সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ক্রাইম রিপোর্টার চিত্রদীপ চক্রবর্তী

আমার বড়ো রিপোর্টার হওয়ার ইচ্ছে ছিল। হতে পারলাম কই? ছোট হয়েই আমি খুশি। একজন বিখ্যাত সাংবাদিক এর এই উক্তি। আসলে যারা সত্যিই বড়ো হয় তাঁরা বোধহয় জীবনের আয়নায় এইভাবেই নিজেকে প্রতিফলিত করে। আকাশের দিকে তাকিয়ে লক্ষ্য স্থির রেখে চললেও পা মাটিতেই রাখে। আর আমার মত ক্ষুদ্র মানুষকেও যোগ্য সম্মান দেয় বলে আমি আবার বিখ্যাত হলাম কবে। 


হ্যাঁ, ছবি দেখে তো চিনতে পেরেই গেছেন আপনারা সবাই এতক্ষণে। আমার সাদা জীবনের কালো কথায় আজ সেই বিখ্যাত ক্রাইম রিপোর্টার তথা লেখক চিত্রদীপ চক্রবর্তীর কথা। যদিও আমার তাঁর সম্পর্কে জানা, গল্প, একসাথে কাজ করার অভিজ্ঞতা সঞ্চয় একদম নেই বললেই চলে প্রায়। তবু এসব কথা না ভেবে আমি বুকে কিছুটা বল নিয়ে কলম ধরলাম আমি। সেই যে বাংলা মিডিয়ার প্রথম আলোড়ন তোলা খাসখবরে একসময়ে কাজ করে নানা ভালো খবর করে অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন তিনি সেই সময়ে।একদম হৈ চৈ ফেলে দিয়েছিলেন। টিভির পর্দায় দেখা যেতো রিপোর্টার চিত্রদীপ চক্রবর্তীর নাম। 

 যার জন্য আমার বউ আমি সবে তখন ইটিভির জেলা সাংবাদিক হয়ে তখন আমি কাজ শুরু করেছি হুগলী জেলায়। আর তখন একটু একটু করে আমাদের দুজনের প্রেম ভালোবাসা সবে শুরু হয়েছে আর কি। আর সেই সময় আমার বউ বলছে ওই যে খাসখবরের রিপোর্টার চিত্রদীপ চক্রবর্তী কিন্তু খুব ভালো খবর করে। এটা শুনেই তো আমি রেগে আগুন। কি আমি ঘুরে ঘুরে সারা জেলায় এত খবর করছি আর ওর ভালো লাগছে চিত্রদীপ এর খাসখবরের খবর। হ্যাঁ, এটাই হলো আমাদের ক্রাইম রিপোর্টার এর টিআরপি।

 হ্যাঁ সেই শিলিগুড়ি থেকে চিত্রদীপ কলকাতায় এসেছিল সেটা আমায় বলেছিল উৎপল দা। সেই উৎপল পট্টনায়েক একসময়ের বিখ্যাত স্পোর্টস রিপোর্টার। পরে যাকে অনেক কসরত করে স্পোর্টস থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয় ইটিভিতে একজনকে বিশেষ সুবিধা করে দিতে। কলকাতা থেকে তাকে ইটিভির চাকরি করার সময় সে নিজে একজন রিপোর্টার হলেও হায়দরাবাদ এর ডেস্কে পাঠানো হয় শুধু কপি লেখার জন্য। সেই গল্প একদিন লিখবো পরে আমার সাদা জীবনের কালো কথায়।

