সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আজ জন্মদিন

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ তো শুধুই আমার জন্ম দিনের কথা। যে জন্মদিন নিয়ে একটা গোলক ধাঁধা ছিল বহু দিন ধরে। আজ সত্যিই করেই আমার জন্মদিন।আজ 31 শে মে। বাংলা মাসের সতেরই জৈষ্ঠ্য। সত্যিই তো আমি এমন কোনো কেউকেটা বা মাতব্বর হতে পারিনি জীবনে, যে সেটা ঢাক পিটিয়ে সবাইকে বলতে হবে, জানাতে হবে যে, আজ আমার জন্মদিন ভাই সব। আর আমার এই ছাপোষা জীবনে এমন কোনো বন্ধু, শুভানুধ্যায়ীদের ভীড় নেই যে তারা হুমড়ি খেয়ে সবাই হামলে পড়বে এই আজকের দিনে। সবাই হাসি মুখে বলবে দাদা শুভ জন্মদিন এই বলে শুভেচ্ছা জানাবে চারিদিক থেকে হাজার হাজার মানুষ।

আসলে এই একদম সাধারণ গরীব পরিবারে জন্ম হওয়া আমার ছোটকাল কোনো সময়ই খুব আরাম আর সুখের ছিল না কোনো দিনই। সোনার চামচ মুখে দিয়ে ছোট কাল কাটেনি আমার কোনো দিন। অতি কষ্ট করে বড়ো হতে হয়েছে আমায়। যাই হোক তবুও মা বাবার একমাত্র সন্তান হয়ে দিন কেটেছে চরম দারিদ্র্য আর অভাবকে সঙ্গী করেই। তবু মা বাবা কষ্ট করে, অনেক চেষ্টা করে পড়া করিয়েছেন, মানুষ করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু মানুষ আর হতে পারলাম কই। সারা জীবন অমানুষ হয়েই কাটিয়ে দিলাম আমি। 

জীবনের এই জন্মদিনের, কেক কাটার দিনের, ঝড় ঝাপটা তো তেমন আমাদের জীবনে ছিল না তেমন কোনো দিন। সেই সময়ে সমাজ মাধ্যমের কোনো দাপাদাপিও ছিল না একদম। এই  বিশেষ দিনটা একদম সাদা মাটা আর পাঁচটা দিনের মতোই একটা দিন ছিল এই জন্মদিনের দিনটা।

 যে দিন সকাল বেলায় কয়লার রান্না ঘরের উনুনের ধোঁয়ায় চোখ জ্বালা অনুভব করতে করতেও টের পেতাম লুচি ভাজার গন্ধ আসছে দুর রান্নাঘর থেকে। আজ আর বাড়িতে সকাল বেলায় রুটি নয় নরম লুচি। আর পায়েসের ম ম গন্ধে ভরে যেত উঠোন, ঘর, দুয়ার সব কিছুই। কি ভালো যে লাগতো সেই দিনটা আমার। একটু যেনো অন্যরকম একটা দিন। অন্যরকম একটা অনুভূতি।

কেমন একটা ছন্দহীন,গতিহীন, জীবনে চলে আসতো নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখা একটা ভালো দিন। দুপুরে কাঁসার থালায় খেতে দিত মা। বাটি সাজিয়ে সুন্দর করে আসন পেতে। মাথায় ধান দুর্বা দিয়ে আশীর্বাদ করতেন বড়রা সবাই মিলে। যেনো ভালো মানুষ হতে পারি আমি এটাই আশীর্বাদ করতেন তারা। আর সেদিন মার বকুনি খেয়ে মার খেতে হতো না একদম। এটা একটা বড় ব্যাপার ছিল আর বড়ো পাওনা ছিল। 

