সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

সেপ্টেম্বর, ২০২৪ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

পাসপোর্ট,পুলিশ ও কবিতা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ শ্রীরামপুর থানার সেই তন্ময় বাবুর কথা। নানা চরিত্র নানা ধরনের মানুষ ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকেন আমাদের আশপাশে। যাদের দুর থেকে দেখলে মনে হয় পুলিশে কাজ করা লোক কেমন হবে কে জানে। তেমন একটা ভয় ভয় তো থাকেই। কিন্তু সামনে গেলে সেই ভয়টা উবে যায়। দেখা যায় না যা ভেবেছিলাম সেটা নয় কিন্তু।  মেয়ের পাসপোর্ট এর ভেরিফিকেশন এর জন্য কাগজ পত্র নিয়ে যেতে হবে শ্রীরামপুর থানায়। সেই ফোনটা এসেছিল দুপুর বারোটার পর মেয়ের মোবাইল ফোনে। আমি তো পড়িমড়ি করে সব কাগজ নিয়ে দৌড়ে বোলপুর থেকে রওনা দিলাম দুরু দুরু বুকে ভয়ে ভয়ে। তার আগে শ্রীরামপুর এর এই সময় পত্রিকার সাংবাদিক প্রদীপ চক্রবর্তীকে বললাম ভাই একটু বলে দিবি তুই ওই অফিসারকে। সৌগতকেও বললাম, ওরা দুজন বললো খুব ভালো মানুষ তন্ময় বাবু অসুবিধা হবে না ভেরিফিকেশন এর তুমি চলে যাও নির্ভয়ে।  ওদের কথায় ভরসা করে দুরু দুরু বুকে ট্রেন ধরলাম আমি বোলপুর থেকে। শ্রীরামপুরে পৌঁছলাম প্রায় সন্ধ্যা হয় হয়। সোজা কাগজ পত্র নিয়ে দুরু দুরু বুকে থানার গেটে হাজির হলাম আমি। সেই থানা, থানার সামনে কিছু লোকের জট...

ট্রাম কথা ও আমি

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ‌ অন্য এক সকালের কথা। যে সকালে বহুদিন পর একটি ছোট পত্রিকায় আমার একটি লেখা দেখে মনটা বড়ো ভালো হয়ে গেলো। আমার সাদা কালো অক্ষরে নিজের ছাপা নাম দেখে মনটা ভরে গেলো আজ। সত্যিই বলতে কি এই যতো আমরা বোকা বাক্সের পর্দায় বুঁদ হয়ে ডুবে থাকি সাংবাদিকতার নেশায় দৌড়ে বেড়াই এদিক থেকে ওদিক। সেই কাগজে নিজের লেখা নিজের ছাপার অক্ষরে নাম দেখে আজও যে অনুভূতি হয় সেটা বোধ হয় একটু ভিন্ন স্বাদের আর ভিন্ন ধরনের। সেই যেনো আধুনিক বিয়ে বাড়িতে চিকেন, বিরিয়ানী খাবার সাথে পুরোনো সাবেকি বিয়েবাড়িতে কলাপাতায় লুচি, ছোলার ডাল আর আবার বেগুন ভাজা খাবার কথা মনে পড়ে যায়।  যাকগে সকাল বেলায় কলকাতার নবান্নের একজন সাংবাদিক যে আমায় ভুলে যায়নি এখনো সেই মোবাইল ফোনে লেখাটি পাঠিয়ে বললো চার এর পাতায় বেরিয়েছে তোমার লেখা। সত্যিই বিশ্বাস করুন আপনারা এই এতদিন পর বাতিল হয়ে যাওয়া একজন বাতিলের দলে প্রবেশ করা একজন খবর ভালোবাসা মানুষ যেনো কেমন করে আনমনা হয়ে গেল। হাজার কথার ভীড়, হাজার ঘটনার ঘনঘটা, হাজার ওয়াটের বাল্ব এর আলোর মতো আমার স্মৃতির সরণীতে ভীড় করে এসে দাঁড়িয়ে পড়ল অনে...

সিঙ্গুরের বিখ্যাত সাংবাদিক রানা

সাদা জীবনের কালো কথায় একে একে আমি বহুজনের কথা লিখছি। কেউ কেউ বলছেন এসব কোনো কাজ নেই তাই একটু লিখে মিডিয়াতে ভেসে থাকার চেষ্টা করা আর কি। আবার কেউ নাক কুঁচকে বলছেন টোটো চালকের আর কি বা করার আছে এটা ছাড়া এখন। আসলে কিন্তু সেটা নয় একটা গোটা জীবনের এই নানা ভাবে আর নানা ধরনের মানুষের সাথে পরিচয় আর তার কাজের সূত্র ধরেই তো বেঁচে থাকে সম্পর্কের নানা গভীর জীবন মাপের বন্ধন। সেই চেনা বহুদিনের সম্পর্ক কোনো সময় গলি পথের বাঁকে হারিয়ে যায় ধীরে ধীরে দুজনের অজান্তেই। আবার কোনো সময় সেই সম্পর্ক ঘাপটি মেরে লুকিয়ে থাকে ঝোপের আড়ালে রাস্তার ধারে। সময় সুযোগ পেলে ঝপ করে রাস্তায় বেরিয়ে পড়ে সেই হাসি মুখে। এটাই তো জীবন। যে জীবনকে উপভোগ করি আমি আজও সেই পুরোনো ফেলে আসা দিনের স্মৃতি ঘেঁটে।  যাকগে যার কথা আমি লিখতে বসেছি আজ সেই বিখ্যাত রানা কর্মকার। হুগলী জেলার সিঙ্গুরের সেই বিখ্যাত আমাদের সবার রানা। হ্যাঁ, সেই পুরোনো আমলের ইটিভির সেই বিখ্যাত ক্যামেরাম্যান রানা কর্মকার। যে ক্যামেরাম্যান থেকে সে গোটা হুগলী জেলার বস হলো ধীরে ধীরে অনেক কসরৎ করে। ওর নামের পাশে রিপোর্টার রানা কর্মক...

মা আসছেন

রাত অনেক হয়েছে, ফাঁকা রাস্তায় লোকজন খুব একটা নেই। বাড়ির পাশের ফাঁকা খেলার মাঠে এদিক ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে বাঁশ, পেরেক, নতুন রং করা কাপড়, মা দুর্গার মুখের চালচিত্র আরও কতো কিছুই। ধীরে ধীরে সেজে উঠছে পাড়ার পুজোর মণ্ডপ বাইরে থেকে আসা কারিগরদের হাতে। পূজোর বাকি যে মাত্র আর কটা দিন। তারপরে সব রাস্তায় নেমে পড়া। পিতৃপক্ষের অবসান হতে আর বেশি দেরি নেই যে। দেবীপক্ষের আগমনীর গান শুনে ভোর বেলায় ঘুম থেকে উঠে মনে মনে মার আসার খবরে ভারী সিসের মতো মন এর ভালো হয়ে যাওয়া।  আজ থেকে ঠিক এক বছর আগে ঠিক এই দুর্গা পূজোর সময় আমার খুব শরীর খারাপ হলো। টানা দৌড়ে ছুটে বেড়ানো এক মিডিয়ার অফিসে অফিস করা আমি কেমন যেন অসুস্থ হয়ে গেলাম। আচমকাই থেমে গেলো আমার দৌড় অতিরিক্ত পরিশ্রমের ফলে। যদিও আমার এই জীবনের দৌড় তো থেমে গেছে পাঁচ বছর হলো প্রায়। যেদিন চব্বিশ ঘন্টা চ্যানেলের চাকরি ছেড়ে নিজেই ঘোষণা করে টোটো চালকের আসনে আওয়ামী লীগের নেতার মত বসে পড়ে থাকার দিন থেকেই যে আমি দৌড় থামিয়ে দিয়েছি আমার নিজের ইচ্ছায় আর কিছুটা স্বেচ্ছায়। তার জন্য আমার কোনো আফশোষ নেই কিছুই ...

ট্রাম কথা

রাস্তা চলেছে যত অজগর সাপ/পিঠে তার ট্রাম গাড়ি পড়ে ধুপধাপ--- রবীন্দ্রনাথের লেখা লাইনটা হঠাৎ মনে পড়ল। আসলে এই দেড়শো বছরের শহর কলকাতা ছেড়ে ট্রাম এর ঘন্টির আওয়াজ আর শোনা যাবে না এই কথা শোনা যেতেই চারিদিকে হৈ চৈ আর হুল্লোড় পড়ে গেছে। এই ট্রাম বাঁচানোর দাবিতে রাস্তায় নেমে পড়েছেন ট্রাম প্রেমীরা। সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে প্রতিবাদ তো চলছিল। সেই প্রতিবাদ একদম রাস্তায় নেমে পড়লো। শ্যামবাজার ট্রাম ডিপোর সামনে প্রতিবাদ বিক্ষোভ দেখাতে জড়ো হলেন কিছু লোক জন। এদিকে আগামী পাঁচ অক্টোবর কলেজ স্ট্রিটে ট্রাম বাঁচাতে মহামিছিলের ডাক দেওয়া হলো নাগরিকদের তরফে। দাবি একটাই এই কলকাতার গর্বের নস্টালজিয়ার ট্রামকে কয়েকটি রুটে চালাতেই হবে। যদিও এই প্রসঙ্গে সরকার কি ভাবছে। পরিবহন মন্ত্রী কি ভাবছেন সেটা জানতে ইচ্ছা হলো আমার। এই ট্রাম নিয়ে কি ভাবছে সরকার। রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী স্নেহাশীষ চক্রবর্তী আমায় ফোনে বলেন, ট্রাম নিয়ে আমাদের সুস্পষ্ট বক্তব্য হলো যে এখন এটি আদালতের বিচারাধীন রয়েছে। আদালত যা বলবেন আমরা সেটাই মান্যতা দিয়ে করবো। কিন্তু হেরিটেজ হিসেবে এই ট্রাম চলবে একটি নির্দিষ্ট রুটে।...

পল্লীডাকের গল্প

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ আর কোনো ব্যক্তি মানুষের কথা নয়। কোনো বিশেষ চরিত্রের স্মৃতিচারণ করা নয়। আজ এমন এক ছোটো পত্রিকার কথা বলবো, যাকে ঘিরে হাজারো মানুষের ভীড় উপচে পড়েছে সারাদিন ধরেই নানা ভাবে নানা রূপে। সেই ছোটো হুগলী জেলার এই পত্রিকার অফিসে নিয়ম করে হাজির হতেন জেলার ছোটো,বড়ো, মেজো, সেজো, নানান মাপের আর নানা ধরনের এলিট শ্রেণীর সব সাংবাদিক থেকে শুরু করে জেলার ডেঙো ডোঙলারাও। যাদের সাধারণভাবে কেউ পাত্তা দিত না কোনোদিন জেলায় তথাকথিত সাংবাদিক এর দল।  এই পল্লী ডাক পত্রিকার অফিসে আসতেন রাজনীতির কেউকেটারা, কেস্টবিষ্টুরা, থানার বড়ো বাবু, মেজো বাবুরা, সিপিএম এর জোনাল কমিটির সদস্য থেকে শুরু করে  নানা মাপের নেতারা, আবার সদ্য গজিয়ে ওঠা প্রোমোটার সেও হাসি মুখে হাজির হতেন এই পল্লীডাক এর অফিসে হাসি মুখে। কেউ কেউ এই সংবাদের পেশায় টিকে থাকার জন্য খবরের জন্য ছুটে আসতেন এখানে। আর সঠিক খবর পাবার আশায় হাজির হতেন এখানে। এবেলা ওবেলা হাজির দিত তারা প্রতিদিন। আবার কেউ কেউ এই পেশায় প্রবেশ করার ছাড়পত্র পেতে ইট পাতার জন্য এই পত্রিকার অফিসে হাজির হতেন হাসি মুখে একটু কৃপা লাভের আশায় দাঁড়িয়...

বের গ্রাম দর্শন

বোলপুর থেকে বাসে মাত্র আধ ঘণ্টার পথ। গ্রামের নাম বের গ্রাম। সুন্দর ছবির মত গ্রামে ঘুরে বেড়ানোর অভিজ্ঞতাই একটু আলাদা। সে কাজের সূত্রে হোক বা এমনই হোক। সকাল বেলায় উঠে ঝাঁকি দর্শনের মত গ্রাম দর্শন যারা করতে পারেন তারা সত্যিই বেশ ভাগ্যবান মানুষ। শহুরে জীবনের হাতছানি এড়িয়ে সবুজ ধান ক্ষেতের ওপারে মেঘের রাজ্যের অজানা ঠিকানা দেখে মনে মনে খুশি হয়ে যাওয়া। মেঘলা আকাশ জুড়ে নীলের মাঝে সাদা ভেলার মন কেমন করে ভেসে যাওয়া এদিক থেকে ওদিক উদ্দেশ্যহীন ভাবে।  ওই দিগন্ত রেখা জুড়ে একটি দুটি গ্রামের বাড়ি, নিকোনো উঠোন, তুলসী তলায় গত সন্ধ্যার পিদিম এর তেল পড়ে আছে এখনো। নিকানো উঠোন জুড়ে কেমন মন কেমন করা সোঁদা গন্ধ, বড়ো রাস্তা পার করে নীল সাদা মেঘের চাদর গায়ে জড়িয়ে ছায়া মাখা পথ পেরিয়ে সাইকেল নিয়ে স্কুল যাওয়া গ্রামের ছেলে মেয়েদের কেমন হাসি মাখা মুখে। ওদের কেমন এই নিস্তরঙ্গ জীবনে জড়িয়ে আছে তরঙ্গের ঢেউ। যেখানে খুব বেশি জাঁকজমক নেই। খুব বেশি চাকচিক্য নেই। খুব বেশি সুবিধা পাওয়ার আশা নেই। তবু কেমন করে যে আনন্দে ওরা আছে তার সুলুক সন্ধান করতে পারে না আমার এই শহুরে জীবন...