 কিন্তু অনেক কষ্ট করে পরে উৎপলদা কিছুদিন পরে ফিরে আসেন কলকাতায়। সেই বাংলা চ্যানেলের একজন সাউথ ইন্ডিয়ান ডিরেক্টর এর সাহায্য নিয়ে। যার জন্যে অনেকের সব বাঙালি বাবুদের কর্তাদের রাগ হয়। আর তাই তাকেও মানে উৎপল দাকে চাকরি জীবনে অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয় তার জন্য। আর সেই সময়কার ইটিভির একজন স্পোর্টস রিপোর্টার যাকে জায়গা আর সুবিধা করে দিতেই এই উৎপল পট্টনায়েককে হায়দ্রাবাদ এ বদলি করা হয়। এত কিছু ঘটনা ঘটে সেই সেদিনের স্পোর্টস রিপোর্টার আজ এক বিখ্যাত বাংলা চ্যানেল এর ম্যানেজিং এডিটর। এমন অনেক না বলা কথা আজও লুকিয়ে আছে মাঠে ময়দানে আনাচে কানাচেতে। যার সন্ধান মেলেনা কিছুতেই সবুজ ঘাসের মাঠের মাঝে।

যাকগে ফিরে আসি সেই ৫১ নম্বর মহাত্মা গান্ধী রোডের নিক্কো বোর্ডিং মেসের রূমে একসাথে থাকা। তিনজনে মিলে চিত্রদীপ চক্রবর্তী, উৎপল পট্টনায়ক আর অমল ত্রিবেদী। সেই পুরুলিয়ার আদ্রা থেকে কলকাতায় এসে খেলা নিয়ে লিখতেন অমল দা। যিনি একটা ছোট পত্রিকা বের করতেন পুরুলিয়া থেকে। এই মেসের তিন জনের সংসারে একদিন এসেছিলেন বিখ্যাত ভবানী প্রসাদ  মজুমদার কলেজ স্ট্রিটের কোনো দোকানে কাজ করতে এসে। কথায় কথায় এইভাবেই সাংবাদিক জীবনের অস্তিত্বের লড়াই চলতে থাকলো চিত্রদীপ চক্রবর্তী এর। 

আসলে দুর থেকে সাংবাদিকতা করতে এসে এই সব মেস এর জীবন আর ঘর ছিল ভবিষ্যতের বিখ্যাত রিপোর্টারদের একমাত্র ঠেক আর ভরসার আশ্রয়স্থল। শিলিগুড়ি থেকে কলকাতায় এসে চিত্রদীপের এই মেস এর সংগ্রামের কঠিন জীবন যাপন করা। আর সেই ১৫ নম্বর লোয়ার রেঞ্জের ওভারল্যাণ্ড কাগজের অফিসে খবরের কাগজে কাজ করা। আর সেই সাংবাদিকতার নানা গলিপথ ধরে ঘুরতে ঘুরতে একদম রাজার কাছে রাজপথে পৌঁছে যাওয়া একদিন। 


 আজ সে বিখ্যাত একজন প্রতিষ্ঠিত সাংবাদিক। কিন্তু এই সবের মাঝে নানা কথা নানা ঘটনা লুকিয়ে আছে যা হয়তো আমার কিছুই জানা নেই ওর সমন্ধে। সেটা জানা সম্ভব নয়। তবু সেই ওর আজকালে পিনাকীদার অধীনে কাজ করা, খাসখবরে বুম হাতে ছুটে যাওয়া, সেই চব্বিশ ঘণ্টা, এবিপি আনন্দ চ্যানেলে দিনের পর দিন শুধুই একজন শহরের রিপোর্টার হলেও তাকে জঙ্গলের রিপোর্টার করে ফেলে রাখা দিনের পরদিন। সেই গল্প তো একদিন ওর মুখেই শুনেছি আমিও। সকালে কলকাতা ফিরে এসে আবার সন্ধ্যায় ব্যাগ গুছিয়ে বেরিয়ে যাওয়া আর জঙ্গলে জঙ্গলে ঘুরে বেড়ানো। 