একটা গরীব পরিবারে জন্মগ্রহণ করে এটা বুঝেছিলাম যে আমাদের আমলে সেই হ্যাপি বার্থডে টু ইউ এর হিড়িক খুব বেশি ছিল না। খুব বেশি কেনো ছিল না বললেই চলে একদম। শ্রীরামপুরের মামার বাড়ির পাড়ার এঁদোপুকুরের তরুণকে একবার জন্মদিনে নেমতন্ন করা হয়েছিল আমার আজও মনে আছে সেই দিনের কথাটা। সেই এক চোখের জলদস্যুর একটা গল্পের বই এনেছিল সেই উপহার হিসেবে। কতদিন ওই জলদস্যুর বইটা বার বার যে পড়েছি। জীবনে কোনো জন্মদিনের এই প্রথম উপহার পাওয়া আমার। দশ বা বারো টাকা দাম ছিল হয়তো সেই বইটার সেই সময়। আসলে সেই বই এর গন্ধ। বইয়ের মলাটে দস্যুর কালো এক চোখ বাঁধা ছবি আমার আজও মনে আছে এত বছর পরেও। যে ছবির কথা, বই এর কথা এত বুড়ো হয়েও ভুলতে পারিনি আমি আজও। 

সেই তরুণ এখন কলকাতা পুলিশের স্যালুট পাওয়া বড়ো চাকরি করে সে বড় পোস্টে হয়তো। আচ্ছা ওর কি মনে আছে সেই সব ছোটবেলার কথা গুলো। গুলি খেলার দুপুর, বিকেল হলেই ফুটবল খেলার জন্য আকুল হয়ে পড়া। কে জানে হয়তো মনে নেই সেই সব কথা। কে আর এসবকে বুকে আগলে করে মনের মধ্য লুকিয়ে রাখে। আর স্মৃতির ভারে ভারাক্রান্ত হয় এমন রাত দুপুরে তাই না। 

আসলে ছোটবেলার সেই জন্ম দিনের স্মৃতি ঝলমল রাস্তায় আরও কত যে মনি মানিক্য লুকিয়ে আছে। এমন জন্ম দিনেই একটু বড়ো বেলায় দেখতাম মা সাদা গেঞ্জি কিনে বাবাকে দিয়ে পাঠিয়ে দিতেন শ্রীরামপুরে। কোনো সময় একটা নতুন লুঙ্গি কিনে দিতেন আমায় মা। ধীরে ধীরে হারিয়ে গেলো সেই ছোটো বেলার দিনগুলো। হারিয়ে গেলো আমার মাও হঠাৎ করেই আমার এই ভাঙাচোরা জীবন থেকে। না মাকে আমি ধরে রাখতে পারলাম না কিছুতেই। 

এমন এক জন্মদিনে আজকের সকাল বেলায় আর মার কোনো ফোন এলো না আমার কাছে। আমিও মাকে ফোন করে বলতে পারলাম না যে, মা ট্রেন ধরলাম অফিস যাচ্ছি আমি। কোনো দিন আসবেও না সেই ফোন আর, বাবু সাবধানে অফিস যাস বাবা। দেখে রেল লাইন পার হোস বাবু। ভাত খেয়েছিস তো। তোর বাবা যাবে আজ আম কিনে দিয়ে আসবে তোকে রাতে খাস তুই অফিস থেকে বাড়ী ফিরে। 

সত্যিই তো সেই সব দিন গুলো যেনো জড়িয়ে ছিল কেমন করে জীবনের নানা রঙে রঙিন হয়ে, উজ্জল হয়ে। আজকের এই সকাল বেলায় জীবনের ফেলে আসা সেই সব দিন গুলোর কথা মনে পড়ে যায় আমার। আসলে জন্মদিন মানেই তো মৃত্যু দিনের আর একটু কাছে এগিয়ে যাবার একটা দিন, একটা সিঁড়ি টপকে আর একটু এগিয়ে যাওয়া আর কি। 

যে জন্মদিন নিয়ে এত হৈ হুল্লোড় মাতামাতি সেই দিনের মাঝেই তো অপেক্ষায় থাকে মৃত্যুর দিনের হালকা একটা পদধ্বনি। তাহলে আর কিসের এই আনন্দ উৎসব। যে দিন আসা মানেই জীবনের নামতার বই এর একটা পাতা উল্টে যাওয়া জীবনের খাতা থেকে। ঠিক যেভাবে শুকনো গাছের ডাল থেকে খসে পড়ে হলুদ পাতা। যে খাতায় অনেক হিজিবিজি আঁচড় কাটা দাগ আছে। যে দাগগুলো বয়স বাড়ার সাথে সাথে কেমন যেনো হারিয়ে যাচ্ছে জীবনের অলিতে গলিতে অলস পায়ে ধীরে ধীরে। ঠিক যেমন করে ছাতা সরাই ওলা হারিয়ে যায় গলি পথে আপন মনে। 

