী দৃষ্টি, চশমার আড়াল থেকে আমাদের জরিপ করা দেখে বেশ ভালই লাগে। বাংলা মিডিয়ার বড়ো সিনিওর উত্তম কুমার যিনি সেই বিখ্যাত সুমন দে যাঁর শো এর টিআরপি ভাঙতে সক্ষম নয় এখনও পর্যন্ত কেউ কোনো মিডিয়ার তাবড় তাবড় সাংবাদিক কুল। সে যত বড় মাতব্বর সাংবাদিক হোক না কেনো। ঠিক তেমনি সেই চ্যানেলের জুনিয়র উত্তম কুমার হলেন এই অনির্বাণ। এই জুনিয়র আর সিনিয়র জুটিকে টিভির পর্দায় দেখে আমার বেশ ভালই লাগে।

মনে হয় এই জন্য বোধহয় অল্প কিছুদিন একটু নিজের জায়গা থেকে সরে দাঁড়ানো ছাড়া আর এইভাবেই দাপিয়ে কাজ করেন আর তাদের কাঙ্ক্ষিত সাফল্য লাভ করেন। যদিও এতে আমায় অনেক বন্ধু বলেন সেই বিখ্যাত চ্যানেলে তো আমি জীবনে কোনোদিন চাকরি পাবো না তাহলে আর সেই চ্যানেলের গুণগান গেয়ে লাভ কি। আসলে এটা হলো যোগ্যকে যোগ্য বলে বিবেচিত করা আর স্বীকৃতি দেওয়া এতে আমার তেলবাজি নেই চাটুকারিতা নেই, আছে শুধু মাত্র আসল সত্যকে উপস্থাপিত করা সবার সামনে। 

যাক গে এসব কথা থাক আজ। সেই অনির্বান এর সাদা কালো ছবি, রঙিন ছবি দেখে এত কিছু মনে পড়ে গেলো আমার। মনে হলো আমার এই আঁকিবুঁকি ব্লগের পাতায় ওকে নিয়েও কিছু কথা লিখে ফেলি আমি। ভালো থেকো তুমি ভাই। নিশ্চয়ই কোনো একদিন হঠাৎ করেই দেখা হবে আমাদের দুজনের কোলকাতার রাস্তায় বা অন্য কোনোও জায়গায়। সেদিন আড্ডা হবে, গল্প হবে আমি বেশি কথা বলে ফেলবো আর সে চুপ করে দাঁড়িয়ে হেসে কম কথা বলে বলবে, আরে অভিজিৎ দা কেমন আছো তুমি বলো। 

জীবন এমন, জীবনের মেঠো পথের জার্নি এমন। সেখানে কেউ উত্তম কুমার আর কেউ সিনেমার পর্দার আড়ালে আবডালে লুকিয়ে চলা সেই একদম ছোটো অভিনয় করা একজন অতি সাধারণ মানুষ। যে হয়তো উত্তম কুমারের মতো বিরাট ব্যাপার নয় তবু এই সবের মাঝেও কেমন উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে অমলিন সম্পর্ক নিয়ে বেঁচে থাকে আমাদের দুজনের মেঠো সম্পর্ক। যার জোরেই বুকে বল ভরসা নিয়ে লিখে ফেললাম আমি কিছু কথা। ভাই ভুল হলে ক্ষমা করে দিও। ভালো থেকো তুমি। এমন হাসি মুখে কাজ করে যাও তুমি বিন্দাস হয়ে এই বাংলা টিভি মিডিয়ার ছোটো উত্তম কুমার হয়েই। 

টিভি সাংবাদিক অনির্বাণ - অভিজিৎ বসু।
২৭ শেষ মে, দু হাজার পঁচিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

