সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আমাদের গান পাগল ভবা

নটসম্রাট নকীবকে নিয়ে লেখার পরে যে নাম ওকে শুভ্রনীল দিয়েছিল একসময়। আমার সাদা জীবনের কালো কথায় আজ আর একজন দিলখোলা, প্রাণ খোলা হাসি হেসে আর রাস্তায় মোটরবাইক নিয়ে আর গান গেয়ে ঘুরে বেড়ানো এক সাংবাদিক এর নানা কথা। যে হয়তো জীবনের শুরুতেই সাংবাদিকতা এই পেশায় সে ছিল না কোনো দিনই। অন্য কোনো পেশা থেকে সে হঠাৎ করেই একজনের হাত ধরে সে এই সাংবাদিকতা পেশায় চলে আসে। সে যাই হোক আজ সেই গান গেয়ে সবাইকে মাতিয়ে দেওয়া এক সাংবাদিকের কথা আমার আঁকিবুঁকি ব্লগে।

 হ্যাঁ, ছবি দেখে আর নাম বলার দরকার কি। যার গাড়ির সামনে বা হেলমেটে জ্বলজ্বল করছে নামতো নিশ্চয়ই শুনেছো ভবানন্দ। একটা সিংহের ছবি সেই হেলমেটের গায়ে লাগানো। হ্যাঁ, সেই রায়গঞ্জের চব্বিশ ঘন্টা চ্যানেলের বিখ্যাত দাপুটে সাংবাদিক ভবানন্দ সিংহ। হাঁক ডাক ছেড়ে যে খবর এর সন্ধানে দিনে, রাতে,মাঝরাতে, দুপুরে একশো কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে একদম ডরায় না কিছুতেই। অনায়াসে যে রাত দুপুরে মোটর বাইক স্টার্ট দিয়ে বেরিয়ে পড়ে খবরের সন্ধানে যখন তখন। আমি তো যে কদিন কাজ করেছি এই চব্বিশ ঘন্টা চ্যানেলে সেটাই দেখেছি ওকে। 

আর দিনের শেষে উদাত্ত কণ্ঠে গান গেয়ে যায় ও। কিশোর কন্ঠ হোক বা অন্য কোনো কন্ঠে ভবার জমাটি গান মন ভালো করে দেবেই আপনার। সুর তাল মিলিয়ে এই যে গলা ছেড়ে ওর পুরোনো দিনের গান সেটা তো প্রাণ থেকেই গায় ও। ওর জীবনের হাজারও দুঃখ অভিমান কষ্টকে আর যন্ত্রণাকে বুকে লুকিয়ে মাইক্রোফোন হাতে ভবানন্দের গান। সত্যিই এর জুড়ি মেলা ভার। কোনো সময় নিজে গান গাইছে, আবার কোনো সময় ঘরের লোককে ওর বউকে পাশে বসিয়ে ডুয়েট গান গাইছে। কোনো সময় যৌথ পরিবারের অন্য সবাইকে নিয়ে একসাথে গান করছে। গান ওর দ্বিতীয় প্রেম। খবর হলো প্রথম প্রেম। 

 যার লাইভ শুনে আমার মনে হয় একজন মানুষের কি ভরপুর প্রাণশক্তি আর জীবনীশক্তি ও পায় কোথায় কে জানে। ওর এই গান আর মন ভালো করা হাসি দাদা ভবানন্দ হাজির কি করতে হবে বলো। এই কথা শুনে মনে হয় সত্যিই কত দূরের একজন সহকর্মী হয়েও কি আপন করে নেওয়া কত সহজেই। জানিনা আমি আমিও যে এইভাবে নিজের দুঃখ কষ্ট সহ্য করে আর মুখে হাসি ফুটিয়ে ঘুরে বেড়াতে পারিনা কিছুতেই। যেটা ওর কাছে দেখে শেখার আছে বোধহয়। সে কর্ম জীবনে হোক ,ঘরের জীবনে হোক, সব জায়গায় ওর কাছ থেকে শিক্ষণীয়।

