সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

সিং দা ও আমি

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ আমাদের সবার পরিচিত সেই সিং দার কথা। আসলে আমরা মানে সাংবাদিকরা সিং দাকে বোধহয় ওঁর আসল নামে কোনো দিনই ডাকিনি কোনোদিন। ওর খবর নিয়ে জানতে চাইনি এতদিন পর কেমন আছেন রাজনীতির বৃত্ত থেকে অনেকটা দূরে সরে থাকা আমাদের সেই সিং দা। যে একসময় রাজনীতির এই পাঠশালায় অনেক কাজ চুপচাপ করে করে দিয়েছেন কাউকে জানতে না দিয়ে। যার সুফল পেয়েছেন রাজনীতির কুশীলবরা নানা ভাবেই।

আসলে এমন কিছু কিছু মানুষ রাজনীতির বৃত্তে নেতাদের সাথে জড়িয়ে থাকেন তাদের কথা মনে থেকে যায় আমাদের সবার। অথচ রাজনীতির ময়দানে দৌড়ে বেড়ান না তাঁরা, রাজনীতির ক্ষমতা ভোগ করেন না তাঁরা, এম পি, এম এল এ হন না তাঁরা কোনোদিনই। এসব থেকে অনেকটাই দূরে থাকেন তাঁরা। কিন্তু এসব কিছু না হয়েও যেনো অনেকটা জুড়ে থাকেন রাজনীতির এই ঘূর্ণাবর্তে। ক্ষমতার এই বৃত্তে। 
ঠিক তেমনই মানুষ আমাদের সবার সিংদা। সেই চিত্তরঞ্জন সিং। আকবর আলী খোন্দকার এর একমাত্র সব সময়ের বিশ্বস্ত সহচর বলা যায় তাঁকে। কি করে যে সিংদা আকবরদার শেওড়াফুলির ছাতুগঞ্জের বাড়িতে হাজির হলো সেটা আমার ঠিক জানা নেই। কোথা থেকে এলো সেটা জানার চেষ্টাও করিনি আমি। শুনেছিলাম আকবর দা সিং দাকে এই বাড়িতে নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু এটা জানি যে সেই কবে থেকেই তো সিং দা ছিল ওই অফিস এর আর ওই আকবরদার বাড়ির একমাত্র বিশ্বস্ত সহচর। যাকে ছাড়া সেই পার্টি অফিস অচল ছিল। 