জামালপুরের প্রদীপ দা

আজ আমার সাদা জীবনের কালো কথায় বর্ধমানের জামালপুরের সেই দাপুটে ঠোঁট কাটা সাংবাদিক প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় এর কথা। সেই বিখ্যাত সুভাষ তালুকদার এর কাগজ সংবাদে মাত্র এক টাকার কাগজে কাজ করা সংবাদ পত্রিকার দাপুটে সাংবাদিক সেই প্রদীপ দা। সেই মুখ্যমন্ত্রীর সভায় বাঁশের ব্যারিকেডের এপারে দূরে দাঁড়িয়েও যে খবর করা যায় সেটা বড়ো মিডিয়ার সাংবাদিকদের হাসি মুখে দেখিয়ে দিয়ে, আর তাদের খবরের ময়দানে গোল দিয়ে শুধু খবরকে ভালোবেসে ছোটো কাগজে কাজ করে চলা সর্বদা হাসি মুখের সেই আমাদের প্রদীপ চ্যাটার্জী দা।  কোথাও কোনো অন্যায় দেখলেই প্রতিবাদে মুখর হয়ে যাওয়া আর এক দৌড়ে বেরিয়ে পড়া ঝোলা কাঁধে সেই খবরের খোঁজে সেই জামালপুরের প্রত্যন্ত গ্রামের সেই প্রদীপ দা। সেই বিখ্যাত পন্ডিত রবিশঙ্কর আর উদয়শঙ্কর এর আপন মাসতুত ভাই এর ছেলে সেই প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় দাদা। সেই বামদের আমলে জামালপুরের এলাকায় দাপিয়ে খবর করে ছুটে বেড়ানো সেই প্রদীপ দা। সেই তৃণমূল আমলেও একভাবেই ছুটে বেরিয়ে কাজ করা আমাদের সদা ব্যস্ত প্রদীপ দা।  সেই বাবার অসুস্থতার কারনে বড়ো সংবাদ মাধ্যমে কাজ না করেও...

আমার স্যার কাজীদা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ আমার স্যার এর কথা। যার লেখা আজ হঠাৎ চোখে পড়লো একটি কাগজে। আর স্যার এর নামটা দেখেই মনে পড়ে গেলো নানান কথা। হ্যাঁ, সেই কাজী গোলাম গাউস সিদ্দিকী। যাঁর সাথে আমার আলাপ আর দেখা হয়েছিল সেই অজিতদার ফ্রিল্যান্স ছকু খানসামা লেনের ফ্রীল্যান্স প্রেস ক্লাবের অফিসে খুব সম্ভবত। হাসিখুশি বেশ অজাতশত্রু এই মানুষটিকে দেখেই আমার মনে হয়েছিল যে রিপোর্টারদের প্রভূত ক্ষমতা থাকে বোধহয়। তাই পকেটে পেন আর সেই ফোনের ছোট্টো নোটবুক দেখেই আমার মনে হয়, যে ক্ষমতার স্বাদ পাবার জন্য সেই সদ্য গ্র্যাজুয়েশন করে আমার কচি মনে সাংবাদিক হবার বাসনা জাগে সেই সময়।  কোনো প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক নয়, কোনো অফিসে মাছি মারা দশটা পাঁচটার লোয়ার ডিভিশন এর কেরানি নয়, মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ নয়, ল্যাবরেটরিতে টেকনিশিয়ান এর কাজ নয়, এল আই সি বা পোষ্ট অফিস এর এজেন্ট নয়, কোনো মুদি দোকানে হিসেব পত্র লেখার কাজ নয়, স্বাধীন ব্যবসা করা নয়। শুধুই সাংবাদিক হবার স্বাদ।  কাগজে সাদা কালো অক্ষরে নিজের নাম ছাপা হবে, সেই নাম দেখে বুক ফুলে যাবে, পাড়ায় প্রতিবেশীরা সহ স...