ওর ফেসবুকের ছবি ঘেঁটে দেখলাম সেই ফাঁকা রাস্তায় মাথায় কাপড় বেঁধে রাস্তায় হাসি মুখে বসে পড়া ভবা, সেই সবজি বাজারে গিয়ে সবজি ওলাকে পাশে নিয়ে হাসি মুখে ছবি করা ভবা, সেই ওদের এলাকার বিখ্যাত বেগুনকে নিয়ে হাসি মুখে ছবি করা ভবা, আবার পূজোর সময় সেই কেমন হাসি মুখে পাঞ্জাবি পড়ে লাইভ করা ভবা, ভোটের সময় টিভির পর্দায় ওকে দেখতে পাওয়া যায় যখন তখন। কোনো বিরক্তি নেই, রাগ নেই। বলা নেই দাদা আজ আর পারবো না আমি। খুব বেশি আলাপ না হলেও এটুকু আমি ওকে দেখে চিনেছি যে বিপদে পড়লে ভবানন্দ ঝাঁপিয়ে পড়তে দ্বিধা করবে না একদম। 

হ্যাঁ, যখন ওর এলাকার একটি চ্যানেলে লোক নেবে বলে জানতে পারলাম। আমি সেই সময় ২৪ ঘন্টা চ্যানেল ছেড়ে দিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি এদিক ওদিক। ওর এলাকার এক বিধায়ককে ও বলে দিয়েছিল। আমায় যথেষ্ট সাহায্য করেছিল সেই সময়। যদিও পরে সেই চ্যানেলে অন্য কেউ কাজে যোগ দেয়। কিন্তু ও সেই সময় অনেক সাহায্য করেছিল আমায়। যাতে আমার কাজটা হয়। যাক এই রাতে হঠাৎ ওর হাসি মুখের কথা মনে পড়ে গেলো। অভিনয় জগতে ঘুরে বেড়ানো সেই আমাদের নকীব গাজী। আবার কাজের মাঝে গান করা গানে ডুবে যাওয়া সেই ভবানন্দ। সত্যিই এরা মিডিয়ায় আমার কাছে অন্য রূপে বিরাজ করবে।

ওর কথায় বলি রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে ভবানন্দ তোমরা সবাই সাবধান। আসলে বড়ো রিপোর্টার, বড়ো চেহারার মাতব্বর সাংবাদিক, বড়ো পদের সাংবাদিক তো আছেই এই মিডিয়াতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে চারিদিকেই আমাদের আশেপাশে। তারা সব চাবুক হাতে ঘুরে বেড়াচ্ছে এদিক সেদিক। মুখে হাসি ফুটিয়ে কিন্তু আসলে তারা জানে কি করে চাবুক মেরে শিক্ষা দিতে হয় অন্যদের। কিন্তু নকীব, ভবানন্দ এরা বোধহয় এসবের ঊর্ধ্বে। কেউ গান গেয়ে, কেউ অভিনয় করে এই সাংবাদিকতার জগতে হাসি মুখে ঘুরে বেড়াচ্ছে তারা সব নিজেদের জগতে।

 এমন কত যে স্মৃতি জড়িয়ে আছে ভীড় করে এই আমার সাংবাদিক জীবনে। যে স্মৃতি ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে এদিক ওদিক তার ঠিক নেই। আর তাই রাতের বেলায় লিখে ফেললাম আমি আমার ব্লগে গায়ক ভবাননন্দের কথা। যার সাথে বহুদিন কথা হয়নি। যে সেই কলকাতা এলেই ব্যাগে করে তার এলাকার বিখ্যাত বেগুন নিয়ে আসতো বলতো দাদা খেয়ে দেখবেন আপনি। যার স্বাদ ছিল অতুলনীয়। ওর এলাকার বিখ্যাত চাল নিয়ে আসতো। 

সত্যিই অসাধারণ সেই সব নানা স্মৃতি উপচে পড়ে আজ কাল এই বুড়ো বয়সে এসে। শীতের রাতে নিশ্চয়ই ভবানন্দ ওর বাড়ির সবাইকে পাশে বসিয়ে গান শুনিয়ে যায় আপনমনে। আর ওর বাড়ির মানুষজন এই গান ভালোবাসা গান পাগল মানুষকে নিয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়ে মশগুল হয়ে বেঁচে থাকে। ওরা সবাই বোধহয় এই যৌথ পরিবারের সদস্যরা জানে জীবনে এই ভাবে বেঁচে থাকার মজা কতটা। যা আজ সত্যিই বোধহয় হারিয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে আমাদের এই সংসার থেকে।

