সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ডাক্তারবাবু ও আমি

আজ সাদা জীবনের কালো কথায় আমি বহু পুরোনো দিনের নানা পেশার মানুষের কথা আমি লিখছি বেশ কিছুদিন ধরেই। আজ একজন চিকিৎসকের কথা বলব আপনাদের। যাকে কখনও দাদা বলে সম্বোধন করেছি। আবার কোনো সময় ডাক্তারবাবু বলেছি। যে কোনো সময় নির্দ্বিধায় ফোন করেছি তাঁকে। হাসি মুখে ফোন ধরে বলেছেন বল কি হয়েছে। 
কবে যে আলাপ হয়েছিল আমার সাথে ডাক্তার বাবুর সেটা আজ আর আমার ঠিক মনে নেই। শুধু এটা মনে পড়ে খবরের সূত্রে ওনার সাথে আমার যোগাযোগ হয়েছিল। সেই চুঁচুড়া সদর ইমামবাড়া হাসপাতালের চিকিৎসক ডাক্তার আশীষ মণ্ডল এর সাথে যোগাযোগ প্রায় সব সাংবাদিকের। ডাক্তারবাবু এই হাসপাতালের গাইনোকোলজিস্ট বিভাগের চিকিৎসক ছিলেন। কিন্তু যে কোনো দরকারে কোনো সমস্যা হলে যে কোনো সময় তাঁকে ফোন করলেই মুশকিল আসান। সে গল্প পরে বলছি। 
বরাবর ডাক্তার বাবুর সাথে সাংবাদিকদের সুসম্পর্ক দেখা যেতো। জেলায় টিভি চ্যানেলে কাজ করার সুবাদে আমার সাথেও ডাক্তার বাবুর ঘনিষ্টতা বেড়ে যায়। শুনেছি ছোটো বেলা থেকেই তাঁর খবরের কাগজের প্রতি বেশ ভালোবাসা ছিল। নিজের গ্রাম হাওড়া জেলার রসপুরে তিনি বহু বিখ্যাত সাংবাদিকদের তাঁর নিজের গ্রামে নিয়ে গেছেন। আসলে চিকিৎসক হলেও ছুরি কাঁচি নিয়ে কাটা ছেঁড়া করলেও খবরের প্রতি এমন নেশা ছিল ওনার সেটা নানা ঘটনায় প্রমাণ মিলেছে বার বার। কেনো জানিনা তিনি আজও নানা খবরের হাউসের লোকজন কে কেমন আছে, কোথায় আছে, তাদের ভেতরের মিডিয়ার সব খবর রাখেন হাসি মুখে এই বয়সেও। 
 যাই হোক আমার আজও মনে আছে চুঁচুড়া সদর হাসপাতালে কোনো এক জায়গাতে বড়ো কোনো দুর্ঘটনা ঘটেছে। অনেকে আহত হয়েছেন সেই ঘটনায়। অনেক দূর থেকে আহতরা চিকিৎসার জন্যে হাসপাতালে আসছে অ্যাম্বুলেন্সে করে। ডাক্তারবাবু সেই সময় ডিউটি করছেন হাসপাতালে। আমি তখন খবর নিচ্ছি কি অবস্থা কেউ মারা গেলেন কি না এই দুর্ঘটনায়। এত চাপ এর মধ্যে কেমন হাসি মুখে ভীড় সামলে ডাক্তারবাবু আমায় নিজেই ফোন করে আপডেট দিচ্ছেন পর পর। এই শোন এখন অবধি হাসপাতালে কুড়ি জন ভর্তি হয়েছে। মহিলা ছ জন, বাকি দশ জন পুরুষ আর চারটি বাচ্চা আছে বুঝলি। নাম গুলো সব লাগবে কি। তিন চারজন খুব সিরিয়াস অবস্থা তাদের। বলে ফোন রেখে দিলেন ডাক্তারবাবু।
 আবার পাঁচ মিনিট পর আবার ফোন করলেন তিনি এই অভিজিৎ শোন, এই মাত্র একজন মারা গেলো রে। বলেছিলাম এই আহত রোগীর অবস্থাটা ভালো নয়। আরও দু একজন মরতে পারে বুঝলি। বলে দেবো আমি তোকে। এমন নিখুঁত খবরের আপডেট দিচ্ছেন একজন চিকিৎসক তাঁর ডিউটি করতে করতে এটা সত্যিই দেখা যায় না। এমন নিখুঁত খবরের প্রতি টান ভালোবাসা সেটা দেখা সত্যিই বিরল বলা যায়।
 একজন সরকারি চিকিৎসক যে কিনা শুধু অর্থ আর তার পসার নিয়েই থাকতে পারতেন সারা জীবন সুখে। তিনি যে কেনো এত খবর ভালোবাসতেন আমি আজও সেটা বুঝতে পারিনি এত দিন পরেও। কত বড় বড় ইনসিডেন্ট এর খবর যে ডাক্তারবাবু ডিউটি করতে করতে আমায় হাসি মুখে অবলীলায় বলেছেন আজ সেটা ভাবলেই আমার অবাক লাগে। সত্যিই তো জীবনের প্রতিটা মুহূর্তে এমন কিছু মানুষের সাথে দেখা হয়ে যায় যাঁরা একটু অন্যরকম ভাবে জীবনকে উপভোগ করতে ভালোবাসেন। নিজেও বেশ কিছু লেখা তাঁর রিপোর্ট আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশ হয়েছে একসময়। শুধু জেলার নয় কলকাতার প্রায় সব বিখ্যাত সাংবাদিকদের চেনেন তিনি। 
