সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

স্বদেশী সাইকেলে বিদেশী অতিথি

আমার সাদা জীবনের কালো কথায় আজ‌ এক নতুন মানুষের গল্প। যে গল্পের নায়কের নাম তোশিহারু মুকোসে। তার নিবাস হলো জাপানের টোকিও শহর। বয়স প্রায় ষাট পেরিয়ে গেছে তার কিন্তু তাঁকে দেখে সেটা বোঝার উপায় নেই একদমই। আর তাঁর নেশা হলো ক্যামেরাকে আঁকড়ে ধরে শুধুই এদিক ওদিক ঘুরে ঘুরে নানা ছবি তোলা। যদিও এর পাশে আর একটা নেশাও আছে তাঁর, সেটা হলো বছরে একবার সেই টোকিও শহরের আধুনিকতার ছোঁয়ার ঝাঁ চকচকে সেই শহুরে জীবনের হাইওয়ে রাস্তা ছেড়ে মাঝেই মাঝেই তিনি কবিগুরুর এই শান্তিনিকেতনের লাল মাটির মোরাম রাস্তায় চলে এসে, প্রাণের আরাম আর আত্মার শান্তি খুঁজে নেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি।

 এত সব কিছুর মাঝে প্রায় তিরিশ বছর ধরেই তিনি এই কবিগুরুর দেশে ঘুরে বেড়ান আপন মনে, আপন খেয়ালে, নিজের মতো করেই। আর তুলে রাখেন নানা জীবনের জলছবি। মাটির মানুষের গন্ধ মাখা ছবি আর তাদের হাসি মাখা মুখ, যে ছবি দিয়ে তিনি তৈরি করেন একটি ছোট বই। যার নাম  দিয়েছেন তিনি নমস্কার শান্তিনিকেতন। এই বছরের সেপ্টেম্বর মাসের প্রকাশিত সেই বইতে দেখা গেলো নানা ছবির সুন্দর কোলাজ। আদিবাসী পাড়ার যে ঘরে তিনি বাস করেন লালবাঁধে হাসি মুখে তাদের জীবনের নানা খণ্ড খণ্ড চিত্র ধরা পরেছে তাঁর ক্যামেরার লেন্সে। ধরা পড়ে লাল মাটির দেশে দিন যাপনের নানা ছবি। বাজারে মাছ ওলার ছবি, সবজি ওলার হাসি মুখের ছবি থেকে শুরু করে দর্জির দোকানির সেলাই করার চিত্র ফুটে উঠেছে তাঁর ক্যামেরায়। আদিবাসী পাড়ার বাসিন্দাদের সেই সহজ সরল জীবন যাপনের ছবি। 

যে ছবিকে সযত্নে তুলে তিনি নিয়ে যান জাপানে নিজের দেশে। সেখানে এই সব ছবির প্রদর্শন করেন তিনি নানা জায়গায়। ভাষার অচেনা শব্দের গণ্ডী পেরিয়ে কেমন করে যে তোশিহারু মুকোসে এই বাংলাকে ভালোবেসে ফেলেছেন কে জানে। এই বিশ্ব কবির শান্তিনিকেতনকে আপন করে নিয়েছেন কে জানে। আসলে এটাই বোধ হয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর চেয়েছিলেন। দেশ, তার সীমানা ছাড়িয়ে, গণ্ডী ছাড়িয়ে অজানা অচেনা পথের পথিককে আপন করে কাছে টেনে নেওয়া। এটাই যে ভারতের কৃষ্টি আর সংস্কৃতি।

 গৌড় প্রাঙ্গণে এই বছর আনন্দবাজার এর মেলায় হাতে ক্যামেরা নিয়ে ভীড়ের মাঝে জাপানী ভাষার পড়ুয়াদের এর স্টল জাপোনিকার সামনে ওনাকে ঘুরতে দেখে আমার একটু কথা বলতে ইচ্ছা হলো। কিন্তু উপায় নেই যে ভাষার সমস্যায় সেটা সম্ভব হলো না কিছুতেই। সেই স্টলের দিকে তাক করে টপাটপ ছবি তুলে রাখছিলেন তিনি। বেশ ভালো লাগছিল আমার সেটা দুর থেকে দেখে। আনন্দবাজারের  এই আনন্দমেলার ভীড়ে একজন বিদেশী এসে আনন্দের জোয়ারে ভাসা ছেলে মেয়েদের ছবি তুলে রাখছেন। সত্যিই কত যে নেশা আছে মানুষের কে জানে। 