আর সেই সিংদাই তো ধীরে ধীরে সেই সময় থেকেই আকবর আলী খোন্দকার এর হাত ধরেই তাঁর কাজ এর সুবাদে সবার কাছে আমাদের সিংদা হয়ে গেলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর কাছে সিং, তুই এটা দেখে দে। সিং দার উত্তর হ্যাঁ দিদি। মুকুল রায় এর কাছে সিং এটা দেখ তুই। হ্যাঁ দাদা। সুব্রত বকসীদার কাছে সিং কে বলে দিলেই হবে। এটাই ছিল সিং দার এক সময়ের আসল পরিচয়। দলের নানা ছোটো, বড়ো, মেজো, সেজো নেতাদের কাছে একমাত্র যে কোন কাজের সমাধান করার একটাই লোক সিং জি। দলের যে কোনো বার্তা পৌঁছে দেবার একটাই বিশ্বস্ত মানুষ। 
আর তাই এই মানুষটা যখন আকবর আলী খোন্দকার বিধায়ক হলেন তখন থেকেই ধীরে ধীরে নানা ভাবে নানা রূপে আমাদের কাছে একটা বিশেষ পরিচয় নিয়েই থাকতেন। একটা বেশ ভালো জুটি ছিল আকবরদা আর সিংদার। যে জুটিকে জেলায় অনেকেই হিংসা করতো সেই সময়। যাকগে আজ বহুদিন পর শ্রীরামপুর স্টেশনে আমার সাথে সিংদার দেখা হলো হঠাৎ করেই। কোনো এক কাজ সেরে সিংদা শ্রীরামপুর স্টেশনে নেমেছেন। আমিও বহুদিন পর শ্রীরামপুর এসেছি বোলপুর থেকে নিজের কাজে নিজের বাড়িতে। দেখা হয়ে গেলো আমাদের দুজনের। মোবাইল এর মাধ্যমে ছবি তুলে রাখলাম। ধরে রাখলাম একে অপরকে আঁকড়ে জড়িয়ে পাশে দাঁড়িয়ে হাসি মুখে।
 সিংদার মাথার চুল সব সাদা। আমার চুলেও পাক ধরেছে অনেক। দুজনের বয়স হয়েছে। তবুও কেমন যেন অল্প সময়ে স্টেশনে দাঁড়িয়ে কিছু পুরোনো দিনের স্মৃতি ঝলমল রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়া আর কি। ঠিক যেমন করে রেল লাইনের ট্র্যাক দিয়ে ট্রেন ছুটে চলে যায়। রাজনীতির বৃত্ত থেকে এখন অনেকটাই দূরে সরে গেছেন তিনি। ছেলে কলেজে পড়ছে। বলতে বলতে একটু যেনো বিহ্বল আনমনা হয়ে গেলেন তিনি। ট্রেন আসার সময় হলো। দু চার কথা হলো তারপর ট্রেন ধরে চলে গেলেন সিংদা বাড়ির পথে। আমি হাত নেড়ে বললাম দাদা তুমি ভালো থেকো। 
আসলে আমি জীবনের এই সব হারিয়ে যাওয়া জীবনকে খুঁজে বেড়াই। হারিয়ে যাওয়া মানুষকে খুঁজে বেড়াই। হাতড়ে বেড়াই সেই সব জীবনের কথা। যারা একসময় রাজনীতির কত উজ্জ্বল আলোয় আলোকিত হয়ে ছিলেন। ক্ষমতার মসনদে বসা লোকদের কত কাছ থেকে দেখেছেন। তাদের নানা কাজে সাহায্য করেছেন। তারপর ধীরে ধীরে নিজেই নিজের প্রয়োজনে এই সব ক্ষমতার বৃত্তে ঘুরপাক খাওয়া মানুষদের থেকে কিছুটা দূরে সরে গেছেন।
 কারণ হয়তো সেই প্রয়োজন আর পড়েনি তাদের কোনো সময়। দলের কাছে ও নেতাদের কাছেও ফুরিয়ে গেছে প্রয়োজন। এটাই বোধহয় আসল কথা। যেটা কিছুটা হলেও পরে বুঝতে পেরেছেন তিনি এই এতদিন পরে। আর তাই বোধহয় নিজের উদ্যোগে বাঁচার চেষ্টা করছেন এখন একা একাই। ছেলেকে মানুষ করার চেষ্টা করছেন তিনি। যাতে তাঁর জীবন যেমন হয়েছে হোক ছেলেটা যেনো নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে। এইভাবে তাঁর মতো ঘুরে মরতে না হয় রাস্তায়। 
আমি বললাম তুমি বলেছিলে শ্রীরামপুর এলে জানাতে তোমায়। দেখা হবে দুজনের তাই তোমায় বললাম আমি এসেছি। খুব ভালো হলো দেখা হলো তোমার সাথে কতদিন পরে বলো। হয়তো সিং দা নিয়ে অনেকে অনেকে অনেক কথা বলেন। কিন্তু আমি একটু সেসব কিছুকে আমল না দিয়ে একটু অন্যরকম ভাবে সিংজী কে আজ দেখলাম। যে সিংজী আজ একদম অন্য এক মানুষ। যার কথায় যার ফোনে কত কিছুই না কাজ হয়েছে। যাকে ভরসা করে বিশ্বাস করে কত নেতা, নেত্রী রাজনীতির ক্ষমতার স্বাদ পেয়েছেন। 
বহুকাল আগের, বহু বছর আগের একটা দিনের কথা মনে পড়ে গেলো আমার। প্রতি বছর পুজোর সময় আকবরদা এই সিংদার হাত দিয়ে কাপড় পাঠিয়ে দিতেন সাংবাদিকদের বাড়িতে বউদের। নতুন বিয়ে হয়েছে আমার। সেই শ্রীরামপুরের বটতলার নন্দী মাঠের ইটিভির অফিসে সিংদা হাজির সন্ধ্যা বেলায় মোটর বাইক নিয়ে আর প্যাকেট নিয়ে। আমায় বলল অভিজিৎদা বড় ভাই পাঠালো আমায়। আমি বললাম না গো দাদা, এটা তো নেওয়া যাবে না দাদা। তারপরেও কতবার যে সিং দা এইভাবে এসেছে প্রতি পূজো, দেওয়ালিতে মিষ্টি নিয়ে তার কোনো হিসাব নেই। কোনো সময় ফিরিয়ে দিয়েছি হাসি মুখে। আবার কোনো সময় হাত পেতে নিয়েছি সেই জিনিস।কিন্তু রাগ করতে দেখিনি কোনদিন তাঁকে।
কিন্তু যে কোনো পরিস্থিতিতে সব সময় মুখে হাসি নিয়ে যে কোনো কঠিন কাজ আর কঠিন পরিস্থিতি সামলে দিয়েছেন হাসি মুখে তিনি। যে কোনো রাজনীতির কঠিন কাজকে সহজেই উৎরে দিয়েছেন তিনি ঠিক যেনো অনুঘটকের কাজ করে। আমার বিয়ের পর সাংসদ আকবর আলী খোন্দকার এর কোটায় দিল্লী যাবার জন্য সিংদাকেই দায়িত্ব দেওয়া হয়। যে আমার রাজধানীর টিকেট কেটে দেয়ার নির্দেশ দেয় আকবর আলী খোন্দকার। সে তখন সাংসদ শ্রীরামপুর লোকসভা। অনেক সাংবাদিক তখন দিল্লী দর্শনে গিয়েছিল। 
কিন্তু আমি সেটা না নেওয়ায় আকবার দা একটু রাগ করলেও, সিং দা কিন্তু হাসি মুখে সেটা মেনে নেয়। কিন্তু কোনোদিন এসব নিয়ে কোনো কথাই বলেননি তিনি। অনেকের অনেক খবর জানলেও একদম ডান হাত আর বাম হাত কেউ জানতে পারেনি তার মাধ্যমে কোন হাত কি কাজ করছে। আর এটাই ছিল সিং দার বিশেষ একটা গুণ। যার জন্য রাজনীতির মানুষরাও সিং দাকে পছন্দ করতেন খুব। 
 এমন সব গভীর গোপন সম্পর্ক ছিল আমাদের সবার সাংবাদিকদের সাথে সিং দার।আর তাই দিল্লিতে কাজ করা সমৃদ্ধ দত্ত, সেই পুলকেশ ঘোষ, দেবাঞ্জন দাস থেকে দেবদাস অধিকারী থেকে শুরু করে গৌতম বন্দোপাধ্যায়, ফাল্গুনী বন্দোপাধ্যায়, তরুণ মুখোপাধ্যায় নীলরতন কুন্ডু সবার সাথেই ছিল দাদা ভাই এর সম্পর্ক তাঁর। এমনকি পুলিশের উচ্চপদে কাজ করা মানুষরা, ডিএম, এসপি সকলেই জানতো এই সিং জী আসল লোক এমপি সাহেবের। তাই সবাই গুরুত্ব দিয়ে চলতো তাঁকে।
আসলে এই ধরনের মানুষের সংখ্যা দ্রুত কমছে। সেই পনেরো টাকার মান্থলি টিকেট এর জন্য শেওড়াফুলির বাড়িতে কি লাইন। সব সকাল থেকে একা সামাল দিচ্ছেন এই সিং দা।আমি ফোন করে বলতাম দাদা এই নামে একটা টিকেট করে দিও গরীব লোক। কত লোকের নাম বলে যে মান্থলী টিকেট করে দিয়েছেন তিনি গরীব মানুষের তার হিসাব নেই। ভিখারী অন্তর্ধান এর সময় যাবতীয় রাজনীতির নানা কাজ করতে আকবর দাকে সাহায্য করেছেন এই সিং দা। 
আর যাকে একসময় নিজের বাড়ী ডেকে পাসপোর্ট করে দেন অজিত পাঁজা নিজেই। কলকাতার বাড়ী থেকে খানাকুল যাবেন অজিত বাবু। সেই সময় তিনি মন্ত্রী কেন্দ্রের। সিং দাকে মন্ত্রীর জিজ্ঞাসা পাশ পোর্ট আছে তোর। না, বলায় বেজায় অবাক মন্ত্রী অজিত পাঁজা। সেকি রে পাসপোর্ট নেই, দাঁড়া। সেখানেই কাগজ এনে অফিসারকে ডেকে পাসপোর্ট করে দেন অজিত বাবু নিজেই। সেই গল্প শুনছিলাম তাঁর মুখে শ্রীরামপুর ষ্টেশনে দাঁড়িয়ে। 

