সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

খানাকুলের শৈলেন দা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ হুগলী জেলার খানাকুলের সেই বিখ্যাত শৈলেন সিনহার কথা। আসলে এই সব পুরোনো মানুষ গুলোর সাথে খবরের সূত্রে যোগাযোগ আমার। তারপর সেই আলাপ, যোগা যোগ থেকে ঘনিষ্টতা। শৈলেন দা, সমীর ভান্ডারী, বেচারাম মান্না, অসীমা পাত্র, তপন দাশগুপ্ত, দিলীপ যাদব এই সব মানুষ গুলোর হাত ধরে তো সেই সময় লাল দুর্গ সিপিএমের আমলে কত খবর করতে গিয়ে কত যে সাহায্যে পেয়েছি তার কোনো হিসেব নেই। সেই সব দিন গুলো আজ অতীত কিন্তু সেই সময়ের সিপিএমের সাথে তৃণমূলের লড়াই, মারামারি ছিল দেখার মত। গ্রামে ঘর জ্বালিয়ে দেওয়া, গ্রামের পর গ্রাম জ্বলছে, দু দলের সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ মরছে সেই আগুনে। পুড়ছে নেতাদের ঘর বাড়ি। আর নেতারা তার ফায়দা লুটতে ঘুরে বেড়াচ্ছে গ্রামে গ্রামে এদিক ওদিক। এই ছিল সেই সময়ের নিত্য দিনের ঘটনার পরম্পরা। 

 সেই সময় পঞ্চায়েত সমিতির নির্বাচনে 1998 সালে প্রথম ক্ষমতার স্বাদ পায় তৃণমূল কংগ্রেস এই শৈলেন দার হাত ধরেই হুগলী জেলায়। যা আজ ইতিহাস হয়ে গেছে। দু হাজার সালে কলকাতায় করপোরেশন ভোটের সময় নিজাম প্যালেসে ডাক পড়ে তাঁর। আর সাথে কেশপুরের সেই বিখ্যাত রফিক এর। মুকুল রায় সেই সময় এই কর্পোরেশন ভোটের দায়িত্বে। সেই সময় কাজ দেন তাদের দুজনকে মুকুল রায়। যাতে মারামারি করার সুবাদে তারা একটু দলকে সুবিধা করে দিতে পারে এই ভোটের সময়। আর বিকেল হলেই দলের সভায় বক্তব্য রাখতে পারেন তারা। এই ভাবেই তো একদিন সেই কলকাতা থেকে তৃণমূল দলের অনুষ্ঠান থেকে পতাকা খুলে এনে গ্রামে তৃণমূলের পতাকা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এই দাপুটে নেতা শৈলেন সিনহা। সুব্রত বক্সী সেই সময় তাঁকে এই বিষয়ে সাহায্যে করেন অনেক। অর্থ দিয়ে সাহায্যে করেন সেই সময় চুঁচুড়া শহরের পুরোনো মানুষ রবীন মুখোপাধ্যায়। 

এই সব পুরোনো কথাই ফোনে বলছিলেন আমায় শৈলেন দা বহু দিন পরে। বললেন অভিজিৎ তোমার এই মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে লেখা পড়ে আমার খুব ভালো লাগলো। তাই তোমায় জানালাম আমি কিছু কথা মোবাইলে। তোমার এই লেখায় গভীর অনুভব সেটা খুব সুন্দর করে বলেছো বা লিখেছো তুমি। কিন্তু আমি আর কারুর সাথে যোগাযোগ করি না আর। একবার কিছুদিন আগেই দু হাজার একুশ সালে তৃণমূল দল ছেড়ে দেবার পরে যখন বিজেপিতে যোগ দিলাম সেই সময় আমায় যখন আক্রমণ করলো বাড়িতে ঢুকে তৃণমূলের গুন্ডারা। সেই সময় পুরোনো দলের এক মন্ত্রীকে ফোন করে বললাম এই অবস্থা আমার জীবন বিপন্ন। যদি একটু দেখে ওরা কাউকে বলে দেয় খানাকুলে তাহলে ভালো হয় একটু। উত্তরে সেই মন্ত্রীর উক্তি ছিল ওরকম দু একটা শৈলেন সিনহা মরে গেলেও ক্ষতি নেই কোনও তাদের দলের। কথাটা শুনে আংশিক খারাপ লেগেছিল তার নিজের। কিন্তু কোনো জবাব দেননি তাদের সেই সময়। 