 তখন আমি কি জন্যে এই ছবি তোলা সেটা জানতে পারিনি। হঠাৎ দেখলাম সেই ছবি তোলার মানুষটি আমার মেয়ের সাথে হেসে হেসে কথা বলছেন। তারপর দুজনের যেনো কত দিনের পরিচয় ভাবটা এমন। আমি একটু অবাক হলাম আর কি। ভাবলাম জাপানী ভাষা শিক্ষার জন্য হয়তো ওর পরিচিত হবে কেউ। তাই ওরা মেলার ভীড়ে দুজন দুজনকে দেখতে পেয়ে কথা বলছে। তারপর আমাদের সবাইকে ডেকে ছবি তোলা হলো। আমিও সেই ছবিতে ঢুকে পড়লাম মেয়ের সৌজন্যে। একে অপরকে উপহার বিনিময় হলো। হেসে কথা বলা হলো। বেশ ভালো লাগলো আমার। ভাষা না জানলেও কেমন যেনো আপন করে নেওয়া, কাছে টেনে নেওয়া একে অপরকে। আমিও আমার মোবাইল ফোনে সেই দৃশ্য ধরে রাখলাম। যা ভবিষ্যতে মন চাইলে দেখতে পাবো আমি। 

কিন্তু তখন আমি জানতাম না চিনতাম না এই ছবির তোলার কারিগর তোশিহারুকে। কি তার পরিচয়, কি তার নেশা, কি তার জীবনের দর্শন, কি তার জীবনের চাহিদা কিছুই জানতাম না আমি। হঠাৎ ভীড়ের মাঝে হারিয়ে গেলেন তিনি। মনটা কেমন খচ খচ করছিল আমার। কে ওই মানুষটা যার সাথে আমার মেয়ের এত হাসি ঠাট্টা করা আর উপহার বিনিময় করা হলো। সন্দেহের আর ভীরু মন যে আমার। মেলা শেষে বাড়ি ফিরে এসে ওকে জিজ্ঞাসা করলাম আমি সেই কথা। ওর উত্তর আরে এই তো সেই জাপান থেকে ঘুরতে আসা লোকটা যে আমাদের সাইকেল নিয়েছিল। সেই যে সুদীপ স্যার বলেছিলেন এনার কথাই।

 হ্যাঁ,সত্যিই তো মনে পড়ে গেলো আমার নানা কথা। সেই একমাস সাইকেল নিয়ে ঘুরতে চান একজন যিনি গ্রামে ঘুরে বেড়াবেন একটা সাইকেল ভাড়া চান। আমি মেয়েকে বললাম আমাদের সাইকেলটা দিয়ে দে ঘরে পড়ে আছে তো। আর ভাড়া নেবার কোনো দরকার নেই। উনি এসেছেন আমাদের দেশে ঘুরতে এটুকু করা দরকার আমাদের। যাই হোক আমি ভুলে গেছিলাম সেই কথা। আমি নিজেই আমাদের সেই লাল প্রিয় সাইকেল চালিয়ে সুদীপ স্যার কে জাপানি ভবন যার নাম নিপ্পনভবনে পৌঁছে দিয়েছিলাম দুপুর বেলায়। আর সেই মানুষটাই ঘুরে বেড়াচ্ছেন আনন্দবাজারের মেলায় ক্যামেরা হাতে আপন মনে। 