দিল্লির নানা ধরনের দলীয় কাজে তৃণমূলের একমাত্র বিশ্বস্ত লোক ছিলেন এই সিংদা। বিরোধী রাজনীতির অলিন্দে যার ছিল অনায়াস অবাধ যাতায়াত। যাকে একডাকে চিনতেন তৃণমূলের সব হেভিওয়েট নেতা মন্ত্রী সবাই। কিন্তু আজ সেই মানুষটাই কেমন যেনো থমকে গেছেন। পেটের টানে ছুটে বেড়াচ্ছেন এদিক ওদিক নিজের কাজে। ছেলেকে নিজের পায়ে দাঁড় করাবেন বলে প্রতিজ্ঞা করেছেন তিনি। হ্যাঁ অনেকেই বলবেন এসব বলে লিখে লাভ কি। কি হবে এসব পড়ে। আসলে লাভ এটাই এই সব মানুষরা একদিন হয়তো কত কিছুই না করেছেন নেতার জন্য, নেত্রীর জন্য, দলের জন্য। কিন্তু যে একদম একা সেই মানুষটাই।
 কিছুটা দলকে ভালোবেসে কিছুটা নেশায়। কিন্তু আজ সেই দল ক্ষমতায় এসে হয়ত এইসব মানুষদের আর মনে রেখে দেয়নি। কারণ আর দরকার পড়েনি তাদের। এটা নিয়ে হয়তো লেখার চেষ্টা করে কি লাভ আপনারা বলবেন। তবু এইসব মানুষদের জন্য তো আমরা সাংবাদিকরা অনেক কিছুই খবর পেয়েছি। অনেক কিছুই জানতে পেরেছি। যেটা হয়তো কিছুটা হলেও সম্পর্কের বন্ধন তৈরি হয়েছে আমাদের। 