সত্যিই তো যাদের ঘাম, রক্ত, লড়াই এর ফল পাচ্ছে আজকের এই ফুলে ফলে সুশোভিত তৃণমূল নামক বড়ো হয়ে যাওয়া দলটি। সেই পুরোনো দলের দু একজন নেতা যদি চলেও যায় তাতে ক্ষতি কি আর। যদি কেউ মরেও যায় তাদের আর কোনো ক্ষতি নেই তাহলে। সেই দিন এই কথা শুনে খারাপ লাগলেও কিছু বলেন নি তিনি তার প্রাক্তন দলের ওই মন্ত্রীকে। শুধু চুপ করে মুখ বুজে সহ্য করেছেন তিনি তাঁর কথা। যা ঘটেছে সবটাই মুখ বুজে মেনে নিয়েছেন তিনি নিজের কপাল বলে। 

ছোটবেলা থেকেই বেশ ডানপিটে ছিলেন তিনি। চন্দননগর থেকে তিনি নকশাল আন্দোলনের সাথে জড়িয়ে পড়েন  একসময়। আর সেই সময় থেকেই তিনি জেল খাটার স্বাদ পান। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে ছত্তিশগড় এলাকার এক স্টেশন থেকে। ট্রেনে করে পালাচ্ছিলেন তিনি। পরে যদিও ধীরে ধীরে তিনি মূল স্রোতে ফিরে যান। সেই বহু পুরোনো আমলের কংগ্রেস দলের যুব নেত্রী ছিলেন সেই সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মনিন্দর সিং বিট্টা ছিলেন যুব সভাপতি রাজ্যের। আর সেই সময় থেকেই মমতা বন্দ্যো- পাধ্যায়ের সঙ্গে ছিলেন এই শৈলেন সিনহা দা।

দলের বিপদে আপদে নিজের জীবন বিপন্ন করে একা বুক চিতিয়ে লড়ে গেছেন সিপিআইএমের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সেই কঠিন সময়ে দু হাজার সালে। যা ছিল খুব কঠিন লড়াই। বর্তমান উত্তরপাড়া পুর সভার তৃণমূল পুর প্রধান দিলীপ যাদব এর প্রশংসা করেছেন তিনি প্রাণখুলে কথা বলতে গিয়ে। তাঁর কথায় দিলীপ খুব ভালো ছেলে, উপকারী খুব ও। সবার জন্য করে ও। আর সেই দিলীপ যাদব এর কথায় শৈলেন দা না থাকলে সেদিন তো সিপিআইএমের হাতে আমি খুন হয়ে যেতাম খানাকুলে ভোটের সময় রাতের অন্ধকারে। আজ যে বেঁচে আছি আমি আজও সেটা তো ওই শৈলেন দার জন্যই। না হলে কবেই যে আমি মরে যেতাম কে জানে। সত্যিই তো এই সব বহু পুরোনো কথা, মানুষের মনের গভীর গোপন কথা অজান্তে ধীরে সুস্থে বেরিয়ে এলো মুখ ফসকে সেদিন শৈলেন দার মুখ থেকে বহু দিন পরে। 

যে দলের জন্য তিনি নিজের জীবনকে বাজি রেখেছেন একসময় তিনি গ্রামে ঘুরে ঘুরে বেড়িয়েছেন। আজ সেই দল বলছে অমন দু একজন চলে গেলেই বা কি এমন ক্ষতি হলো। এটা শুনেই কিছুটা হতোদ্যম হয়ে পড়েন তিনি। তবু বলেন না, সিপিআইএমের এমন লাগাম ছাড়া অত্যাচার দেখেছেন তিনি সেই বাম আমলে। কিন্তু অমন ফুলে ফেঁপে উঠে যাওয়া দেখতে পান নি তিনি সেই সময়। আজ এই ভরা তৃণমূল আমলে যা চলছে সেটা দেখে মনে মনে কষ্ট হয় তাঁর। 