ওনার নাম কি, পরিচয় কি, কি করেন সেসব জানার বাসনা জাগলো আমার সাংবাদিক সত্তা থেকেই। ফোন করে ফেললাম সেই আমার মেয়ের শিক্ষক সুদীপ স্যার কে। স্যার, একটু বিরক্ত করব ওই জাপান থেকে ঘুরতে আসা ব্যক্তির বিষয়ে যদি একটু তথ্য দেন আমায় তাহলে দু চার কথা লিখতে পারি আমি। সুদীপ স্যার হেসে বললেন নানা কথা। বললেন এই ওনার ছবি তুলে ঘুরে বেড়ানো জীবনের কথা, লালবাঁধের ধারে মাটির বাড়িতে বাস করার কথা আদিবাসীদের সাথে এক সঙ্গে একভাবে হাসি মুখে জীবন কাটাবার কথা। বললেন একটু একটু করে বাংলা শেখার চেষ্টা করার কথা। বছরে একবার বা দু বছরে একবার সেই জাপানের টোকিও শহরের মাটি ছেড়ে বীরভূমের এই লাল মাটিতে ঘুরে বেড়ানোর কথা। না হলে যে ওনার দম বন্ধ হয়ে আসে। কিছুতেই স্বস্তি পান না তিনি ওই নিজের দেশের মাটিতে বাস করে। পান না শান্তিও।


 আর তাই তিনি শান্তির খোঁজে জীবনের টাটকা বাতাসের খোঁজে অক্সিজেনের খোঁজে ছুটে আসেন শান্তিনিকেতনে। ঘুরে বেড়ান খোয়াই এর জঙ্গলে, কোপাই এর তীরে সন্ধ্যা বেলায় বসে চাঁদের ছায়া দেখেন, ভোরবেলায় লালবাঁধের যে মাটির ঘরে তিনি বাস করেন তাদের সাথে গ্রামের জীবনকে উপভোগ করেন হাসি মুখে চেটেপুটে। তারপর সাইকেল নিয়ে এদিক ওদিক ঘুরে বেড়ান ছবি তোলেন একবুক টাটকা বাতাস নিয়ে আবার কিছুদিন পর ফিরে যান নিজের দেশে টোকিওতে। সত্যিই জীবনের এই সাদা আর কালোর মাঝে এমন কত যে অজানা জীবন লুকিয়ে আছে কে জানে। যে জীবনের এই গভীর গোপন ভালোবাসার কথা জানতে পেরে আর লিখতে পেরে আমি সত্যিই আজ অভিভূত।

স্বদেশী সাইকেলে বিদেশী অতিথি - অভিজিৎ বসু।
চৌঠা অক্টোবর দু হাজার চব্বিশ।

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ইটিভির পিনাকপাণি ঘোষ

কিছু মানুষ কত কাছে থেকেও পাশাপাশি এক জায়গায় বাস করেও একসাথে একসময় কাজ করেও যে কত দূরে রয়ে যান নিজের হাসিমুখ নিয়ে আর সেই চেনা ছন্দ নিয়ে সত্যিই বেশ ভালো মজার ব্যাপার কিন্তু এটা জীবনের মেঠো পথে। সেই ইটিভির বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে ঘুরে ঘুরে স্ট্রীট ফুডের ছবি তোলা আর নানা খবর করে খাওয়া দাওয়ার এপিসোড করে একসময়ে বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে যাওয়া ইটিভি নিউজে। আর আমাদের জেলায় বসে সেইসব হাঁ করে দেখা আর কেমন মনের ভেতর অস্থিরতা তৈরি হওয়া। একেই বলে কলকাতার রাজপথের সাংবাদিক বলে কথা।  সেই যে বার রাষ্ট্রপতি এলেন জয়কৃষ্ণ লাইব্রেরী প্রাঙ্গণে সেই অনুষ্ঠানের বিশেষ কার্ড জোগাড় করে দেওয়ার অনুরোধ করা ইটিভির চাকরি করার সুবাদে। কোনো রকমে সেই কার্ড জোগাড় করে এনে দেওয়া তাঁকে আর তাঁর পরিবারের সদস্যদের জন্য। আর সেই একদিন দুপুর বেলায় খুব সম্ভবত করোনা শেষ পর্বে বালিঘাট স্টেশন থেকে অফিস যাওয়ার সময় এসি পঞ্চাশ এর বাস এর ভিতরে দেখা হওয়ায় কত গল্প করা দুজন মিলে পুরনো দিনের। আবার উত্তরপাড়ার সেই বিখ্যাত চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে গিয়ে হাসি মুখে দেখা হয়ে যাওয়া রাতের বেলায় কাঁঠালবা...