আজ তাই ডাক্তারবাবুর কথা লিখতে বসলাম এই রাতদুপুরে। এক চিকিৎসক এর সাথে ছোটো জেলার সাংবাদিকদের গভীর ভালবাসার কথা। যে কথার মধ্য লুকিয়ে আছে টুকরো টুকরো নানা ঘটনা। আমার বেশ ভালো মনে আছে হায়দরাবাদ এ সেই সময় ধ্রুব কর্মসূত্রে বাস করত। ওর বউ রূপা বেশ অসুস্থ হয়ে গেছে সেই সময়। টেলিফোনে ধ্রুবর সাথে কথা হলো সেই বিষয় নিয়ে আমার। ও খুব চিন্তিত কি করবে সেখানে ডাক্তার পাবে কোথায়। যে একটু এই রাতদুপুরে একটু ফোন ধরে ভরসা দেবে।  
আমি ধ্রুবকে সেই পরিস্হিতিতে ওকে বললাম সেই সময় এই ডাক্তারবাবুর কথা। ও এত দুর থেকে প্রায় দেড়হাজার কিলোমিটার দুর থেকে একজন ডাক্তারকে ফোন করবে একটু দ্বিধা হচ্ছিল ওর। কিন্তু আমি ওকে বললাম ডাক্তারবাবু কে নির্দ্বিধায় ফোন করে নাও কিছু মনে করবেন না উনি। ও ফোন করলো একটু সঙ্কোচ নিয়ে। যেনো কত দিনের পরিচিত কেউ ফোন করেছে। তেমন করে বলে দিলো ওকে সেই সময় কি করতে হবে সেই কথা। সেই থেকেই তো ডাক্তারবাবুর সাথে ওর সম্পর্ক তৈরি হয়ে গেলো। 
আমার হাজারো খবরের কাজের মাঝে এমন নানা ভাবে ডাক্তার বাবুকে আমি ফোন করেছি সময়ে অসময়ে। হয়তো ওটি তে আছেন ফোন ধরে বলেছেন আমি ফোন করছি তোকে অভিজিৎ। সেই ছোটো বেলায় আমার বুটার যে কোনো সমস্যা হলেই ফোন করতাম আমরা। আর তিনি কোনো কিছু মনে না করেই কেমন কি কি হয়েছে শুনেই নির্দ্ধিধায় বলে দিতেন এই ওষুধটা দে। তাহলে কমে যাবে আমরা সেটা মেনে হাতে নাতে ফল পেতাম। 
আসলে আজকাল কে আর এই ভাবে ফোন ধরে বলে দেয়, ভরসা দেয়। এই স্বার্থের পৃথিবীতে এমন করে সাহায্য করা মানুষ তো ক্রমেই কমছে দ্রুত। নিজের কোনো অহংকার না রেখে সহজে এই ভাবে বিপদে পড়া মানুষদের সাহায্য করা, হাত বাড়িয়ে দেওয়া এটাই বা আজকাল কে করে। চিকিৎসক পেশার মানুষজন তো দিনদিন এত অর্থ আর স্বার্থের পিছনে ঘুরে বেড়ায়। সেখানে এমন মানুষ দেখতে পেলে সন্ধান পেলে মনে হয় কিছু কথা লিখে রাখি এঁদের কথা। 
সেই সব কথা যেসব কথা সাদা জীবনের কালো কথার মাঝে লুকিয়ে আছে নানা হিরের দুত্যির মত কিছু মণি মানিক্য। জীবনের মোরাম রাস্তায় যে সব মণি মানিক্য পড়ে থাকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে। এই তো কিছুদিন আগেও বুটার যখন একটা মেয়েদের একটা কঠিন রোগ দেখা দিলো আমরা সবাই ভয়ে হাত পা কাঁপছে আমাদের সবার। সেই সময় এই ডাক্তার বাবু ফোনে সব শুনে বললেন ভয় নেই রে কোনও। এটা একটু হরমোন এর সমস্যা থেকে হয় মেয়েদের। তুই এই চিকিৎসা কর আর এই ব্লাড রিপোর্ট কর ঠিক হয়ে যাবে। এই ওষুধটা খেলে একটু চুল পড়ে যায় ভয় নেই ঠিক হয়ে যাবে।
 সেই কটা মাস আমাদের ঘুম উড়ে গেছিলো। কিন্তু পরে ওনাকে চুঁচুড়াতে নিয়ে গিয়ে বুটাকে দেখিয়ে এনে ও এখন সুস্থ আছে ঠিক আছে। আসলে আমাদের এই গড়গড়িয়ে চলা জীবনের মাঝে এই রোগ ব্যাধি আমাদের কেমন দিশাহারা করে দেয়। মনে হয় জীবনের গাড়িটা যেনো আর সঠিক ভাবে চলতে পারছে না। আমরা হাতড়ে বেড়াই সেই সময় কি করবো কাকে বলব এই ভেবে। আর সেই সময় এমন একটা ফোন করে সব কিছু বলার লোক পেলে জে কি ভালো লাগে। 
