সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

"আন্দোলন' বন্ধে ফের শুরু আন্দোলন

বছরের শেষে এটা তো খারাপ খবর একটা। সেই বিখ্যাত সিঙ্গুর অন্দোলনকে স্মরণ করে চালু হওয়া একটি ট্রেন সেই অন্দোলন লোকাল এর বন্ধ হয়ে যাওয়ার খবর। আর সেটাকে নিয়েই সাত সকালে হৈ চৈ হুল্লোড় পড়ে গেছে আজ সিঙ্গুর স্টেশনে। রাজ্যের মন্ত্রী তথা সিঙ্গুরের বিধায়ক বেচারাম মান্না ও তার সহধর্মিণী তথা হরিপাল বিধানসভার বিধায়ক ও জেলার মহিলা তৃণমূলের দাপুটে নেত্রী করবী মান্না সাত সকালেই নেমে পড়েছেন প্রতিবাদে।


 অন্দোলন লোকাল তুলে দেওয়ার প্রতিবাদে ফের আন্দোলন শুরু করেছেন তাঁরা দুজনেই। যে অন্দোলন করেই তাঁদের রাজনীতির জমিকে শক্ত করে ফেলা একদিন। যে আন্দোলন করেই একসময়ে বামেদের দাপুটে শাসনকালের রাজ্যে কোণঠাসা তৃণমূলকে একটু অক্সিজেন এর যোগান দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া একদিন। সেই বিখ্যাত আন্দোলন লোকাল বছরের পয়লা তারিখ থেকেই বন্ধ হয়ে যাবে। 

সিঙ্গুর আর নন্দীগ্রাম। সিঙ্গুর মানেই তো একটি আন্দোলন। সিঙ্গুর মানেই আন্দোলনের জমিতে নারকেল ফাটিয়ে আন্দোলনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা। সিঙ্গুর মানেই তো জোর করে জমি অধিগ্রহণ এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো। সিঙ্গুর মানেই তো সেই মাটি কামড়ে পড়ে থেকে নিজের বাপ ঠাকুর্দার একচিলতে জমিকে বুক দিয়ে আগলে রক্ষা করা। সিঙ্গুর মানেই তো সেই পুলিশের লাঠির সামনে বুক পেতে দাঁড়িয়ে সিপিএমের দাপুটে শাসন এর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে রুখে প্রতিবাদ করা। 

যে প্রতিবাদের আগুনে জ্বলে পুড়ে ছারখার হয়ে গেছিল একসময় গোটা রাজ্যে। যে প্রতিবাদের ভাষা আর তার ঢেউ লেগেছিল গোটা দেশ জুড়ে। যে প্রতিবাদের কথা বলতে জমিহারা চাষীদের পাশে দাঁড়াতে ছুটে এসেছিলেন মেধা পাটেকর স্বয়ং। আর সেই প্রতিবাদের আগুনকে বুকে ধরে রেলপথ দিয়ে ছুটে চলা সেই আন্দোলনের প্রতীক গোটা ট্রেনকেই বন্ধ করে দেওয়া হবে। না না এটা কিছুতেই হতে দেওয়া যাবে না। আর তাই এই বছর শেষের সকালে ফের রাস্তায় আন্দোলনে নেমে পড়েছেন মা মাটি মানুষের সরকারের সেই আন্দোলন এর এক সময়ের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদরের ও ভরসার বেচারাম মান্না। 

সত্যিই অসাধারণ এই গোটা আন্দোলন পর্ব। যে আন্দোলনে তাপসী, রাজকুমারদের মৃত্যু হয়। যে আন্দোলনে জয় হয় জমিহারা কৃষকদের। যে আন্দোলনে দেশের জোর করে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে নতুন করে লড়াই শুরু হয়। আর দেশের জমি অধিগ্রহণের আইনকে বদলের পরিনতি পায়। সেই আন্দোলনের প্রতীক আন্দোলন লোকালকে কি আর বন্ধ করে দিলে হয়। তাই ফের সিঙ্গুরের থিতিয়ে পড়া জমি আন্দোলনকে আবার চাগিয়ে তুললেন বেচারাম মান্না। যিনি আন্দোলন করতে বড়ই ভালোবাসেন। আন্দোলন যে তাঁর বড়োই প্রিয়। সে জমি আন্দোলন হোক কিম্বা ট্রেন বন্ধের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে আন্দোলন হোক। আন্দোলনেই তাঁর রাজনৈতিক জীবনের ওঠা আর নামা। ঠিক ওই আন্দোলন লোকালের মতই রেলপথ ধরে ছুটে চলা। 

'আন্দোলন' বন্ধে শুরু ফের আন্দোলন - অভিজিৎ বসু।
একত্রিশ ডিসেম্বর, দু হাজার চব্বিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক ও নিজের সংগ্রহ।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অ্যাঙ্কর মিমির কথা