আমাদের সবার মৃনাল দা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ এক বাবা আর ছেলের লড়াই এর গভীর গোপন কাহিনী। এই সাংবাদিকতার পেশায় এসে কত লড়াই, কত অসম যুদ্ধ, করে যে কেউ সংসার টিকিয়ে রাখতে পারে হাসি মুখে কাউকে কিছুই বুঝতে না দিয়ে। এমন করে কেউ টিকে থাকার চেষ্টা করেন সেটা বোধহয় আমার জানা হয়ে উঠত না কিছুতেই। যদি না এই পেশায় আমি গা ভাসাতাম এমন করে। জীবনের এই নানা টুকরো টুকরো ছবির কোলাজ ভেসে ওঠে এই রাতের অন্ধকারে আচমকা আমার মনের মাঝে। আর আমি চমকে উঠি কেমন করে তাদের সেই কোলাজ দেখে।  এমন এক চরিত্র, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী হয়ে কেমন আলগোছে, হাসিমুখে, নির্মোহ ভাবে, শুধু নিজের কাঁচা পাকা দাড়িতে হাত বুলিয়ে জীবনটা কাটিয়ে দিলো সে শুধুই আকাশ পানে তাকিয়ে। যে নীল আকাশের গা ঘেঁষে উড়ে যাওয়া সাদা বকের ডানায় লেগে থাকে মেঘের হালকা টুকরো। একদম যেনো সিনেমার পর্দার হিরোর মতোই। দেখে বোঝার উপায় নেই একদম। পেটে খাবার না থাকলেও মুখের হাসিটা অমলিন হয়েই বেঁচে আছে আজও এতোদিন পরেও। আর সেই বিখ্যাত সাদা পাকা নাসিরউদ্দিন স্টাইলের দাড়ি, কালো চুল, আর সব সময় ধোপদুরস্ত ফিটফাট একজন মানুষ। রাত নটা বাজলেই যাকে শ্রীরামপুরে...

শপিং মলের উদ্বোধনে সিঙ্গুর আন্দোলনের দাপুটে মন্ত্রী

নালিকুল স্টেশন বাজারে একটি শপিং মলের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বেচারাম মান্না হাজির। একসময় যাঁর অন্দোলনের ঠেলায় পড়ে দৌড়ে একপ্রকার পালিয়ে চলে যেতে হয়েছিল সিঙ্গুর থেকে টাটা কোম্পানিকে। যে আন্দোলনের দগদগে ঘা আর সেই স্মৃতি ধীরে ধীরে আজ প্রায় মিলিয়ে যেতে বসেছে আমাদের কাছ থেকে। আজ সেই চাষার ঘরের মানুষ না হলেও সেই কৃষক আর শ্রমিকের ন্যূনতম অধিকার নিয়ে যে আন্দোলন শুরু করে সারাটা জীবন কাটিয়ে দিলেন সেই মানুষটাকেই কেমন যেন আজ শপিং মলের উদ্বোধনে দেখে বেশ ভালই লাগলো আমার।  একদম নালিকুল স্টেশনের কাছে ঝাঁ চকচকে শপিং মল। দোকানে সাজানো জিনিস পত্র। আর সেখানেই আমাদের মাননীয় মন্ত্রী বেচারাম মান্না। একদম কেমন একটু আমার অচেনা লাগলো যেন। সেই মুড়ি খেয়ে আলুর তরকারি বা শশা খেয়ে আন্দোলন শুরু করা জমি আন্দোলন এর অন্যতম পথিকৃৎ নেতা আজ এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। তাহলে টাটা কোম্পানির বিরুদ্ধে যে জমি দখল নিয়ে আন্দোলন সেই আন্দোলন এর মধ্যে ছিল জোর করে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা। যদিও সেখানেও সেই সময়ের শাসকদলের কর্মসংস্থানের যুক্তি।তবে এই নতুন শপিং মলের উদ্বোধনে তো আর ...