কুড়ি থালা দশ টাকা আর রসিক মুলুর জীবন

নাম মুলু হাঁসদা। বাংলা ঝাড়খণ্ড সীমানার চরিচা গ্রাম পঞ্চায়েত এর চর ইচ্ছা রঘুবরপুরের বাসিন্দা মুলু। আজ মুলুর জীবন কথা। গ্রামের নামটা ভারী অদ্ভুত। চর ইচ্ছা রঘুবরপুর। যে গ্রাম অন্য পাঁচটা গ্রামের মতই।সাদামাটা এই গ্রামে দারিদ্র্য, অপুষ্টি আর কর্মহীন জীবনের জলছবি সুস্পষ্ট। আর সেই গ্রামের মহিলারা নিজেদের সংসার রক্ষা করতে গাছের পাতাকে আঁকড়ে ধরে রেখেছে। গাছের পাতা মুলুদের জীবনের জিয়ন কাঠি। যে জিয়ন কাঠিতে তারা ভোর হতেই পেটের টানে চলে যায় জঙ্গলে। খস খস শব্দ করে পায় হেঁটে তারা পাতা তোলে। গাছ থেকে টুপ টাপ করে ঝড়ে পড়া পাতাকে একটা একটা করে নিজের শাড়ির আঁচলে ভরে নেয়। তার পর সব পাতাকে বস্তায় ভরে ঘরে ফেরে।  ঠিক যেভাবে তারা পুকুরে নেমে শামুক গেঁড়ি আর গুগলি তোলে। যে ভাবে তাদের উদর পূর্তি হবে বলে। আর এই পাতাও যে তাদের পেট ভরায়। একটা একটা পাতাকে নিজের সন্তানের মতো আলগোছে ছুঁয়ে বুকে জড়িয়ে ধরে চুমু খায় মুলু, বলে তোরা না থাকলে কি করতাম কে জানে। মাথার ওপর শাল সেগুনের বিশাল আকারের গাছগুলো চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে আর তারা চুপ করে শোনে মুলুর কথা।  একে অপ...

শুভ মকর সংক্রান্তি

মকর মানেই নতুন জামা কাক ভোরে স্নান, রাত্রি জেগে মিঠে সুরে টুসুমণির গান। মকর মানেই পিঠে - পুলির গন্ধে ম - ম হাওয়া, ডুলুং পাড়ে টুসুর মেলায় দল বেঁধে যাওয়া। মকর মানেই মোরগ লড়াই পাহুড় জেতার সুখ, সন্ধ্যা - রাতে মাংস পিঠের স্বাদে ভরা মুখ। মকর মানেই হাতি - ঘোড়ার পুজো করম তলে, সান্ধ্য হাওয়ায় মন উদাসী দিমির দিমির বোলে। আসলে আজ এই মকর সংক্রান্তির দিন, টুসু মেলার দিন, টুসু গানে নিজেকে মাতিয়ে দেবার দিন। অজয় এর ধারে জয়দেব কেঁদুলির মেলায় ভীড়ের মাঝে নিজেকে হারিয়ে দেবার দিন। অজয় এর জলে ডুব দিয়ে স্নান করে পূণ্য অর্জনের দিন। আর নদীর ধারে মোরগ লড়াই এর দিন। আকাশে ঘুড়ি ওড়ানোর দিন, সুতো লাটাই হাতে আকাশ পানে তাকিয়ে থাকার দিন। কেমন যেনো রাশির একটি স্থান থেকে অন্য রাশিতে স্থান পরিবর্তনের দিন। সূর্যের দেবতাকে সকালে উঠে স্নান সেরে প্রণাম জানিয়ে শক্তি সঞ্চয় এর দিন। সূর্যের উত্তর দিকে চলে যাবার দিন। ধীরে ধীরে শীতকাল চলে যাওয়ার দিন।  এই মকর সংক্রান্তি এর ইতিহাস ও ভারতীয় ঐতিহ্যের গভীর শিকড় রয়েছে। এটি কৃষি চক্র এবং ফসল কাটার মৌসুমের সাথে জড়িত। এই মকর সংক্রান্তি চ...