আমাদের গান পাগল ভবা - অভিজিৎ বসু।
পয়লা ডিসেম্বর, দু হাজার চব্বিশ।
ছবি সৌজন্যে ফেসবুক।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অ্যাঙ্কর মিমির কথা

'আমরা যদি এই আকালেও স্বপ্ন দেখি কার তাতে কী?' বাহ দারুন সুন্দর এই কথা। স্বপ্ন দেখার কি কোনো সময় হয় নাকি। পঞ্জিকার পাতা উল্টে তিথি নক্ষত্র দেখে কি স্বপ্ন দেখা যায়। যে স্বপ্ন বাঁচার খোরাক জোগায়। যা দেখে এই দৌড় ঝাঁপ করা জীবনে কেমন একটা স্বস্তি মেলে সেই স্বপ্ন সফল হোক বা না হোক। যে কোনোও বয়সে এই স্বপ্ন দেখা যায়। ফেসবুকের পাতায় সেই কথা লেখা দেখে মনে মনে কিছুটা সাহস সঞ্চয় করেই এই রাত দুপুরে ভয়ে কম্পমান হয়েই ওকে নিয়ে লেখার চেষ্টা করা। সেই পোদ্দার কোর্টের অফিসে সেই দুর থেকেই অচেনা জগতের সেই খবরের বিখ্যাত সব নানা ধরনের খবর পাঠিকাদের ভীড়ে তাঁকে দুর থেকে দেখা। একদম অন্য এক গ্রহের বাসিন্দা যেনো। সেই কালামের দোকানে হয়তো কোনোও সময় চা খেতে গিয়ে দেখতে পাওয়া। সেই লিফটের কুঠুরিতে একসাথে ওঠা বা নামা কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখেই। কিন্তু সেই অন্য খবর পড়া অ্যাঙ্কর দের সাথে সহজ সরল ভাবে মিশে যাওয়ার সাহস হয়নি আমার কোনোও দিন তাঁর সাথে। আজ আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায় আমার আঁকিবুঁকি ব্লগের পাতায় সেই ২৪ ঘণ্টার পোদ্দার কোর্টের অফিসের বিখ্যাত অ্যাঙ্কর মিমির কথা। ...

এলোমেলো , এলেবেলে বিন্দাস জীবন ও জন্মদিন

দেখতে দেখতে বছরের পর বছর গড়িয়ে যায়। আসলে এই অচলাবস্থা আর অকর্মণ্য দিনযাপনের একটা জীবন কাটিয়ে দিতে দিতে বেশ আমি কেমন যেন এডজাস্ট করে নিয়েছি নিজের সাথে নিজেরই এক অদ্ভুত সহাবস্থান। আমার জীবনের সাথে ক্রমেই দ্রুত কমতে থাকে যেনো মৃত্যুর দূরত্ব। দীর্ঘ দিনের জীবনের ঘন্টা ধ্বনিতে কেমন অচেনা সুরের সুর মূর্ছনা বেজে ওঠে ঠিক যেনো ওই গির্জার ঘরে জিঙ্গেল বেল, জিঙ্গেল বেল এর সুরের মতই আচমকা রাত বারোটা বাজলেই এই একত্রিশ মে।  যার তাল, লয় আর ছন্দে আন্দোলিত হয় এই জীবন আর জীবনের নানা জলছবি। যে ছবির কোলাজে ধরা পড়ে হাসি কান্না, সুখ আর দুঃখের নানা অনুভব। যে অনুভূতির জারক রসে আমি জারিত হই প্রতি মুহূর্তে। আর তাই তো বোধহয় সেই ছোটবেলার দিন এর কথা মনে পড়ে গেলেই সেই ঝাপসা হয়ে যাওয়া ধূসর হয়ে যাওয়া সেই ছবির সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে ইচ্ছা হয় আমার বড়ো এই আজকের দিনে।  সেই পুরোনো দিনের ভালোবাসার স্পর্শ আর স্মৃতি রোমন্থন করা একটি ছবি। মায়ের নিরাপদ কোলে ঠিক নয় চুপটি করে পাশে বসে আছি আমি একদম ফিট ফাট হয়ে আপন মনে ভদ্র শান্ত ছেলের মতোই যা আমি মোটেও নয়। আজকের সেই এ...

