সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

কোন্নগরের রম্যাণি

কোন্নগর থেকে কলকাতা। কলকাতা হয়ে ঘুরতে ঘুরতে কেমন করে যেনো মিডিয়ার কাজ ছেড়ে ওর চলে যাওয়া সটান নিজের দেশ ছেড়ে বিদেশে। সেই একদম অন্য এক ঝাঁ চকচকে মসৃণ জীবনে। যে জীবনে জড়িয়ে আছে শুধুই সুখ আর সুখ। সেই বাংলা মিডিয়ার হিসেব নিকেশ করে এগিয়ে চলা একটা গড়পড়তা মেয়ের সাধারণ কঠিন লড়াইয়ের জীবন নয়। সেই নানা জনকে আঁকড়ে ধরে এগিয়ে চলা একটা বিপদ সঙ্কুল জীবন নয়। সেই বাড়ীর চেনা পরিবেশ ছেড়ে অনেক দূরে চলে যাওয়া ওর। কেমন যেনো হঠাৎ করেই। 


কবে কোথায় দেখা হলো ওর সাথে আমার কে জানে। সেই পোদ্দার কোর্টের ২৪ ঘন্টার অফিস। সেই লাইন দিয়ে সাংবাদিক হতে চেয়ে সবার ইন্টার্নশিপ করতে আসা ছেলে আর মেয়ের। সেই হুগলী জেলার কোন্নগর এর ওর বাড়ীর খবর পেয়ে একটু যেনো বেশি করেই নজর দেওয়া ওর দিকে। বাড়ীর মা বাবা আর দাদু দিদার আদরের মেয়ের জন্যে ওদের বাড়ির লোকের চিন্তা হওয়া। আর কবিতা আর সাংবাদিকতা করার নেশায় ওর দৌড়ে চলা ছুটে চলা এদিক থেকে ওদিক।

 সেই পোদ্দার কোর্টের অফিস। সেই কত যে চেনা টুকরো স্মৃতির ঝনঝন শব্দ। সেই বৃষ্টিভেজা রাতে বাড়ী ফেরা আমাদের। হাওড়া স্টেশনে আটকে পড়া। সেই পূজোর ভীড়ে ওর পূজোর খবর কভার করা রাত করে ঘরে ফেরা। সেই শাড়ি পড়ে সেজেগুজে ওর লাইভ করা। সেই তানিয়া, দেবারতি, ইন্দ্রানী, প্রিয়াঙ্কা, আরও কতজন যে ছিল সেই সময় ইন্টার্ন থেকে সাংবাদিক হবার জীবনে। সেই জী নিউজ এর বুম নিয়ে ওর দৌড়ে চলা। সেই কলকাতা টিভিতে কাজের সুযোগ পাওয়া। সেই এবিপিতে কাজ করা ওর বেশ ভালো ভাবেই। আর হঠাৎ করেই একদিন কাজ ছেড়ে ওর চলে যাওয়া বিদেশে অন্য কাজের সুযোগ পেয়ে সাথে সংসার পেতে। সেই এক বিকেলে হঠাৎ করেই শ্রীরামপুরে আমার বাড়িতে চলে আসা। সেই তানিয়াকে সাথে নিয়ে। সত্যিই অসাধারণ ছিল কিন্তু সেই জীবনটা।

সেই চেনা মুখ, সেই চেনা হাসি, সেই সব নানা অভিজ্ঞতা আর স্মৃতির পাতার আড়ালে কত কিছুই যে গভীর গোপন হয়ে লুকিয়ে আছে আজও কে জানে। আসলে জীবন বড়ই অদ্ভুত। জীবন বড়ই বেদনার আর যাতনার। জীবনের এই শেষ ভাগে এসে মনে পড়ে যায় আমার নানা কথা। সেই অকথিত নানা রকম গদ্যময় জীবনের কথা। যা আমায় বিধুর করে বারবার এই গভীর রাতেও। আসলে এতক্ষণ ওর নাম বলা হয় নি আপনাদের। সেই বিখ্যাত রম্যানির কথা। হ্যাঁ, রম্যাণি মুখোপাধ্যায় এর কথা। সেই আমলে অনেকের ফেভারিট ছিল সে। সেই টিভি মিডিয়ার বেশ সুন্দর ছিমছাম একটা মুখ। যে মুখ টিভির পর্দায় দেখতে বেশ ভালই লাগে কিন্তু ওকে। আর তাই তো সেই পোদ্দার কোর্টের অফিস, সেই মিডিয়া সিটির অফিস সেই মিডিয়ার জগৎ এর কাছে ওর স্বচ্ছন্দে ঘুরে বেড়ানো একা একদম একা। 

আর তার মাঝেই মুঠোফোনে তোলা কিছু ছবি যাকে দেখে কত কথাই না মনে পড়ে যায় আমার। আসলে ফেলে আসা মিডিয়ার জীবনকে বেশ মিস করি আমি আজও। ওর সেই আনন্দে আত্মহারা হয়ে বরফের মাঝে হাত তুলে বহিঃ প্রকাশ করা। সেই বিখ্যাত পৃথিবীর বিখ্যাত স্থানের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নিজের ছবি তুলে পোস্ট করা। যা দেখে মনে হয় সত্যিই তো এটাই তো আসল জীবন। কি যে মিডিয়ার ভূত নামে মানুষের এই শুরুর জীবনে কে জানে। 