জীবনের এই হারিয়ে যাওয়া দাগ গুলো যে বড়ো মায়ার। যে মায়াজালে বিভোর হই আমি বার বার। আচ্ছন্ন হই বার বার। তাই তো সেই সব কথা মনে পড়ে যায় আমার বার বার। কিন্তু উপায় কি তবুও জন্মদিন এসে হাজির হয় প্রতি বছর। দরজায় কড়া নাড়ে ঠক ঠক শব্দ করে। সত্যিই তো দেখতে দেখতে আমিও কেমন  বুড়ো হয়ে গেলাম আর কি। 

যে ঠক ঠক আওয়াজে ঘুম জড়ানো চোখে বিছানায় শুয়ে আর সাদা লুচির গন্ধ পাই না আমি আর। রান্না ঘর থেকে পায়েসের গন্ধ ভেসে আসে না আর। চোখ বুজে মাকে এদিক ওদিক খুঁজে বেড়াই আমি আজও। কিন্তু কোথায় আমার মা। যে বলবে বাবু সাবধানে কাজে যাস তুই। এখন যে আর কোনো কাজ নেই আমার মা। আমি যে বাতিলের দলে মা। সারা জীবন দৌড়ে কাটিয়ে দিয়েও আজ আমি বাতিল হয়ে গেছি বাংলা মিডিয়া থেকে একদম। তাই কোনো ভাবে টোটো চালক না হয়েও টোটো চালক বলে জীবন কাটিয়ে দি আমি। লুকিয়ে আত্মগোপন করে এদিক ওদিক ঘুরে বেড়িয়ে বোলপুরের রাস্তায় ঘুরে ঘুরে দিন কেটে যায় আমার। 

রাস্তায় কত চেনা মুখ গুলো কেমন অচেনা হয়ে এদিক ওদিক না চেনার ভান করে পাশ কাটিয়ে চলে যায় হুস করে। আমায় দেখেও তারা কেউ আর কথা বলে না হাসি মুখে। যারা আগে কত কথা বলত একসময়।অনেকেই আবার জিজ্ঞাসা করেন কোন পথে আমি টোটো চালিয়ে ঘুরে বেড়াই বোলপুরে। কেউ কেউ ফোন করে আমায় বলেন একটু কম পয়সায় কি ঘুরিয়ে দেবে আমায় সস্তায় বোলপুরে আসছি আমি ওই দিন। কেউ আবার কলকাতায় বসে বলেন একটু টোটো চালানোর ছবি পেলে বড়ো ভালো হতো দাদা। খবর করা যেতো তাহলে। খবর পাগল মানুষের এই অবস্থা নিয়ে। আমি যত শুনি আর তত অবাক হই। সত্যিই অসাধারন এই সব কথা শুনি আর মনে মনে আনন্দ উপভোগ করি আমি। ভাবি সত্যিই তো জীবনের কি নিদারুন পরিহাস। এরই নাম জীবন। 

এর মাঝেও  তিন জন মানুষের সাহায্যর জন্য আমি আজও বেঁচে আছি এখনো। আমার পরিবার বেঁচে আছে। আমার মেয়ের পড়া বন্ধ হয়ে যায়নি আজও। যা বলতে কোনো লজ্জা নেই আমার। যাদের জন্য বেঁচে আছি আমি তাদের কাছে সারা জীবন আমি কৃতজ্ঞ থাকবো। এদের মধ্য দুজন সংবাদ মাধ্যমের লোক। আর একজন রাজনীতির লোক যাদের সাহায্য ছাড়া আমি আমার পরিবার বাঁচতে পারতো না কোনো ভাবেই। কিন্তু এই লেখায় তাদের নাম উল্লেখ করলাম না আমি ইচ্ছা করেই।

 এর মাঝে আর একজনের কথা না বললে নয়।আমলকী গাছের পাতার ছায়া দিয়ে রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে এমন এক বন্ধুর সন্ধান মেলে আমার। এসবের মাঝে যে আমায় ডেকে কলকাতা টিভিতে কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছিল একদিন এই বেকার মানুষকে। যার কাছে আমি কৃতজ্ঞ থাকব সারা জীবন। যে আমায় বলে আবার সুযোগ পেলে আমাকে কাজ দেবে বাতিল বলে দূরে ঠেলে ফেলে দেবে না। এই কথা শুনে সত্যিই তো আমার এই জন্ম দিনের দিনেও বড়ো ভালো লাগে আজ আমার। মনে হয় গোটা পৃথিবীর সব মানুষ এমন স্বার্থপর,আত্মসর্বস্ব হয়ে যায়নি বোধ হয়। কিছু ভালো মানুষ এখনো এই ধুলি ধূসর পৃথিবীতে বেঁচে আছে। 