যা দেখি…প্রতিদিন মনে পড়ে কত… স্মৃতির পথ ধরে হাঁটি… লিখি…

ইটিভির অ্যাঙ্কর অঙ্কুর

ভাবা যায় এই ভুবন ভোলানো হাসিমুখের বিখ্যাত অ্যাঙ্করও নকল হতে পারে নাকি কোনোভাবে। হতেই পারে না একদম এটা। কোনোভাবেই এটা মেনে নেওয়া যায় না আর বিশ্বাস করাও যায় না। ওর এই পোস্ট দেখে সেটাই মনে হলো আমার সবার প্রথমেই। আসলে এই জীবনের পথে হাঁটতে হাঁটতে আসল আর নকলের এই গা ঘেঁষাঘেঁষির ভীড়ে পার্থক্য বোঝাই যে দায়। কে আসল বন্ধু আর কে নকল বন্ধু সেটাই বোঝা মুশকিল। সেটাকে নির্ধারণ করা যে বড়ই দুষ্কর কাজ। সেটাই যে আজকাল আর ঠিক করে ঠাওর করতে পারি না আমি এই বুড়ো বয়সে এসে।  আজ সাদা জীবনের কালো কথায় আমার এই আঁকিবুঁকি ব্লগে তাই সেই যার কোলে চেপে বাসে করে জীবনে প্রথম বার দুরু দুরু বুকে রামোজি ফিল্ম সিটিতে গিয়েছিলাম আমি বেশ ভয়ে আর আতঙ্কে যদি চেয়ারম্যান এর সামনে যেতে হয় আর ইংরাজিতে কথা বলতে হয় এই ভয়ে। সেই ভীড় বাসে বসতে জায়গা না পেয়ে সেই তাঁর কথা। সেই যে সারাদিন অফিস করে হায়দরাবাদ এর বাংলা ডেস্ক থেকে ধ্রুব রাতে ওর বাড়িতে ভাত খাবার জন্য নেমতন্ন করলো আমায় গরম ভাত, ডাল আর আলুভাজা রান্না করলো রূপা ওর শরীর খারাপ নিয়েও সেদিন কত কষ্ট করে। সেই খেতে দেবার সময় ওদের ঘরে খাবা...

বিনোদন রিপোর্টার দেবপ্রিয়

দেবপ্রিয় দত্ত মজুমদার। ওর সাথে কোথাও একসাথে কাজ করা হয়নি আমার। ওর খবরের ফিল্ড একদম আলাদা এন্টারটেনমেন্ট। আর আমার শুধুই সাধারণ খবর। কখনও জেলার খবর,আর কলকাতার খবর। রাজনীতির খবর নিয়েই ঘুরে বেড়ানো। তবু কেনো জানিনা ওর শান্তিনিকেতনে আসার খবর শুনেই ওকে সাহস করে আমার নম্বর দিলাম। এমনি কোনোও কারণ ছাড়াই যদি যোগাযোগ হয়। যদি দেখা হয়। কলকাতার গন্ধ আছে। মিডিয়ার একটা বলয় গায়ে জড়িয়ে আছে। আর কি শুধুই যদি দেখা হয়ে যায় এই আশায়।  চমক অপেক্ষা করেছিল আমার জন্য। পরদিন ফোনে যোগাযোগ করলো ও নিজেই। কথা হলো দু চারটে আমাদের। কোথায় থাকো তুমি জিজ্ঞাসা করলো। আর সত্যিই আমি টোটো চালকের কাজ করি কি না যেটা নিয়ে ওর নিজেরও একটা সন্দেহ ছিল মনে মনে সেটা পরিষ্কার করে দিলাম আমি ওকে। কিন্তু যেনো কতদিনের চেনা একজন মানুষ। কত আপন ছন্দে কথা বলা ওর। যেটা আমায় আকর্ষিত করলো বেশ। ওর অনুষ্ঠান যেটা হচ্ছে শান্তিনিকেতনে সেখানে আমার মতো একজন বাতিল মানূষকে আসতে বললো ও নিমন্ত্রণ জানালো সপরিবারে।  আমি একটু আবেগ প্রবণ মানুষ। আমি চলে গেলাম সেই অনুষ্ঠানে ওর আমন্ত্রণে। যা সচরাচর আমি কো...