আর এই জঙ্গলের পথে ঘুরে বেড়ানো যেটা বোধহয় ওকে অনেক কিছু চিনতে সাহায্য করেছে, এই ওর দীর্ঘ সাংবাদিক জীবনে। সেটা হলো একদিকে মানুষ আর অন্যদিকে মাওবাদী। এই দুজনকেই এত গভীর ভাবে চিনতে পেরেছে ও সেটা বোধহয় অনেকেই অনেক রিপোর্টারও এই ভাবে চিনতে পারেনি। আর তাই সে কলমের আঁচড়ে নানা বই এর মাধ্যমে সেটাকে ফুটিয়ে তুলেছে অনেকেই বোধহয় পারেননি সেটা। আসলে ওর এই চুপচাপ ফুলে ছাপ এর স্টাইলে রিপোর্টারী করা এই বিশেষ সুবিধা সে আজও পেয়ে আসছে এই এত বছর পরেও।

সেই সিঙ্গুরের জমি আন্দোলনে উত্তাল আন্দোলনের ঢেউ। সেই বৈদ্যবাটী থেকে মিছিল যাবে সিঙ্গুরে। কিন্তু ১৪৪ ধারা জারি করা আছে। যাওয়া যাবে না সিঙ্গুরে কোনো ভাবেই। পুলিসের কড়া ফরমান আর সেটা আটকাতে হাজার খানেক পুলিশ। সব বিখ্যাত পুলিশের সব অফিসার এর সঙ্গে হাসি মুখে গল্প করছে চিত্রদীপে চক্রবর্তী। সেই গঙ্গেশ্বর সিং, এন রমেশ বাবু আরও কত যে অফিসার ছিলেন সেই সময়ে। আমাকেও যদিও সব এরা ভালোবাসতেন আর চিনতেন পুলিশে কাজ করা লোকজন। 

আসলে পুলিশ বিটকে ও বোধহয় একদম হরলিক্সের মত জলে গুলে খেয়ে নিয়েছে। যেটার জন্য আজ ও বলতে পারে বড়ো রিপোর্টার হবার খুব শখ ছিল আমার কিন্তু সেটা হতে পারিনি আমি। তাই ছোটো রিপোর্টার হয়েই আছি আমি সারাজীবন। আর এটা শুনে মনে হলো আমার চিত্রদীপ একজন আসল মাতব্বর সাংবাদিক হয়েও সে কাউকে তার মস্তবড় মাতব্বরি না দেখিয়ে কেমন যেনো একটা আলাদা ঘরানার জীবন দর্শন বেছে নিয়েছে ও। লোক দেখানো আর দাপট দেখানো সাংবাদিকতা একদম নয়।

 আমি শুনলাম ওর ডাক নাম ছিল চিতু। মেসে ওকে ভুলু বলেই ডাকা হতো জানলাম আমি সেটা। ওর ওই ভুলু নাম দিয়েছিলেন অমল ত্রিবেদীদা। সেই ভুলু বা ওরফে চিতু যে ইটিভির পিয়াসীকে বিয়ে করেছে সেটাও আমি জানতাম না একদম। বহু দিন পর সেটা জানলাম আমি একদিন। যদিও জানার কথাও নয় একজন জেলার পাতি সাংবাদিক হয়ে। সেই বিখ্যাত রিপোর্টার চিত্রদীপ যে পিয়াসীকে বিয়ে করেছে সেটাও অনেক পরে জানলাম আমি একদিন। 

পিয়াসী যখন ইটিভির চাকরি করে সেই সময় রাজ্যপাল বোধহয় ছিলেন সেই বিখ্যাত মানুষ নুরুল হাসান। সেই রাজ্যপাল এর সাথে ইটিভির সেই আমলের একটা মহিলা রিপোর্টার যে সারারাত জেগে গল্প করত ল্যান্ড ফোনের মাধ্যমে। এটা আপনারা একটু ভাবুন। তিনি হলেন সেই আমলের বিখ্যাত রিপোর্টার চিত্রদীপের বিখ্যাত বউ পিয়াসী। যিনি আজ বহুদিন হলো মিডিয়ার বাইরে পড়ে আছেন তিনি কিছুটা হলেও নিজের ইচ্ছায়। এটা বোধহয় একদিকে ভালই হয়েছে। যা দিনকাল পড়েছে চারিদিকে। মিডিয়ার কল্যাণে নিশ্চিন্তে জীবন কাটানো দায় হয়ে গেছে। 