সেই সম্পর্কের বন্ধন আলগা হলেও যোগসূত্র রয়ে গেছে আজও। এতদিন পরেও কেমন দুজনে বুড়ো হলেও মনে হয় এই তো সব সেদিনের কথা। আর তাই তো সেই কবে থেকে আমাদের সিং দা সবার দাদা হয়ে গেছেন। আর তাই আমি সাদা জীবনের কালো কথায় সিং দার জন্য মনে হলো কিছু লিখলে ভালো হয়। তাই লিখলাম আমি। 

এমন একটা মানুষের সন্ধান পেয়ে আমি অন্তত গর্বিত। বয়স হয়েছে বেশ সিং দার। আগের মত দৌড়ে বেড়াতে কিছুটা অসুবিধা হয় হয়তো তাঁর। আকবর দা মারা যাবার পরে শেওড়াফুলি ছেড়ে বহুদিন আগেই তিনি চলে গেছেন বাঁশবেড়িয়াতে। আমায় কতবার যে বলেছে, অভিজিৎদা তুমি বৌদি মেয়েকে নিয়ে এসো আমার বাড়ি ডাল ভাত খেয়ে যাও। হংসেশ্বরী মন্দির দর্শন করে যাও। আমি বলেছি হ্যাঁ যাবো দাদা কিন্তু যাওয়া হয় নি আমার। 
আজ বহুদিন পর রাজনীতির বহু পুরোনো দিনের এই মানুষটিকে দেখে বড়ো ভালো লাগলো আমার। মনে হলো জীবনের গড়ে ওঠা সম্পর্ক তো মরে যায় না কোনোদিন কোনোভাবেই। তাই আমার আঁকিবুঁকি ব্লগে আঁকাবাঁকা অক্ষরে কিছু কথা লিখে রাখলাম আমাদের সেই সিং দার জন্য। যার কাছে আমরা অনেকেই সাংবাদিকরাও কিছুটা হলেও অনেক কিছুই পেয়েছি। যার ঋণ আমি অন্ততঃ শোধ করতে পারবো না কোনোদিন। 
রাজনীতির বৃত্ত থেকে দূরে থাকা এই সব মানুষরা ভালো থাকুন। ট্রেন ছেড়ে দিলো। কামরায় উঠে আমাকে হাত নাড়লেন সিং দা। আমিও হাত নাড়লাম প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে। বললাম আবার দেখা হবে। গতি বাড়িয়ে ট্রেন চলে গেলো। ফাঁকা স্টেশনে আমি একা একা দাঁড়িয়ে রইলাম। পরে রইলো কিছু স্মৃতি আর কিছু কথা। যা ভোলা যাবে না এই জীবনে। 