তাই তো কিছুটা বীতশ্রদ্ধ হয়েই সেই পুরোনো ভালোবাসার তৃণমূল দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি দু হাজার একুশ সালে নিজেই। যে দলের জন্য তিনি নিজের জীবন বাজি রেখেছিলেন এক সময়। প্রাণের মায়া ত্যাগ করে কাজ করেছিলেন। সেই খানাকুলের শৈলেন দা তৃণমূল ছেড়ে দিয়ে চলে আসেন বিজেপি তে কিছুটা বীতশ্রদ্ধ হয়েই। কিন্তু মনে মনে আজও ভাবেন সত্যিই তো জীবনের এই শেষ লগ্নে এসে তিনি মনে করেন এত টাকার মালিক তার দলের সব লোকজন। তিনি তো সেই একভাবেই জীবন কাটিয়ে দিলেন এতগুলো বছর। সেই ওষুধের কাজ করে সংসার বাঁচিয়ে রাখলেন। আর ছেলের প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষকের কাজ করেই তার জীবন কেটে গেলো। কই এতো টাকার মালিক তো হতে পারেন নি বলে তাঁর কোনো আফশোষ নেই জীবনে। 

আর তাই সেই খানাকুলের পুরোনো দিনের দুতলা বাড়ির ছাদে দাঁড়িয়ে তিনি দেশের পতাকাকে স্যালুট করেন স্বাধীনতার দিন। আর মনে মনে ভাবেন এই ভাবে যেনো তিনি মানুষের কথা ভেবে, মানুষের জন্য কাজ করে চলে যেতে পারেন বাকি জীবনের কটা দিন। যেনো কেউ না বলে তিনিও একজন রাজনৈতিক মানুষ হয়েও তিনি লোভী, স্বার্থপর, নিজের জন্য সব কিছু আখের গোছাতে ব্যস্ত ছিলেন তিনি অন্যদের মতো সারা জীবন। ঘরের লোকরাও তাঁকে এই রাজনীতির জীবনের মায়া কাটিয়ে চলে আসতে বলেন। কিন্তু তিনি পারেন না।

তাই বোধ হয় এখনও তিনি জোর গলায় বলতে পারেন তিনি খানাকুলের যেদিকে থাকবেন সেই দল সুবিধা পাবে ভোটের সময়। সেই জোর,আর আত্মবিশ্বাস নিয়ে আজও বেঁচে আছেন তিনি। আমাদের সবার প্রিয় খানাকুলের সেই শৈলেন সিনহা দা। এক সময়ের জনপ্রিয় দোর্দণ্ড প্রতাপ শৈলেন দা। ভালো থাকবেন দাদা আপনি। আপনার আদর্শ নিয়ে বেঁচে থাকুন। মানুষের জন্য কাজ করুন। 

খানাকূলের শৈলেন দা।
আটাশে জুন, দু হাজার চব্বিশ।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ইটিভির পিনাকপাণি ঘোষ

কিছু মানুষ কত কাছে থেকেও পাশাপাশি এক জায়গায় বাস করেও একসাথে একসময় কাজ করেও যে কত দূরে রয়ে যান নিজের হাসিমুখ নিয়ে আর সেই চেনা ছন্দ নিয়ে সত্যিই বেশ ভালো মজার ব্যাপার কিন্তু এটা জীবনের মেঠো পথে। সেই ইটিভির বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে ঘুরে ঘুরে স্ট্রীট ফুডের ছবি তোলা আর নানা খবর করে খাওয়া দাওয়ার এপিসোড করে একসময়ে বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে যাওয়া ইটিভি নিউজে। আর আমাদের জেলায় বসে সেইসব হাঁ করে দেখা আর কেমন মনের ভেতর অস্থিরতা তৈরি হওয়া। একেই বলে কলকাতার রাজপথের সাংবাদিক বলে কথা।  সেই যে বার রাষ্ট্রপতি এলেন জয়কৃষ্ণ লাইব্রেরী প্রাঙ্গণে সেই অনুষ্ঠানের বিশেষ কার্ড জোগাড় করে দেওয়ার অনুরোধ করা ইটিভির চাকরি করার সুবাদে। কোনো রকমে সেই কার্ড জোগাড় করে এনে দেওয়া তাঁকে আর তাঁর পরিবারের সদস্যদের জন্য। আর সেই একদিন দুপুর বেলায় খুব সম্ভবত করোনা শেষ পর্বে বালিঘাট স্টেশন থেকে অফিস যাওয়ার সময় এসি পঞ্চাশ এর বাস এর ভিতরে দেখা হওয়ায় কত গল্প করা দুজন মিলে পুরনো দিনের। আবার উত্তরপাড়ার সেই বিখ্যাত চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে গিয়ে হাসি মুখে দেখা হয়ে যাওয়া রাতের বেলায় কাঁঠালবা...