পিয়াসীর সাথে আমার আলাপ পরিচয় ভালই ছিল। আমি ইটিভির হুগলীর রিপোর্টার হলেও আর ও কলকাতার রিপোর্টার হলেও। যে নিজেকে বেশ মাটির সাথেই মিশিয়ে চলতে জানত। যেটা চিত্রদীপ ও বরাবর করে এসেছে সারাজীবন ধরেই। আর তাই বোধহয় আজ বলতে পারে সে, আমি বড়ো রিপোর্টার হতে চেয়েছিলাম কিন্তু পারলাম কই তাই ছোটো রিপোর্টার হয়েই জীবন কাটিয়ে দিলাম। 

আমার মনে পড়ে যায় সেই ঘেরা টোপে বন্দী আজকের ভবানী ভবন নয়। সেই ভবানী ভবনে ঘুরে বেড়ানো বিখ্যাত সাংবাদিকদের দেখে আমিও একসময় তাদের সাথে ঘুরতাম এই ঘর ওই ঘর। সেই চিত্রদীপ, সপ্তর্ষি, শিবাজী, আর শুভ্র। আর এদের মাঝে বেমানান আমিও কেমন করে ভীড়ে যেতাম যেনো। সত্যিই বড়ই ভালো ছিল সেই দিনগুলো। যে আমায় একদিন বলেছিল অভিজিৎ তুমি ওই ভিখারি
 পাশওয়ান নিয়ে একটু লিখো। এটা ঠিক ভাবে অনেকই জানে না কিন্তু। আমি ওর কথায় উৎসাহিত হয়ে একটু লিখেছিলাম সেই ভিখারি পাসওয়ানের কথা। 

ক্রাইম রিপোর্টার চিত্রদীপ চক্রবর্তী - অভিজিৎ বসু।
আঠারো নভেম্বর, দু হাজার চব্বিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ইটিভির পিনাকপাণি ঘোষ

কিছু মানুষ কত কাছে থেকেও পাশাপাশি এক জায়গায় বাস করেও একসাথে একসময় কাজ করেও যে কত দূরে রয়ে যান নিজের হাসিমুখ নিয়ে আর সেই চেনা ছন্দ নিয়ে সত্যিই বেশ ভালো মজার ব্যাপার কিন্তু এটা জীবনের মেঠো পথে। সেই ইটিভির বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে ঘুরে ঘুরে স্ট্রীট ফুডের ছবি তোলা আর নানা খবর করে খাওয়া দাওয়ার এপিসোড করে একসময়ে বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে যাওয়া ইটিভি নিউজে। আর আমাদের জেলায় বসে সেইসব হাঁ করে দেখা আর কেমন মনের ভেতর অস্থিরতা তৈরি হওয়া। একেই বলে কলকাতার রাজপথের সাংবাদিক বলে কথা।  সেই যে বার রাষ্ট্রপতি এলেন জয়কৃষ্ণ লাইব্রেরী প্রাঙ্গণে সেই অনুষ্ঠানের বিশেষ কার্ড জোগাড় করে দেওয়ার অনুরোধ করা ইটিভির চাকরি করার সুবাদে। কোনো রকমে সেই কার্ড জোগাড় করে এনে দেওয়া তাঁকে আর তাঁর পরিবারের সদস্যদের জন্য। আর সেই একদিন দুপুর বেলায় খুব সম্ভবত করোনা শেষ পর্বে বালিঘাট স্টেশন থেকে অফিস যাওয়ার সময় এসি পঞ্চাশ এর বাস এর ভিতরে দেখা হওয়ায় কত গল্প করা দুজন মিলে পুরনো দিনের। আবার উত্তরপাড়ার সেই বিখ্যাত চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে গিয়ে হাসি মুখে দেখা হয়ে যাওয়া রাতের বেলায় কাঁঠালবা...