সিংদা ও আমি -  অভিজিৎ বসু।
তিরিশে আগস্ট, দু হাজার চব্বিশ।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অ্যাঙ্কর মিমির কথা

'আমরা যদি এই আকালেও স্বপ্ন দেখি কার তাতে কী?' বাহ দারুন সুন্দর এই কথা। স্বপ্ন দেখার কি কোনো সময় হয় নাকি। পঞ্জিকার পাতা উল্টে তিথি নক্ষত্র দেখে কি স্বপ্ন দেখা যায়। যে স্বপ্ন বাঁচার খোরাক জোগায়। যা দেখে এই দৌড় ঝাঁপ করা জীবনে কেমন একটা স্বস্তি মেলে সেই স্বপ্ন সফল হোক বা না হোক। যে কোনোও বয়সে এই স্বপ্ন দেখা যায়। ফেসবুকের পাতায় সেই কথা লেখা দেখে মনে মনে কিছুটা সাহস সঞ্চয় করেই এই রাত দুপুরে ভয়ে কম্পমান হয়েই ওকে নিয়ে লেখার চেষ্টা করা। সেই পোদ্দার কোর্টের অফিসে সেই দুর থেকেই অচেনা জগতের সেই খবরের বিখ্যাত সব নানা ধরনের খবর পাঠিকাদের ভীড়ে তাঁকে দুর থেকে দেখা। একদম অন্য এক গ্রহের বাসিন্দা যেনো। সেই কালামের দোকানে হয়তো কোনোও সময় চা খেতে গিয়ে দেখতে পাওয়া। সেই লিফটের কুঠুরিতে একসাথে ওঠা বা নামা কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখেই। কিন্তু সেই অন্য খবর পড়া অ্যাঙ্কর দের সাথে সহজ সরল ভাবে মিশে যাওয়ার সাহস হয়নি আমার কোনোও দিন তাঁর সাথে। আজ আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায় আমার আঁকিবুঁকি ব্লগের পাতায় সেই ২৪ ঘণ্টার পোদ্দার কোর্টের অফিসের বিখ্যাত অ্যাঙ্কর মিমির কথা। ...

এলোমেলো , এলেবেলে বিন্দাস জীবন ও জন্মদিন

দেখতে দেখতে বছরের পর বছর গড়িয়ে যায়। আসলে এই অচলাবস্থা আর অকর্মণ্য দিনযাপনের একটা জীবন কাটিয়ে দিতে দিতে বেশ আমি কেমন যেন এডজাস্ট করে নিয়েছি নিজের সাথে নিজেরই এক অদ্ভুত সহাবস্থান। আমার জীবনের সাথে ক্রমেই দ্রুত কমতে থাকে যেনো মৃত্যুর দূরত্ব। দীর্ঘ দিনের জীবনের ঘন্টা ধ্বনিতে কেমন অচেনা সুরের সুর মূর্ছনা বেজে ওঠে ঠিক যেনো ওই গির্জার ঘরে জিঙ্গেল বেল, জিঙ্গেল বেল এর সুরের মতই আচমকা রাত বারোটা বাজলেই এই একত্রিশ মে।  যার তাল, লয় আর ছন্দে আন্দোলিত হয় এই জীবন আর জীবনের নানা জলছবি। যে ছবির কোলাজে ধরা পড়ে হাসি কান্না, সুখ আর দুঃখের নানা অনুভব। যে অনুভূতির জারক রসে আমি জারিত হই প্রতি মুহূর্তে। আর তাই তো বোধহয় সেই ছোটবেলার দিন এর কথা মনে পড়ে গেলেই সেই ঝাপসা হয়ে যাওয়া ধূসর হয়ে যাওয়া সেই ছবির সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে ইচ্ছা হয় আমার বড়ো এই আজকের দিনে।  সেই পুরোনো দিনের ভালোবাসার স্পর্শ আর স্মৃতি রোমন্থন করা একটি ছবি। মায়ের নিরাপদ কোলে ঠিক নয় চুপটি করে পাশে বসে আছি আমি একদম ফিট ফাট হয়ে আপন মনে ভদ্র শান্ত ছেলের মতোই যা আমি মোটেও নয়। আজকের সেই এ...