আমাদের সবার মৃনাল দা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ এক বাবা আর ছেলের লড়াই এর গভীর গোপন কাহিনী। এই সাংবাদিকতার পেশায় এসে কত লড়াই, কত অসম যুদ্ধ, করে যে কেউ সংসার টিকিয়ে রাখতে পারে হাসি মুখে কাউকে কিছুই বুঝতে না দিয়ে। এমন করে কেউ টিকে থাকার চেষ্টা করেন সেটা বোধহয় আমার জানা হয়ে উঠত না কিছুতেই। যদি না এই পেশায় আমি গা ভাসাতাম এমন করে। জীবনের এই নানা টুকরো টুকরো ছবির কোলাজ ভেসে ওঠে এই রাতের অন্ধকারে আচমকা আমার মনের মাঝে। আর আমি চমকে উঠি কেমন করে তাদের সেই কোলাজ দেখে।  এমন এক চরিত্র, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী হয়ে কেমন আলগোছে, হাসিমুখে, নির্মোহ ভাবে, শুধু নিজের কাঁচা পাকা দাড়িতে হাত বুলিয়ে জীবনটা কাটিয়ে দিলো সে শুধুই আকাশ পানে তাকিয়ে। যে নীল আকাশের গা ঘেঁষে উড়ে যাওয়া সাদা বকের ডানায় লেগে থাকে মেঘের হালকা টুকরো। একদম যেনো সিনেমার পর্দার হিরোর মতোই। দেখে বোঝার উপায় নেই একদম। পেটে খাবার না থাকলেও মুখের হাসিটা অমলিন হয়েই বেঁচে আছে আজও এতোদিন পরেও। আর সেই বিখ্যাত সাদা পাকা নাসিরউদ্দিন স্টাইলের দাড়ি, কালো চুল, আর সব সময় ধোপদুরস্ত ফিটফাট একজন মানুষ। রাত নটা বাজলেই যাকে শ্রীরামপুরে...

শপিং মলের উদ্বোধনে সিঙ্গুর আন্দোলনের দাপুটে মন্ত্রী

নালিকুল স্টেশন বাজারে একটি শপিং মলের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বেচারাম মান্না হাজির। একসময় যাঁর অন্দোলনের ঠেলায় পড়ে দৌড়ে একপ্রকার পালিয়ে চলে যেতে হয়েছিল সিঙ্গুর থেকে টাটা কোম্পানিকে। যে আন্দোলনের দগদগে ঘা আর সেই স্মৃতি ধীরে ধীরে আজ প্রায় মিলিয়ে যেতে বসেছে আমাদের কাছ থেকে। আজ সেই চাষার ঘরের মানুষ না হলেও সেই কৃষক আর শ্রমিকের ন্যূনতম অধিকার নিয়ে যে আন্দোলন শুরু করে সারাটা জীবন কাটিয়ে দিলেন সেই মানুষটাকেই কেমন যেন আজ শপিং মলের উদ্বোধনে দেখে বেশ ভালই লাগলো আমার।  একদম নালিকুল স্টেশনের কাছে ঝাঁ চকচকে শপিং মল। দোকানে সাজানো জিনিস পত্র। আর সেখানেই আমাদের মাননীয় মন্ত্রী বেচারাম মান্না। একদম কেমন একটু আমার অচেনা লাগলো যেন। সেই মুড়ি খেয়ে আলুর তরকারি বা শশা খেয়ে আন্দোলন শুরু করা জমি আন্দোলন এর অন্যতম পথিকৃৎ নেতা আজ এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। তাহলে টাটা কোম্পানির বিরুদ্ধে যে জমি দখল নিয়ে আন্দোলন সেই আন্দোলন এর মধ্যে ছিল জোর করে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা। যদিও সেখানেও সেই সময়ের শাসকদলের কর্মসংস্থানের যুক্তি।তবে এই নতুন শপিং মলের উদ্বোধনে তো আর ...