মেডিক্যাল চিকিৎসা এখন শুধুই টাকার ওপর নির্ভর করে অনেকাংশেই। সেখানে একটু সেবা মনোভাব নিয়ে ভালবেসে রোগীকে ভয় না দেখিয়ে ভরসা দেওয়া চিকিৎসক কোথায়। খরচ কম করে কি করে দ্রুত তাঁকে সুস্থ করা যায় তেমন লোক আর কোথায় আজকাল। দেখতে পাওয়া যায় না এমন মানুষ। আর আমাদের মত সাধারণ মানুষ একটু বিপদের সময় সাহারা পেলে ভরসা পেলে মনে করে কত বড়ো উপকার হলো তার। 
যাক গে ডাক্তার বাবু আপনি সুস্থ থাকবেন। সময়ে অসময়ে যে কোনো সময় আপনাকে যেনো ফোন করতে পারি আমি বা আমরা এটাই আসল কথা। আমার মার অসুস্থতার সময় যে কোনো রিপোর্ট পড়ে শুনে বলে দিতেন এখন কি করতে হবে। আসলে এই সব মানুষদের কথা বলা দরকার। যিনি আমাদের ঘরের মানুষের মতো চেনা অচেনার গন্ডি পার সম্পর্কের বন্ধন পার করে যে কোনো সময় হাত বাড়িয়ে দেন। টাকার বিনিময়ে নয়, মানবিকতার কথা ভেবে। যা আজকের দুনিয়াতে নেই বললেই চলে।
 মনে পড়ে আমার সেই ডাক্তারবাবুর ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠানে দিল্লী থেকে এসেছিল বর্তমান পত্রিকার সাংবাদিক সমৃদ্ধ দত্ত। কি ঝড় জল হলো সেদিন। কত আনন্দ হলো। এখন তো ডাক্তারবাবু দাদু হয়েছেন। নাতি অন্তরীপ কে নিয়ে আনন্দে সময় কাটে তাঁর। তবুও হাজার ব্যস্ততার মাঝে আমি কেনো যে কেউ ফোন করলেই এই বয়সেও হাসতে হাসতে বলে দেন তিনি এই ওষুধ খেলে ভালো লাগবে। ভয় এর কিছু নেই রে। এমন চিকিৎসক এর কথা বলতে বড়ো ভালো লাগে। যেখানে স্বাস্থ্য চিকিৎসা সবটাই অর্থ নির্ভর। যেখানে অর্থ ছাড়া কোনো ভাবেই কেউ কাউকে একটুও সাহায্য করে না কেউ। সেখানে এমন মানুষ পাওয়া সত্যিই বিরল।
আজ হয়তো আমি খবরের দুনিয়ায় নেই বহুদিন হলো। ডাক্তারবাবুও আর হাসপাতালের চিকিৎসক নেই। তবু যেনো কেমন করে আজ এত বছর পরেও ওনার সাথে আমার সেই কবেকার ক্ষুদ্র পরিচয় আজও অমলিন হয়ে বেঁচে আছে। কোনো দ্বিধা সংশয় ছাড়াই তো যার যে কোনো মেডিকেল রিপোর্ট হোয়াটসঅ্যাপ এ পাঠিয়ে বলি একটু দেখে দেবেন ডাক্তারবাবু আপনি।  সব ঠিক আছে কি না রিপোর্ট ভয়ের নেই তো কিছু। সব দেখে কিছু সময় পরে ফোন করে বলেন হ্যাঁ রে সব ঠিক আছে তেমন খারাপ রিপোর্ট নয়। আর এটা শুনে কেমন বুকের ভয়, ঢিপ ঢিপ ভাব কমে যায়। এর থেকে বড় সাহস ভরসা আর কে দেবে বলুন। 
চিকিৎসক এর এই মহান পেশার মানুষজন কি দ্রুত বদলে যাচ্ছে। বহু কাল আগে কলকাতায় ডাক্তার সুনীল দত্তকে দেখতাম শোভাবাজারে চেম্বার ছিল তাঁর। কত গরীব মানুষকে যে বিনা পয়সায় দেখে দিতেন তিনি তার হিসাব নেই। কত ওষুধ যে তিনি আমায় দিয়ে বলতেন এগুলো নিয়ে যাও কাজে লাগবে তোমার। আমি ব্যাগ ভরে ওষুধ নিয়ে আসতাম বাড়িতে। আর অবসর সময় পেলে কলকাতার রাস্তায় আমায় গাড়ি করে নিয়ে ঘুরে বেড়াতেন আর নানা মিষ্টির দোকানে গিয়ে মিষ্টি খেতেন, আমায় পেট ভরে খাওয়াতেন বলতেন খাও খাও পেট ভরে খাও তিনি বোধ হয় জানতেন সারাদিন তেমন কিছু পেটে পড়েনি আমার। সেই সময় আমি আকাশবাণী স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বিভাগে কাজ করি চুক্তি ভিত্তিক কাজ। 