তবু তো সেই মিডিয়ার ভূত এর কোনোও ভবিষ্যৎ নেই জেনেও দৌড়ে যাওয়া। পতঙ্গের মতই আলোর মাঝে ঝাঁপিয়ে পড়া। কতদিন যে ওর সাথে কথা বলা হয়নি আমার। কতদিন যে একসাথে আর ট্রেন ধরে ঘরে ফেরা হয়নি আমার। সেই বিখ্যাত কালামের দোকানে চা খেতে যাওয়া হয়নি আমার। সেই ট্রাম লাইনের ওপর দিয়ে দৌড়ে গিয়ে বাস ধরা হয়নি আমার। আসলে স্মৃতির ঝাপটায় এই বুড়ো বয়সে আমি কেমন যেন ক্লান্ত অবসন্ন। তবুও যে আমি এই গভীর রাতে ওর কথা লিখে ফেললাম আমি। ভালো থেকো তুমি রম্যাণি। দুরে থেকে মিডিয়া থেকে সরে গিয়ে ভালোই করেছো তুমি। দেশে এলে নিশ্চয়ই দেখা হবে একদিন। তখন না হয় জোর আলোচনা আর সমালোচনা করা যাবে তোমার সাথে। মিডিয়ার জীবন ভালো না খারাপ সেই প্রসঙ্গে। আর সাথে তোমার গলায় কবিতা শুনবো আমি। ভালো থেকো তুমি ডিসো

কোন্নগরের রম্যাণি - অভিজিৎ বসু।
এগারো জুন, দু হাজার পঁচিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অ্যাঙ্কর মিমির কথা

'আমরা যদি এই আকালেও স্বপ্ন দেখি কার তাতে কী?' বাহ দারুন সুন্দর এই কথা। স্বপ্ন দেখার কি কোনো সময় হয় নাকি। পঞ্জিকার পাতা উল্টে তিথি নক্ষত্র দেখে কি স্বপ্ন দেখা যায়। যে স্বপ্ন বাঁচার খোরাক জোগায়। যা দেখে এই দৌড় ঝাঁপ করা জীবনে কেমন একটা স্বস্তি মেলে সেই স্বপ্ন সফল হোক বা না হোক। যে কোনোও বয়সে এই স্বপ্ন দেখা যায়। ফেসবুকের পাতায় সেই কথা লেখা দেখে মনে মনে কিছুটা সাহস সঞ্চয় করেই এই রাত দুপুরে ভয়ে কম্পমান হয়েই ওকে নিয়ে লেখার চেষ্টা করা। সেই পোদ্দার কোর্টের অফিসে সেই দুর থেকেই অচেনা জগতের সেই খবরের বিখ্যাত সব নানা ধরনের খবর পাঠিকাদের ভীড়ে তাঁকে দুর থেকে দেখা। একদম অন্য এক গ্রহের বাসিন্দা যেনো। সেই কালামের দোকানে হয়তো কোনোও সময় চা খেতে গিয়ে দেখতে পাওয়া। সেই লিফটের কুঠুরিতে একসাথে ওঠা বা নামা কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখেই। কিন্তু সেই অন্য খবর পড়া অ্যাঙ্কর দের সাথে সহজ সরল ভাবে মিশে যাওয়ার সাহস হয়নি আমার কোনোও দিন তাঁর সাথে। আজ আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায় আমার আঁকিবুঁকি ব্লগের পাতায় সেই ২৪ ঘণ্টার পোদ্দার কোর্টের অফিসের বিখ্যাত অ্যাঙ্কর মিমির কথা। ...

এলোমেলো , এলেবেলে বিন্দাস জীবন ও জন্মদিন

দেখতে দেখতে বছরের পর বছর গড়িয়ে যায়। আসলে এই অচলাবস্থা আর অকর্মণ্য দিনযাপনের একটা জীবন কাটিয়ে দিতে দিতে বেশ আমি কেমন যেন এডজাস্ট করে নিয়েছি নিজের সাথে নিজেরই এক অদ্ভুত সহাবস্থান। আমার জীবনের সাথে ক্রমেই দ্রুত কমতে থাকে যেনো মৃত্যুর দূরত্ব। দীর্ঘ দিনের জীবনের ঘন্টা ধ্বনিতে কেমন অচেনা সুরের সুর মূর্ছনা বেজে ওঠে ঠিক যেনো ওই গির্জার ঘরে জিঙ্গেল বেল, জিঙ্গেল বেল এর সুরের মতই আচমকা রাত বারোটা বাজলেই এই একত্রিশ মে।  যার তাল, লয় আর ছন্দে আন্দোলিত হয় এই জীবন আর জীবনের নানা জলছবি। যে ছবির কোলাজে ধরা পড়ে হাসি কান্না, সুখ আর দুঃখের নানা অনুভব। যে অনুভূতির জারক রসে আমি জারিত হই প্রতি মুহূর্তে। আর তাই তো বোধহয় সেই ছোটবেলার দিন এর কথা মনে পড়ে গেলেই সেই ঝাপসা হয়ে যাওয়া ধূসর হয়ে যাওয়া সেই ছবির সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে ইচ্ছা হয় আমার বড়ো এই আজকের দিনে।  সেই পুরোনো দিনের ভালোবাসার স্পর্শ আর স্মৃতি রোমন্থন করা একটি ছবি। মায়ের নিরাপদ কোলে ঠিক নয় চুপটি করে পাশে বসে আছি আমি একদম ফিট ফাট হয়ে আপন মনে ভদ্র শান্ত ছেলের মতোই যা আমি মোটেও নয়। আজকের সেই এ...