ভীড়ের মাঝে একা

জীবন জুড়ে শুধুই ভীড় আর ভীড়। নানা ধরনের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় মানুষের গন্ধে, বর্ণে , স্বাদের ভীড়ে আমি একদম একা হয়ে যেতে চাই। যে ভীড় উপচে পড়া রাস্তায় শুধুই হেমন্তের ভোরে শিশিরের ফিসফিস শব্দ, পাখির কিচির মিচির আওয়াজ,ধানসিড়ি ওই নদীটির তীর ধরে ঘুঘুর আকুল মন কেমন করা ডাক, উদাসী শালিকের ঝাঁক বেঁধে উড়ে যাওয়া ওই হেমন্তের হলুদ ধানের মাঠ এর পাশ দিয়ে, হলুদ বসন্ত বৌরীর সেই আমলকীর গাছের পাতায়,আড়ালে আবডালে বসে কেমন যেন আমায় দেখে লজ্জা পাওয়া, আর তারপর চোখ নামিয়ে হঠাৎ করেই তার উড়ে চলে যাওয়া। আর মেঘের কোল ঘেঁষে সেই সাদা বকের, বুনো হাঁসের, আর সেই পানকৌড়ির জলে ভেজা ডানা মেলে উড়ে যাওয়া আকাশ জুড়ে। সত্যিই ওরাও যে ভিড়ের মাঝেই বড়ো একা। একা একাই ওদের যে এই বেঁচে থাকা। কেমন নিপাট হৈ চৈ হুল্লোড়হীন একটা জীবন নিয়ে বেশ মজা করে, আনন্দ করে। আর সেই ভোরের আলোয় আলোকিত হয়ে রাস্তার একপাশে গুটি শুটি মেরে শুয়ে থাকা ওই সাদা কালো ভুলো নামের কুকুরের। যে অন্তত এই সব মানুষদের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় একটু যেনো আলাদা , একটু যেনো অন্য রকমের। একটু একা একাই যেনো ওর এই আলগোছে জীবন কাটিয়...

গৌড় প্রাঙ্গণে আনন্দবাজার

গৌরপ্রাঙ্গনে শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যের আনন্দের মেলা আনন্দবাজার। মহালয়ার ভোরবেলায় ঢাকের বাদ্যি আর সানাইয়ের মন কেমন করা সুরে মেতে উঠলো শান্তিনিকেতনের গৌড়প্রাঙ্গণ। প্রতি বছরের মতো এই বছরও যে হবে আনন্দমেলা আনন্দবাজার। হ্যাঁ সত্যিই যেনো আনন্দের এই হাটে বেচাকেনার পসরা নিয়ে একদিনের জন্য বসে পড়া মন প্রাণ খুলে হৈ হুল্লোড় করে। এই মেলা শুরু হয় 1915 সালের 15 এপ্রিল নববর্ষের দিনে। কিন্তু আগে এই মেলাকে একসময় বলা হতো বৌঠাকুরাণীর হাট। সেই সময় আশ্রমের মহিলারা নিজেদের হাতের তৈরি জিনিস নিয়ে মেলায় বসতেন। মেলার আয়োজন করতেন তারা। আনন্দ করে বেচাকেনা হতো। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময় একবার গরমের ছুটির আগে এমন মেলা নাকি হয়েছিল। যার নাম ছিল আনন্দবাজার। পরে এই মেলার নামে হয়ে যায় আনন্দমেলা। সত্যিই আনন্দের এই মিলন মেলা।  প্রথমদিকে পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের ছেলেমেয়েদের নিয়ে এই মেলা শুরু হয়। পরে ধীরে ধীরে বিশ্বভারতীর সব বিভাগের পড়ুয়ারা এই মেলায় যোগদান করে। এই মেলার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো ছাত্রছাত্রীদের বেচা কেনার লাভের টাকার কিছু অংশ জমা পরে বিশ্বভারতীর সেবা বিভাগে। সেখান থেকে এ...