ভেঙে ফেলা আস্ত একটা বাড়ি দাঁড়িয়ে আছে চোখের আঙিনায়, কেমন দাঁত মুখ বের করে ছন্নছাড়া হয়ে, অতীতকে সযত্নে জড়িয়ে, আঁকড়ে।
বাড়ির গাড়ি বারান্দার নিচে জমে থাকা সাইকেলের চাকায়, সুতো জড়িয়ে থাকার মতো কত মানুষের জীবন জড়িয়ে ছিল, এই পুরোনো বাড়িতে।
বাড়ির শ্যাওলা পড়া দেওয়ালে সেই জীবনের সোঁদা গন্ধ, ঘাম এর দাগ এখনো লেগে আছে এদিক ওদিক।
খুঁজলে হয়তো মিলবে আরও দু চার আনার স্মৃতির অকেজো সব তামাটে পরশ পাথর।
আসলে মাটি উপড়ে,স্মৃতির উত্তাপ কে মুছে দিয়ে নতুন করে বিচিত্র সব রোজগারির, অপচেষ্টা আর কি।
যে লাভের, লোভের, চেষ্টার গলায় লাগাম আর পরাবে কে।
দুর থেকে জানলা দিয়ে দেখি শুকনো কলাপাতার ওই ম্রিয়মান নিষ্ফলা হাসি।
বট ফলের আমার দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকা, যজ্ঞি ডুমুর গাছের পাতায় পিছলে পড়া স্মৃতির নরম উত্তাপ।
যে উত্তাপে আজও জারিত হই আমি অনায়াসেই প্রতিদিন সকাল হলেই।
ভোরের বেলায় পাখির ডাক শুনে ঘুম জড়ানো চোখে ওদের মন কেমন করা কথা শুনতে পাই না আর।
বোধহয় ওরাও বুঝে গেছে তাদের গলায় লাগাম পড়েছে এবার আচমকাই।
তাই পথ ভুলে তারাও আসেনা আর কিছুতেই
এদিক পানে।
পশ্চিমী হাওয়া ঠেলে দূরে ঘুঘুর মন কেমন করা ডাক কানে আসে, জানলার লোহার বেড়া ডিঙিয়ে।
একচিলতে জানলা দিয়ে দেখি অলস পায়ে পাড়ার কালো ভুলু, জুল জুল করে তাকিয়ে আছে ভাঙা বাড়ির দিকে আপনমনে।
বোধ হয় জীবনের এই ছন্নছাড়া, ভেঙে পড়া অতীতের স্মৃতির গন্ধ শুকছে সেও, ভোরবেলায় আমার মতই।
ভোরের গন্ধ - অভিজিৎ বসু।
তেরো জুন, দু হাজার চব্বিশ।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন