সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পাসপোর্ট,পুলিশ ও কবিতা


সাদা জীবনের কালো কথায় আজ শ্রীরামপুর থানার সেই তন্ময় বাবুর কথা। নানা চরিত্র নানা ধরনের মানুষ ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকেন আমাদের আশপাশে। যাদের দুর থেকে দেখলে মনে হয় পুলিশে কাজ করা লোক কেমন হবে কে জানে। তেমন একটা ভয় ভয় তো থাকেই। কিন্তু সামনে গেলে সেই ভয়টা উবে যায়। দেখা যায় না যা ভেবেছিলাম সেটা নয় কিন্তু। 

মেয়ের পাসপোর্ট এর ভেরিফিকেশন এর জন্য কাগজ পত্র নিয়ে যেতে হবে শ্রীরামপুর থানায়। সেই ফোনটা এসেছিল দুপুর বারোটার পর মেয়ের মোবাইল ফোনে। আমি তো পড়িমড়ি করে সব কাগজ নিয়ে দৌড়ে বোলপুর থেকে রওনা দিলাম দুরু দুরু বুকে ভয়ে ভয়ে। তার আগে শ্রীরামপুর এর এই সময় পত্রিকার সাংবাদিক প্রদীপ চক্রবর্তীকে বললাম ভাই একটু বলে দিবি তুই ওই অফিসারকে। সৌগতকেও বললাম, ওরা দুজন বললো খুব ভালো মানুষ তন্ময় বাবু অসুবিধা হবে না ভেরিফিকেশন এর তুমি চলে যাও নির্ভয়ে। 

ওদের কথায় ভরসা করে দুরু দুরু বুকে ট্রেন ধরলাম আমি বোলপুর থেকে। শ্রীরামপুরে পৌঁছলাম প্রায় সন্ধ্যা হয় হয়। সোজা কাগজ পত্র নিয়ে দুরু দুরু বুকে থানার গেটে হাজির হলাম আমি। সেই থানা, থানার সামনে কিছু লোকের জটলা ভীড়। সামনে দুজন পুলিশ দাঁড়িয়ে কোথায় কে যাবে কার সাথে দেখা করবে তার দেখভাল করছে তারা গম্ভীর মুখে। আসলে আগে থানা, পুলিশ, মারামারি, ঝগড়া, লাঠা লাঠি, উত্তেজনা, গুলি, বোমা এসব দেখে ভয় লাগতো না আমার। বেশ মজাই লাগতো। এসব নিয়েই জীবন সম্পৃক্ত থাকতো আমার। দিন রাত হতো এই সব জিনিসকে সঙ্গী করেই। কিন্তু এখন যেনো এই টোটো চালকের জীবন যাপন করতে গিয়ে কেমন যেন বুকের মধ্য থানা, পুলিশ অফিসার, ডিআইবি অফিসের ইনচার্জ এর নাম শুনলেই বুকটা যেন ঢিপঢিপ করে। বেড়ে যায় আমার পালস রেট। ভাবি এই রে কি যে বলবে বলে লাঠি মারবে কে জানে। ভয়ে ভয়েই জীবন শেষ। 

সেই চেনা একসময় বুক চিতিয়ে থানার গেটের পুলিশকে বলা বড়বাবুর সাথে দেখা করবো। বলে গটমট করে ঢুকে যাওয়া কেউ বাধা দেবার আগেই তেমন অবস্থা তো আর নেই আমার। তাই গেটের পুলিশকে জিজ্ঞাসা করলাম তন্ময় বাবু কোথায় বসেন। ওরা জানালো ওই পিছন দিকের ঘরে। কিছুটা দ্বিধা নিয়ে গুটি গুটি পায়ে এগোতে থাকলাম পুকুর পাড় ধরে। সেই রাজহাঁসের এদিক ওদিক দুলে দুলে হেঁটে বেড়ানো। সেই স্পেশাল ব্রাঞ্চ লেখা দরজা। বাইরে কিছু লোক দাঁড়িয়ে থাকা। ছোটো একটা ঘর এর বাইরে কিছু ভীড়। বুকে সাহস নিয়ে বললাম তন্ময় বাবুর সাথে দেখা করবো। পাশের ঘর বলে গম্ভীর মুখে কম্পিউটার এর স্ক্রীন মন দিলেন তিনি। 

আমিও বুকে সাহস নিয়ে পাশের ঘরে ঢুকে পড়লাম বললাম তন্ময় বাবুর সাথে দেখা করতে চাই আমি। আমার নাম অভিজিৎ বসু। দেখলাম বেশ হাসি হাসি মুখ নিয়ে ছোটো একটা ঘরে বসে আছেন। খুব একটা দেখে ভয় পেয়ে যতটা বুক ঢিপঢিপ করছিল সেটা করলো না আর। হেসে বললেন আরে বসুন বসুন আপনি। ফাইল হাতে বসে পড়লাম চেয়ারে ওনার সামনে উল্টো দিকে। পুলিশ মানেই গম্ভীর মুখে জরিপ করে দেখা। খুঁত ধরে বলা এটা তো ঠিক নেই। এটা ভালো করে নিয়ে আসুন তেমন বললেন না কিছুই তিনি। 

শুরু হলো পুরোনো কথা আর নানা গল্প। থানার গল্প, শ্রীরামপুর এর সাংবাদিকদের গল্প, ওনার কবিতা লেখার গল্প। বেশ যেনো একটু অন্য রকম আবহাওয়া ঘরের মধ্যে। এই বলে নিজের মোবাইল থেকে কবিতা পাঠ করলেন তিনি। আমি একটু অবাক হলাম। আচ্ছা এমন ভেবে তো আমি আসিনি। পুলিশ এর কাগজ ভেরিফিকেশন মানে যে কঠিন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা। তারপর হার্ডেল এর একটা একটা পোস্ট পার করে ঘাম মুছে ধীরে ধীরে এগিয়ে চলা। বললাম আমার কাগজগুলো যদি দেখে দেন একটু। হেসে বললেন কোনো চিন্তা নেই আপনার এত কাগজ লাগবেই না। আমি দ্বিধা নিয়ে বললাম আসলে মেয়ের পরীক্ষা চলছে তাই ওকে নিয়ে আসতে পারিনি আমি। কিন্তু উনি ততক্ষণে অন্য আর একটা কবিতা পড়তে ব্যস্ত হয়ে গেছেন। সত্যিই কি অসাধারন অভিজ্ঞতা সঞ্চয় হলো আমার।

আসলে সাদা জীবনের কালো কথায় এমন সব হাজার হাজার মানুষের ভীড় উপচে পড়ে। পথে রাস্তায় হাঁটতে নেমে ঘুরে বেড়াতে গিয়ে চোখে পড়ে যায় আমার। যাদের কথা লিখে রাখি আমি আমার এই আঁকাবাঁকা অক্ষরে আঁকিবুঁকি ব্লগে। কেউ বলেন নেই কাজ তো খৈ ভাজ। আবার কেউ বলেন যতসব উল্টোপাল্টা লোক দের নিয়ে লেখা। কেউ এসব দেখে পড়ে মুখে কুলুপ এঁটে কথা বলেন না আমার সাথে। আমি কেমন আছি খোঁজ নেন না। আবার কেউ চুপ করে এই লেখা পড়ে নিয়ে কোনো মন্তব্য করেন না। এমন হাজার মানুষের ভীড়ের মধ্যে সূর্যোদয়ের মত এমন কিছু মানুষ বেঁচে থাকেন, ঘুরে বেড়ান আমার মনে হয় তাদের কথা লিখে ফেলি আমি। আর তাই পুলিশ এর এই পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন এর কাগজ দেখা এই হাসিখুশি মানুষ তন্ময় বাবুর কথা লিখে ফেললাম আমি আমার ব্লগে। 

বিশ্বাস করুন আর কোনো উদ্দেশ্য নেই এই লেখায়। কাগজপত্র  তিনি দেখলেন না একদম কোনো। বললেন এত কিছুই লাগতো না। আমি হেসে বললাম অনেক টাকার জেরক্স করেছি আমি এগুলো রেখে দিন আপনি। হেসে বললেন ঠিক আছে দিন যখন কষ্ট করে এনেছেন আপনি। ঘন্টা খানেক গল্প কবিতা পাঠ কাগজ পত্র জমা নেওয়ার পর বুকের ভয় কমে গেছে অনেকটাই। বললেন চিন্তা করবেন না আমি আজকে আপনার মেয়ের কাগজ অন লাইন প্রসেস করে দিচ্ছি। বলে একজনকে ডেকে সেই অর্ডার করে দিলেন। আমি বললাম একটা ছবি তুলতে চাই আমি আপনার সাথে। হাসি মুখে অনুমতি দিলেন। দুজনে একসঙ্গে ছবি তুলে নিলাম। ভয় কমে গিয়ে সন্ধ্যার আলো আঁধারির পথ পেরিয়ে মশার কামড় খেয়ে থানা থেকে বের হলাম আমি। বুকটা যেন অনেকটা হালকা লাগলো আমার। 

রাত পৌনে বারোটায় তন্ময় বাবুর মেসেজ এলো আমার মোবাইল ফোনে আপনার মেয়ের পাসপোর্ট এর অনলাইন প্রসেস হয়ে গেছে। আমি সেই মেসেজ দেখে নিশ্চিন্ত হলাম। লিখলাম ধন্যবাদ জানাই আপনাকে। কিছুদিন পর মেয়ের মোবাইল ফোনে মেসেজ এলো পাসপোর্ট রেডি। ওনাকে জানালাম আমি মেয়ের পাসপোর্ট তৈরি হয়ে গেছে। উনি বললেন ঠিক আছে। পোস্ট অফিসের লোক দিয়ে যাবে আর কোনো ঝামেলা নেই চিন্তা নেই আপনার। সেই পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন, কবিতা পাঠ,সেই সন্ধ্যার অভিজ্ঞতা আমার মনে বহু দিন জেগে থাকবে। উনি কবিতা লিখে চলেছেন হাসি মুখে সেই অফিস ঘরে বসে। হাসি মুখে কবিতা পাঠ করছেন। লেখা প্রকাশ হচ্ছে নানা পত্রিকায়। সেই সন্ধ্যার আলাপ আমাদের কি করে যে আপন করে দিলো কে জানে। 

পাসপোর্ট, পুলিশ, কবিতা - অভিজিৎ বসু।
পয়লা অক্টোবর, দু হাজার চব্বিশ।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

জামালপুরের প্রদীপ দা

আজ আমার সাদা জীবনের কালো কথায় বর্ধমানের জামালপুরের সেই দাপুটে ঠোঁট কাটা সাংবাদিক প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় এর কথা। সেই বিখ্যাত সুভাষ তালুকদার এর কাগজ সংবাদে মাত্র এক টাকার কাগজে কাজ করা সংবাদ পত্রিকার দাপুটে সাংবাদিক সেই প্রদীপ দা। সেই মুখ্যমন্ত্রীর সভায় বাঁশের ব্যারিকেডের এপারে দূরে দাঁড়িয়েও যে খবর করা যায় সেটা বড়ো মিডিয়ার সাংবাদিকদের হাসি মুখে দেখিয়ে দিয়ে, আর তাদের খবরের ময়দানে গোল দিয়ে শুধু খবরকে ভালোবেসে ছোটো কাগজে কাজ করে চলা সর্বদা হাসি মুখের সেই আমাদের প্রদীপ চ্যাটার্জী দা।  কোথাও কোনো অন্যায় দেখলেই প্রতিবাদে মুখর হয়ে যাওয়া আর এক দৌড়ে বেরিয়ে পড়া ঝোলা কাঁধে সেই খবরের খোঁজে সেই জামালপুরের প্রত্যন্ত গ্রামের সেই প্রদীপ দা। সেই বিখ্যাত পন্ডিত রবিশঙ্কর আর উদয়শঙ্কর এর আপন মাসতুত ভাই এর ছেলে সেই প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় দাদা। সেই বামদের আমলে জামালপুরের এলাকায় দাপিয়ে খবর করে ছুটে বেড়ানো সেই প্রদীপ দা। সেই তৃণমূল আমলেও একভাবেই ছুটে বেরিয়ে কাজ করা আমাদের সদা ব্যস্ত প্রদীপ দা।  সেই বাবার অসুস্থতার কারনে বড়ো সংবাদ মাধ্যমে কাজ না করেও...

আমার স্যার কাজীদা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ আমার স্যার এর কথা। যার লেখা আজ হঠাৎ চোখে পড়লো একটি কাগজে। আর স্যার এর নামটা দেখেই মনে পড়ে গেলো নানান কথা। হ্যাঁ, সেই কাজী গোলাম গাউস সিদ্দিকী। যাঁর সাথে আমার আলাপ আর দেখা হয়েছিল সেই অজিতদার ফ্রিল্যান্স ছকু খানসামা লেনের ফ্রীল্যান্স প্রেস ক্লাবের অফিসে খুব সম্ভবত। হাসিখুশি বেশ অজাতশত্রু এই মানুষটিকে দেখেই আমার মনে হয়েছিল যে রিপোর্টারদের প্রভূত ক্ষমতা থাকে বোধহয়। তাই পকেটে পেন আর সেই ফোনের ছোট্টো নোটবুক দেখেই আমার মনে হয়, যে ক্ষমতার স্বাদ পাবার জন্য সেই সদ্য গ্র্যাজুয়েশন করে আমার কচি মনে সাংবাদিক হবার বাসনা জাগে সেই সময়।  কোনো প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক নয়, কোনো অফিসে মাছি মারা দশটা পাঁচটার লোয়ার ডিভিশন এর কেরানি নয়, মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ নয়, ল্যাবরেটরিতে টেকনিশিয়ান এর কাজ নয়, এল আই সি বা পোষ্ট অফিস এর এজেন্ট নয়, কোনো মুদি দোকানে হিসেব পত্র লেখার কাজ নয়, স্বাধীন ব্যবসা করা নয়। শুধুই সাংবাদিক হবার স্বাদ।  কাগজে সাদা কালো অক্ষরে নিজের নাম ছাপা হবে, সেই নাম দেখে বুক ফুলে যাবে, পাড়ায় প্রতিবেশীরা সহ স...

কুড়ি থালা দশ টাকা আর রসিক মুলুর জীবন

নাম মুলু হাঁসদা। বাংলা ঝাড়খণ্ড সীমানার চরিচা গ্রাম পঞ্চায়েত এর চর ইচ্ছা রঘুবরপুরের বাসিন্দা মুলু। আজ মুলুর জীবন কথা। গ্রামের নামটা ভারী অদ্ভুত। চর ইচ্ছা রঘুবরপুর। যে গ্রাম অন্য পাঁচটা গ্রামের মতই।সাদামাটা এই গ্রামে দারিদ্র্য, অপুষ্টি আর কর্মহীন জীবনের জলছবি সুস্পষ্ট। আর সেই গ্রামের মহিলারা নিজেদের সংসার রক্ষা করতে গাছের পাতাকে আঁকড়ে ধরে রেখেছে। গাছের পাতা মুলুদের জীবনের জিয়ন কাঠি। যে জিয়ন কাঠিতে তারা ভোর হতেই পেটের টানে চলে যায় জঙ্গলে। খস খস শব্দ করে পায় হেঁটে তারা পাতা তোলে। গাছ থেকে টুপ টাপ করে ঝড়ে পড়া পাতাকে একটা একটা করে নিজের শাড়ির আঁচলে ভরে নেয়। তার পর সব পাতাকে বস্তায় ভরে ঘরে ফেরে।  ঠিক যেভাবে তারা পুকুরে নেমে শামুক গেঁড়ি আর গুগলি তোলে। যে ভাবে তাদের উদর পূর্তি হবে বলে। আর এই পাতাও যে তাদের পেট ভরায়। একটা একটা পাতাকে নিজের সন্তানের মতো আলগোছে ছুঁয়ে বুকে জড়িয়ে ধরে চুমু খায় মুলু, বলে তোরা না থাকলে কি করতাম কে জানে। মাথার ওপর শাল সেগুনের বিশাল আকারের গাছগুলো চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে আর তারা চুপ করে শোনে মুলুর কথা।  একে অপ...

শুভ মকর সংক্রান্তি

মকর মানেই নতুন জামা কাক ভোরে স্নান, রাত্রি জেগে মিঠে সুরে টুসুমণির গান। মকর মানেই পিঠে - পুলির গন্ধে ম - ম হাওয়া, ডুলুং পাড়ে টুসুর মেলায় দল বেঁধে যাওয়া। মকর মানেই মোরগ লড়াই পাহুড় জেতার সুখ, সন্ধ্যা - রাতে মাংস পিঠের স্বাদে ভরা মুখ। মকর মানেই হাতি - ঘোড়ার পুজো করম তলে, সান্ধ্য হাওয়ায় মন উদাসী দিমির দিমির বোলে। আসলে আজ এই মকর সংক্রান্তির দিন, টুসু মেলার দিন, টুসু গানে নিজেকে মাতিয়ে দেবার দিন। অজয় এর ধারে জয়দেব কেঁদুলির মেলায় ভীড়ের মাঝে নিজেকে হারিয়ে দেবার দিন। অজয় এর জলে ডুব দিয়ে স্নান করে পূণ্য অর্জনের দিন। আর নদীর ধারে মোরগ লড়াই এর দিন। আকাশে ঘুড়ি ওড়ানোর দিন, সুতো লাটাই হাতে আকাশ পানে তাকিয়ে থাকার দিন। কেমন যেনো রাশির একটি স্থান থেকে অন্য রাশিতে স্থান পরিবর্তনের দিন। সূর্যের দেবতাকে সকালে উঠে স্নান সেরে প্রণাম জানিয়ে শক্তি সঞ্চয় এর দিন। সূর্যের উত্তর দিকে চলে যাবার দিন। ধীরে ধীরে শীতকাল চলে যাওয়ার দিন।  এই মকর সংক্রান্তি এর ইতিহাস ও ভারতীয় ঐতিহ্যের গভীর শিকড় রয়েছে। এটি কৃষি চক্র এবং ফসল কাটার মৌসুমের সাথে জড়িত। এই মকর সংক্রান্তি চ...