সেই সব চিকিৎসক আর কোথায় আজ। যে শুধু এই ভাবে গরিবদের শোভাবাজারের সেই পতিতা পল্লীতে বাস করা মেয়েদের রোগ ব্যাধি ধরা পড়লে তারা এই ডাক্তার এর চেম্বারে ছুটে আসত আর বলতো বাবু একটু ওষুধ দেবেন। দেখতাম হাসতে হাসতে সেই ডাক্তার সুনীল দত্ত তিনি তাদের দেখে কোনো ফি না নিয়ে ওষুধ দিয়ে দিচ্ছেন। আর বলছেন সেরে যাবে ভয় নেই কোনো। ওরা প্রনাম করে হাসি মুখে ঘরে ফিরে যেতো। আজ আর কোনো ছবি নেই আমার সেই ডাক্তারের সাথে আমার। সেই সময় তো এসবের চল ছিল না। 

শুধু কিছু গল্প কিছু স্মৃতি জড়িয়ে আছে আমার এই সাদা জীবনে। যার সাথে কলকাতার রাজপথে ঘুরে ঘুরে কত যে মিষ্টি খেয়েছি দুজনে। নিজে মিষ্টি খেয়ে বলতেন দেখো, আমার বাড়িতে যেনো কেউ জানতে না পারে এই সব মিষ্টি খাবার কথা। এই বলে নিজেই গাড়িতে বসে ইনসুলিন নিয়ে নিতেন। এমন সব মিষ্টি মধুর জীবনের অতীত দিনের সুখ জড়ানো কথা বলতে বড়ো ভালো লাগে। যে কথা পড়ে হয়তো আপনাদের ও ভালো লাগবে। 

আমায় সেই ডাক্তারবাবু কলকাতার এক সময়ের বিখ্যাত মেডিসিন এর ডাক্তার সুনীল দত্ত কিছু অর্থ দিয়েও সাহায্য করতেন মাঝে মাঝে আমার খুব বিপদের দিনে। বলতেন এই টাকা গুলো নিয়ে যাও বাড়িতে মার হাতে দিও। এই সব মানুষদের কথা, জীবনের কথা বড়ো লিখতে ইচ্ছা হয় আজকাল। যে সব জীবন আমায় শিক্ষা দেয় প্রতি মুহূর্তে। এখন সেই ডাক্তার আর কোথায়। যাকে নির্ভয়ে বলা যায় বিপদে পড়লে, ডাক্তারবাবু আমার এই বন্ধুকে একটু দেখে দেবেন আপনার কাছে নিয়ে এসেছি। হাসি মুখে সেই রোগীকে দেখে দিয়ে যে বলবে এই ওষুধ গুলো নিয়ে যাও ভয় নেই কোনো। সব ঠিক হয়ে যাবে। 