সত্যিই তো জীবনের এই দিনে দাঁড়িয়ে মনে হয় জন্মদিন মানেই তো মৃত্যু দিনের হাতছানি শুধু নয়। তবু এসবের মাঝেও যে জীবনের রাস্তায় গভীর গোপন কিছু মানুষের ভালোবাসা পেয়ে আমি আজও বেঁচে আছি। এটাই বা কম কি। এই পাওয়ার অনুভূতিটাই বা কম কি বলুন। অনেকে দেখে আমায় এড়িয়ে চলে যান চিনতে না পেরে কথা না বলে। আবার অনেকে বলেন আমরা আছি তো ভয় নেই তোমার। বলে সাহায্যর হাত বাড়িয়ে দেন। বলে দাদা আমি আছি তোমার পাশে। আমি দুটো ভাত খেতে পেলে তুমিও পাবে দাদা। আমায় বলে ফোনের ওপর প্রান্ত থেকে দাদা, আবার তোমায় আমি কাজের জগতে দেখতে চাই। আমার দু চোখের কোল তখন চিক্ চিক করে ওঠে । কেউ কেউ লাখ লাখ টাকা সাহায্য করে বলে দাদা চিন্তা করো না তুমি। আমি অবাক বিস্ময়ে বিমূঢ় হয়ে যাই। ভাবি সত্যিই তো পৃথিবীর এই রং যে দেখিনি আমি কোনো দিন। 

জীবনের এই সব অনুভূতি, এই গভীর গোপন ভালোবাসা পেয়ে আপ্লুত হই আমি বার বার। আবেগ সর্বস্ব মানুষ আমি ভেসে যাই আনন্দে, আবেগে। ভুলে যাই আমি জন্মদিন পালন মানেই শুধু মৃত্যুর দিনের জন্য অপেক্ষা করা নয়। মনে হয় আমার সত্যিই তো অসাধারন আনন্দের এই ছোটো একটা জীবন। যে জীবনে খারাপ এর মাঝে এমন সব ভালো কিছু প্রাপ্তি আসে যাকে ভুলতে পারবো না কোনো দিন। যে অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা যায় না কোনো দিন।

যে জীবন মাতব্বরদের অবলীলায় মুখের ওপর হাসতে হাসতে জবাব দিতে পারে কোনো প্ল্যান ছাড়াই। যে জীবন ছোটো হলেও হিসেব নিকেশ ছাড়াই কোনো রাজনৈতিক নেতা বা নেত্রীর পদলেহন না করেই বিন্দাস ভাবে নুন পান্তা ভাত আর কলমি শাক খেয়েই বেঁচে থাকে মাথা উঁচু করে দিনের পর দিন। 

 যে বেঁচে থাকার মধ্য কারুর পা ধরে, হাত কচলে বেঁচে থাকা নয়। নিজের শিরদাঁড়ার জোরে বেঁচে থাকে সে। তাই তো মনে হয় আমার ভাগ্যিস এই জন্মদিন এসেছিল এই আজকের দিনে।  তাই তো আমি এত গুলো কথা বলতে পারলাম আমি এই সাদা জীবনের কালো কথায়। যে সাদা জীবনে এখনো কোনো কালো কালির দাগ লাগতে দিই নি আমি আজ পর্যন্ত।

 বহু চেষ্টা করে, কষ্ট করে, চেষ্টা করছি এই ছোটো সাদা জীবনকে সাদাই রাখতে। যাতে সাদা জীবনের কালো কথা নয়। জীবনের বাকি কটা দিন সাদা জীবনের সাদামাটা ভাবে যেনো বেঁচে থাকতে পারি আমি এই পৃথিবীতে। বড়ো মাতব্বর হয়ে দাপট দেখিয়ে বাঁচা নয়। একজন সাদামাটা মাটির গন্ধ মাখা অতি সাধারণ একজন ছোটো মানুষ হয়ে আমি বেঁচে থাকতে পারি। আপনাদের সবার ভালবাসা নিয়ে। তাহলেই হবে আমার এই আজকের জন্মদিনের সেরা উপহার। আপনারা সবাই আমায় সেই আশীর্বাদ করবেন।