আমাদের সবার মৃনাল দা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ এক বাবা আর ছেলের লড়াই এর গভীর গোপন কাহিনী। এই সাংবাদিকতার পেশায় এসে কত লড়াই, কত অসম যুদ্ধ, করে যে কেউ সংসার টিকিয়ে রাখতে পারে হাসি মুখে কাউকে কিছুই বুঝতে না দিয়ে। এমন করে কেউ টিকে থাকার চেষ্টা করেন সেটা বোধহয় আমার জানা হয়ে উঠত না কিছুতেই। যদি না এই পেশায় আমি গা ভাসাতাম এমন করে। জীবনের এই নানা টুকরো টুকরো ছবির কোলাজ ভেসে ওঠে এই রাতের অন্ধকারে আচমকা আমার মনের মাঝে। আর আমি চমকে উঠি কেমন করে তাদের সেই কোলাজ দেখে।  এমন এক চরিত্র, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী হয়ে কেমন আলগোছে, হাসিমুখে, নির্মোহ ভাবে, শুধু নিজের কাঁচা পাকা দাড়িতে হাত বুলিয়ে জীবনটা কাটিয়ে দিলো সে শুধুই আকাশ পানে তাকিয়ে। যে নীল আকাশের গা ঘেঁষে উড়ে যাওয়া সাদা বকের ডানায় লেগে থাকে মেঘের হালকা টুকরো। একদম যেনো সিনেমার পর্দার হিরোর মতোই। দেখে বোঝার উপায় নেই একদম। পেটে খাবার না থাকলেও মুখের হাসিটা অমলিন হয়েই বেঁচে আছে আজও এতোদিন পরেও। আর সেই বিখ্যাত সাদা পাকা নাসিরউদ্দিন স্টাইলের দাড়ি, কালো চুল, আর সব সময় ধোপদুরস্ত ফিটফাট একজন মানুষ। রাত নটা বাজলেই যাকে শ্রীরামপুরে...

শপিং মলের উদ্বোধনে সিঙ্গুর আন্দোলনের দাপুটে মন্ত্রী

নালিকুল স্টেশন বাজারে একটি শপিং মলের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বেচারাম মান্না হাজির। একসময় যাঁর অন্দোলনের ঠেলায় পড়ে দৌড়ে একপ্রকার পালিয়ে চলে যেতে হয়েছিল সিঙ্গুর থেকে টাটা কোম্পানিকে। যে আন্দোলনের দগদগে ঘা আর সেই স্মৃতি ধীরে ধীরে আজ প্রায় মিলিয়ে যেতে বসেছে আমাদের কাছ থেকে। আজ সেই চাষার ঘরের মানুষ না হলেও সেই কৃষক আর শ্রমিকের ন্যূনতম অধিকার নিয়ে যে আন্দোলন শুরু করে সারাটা জীবন কাটিয়ে দিলেন সেই মানুষটাকেই কেমন যেন আজ শপিং মলের উদ্বোধনে দেখে বেশ ভালই লাগলো আমার।  একদম নালিকুল স্টেশনের কাছে ঝাঁ চকচকে শপিং মল। দোকানে সাজানো জিনিস পত্র। আর সেখানেই আমাদের মাননীয় মন্ত্রী বেচারাম মান্না। একদম কেমন একটু আমার অচেনা লাগলো যেন। সেই মুড়ি খেয়ে আলুর তরকারি বা শশা খেয়ে আন্দোলন শুরু করা জমি আন্দোলন এর অন্যতম পথিকৃৎ নেতা আজ এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। তাহলে টাটা কোম্পানির বিরুদ্ধে যে জমি দখল নিয়ে আন্দোলন সেই আন্দোলন এর মধ্যে ছিল জোর করে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা। যদিও সেখানেও সেই সময়ের শাসকদলের কর্মসংস্থানের যুক্তি।তবে এই নতুন শপিং মলের উদ্বোধনে তো আর ...