ডাক্তারবাবু ও আমি - অভিজিৎ বসু।
ত্রিশে জুলাই, দু হাজার চব্বিশ।

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অ্যাঙ্কর মিমির কথা

'আমরা যদি এই আকালেও স্বপ্ন দেখি কার তাতে কী?' বাহ দারুন সুন্দর এই কথা। স্বপ্ন দেখার কি কোনো সময় হয় নাকি। পঞ্জিকার পাতা উল্টে তিথি নক্ষত্র দেখে কি স্বপ্ন দেখা যায়। যে স্বপ্ন বাঁচার খোরাক জোগায়। যা দেখে এই দৌড় ঝাঁপ করা জীবনে কেমন একটা স্বস্তি মেলে সেই স্বপ্ন সফল হোক বা না হোক। যে কোনোও বয়সে এই স্বপ্ন দেখা যায়। ফেসবুকের পাতায় সেই কথা লেখা দেখে মনে মনে কিছুটা সাহস সঞ্চয় করেই এই রাত দুপুরে ভয়ে কম্পমান হয়েই ওকে নিয়ে লেখার চেষ্টা করা। সেই পোদ্দার কোর্টের অফিসে সেই দুর থেকেই অচেনা জগতের সেই খবরের বিখ্যাত সব নানা ধরনের খবর পাঠিকাদের ভীড়ে তাঁকে দুর থেকে দেখা। একদম অন্য এক গ্রহের বাসিন্দা যেনো। সেই কালামের দোকানে হয়তো কোনোও সময় চা খেতে গিয়ে দেখতে পাওয়া। সেই লিফটের কুঠুরিতে একসাথে ওঠা বা নামা কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখেই। কিন্তু সেই অন্য খবর পড়া অ্যাঙ্কর দের সাথে সহজ সরল ভাবে মিশে যাওয়ার সাহস হয়নি আমার কোনোও দিন তাঁর সাথে। আজ আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায় আমার আঁকিবুঁকি ব্লগের পাতায় সেই ২৪ ঘণ্টার পোদ্দার কোর্টের অফিসের বিখ্যাত অ্যাঙ্কর মিমির কথা। ...

এলোমেলো , এলেবেলে বিন্দাস জীবন ও জন্মদিন

দেখতে দেখতে বছরের পর বছর গড়িয়ে যায়। আসলে এই অচলাবস্থা আর অকর্মণ্য দিনযাপনের একটা জীবন কাটিয়ে দিতে দিতে বেশ আমি কেমন যেন এডজাস্ট করে নিয়েছি নিজের সাথে নিজেরই এক অদ্ভুত সহাবস্থান। আমার জীবনের সাথে ক্রমেই দ্রুত কমতে থাকে যেনো মৃত্যুর দূরত্ব। দীর্ঘ দিনের জীবনের ঘন্টা ধ্বনিতে কেমন অচেনা সুরের সুর মূর্ছনা বেজে ওঠে ঠিক যেনো ওই গির্জার ঘরে জিঙ্গেল বেল, জিঙ্গেল বেল এর সুরের মতই আচমকা রাত বারোটা বাজলেই এই একত্রিশ মে।  যার তাল, লয় আর ছন্দে আন্দোলিত হয় এই জীবন আর জীবনের নানা জলছবি। যে ছবির কোলাজে ধরা পড়ে হাসি কান্না, সুখ আর দুঃখের নানা অনুভব। যে অনুভূতির জারক রসে আমি জারিত হই প্রতি মুহূর্তে। আর তাই তো বোধহয় সেই ছোটবেলার দিন এর কথা মনে পড়ে গেলেই সেই ঝাপসা হয়ে যাওয়া ধূসর হয়ে যাওয়া সেই ছবির সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে ইচ্ছা হয় আমার বড়ো এই আজকের দিনে।  সেই পুরোনো দিনের ভালোবাসার স্পর্শ আর স্মৃতি রোমন্থন করা একটি ছবি। মায়ের নিরাপদ কোলে ঠিক নয় চুপটি করে পাশে বসে আছি আমি একদম ফিট ফাট হয়ে আপন মনে ভদ্র শান্ত ছেলের মতোই যা আমি মোটেও নয়। আজকের সেই এ...