আজ জন্মদিন - অভিজিৎ বসু।
একত্রিশে মে, দু হাজার চব্বিশ।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অ্যাঙ্কর মিমির কথা

'আমরা যদি এই আকালেও স্বপ্ন দেখি কার তাতে কী?' বাহ দারুন সুন্দর এই কথা। স্বপ্ন দেখার কি কোনো সময় হয় নাকি। পঞ্জিকার পাতা উল্টে তিথি নক্ষত্র দেখে কি স্বপ্ন দেখা যায়। যে স্বপ্ন বাঁচার খোরাক জোগায়। যা দেখে এই দৌড় ঝাঁপ করা জীবনে কেমন একটা স্বস্তি মেলে সেই স্বপ্ন সফল হোক বা না হোক। যে কোনোও বয়সে এই স্বপ্ন দেখা যায়। ফেসবুকের পাতায় সেই কথা লেখা দেখে মনে মনে কিছুটা সাহস সঞ্চয় করেই এই রাত দুপুরে ভয়ে কম্পমান হয়েই ওকে নিয়ে লেখার চেষ্টা করা। সেই পোদ্দার কোর্টের অফিসে সেই দুর থেকেই অচেনা জগতের সেই খবরের বিখ্যাত সব নানা ধরনের খবর পাঠিকাদের ভীড়ে তাঁকে দুর থেকে দেখা। একদম অন্য এক গ্রহের বাসিন্দা যেনো। সেই কালামের দোকানে হয়তো কোনোও সময় চা খেতে গিয়ে দেখতে পাওয়া। সেই লিফটের কুঠুরিতে একসাথে ওঠা বা নামা কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখেই। কিন্তু সেই অন্য খবর পড়া অ্যাঙ্কর দের সাথে সহজ সরল ভাবে মিশে যাওয়ার সাহস হয়নি আমার কোনোও দিন তাঁর সাথে। আজ আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায় আমার আঁকিবুঁকি ব্লগের পাতায় সেই ২৪ ঘণ্টার পোদ্দার কোর্টের অফিসের বিখ্যাত অ্যাঙ্কর মিমির কথা। ...

এলোমেলো , এলেবেলে বিন্দাস জীবন ও জন্মদিন

দেখতে দেখতে বছরের পর বছর গড়িয়ে যায়। আসলে এই অচলাবস্থা আর অকর্মণ্য দিনযাপনের একটা জীবন কাটিয়ে দিতে দিতে বেশ আমি কেমন যেন এডজাস্ট করে নিয়েছি নিজের সাথে নিজেরই এক অদ্ভুত সহাবস্থান। আমার জীবনের সাথে ক্রমেই দ্রুত কমতে থাকে যেনো মৃত্যুর দূরত্ব। দীর্ঘ দিনের জীবনের ঘন্টা ধ্বনিতে কেমন অচেনা সুরের সুর মূর্ছনা বেজে ওঠে ঠিক যেনো ওই গির্জার ঘরে জিঙ্গেল বেল, জিঙ্গেল বেল এর সুরের মতই আচমকা রাত বারোটা বাজলেই এই একত্রিশ মে।  যার তাল, লয় আর ছন্দে আন্দোলিত হয় এই জীবন আর জীবনের নানা জলছবি। যে ছবির কোলাজে ধরা পড়ে হাসি কান্না, সুখ আর দুঃখের নানা অনুভব। যে অনুভূতির জারক রসে আমি জারিত হই প্রতি মুহূর্তে। আর তাই তো বোধহয় সেই ছোটবেলার দিন এর কথা মনে পড়ে গেলেই সেই ঝাপসা হয়ে যাওয়া ধূসর হয়ে যাওয়া সেই ছবির সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে ইচ্ছা হয় আমার বড়ো এই আজকের দিনে।  সেই পুরোনো দিনের ভালোবাসার স্পর্শ আর স্মৃতি রোমন্থন করা একটি ছবি। মায়ের নিরাপদ কোলে ঠিক নয় চুপটি করে পাশে বসে আছি আমি একদম ফিট ফাট হয়ে আপন মনে ভদ্র শান্ত ছেলের মতোই যা আমি মোটেও নয়। আজকের সেই এ...