যা দেখি…প্রতিদিন মনে পড়ে কত… স্মৃতির পথ ধরে হাঁটি… লিখি…

ইটিভির অ্যাঙ্কর অঙ্কুর

ভাবা যায় এই ভুবন ভোলানো হাসিমুখের বিখ্যাত অ্যাঙ্করও নকল হতে পারে নাকি কোনোভাবে। হতেই পারে না একদম এটা। কোনোভাবেই এটা মেনে নেওয়া যায় না আর বিশ্বাস করাও যায় না। ওর এই পোস্ট দেখে সেটাই মনে হলো আমার সবার প্রথমেই। আসলে এই জীবনের পথে হাঁটতে হাঁটতে আসল আর নকলের এই গা ঘেঁষাঘেঁষির ভীড়ে পার্থক্য বোঝাই যে দায়। কে আসল বন্ধু আর কে নকল বন্ধু সেটাই বোঝা মুশকিল। সেটাকে নির্ধারণ করা যে বড়ই দুষ্কর কাজ। সেটাই যে আজকাল আর ঠিক করে ঠাওর করতে পারি না আমি এই বুড়ো বয়সে এসে।  আজ সাদা জীবনের কালো কথায় আমার এই আঁকিবুঁকি ব্লগে তাই সেই যার কোলে চেপে বাসে করে জীবনে প্রথম বার দুরু দুরু বুকে রামোজি ফিল্ম সিটিতে গিয়েছিলাম আমি বেশ ভয়ে আর আতঙ্কে যদি চেয়ারম্যান এর সামনে যেতে হয় আর ইংরাজিতে কথা বলতে হয় এই ভয়ে। সেই ভীড় বাসে বসতে জায়গা না পেয়ে সেই তাঁর কথা। সেই যে সারাদিন অফিস করে হায়দরাবাদ এর বাংলা ডেস্ক থেকে ধ্রুব রাতে ওর বাড়িতে ভাত খাবার জন্য নেমতন্ন করলো আমায় গরম ভাত, ডাল আর আলুভাজা রান্না করলো রূপা ওর শরীর খারাপ নিয়েও সেদিন কত কষ্ট করে। সেই খেতে দেবার সময় ওদের ঘরে খাবা...

বিনোদন রিপোর্টার দেবপ্রিয়

দেবপ্রিয় দত্ত মজুমদার। ওর সাথে কোথাও একসাথে কাজ করা হয়নি আমার। ওর খবরের ফিল্ড একদম আলাদা এন্টারটেনমেন্ট। আর আমার শুধুই সাধারণ খবর। কখনও জেলার খবর,আর কলকাতার খবর। রাজনীতির খবর নিয়েই ঘুরে বেড়ানো। তবু কেনো জানিনা ওর শান্তিনিকেতনে আসার খবর শুনেই ওকে সাহস করে আমার নম্বর দিলাম। এমনি কোনোও কারণ ছাড়াই যদি যোগাযোগ হয়। যদি দেখা হয়। কলকাতার গন্ধ আছে। মিডিয়ার একটা বলয় গায়ে জড়িয়ে আছে। আর কি শুধুই যদি দেখা হয়ে যায় এই আশায়।  চমক অপেক্ষা করেছিল আমার জন্য। পরদিন ফোনে যোগাযোগ করলো ও নিজেই। কথা হলো দু চারটে আমাদের। কোথায় থাকো তুমি জিজ্ঞাসা করলো। আর সত্যিই আমি টোটো চালকের কাজ করি কি না যেটা নিয়ে ওর নিজেরও একটা সন্দেহ ছিল মনে মনে সেটা পরিষ্কার করে দিলাম আমি ওকে। কিন্তু যেনো কতদিনের চেনা একজন মানুষ। কত আপন ছন্দে কথা বলা ওর। যেটা আমায় আকর্ষিত করলো বেশ। ওর অনুষ্ঠান যেটা হচ্ছে শান্তিনিকেতনে সেখানে আমার মতো একজন বাতিল মানূষকে আসতে বললো ও নিমন্ত্রণ জানালো সপরিবারে।  আমি একটু আবেগ প্রবণ মানুষ। আমি চলে গেলাম সেই অনুষ্ঠানে ওর আমন্ত্রণে। যা সচরাচর আমি কো...