যা দেখি…প্রতিদিন মনে পড়ে কত… স্মৃতির পথ ধরে হাঁটি… লিখি…

ইটিভির অ্যাঙ্কর অঙ্কুর

ভাবা যায় এই ভুবন ভোলানো হাসিমুখের বিখ্যাত অ্যাঙ্করও নকল হতে পারে নাকি কোনোভাবে। হতেই পারে না একদম এটা। কোনোভাবেই এটা মেনে নেওয়া যায় না আর বিশ্বাস করাও যায় না। ওর এই পোস্ট দেখে সেটাই মনে হলো আমার সবার প্রথমেই। আসলে এই জীবনের পথে হাঁটতে হাঁটতে আসল আর নকলের এই গা ঘেঁষাঘেঁষির ভীড়ে পার্থক্য বোঝাই যে দায়। কে আসল বন্ধু আর কে নকল বন্ধু সেটাই বোঝা মুশকিল। সেটাকে নির্ধারণ করা যে বড়ই দুষ্কর কাজ। সেটাই যে আজকাল আর ঠিক করে ঠাওর করতে পারি না আমি এই বুড়ো বয়সে এসে।  আজ সাদা জীবনের কালো কথায় আমার এই আঁকিবুঁকি ব্লগে তাই সেই যার কোলে চেপে বাসে করে জীবনে প্রথম বার দুরু দুরু বুকে রামোজি ফিল্ম সিটিতে গিয়েছিলাম আমি বেশ ভয়ে আর আতঙ্কে যদি চেয়ারম্যান এর সামনে যেতে হয় আর ইংরাজিতে কথা বলতে হয় এই ভয়ে। সেই ভীড় বাসে বসতে জায়গা না পেয়ে সেই তাঁর কথা। সেই যে সারাদিন অফিস করে হায়দরাবাদ এর বাংলা ডেস্ক থেকে ধ্রুব রাতে ওর বাড়িতে ভাত খাবার জন্য নেমতন্ন করলো আমায় গরম ভাত, ডাল আর আলুভাজা রান্না করলো রূপা ওর শরীর খারাপ নিয়েও সেদিন কত কষ্ট করে। সেই খেতে দেবার সময় ওদের ঘরে খাবা...

বিনোদন রিপোর্টার দেবপ্রিয়

দেবপ্রিয় দত্ত মজুমদার। ওর সাথে কোথাও একসাথে কাজ করা হয়নি আমার। ওর খবরের ফিল্ড একদম আলাদা এন্টারটেনমেন্ট। আর আমার শুধুই সাধারণ খবর। কখনও জেলার খবর,আর কলকাতার খবর। রাজনীতির খবর নিয়েই ঘুরে বেড়ানো। তবু কেনো জানিনা ওর শান্তিনিকেতনে আসার খবর শুনেই ওকে সাহস করে আমার নম্বর দিলাম। এমনি কোনোও কারণ ছাড়াই যদি যোগাযোগ হয়। যদি দেখা হয়। কলকাতার গন্ধ আছে। মিডিয়ার একটা বলয় গায়ে জড়িয়ে আছে। আর কি শুধুই যদি দেখা হয়ে যায় এই আশায়।  চমক অপেক্ষা করেছিল আমার জন্য। পরদিন ফোনে যোগাযোগ করলো ও নিজেই। কথা হলো দু চারটে আমাদের। কোথায় থাকো তুমি জিজ্ঞাসা করলো। আর সত্যিই আমি টোটো চালকের কাজ করি কি না যেটা নিয়ে ওর নিজেরও একটা সন্দেহ ছিল মনে মনে সেটা পরিষ্কার করে দিলাম আমি ওকে। কিন্তু যেনো কতদিনের চেনা একজন মানুষ। কত আপন ছন্দে কথা বলা ওর। যেটা আমায় আকর্ষিত করলো বেশ। ওর অনুষ্ঠান যেটা হচ্ছে শান্তিনিকেতনে সেখানে আমার মতো একজন বাতিল মানূষকে আসতে বললো ও নিমন্ত্রণ জানালো সপরিবারে।  আমি একটু আবেগ প্রবণ মানুষ। আমি চলে গেলাম সেই অনুষ্ঠানে ওর আমন্ত্রণে। যা সচরাচর আমি কো...