যা দেখি…প্রতিদিন মনে পড়ে কত… স্মৃতির পথ ধরে হাঁটি… লিখি…

ইটিভির অ্যাঙ্কর অঙ্কুর

ভাবা যায় এই ভুবন ভোলানো হাসিমুখের বিখ্যাত অ্যাঙ্করও নকল হতে পারে নাকি কোনোভাবে। হতেই পারে না একদম এটা। কোনোভাবেই এটা মেনে নেওয়া যায় না আর বিশ্বাস করাও যায় না। ওর এই পোস্ট দেখে সেটাই মনে হলো আমার সবার প্রথমেই। আসলে এই জীবনের পথে হাঁটতে হাঁটতে আসল আর নকলের এই গা ঘেঁষাঘেঁষির ভীড়ে পার্থক্য বোঝাই যে দায়। কে আসল বন্ধু আর কে নকল বন্ধু সেটাই বোঝা মুশকিল। সেটাকে নির্ধারণ করা যে বড়ই দুষ্কর কাজ। সেটাই যে আজকাল আর ঠিক করে ঠাওর করতে পারি না আমি এই বুড়ো বয়সে এসে।  আজ সাদা জীবনের কালো কথায় আমার এই আঁকিবুঁকি ব্লগে তাই সেই যার কোলে চেপে বাসে করে জীবনে প্রথম বার দুরু দুরু বুকে রামোজি ফিল্ম সিটিতে গিয়েছিলাম আমি বেশ ভয়ে আর আতঙ্কে যদি চেয়ারম্যান এর সামনে যেতে হয় আর ইংরাজিতে কথা বলতে হয় এই ভয়ে। সেই ভীড় বাসে বসতে জায়গা না পেয়ে সেই তাঁর কথা। সেই যে সারাদিন অফিস করে হায়দরাবাদ এর বাংলা ডেস্ক থেকে ধ্রুব রাতে ওর বাড়িতে ভাত খাবার জন্য নেমতন্ন করলো আমায় গরম ভাত, ডাল আর আলুভাজা রান্না করলো রূপা ওর শরীর খারাপ নিয়েও সেদিন কত কষ্ট করে। সেই খেতে দেবার সময় ওদের ঘরে খাবা...

বিনোদন রিপোর্টার দেবপ্রিয়

দেবপ্রিয় দত্ত মজুমদার। ওর সাথে কোথাও একসাথে কাজ করা হয়নি আমার। ওর খবরের ফিল্ড একদম আলাদা এন্টারটেনমেন্ট। আর আমার শুধুই সাধারণ খবর। কখনও জেলার খবর,আর কলকাতার খবর। রাজনীতির খবর নিয়েই ঘুরে বেড়ানো। তবু কেনো জানিনা ওর শান্তিনিকেতনে আসার খবর শুনেই ওকে সাহস করে আমার নম্বর দিলাম। এমনি কোনোও কারণ ছাড়াই যদি যোগাযোগ হয়। যদি দেখা হয়। কলকাতার গন্ধ আছে। মিডিয়ার একটা বলয় গায়ে জড়িয়ে আছে। আর কি শুধুই যদি দেখা হয়ে যায় এই আশায়।  চমক অপেক্ষা করেছিল আমার জন্য। পরদিন ফোনে যোগাযোগ করলো ও নিজেই। কথা হলো দু চারটে আমাদের। কোথায় থাকো তুমি জিজ্ঞাসা করলো। আর সত্যিই আমি টোটো চালকের কাজ করি কি না যেটা নিয়ে ওর নিজেরও একটা সন্দেহ ছিল মনে মনে সেটা পরিষ্কার করে দিলাম আমি ওকে। কিন্তু যেনো কতদিনের চেনা একজন মানুষ। কত আপন ছন্দে কথা বলা ওর। যেটা আমায় আকর্ষিত করলো বেশ। ওর অনুষ্ঠান যেটা হচ্ছে শান্তিনিকেতনে সেখানে আমার মতো একজন বাতিল মানূষকে আসতে বললো ও নিমন্ত্রণ জানালো সপরিবারে।  আমি একটু আবেগ প্রবণ মানুষ। আমি চলে গেলাম সেই অনুষ্ঠানে ওর আমন্ত্রণে। যা সচরাচর আমি কো...