ভীড়ের মাঝে একা

জীবন জুড়ে শুধুই ভীড় আর ভীড়। নানা ধরনের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় মানুষের গন্ধে, বর্ণে , স্বাদের ভীড়ে আমি একদম একা হয়ে যেতে চাই। যে ভীড় উপচে পড়া রাস্তায় শুধুই হেমন্তের ভোরে শিশিরের ফিসফিস শব্দ, পাখির কিচির মিচির আওয়াজ,ধানসিড়ি ওই নদীটির তীর ধরে ঘুঘুর আকুল মন কেমন করা ডাক, উদাসী শালিকের ঝাঁক বেঁধে উড়ে যাওয়া ওই হেমন্তের হলুদ ধানের মাঠ এর পাশ দিয়ে, হলুদ বসন্ত বৌরীর সেই আমলকীর গাছের পাতায়,আড়ালে আবডালে বসে কেমন যেন আমায় দেখে লজ্জা পাওয়া, আর তারপর চোখ নামিয়ে হঠাৎ করেই তার উড়ে চলে যাওয়া। আর মেঘের কোল ঘেঁষে সেই সাদা বকের, বুনো হাঁসের, আর সেই পানকৌড়ির জলে ভেজা ডানা মেলে উড়ে যাওয়া আকাশ জুড়ে। সত্যিই ওরাও যে ভিড়ের মাঝেই বড়ো একা। একা একাই ওদের যে এই বেঁচে থাকা। কেমন নিপাট হৈ চৈ হুল্লোড়হীন একটা জীবন নিয়ে বেশ মজা করে, আনন্দ করে। আর সেই ভোরের আলোয় আলোকিত হয়ে রাস্তার একপাশে গুটি শুটি মেরে শুয়ে থাকা ওই সাদা কালো ভুলো নামের কুকুরের। যে অন্তত এই সব মানুষদের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় একটু যেনো আলাদা , একটু যেনো অন্য রকমের। একটু একা একাই যেনো ওর এই আলগোছে জীবন কাটিয়...

গৌড় প্রাঙ্গণে আনন্দবাজার

গৌরপ্রাঙ্গনে শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যের আনন্দের মেলা আনন্দবাজার। মহালয়ার ভোরবেলায় ঢাকের বাদ্যি আর সানাইয়ের মন কেমন করা সুরে মেতে উঠলো শান্তিনিকেতনের গৌড়প্রাঙ্গণ। প্রতি বছরের মতো এই বছরও যে হবে আনন্দমেলা আনন্দবাজার। হ্যাঁ সত্যিই যেনো আনন্দের এই হাটে বেচাকেনার পসরা নিয়ে একদিনের জন্য বসে পড়া মন প্রাণ খুলে হৈ হুল্লোড় করে। এই মেলা শুরু হয় 1915 সালের 15 এপ্রিল নববর্ষের দিনে। কিন্তু আগে এই মেলাকে একসময় বলা হতো বৌঠাকুরাণীর হাট। সেই সময় আশ্রমের মহিলারা নিজেদের হাতের তৈরি জিনিস নিয়ে মেলায় বসতেন। মেলার আয়োজন করতেন তারা। আনন্দ করে বেচাকেনা হতো। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময় একবার গরমের ছুটির আগে এমন মেলা নাকি হয়েছিল। যার নাম ছিল আনন্দবাজার। পরে এই মেলার নামে হয়ে যায় আনন্দমেলা। সত্যিই আনন্দের এই মিলন মেলা।  প্রথমদিকে পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের ছেলেমেয়েদের নিয়ে এই মেলা শুরু হয়। পরে ধীরে ধীরে বিশ্বভারতীর সব বিভাগের পড়ুয়ারা এই মেলায় যোগদান করে। এই মেলার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো ছাত্রছাত্রীদের বেচা কেনার লাভের টাকার কিছু অংশ জমা পরে বিশ্বভারতীর সেবা বিভাগে। সেখান থেকে এ...