ভীড়ের মাঝে একা

জীবন জুড়ে শুধুই ভীড় আর ভীড়। নানা ধরনের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় মানুষের গন্ধে, বর্ণে , স্বাদের ভীড়ে আমি একদম একা হয়ে যেতে চাই। যে ভীড় উপচে পড়া রাস্তায় শুধুই হেমন্তের ভোরে শিশিরের ফিসফিস শব্দ, পাখির কিচির মিচির আওয়াজ,ধানসিড়ি ওই নদীটির তীর ধরে ঘুঘুর আকুল মন কেমন করা ডাক, উদাসী শালিকের ঝাঁক বেঁধে উড়ে যাওয়া ওই হেমন্তের হলুদ ধানের মাঠ এর পাশ দিয়ে, হলুদ বসন্ত বৌরীর সেই আমলকীর গাছের পাতায়,আড়ালে আবডালে বসে কেমন যেন আমায় দেখে লজ্জা পাওয়া, আর তারপর চোখ নামিয়ে হঠাৎ করেই তার উড়ে চলে যাওয়া। আর মেঘের কোল ঘেঁষে সেই সাদা বকের, বুনো হাঁসের, আর সেই পানকৌড়ির জলে ভেজা ডানা মেলে উড়ে যাওয়া আকাশ জুড়ে। সত্যিই ওরাও যে ভিড়ের মাঝেই বড়ো একা। একা একাই ওদের যে এই বেঁচে থাকা। কেমন নিপাট হৈ চৈ হুল্লোড়হীন একটা জীবন নিয়ে বেশ মজা করে, আনন্দ করে। আর সেই ভোরের আলোয় আলোকিত হয়ে রাস্তার একপাশে গুটি শুটি মেরে শুয়ে থাকা ওই সাদা কালো ভুলো নামের কুকুরের। যে অন্তত এই সব মানুষদের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় একটু যেনো আলাদা , একটু যেনো অন্য রকমের। একটু একা একাই যেনো ওর এই আলগোছে জীবন কাটিয়...

গৌড় প্রাঙ্গণে আনন্দবাজার

গৌরপ্রাঙ্গনে শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যের আনন্দের মেলা আনন্দবাজার। মহালয়ার ভোরবেলায় ঢাকের বাদ্যি আর সানাইয়ের মন কেমন করা সুরে মেতে উঠলো শান্তিনিকেতনের গৌড়প্রাঙ্গণ। প্রতি বছরের মতো এই বছরও যে হবে আনন্দমেলা আনন্দবাজার। হ্যাঁ সত্যিই যেনো আনন্দের এই হাটে বেচাকেনার পসরা নিয়ে একদিনের জন্য বসে পড়া মন প্রাণ খুলে হৈ হুল্লোড় করে। এই মেলা শুরু হয় 1915 সালের 15 এপ্রিল নববর্ষের দিনে। কিন্তু আগে এই মেলাকে একসময় বলা হতো বৌঠাকুরাণীর হাট। সেই সময় আশ্রমের মহিলারা নিজেদের হাতের তৈরি জিনিস নিয়ে মেলায় বসতেন। মেলার আয়োজন করতেন তারা। আনন্দ করে বেচাকেনা হতো। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময় একবার গরমের ছুটির আগে এমন মেলা নাকি হয়েছিল। যার নাম ছিল আনন্দবাজার। পরে এই মেলার নামে হয়ে যায় আনন্দমেলা। সত্যিই আনন্দের এই মিলন মেলা।  প্রথমদিকে পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের ছেলেমেয়েদের নিয়ে এই মেলা শুরু হয়। পরে ধীরে ধীরে বিশ্বভারতীর সব বিভাগের পড়ুয়ারা এই মেলায় যোগদান করে। এই মেলার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো ছাত্রছাত্রীদের বেচা কেনার লাভের টাকার কিছু অংশ জমা পরে বিশ্বভারতীর সেবা বিভাগে। সেখান থেকে এ...