যা দেখি…প্রতিদিন মনে পড়ে কত… স্মৃতির পথ ধরে হাঁটি… লিখি…

ইটিভির অ্যাঙ্কর অঙ্কুর

ভাবা যায় এই ভুবন ভোলানো হাসিমুখের বিখ্যাত অ্যাঙ্করও নকল হতে পারে নাকি কোনোভাবে। হতেই পারে না একদম এটা। কোনোভাবেই এটা মেনে নেওয়া যায় না আর বিশ্বাস করাও যায় না। ওর এই পোস্ট দেখে সেটাই মনে হলো আমার সবার প্রথমেই। আসলে এই জীবনের পথে হাঁটতে হাঁটতে আসল আর নকলের এই গা ঘেঁষাঘেঁষির ভীড়ে পার্থক্য বোঝাই যে দায়। কে আসল বন্ধু আর কে নকল বন্ধু সেটাই বোঝা মুশকিল। সেটাকে নির্ধারণ করা যে বড়ই দুষ্কর কাজ। সেটাই যে আজকাল আর ঠিক করে ঠাওর করতে পারি না আমি এই বুড়ো বয়সে এসে।  আজ সাদা জীবনের কালো কথায় আমার এই আঁকিবুঁকি ব্লগে তাই সেই যার কোলে চেপে বাসে করে জীবনে প্রথম বার দুরু দুরু বুকে রামোজি ফিল্ম সিটিতে গিয়েছিলাম আমি বেশ ভয়ে আর আতঙ্কে যদি চেয়ারম্যান এর সামনে যেতে হয় আর ইংরাজিতে কথা বলতে হয় এই ভয়ে। সেই ভীড় বাসে বসতে জায়গা না পেয়ে সেই তাঁর কথা। সেই যে সারাদিন অফিস করে হায়দরাবাদ এর বাংলা ডেস্ক থেকে ধ্রুব রাতে ওর বাড়িতে ভাত খাবার জন্য নেমতন্ন করলো আমায় গরম ভাত, ডাল আর আলুভাজা রান্না করলো রূপা ওর শরীর খারাপ নিয়েও সেদিন কত কষ্ট করে। সেই খেতে দেবার সময় ওদের ঘরে খাবা...

বিনোদন রিপোর্টার দেবপ্রিয়

দেবপ্রিয় দত্ত মজুমদার। ওর সাথে কোথাও একসাথে কাজ করা হয়নি আমার। ওর খবরের ফিল্ড একদম আলাদা এন্টারটেনমেন্ট। আর আমার শুধুই সাধারণ খবর। কখনও জেলার খবর,আর কলকাতার খবর। রাজনীতির খবর নিয়েই ঘুরে বেড়ানো। তবু কেনো জানিনা ওর শান্তিনিকেতনে আসার খবর শুনেই ওকে সাহস করে আমার নম্বর দিলাম। এমনি কোনোও কারণ ছাড়াই যদি যোগাযোগ হয়। যদি দেখা হয়। কলকাতার গন্ধ আছে। মিডিয়ার একটা বলয় গায়ে জড়িয়ে আছে। আর কি শুধুই যদি দেখা হয়ে যায় এই আশায়।  চমক অপেক্ষা করেছিল আমার জন্য। পরদিন ফোনে যোগাযোগ করলো ও নিজেই। কথা হলো দু চারটে আমাদের। কোথায় থাকো তুমি জিজ্ঞাসা করলো। আর সত্যিই আমি টোটো চালকের কাজ করি কি না যেটা নিয়ে ওর নিজেরও একটা সন্দেহ ছিল মনে মনে সেটা পরিষ্কার করে দিলাম আমি ওকে। কিন্তু যেনো কতদিনের চেনা একজন মানুষ। কত আপন ছন্দে কথা বলা ওর। যেটা আমায় আকর্ষিত করলো বেশ। ওর অনুষ্ঠান যেটা হচ্ছে শান্তিনিকেতনে সেখানে আমার মতো একজন বাতিল মানূষকে আসতে বললো ও নিমন্ত্রণ জানালো সপরিবারে।  আমি একটু আবেগ প্রবণ মানুষ। আমি চলে গেলাম সেই অনুষ্ঠানে ওর আমন্ত্রণে। যা সচরাচর আমি কো...