'আমরা যদি এই আকালেও স্বপ্ন দেখি কার তাতে কী?' বাহ দারুন সুন্দর এই কথা। স্বপ্ন দেখার কি কোনো সময় হয় নাকি। পঞ্জিকার পাতা উল্টে তিথি নক্ষত্র দেখে কি স্বপ্ন দেখা যায়। যে স্বপ্ন বাঁচার খোরাক জোগায়। যা দেখে এই দৌড় ঝাঁপ করা জীবনে কেমন একটা স্বস্তি মেলে সেই স্বপ্ন সফল হোক বা না হোক। যে কোনোও বয়সে এই স্বপ্ন দেখা যায়। ফেসবুকের পাতায় সেই কথা লেখা দেখে মনে মনে কিছুটা সাহস সঞ্চয় করেই এই রাত দুপুরে ভয়ে কম্পমান হয়েই ওকে নিয়ে লেখার চেষ্টা করা। সেই পোদ্দার কোর্টের অফিসে সেই দুর থেকেই অচেনা জগতের সেই খবরের বিখ্যাত সব নানা ধরনের খবর পাঠিকাদের ভীড়ে তাঁকে দুর থেকে দেখা। একদম অন্য এক গ্রহের বাসিন্দা যেনো। সেই কালামের দোকানে হয়তো কোনোও সময় চা খেতে গিয়ে দেখতে পাওয়া। সেই লিফটের কুঠুরিতে একসাথে ওঠা বা নামা কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখেই। কিন্তু সেই অন্য খবর পড়া অ্যাঙ্কর দের সাথে সহজ সরল ভাবে মিশে যাওয়ার সাহস হয়নি আমার কোনোও দিন তাঁর সাথে। আজ আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায় আমার আঁকিবুঁকি ব্লগের পাতায় সেই ২৪ ঘণ্টার পোদ্দার কোর্টের অফিসের বিখ্যাত অ্যাঙ্কর মিমির কথা। ...

এলোমেলো , এলেবেলে বিন্দাস জীবন ও জন্মদিন

দেখতে দেখতে বছরের পর বছর গড়িয়ে যায়। আসলে এই অচলাবস্থা আর অকর্মণ্য দিনযাপনের একটা জীবন কাটিয়ে দিতে দিতে বেশ আমি কেমন যেন এডজাস্ট করে নিয়েছি নিজের সাথে নিজেরই এক অদ্ভুত সহাবস্থান। আমার জীবনের সাথে ক্রমেই দ্রুত কমতে থাকে যেনো মৃত্যুর দূরত্ব। দীর্ঘ দিনের জীবনের ঘন্টা ধ্বনিতে কেমন অচেনা সুরের সুর মূর্ছনা বেজে ওঠে ঠিক যেনো ওই গির্জার ঘরে জিঙ্গেল বেল, জিঙ্গেল বেল এর সুরের মতই আচমকা রাত বারোটা বাজলেই এই একত্রিশ মে।  যার তাল, লয় আর ছন্দে আন্দোলিত হয় এই জীবন আর জীবনের নানা জলছবি। যে ছবির কোলাজে ধরা পড়ে হাসি কান্না, সুখ আর দুঃখের নানা অনুভব। যে অনুভূতির জারক রসে আমি জারিত হই প্রতি মুহূর্তে। আর তাই তো বোধহয় সেই ছোটবেলার দিন এর কথা মনে পড়ে গেলেই সেই ঝাপসা হয়ে যাওয়া ধূসর হয়ে যাওয়া সেই ছবির সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে ইচ্ছা হয় আমার বড়ো এই আজকের দিনে।  সেই পুরোনো দিনের ভালোবাসার স্পর্শ আর স্মৃতি রোমন্থন করা একটি ছবি। মায়ের নিরাপদ কোলে ঠিক নয় চুপটি করে পাশে বসে আছি আমি একদম ফিট ফাট হয়ে আপন মনে ভদ্র শান্ত ছেলের মতোই যা আমি মোটেও নয়। আজকের সেই এ...

যা দেখি…প্রতিদিন মনে পড়ে কত… স্মৃতির পথ ধরে হাঁটি… লিখি…

ইটিভির অ্যাঙ্কর অঙ্কুর

ভাবা যায় এই ভুবন ভোলানো হাসিমুখের বিখ্যাত অ্যাঙ্করও নকল হতে পারে নাকি কোনোভাবে। হতেই পারে না একদম এটা। কোনোভাবেই এটা মেনে নেওয়া যায় না আর বিশ্বাস করাও যায় না। ওর এই পোস্ট দেখে সেটাই মনে হলো আমার সবার প্রথমেই। আসলে এই জীবনের পথে হাঁটতে হাঁটতে আসল আর নকলের এই গা ঘেঁষাঘেঁষির ভীড়ে পার্থক্য বোঝাই যে দায়। কে আসল বন্ধু আর কে নকল বন্ধু সেটাই বোঝা মুশকিল। সেটাকে নির্ধারণ করা যে বড়ই দুষ্কর কাজ। সেটাই যে আজকাল আর ঠিক করে ঠাওর করতে পারি না আমি এই বুড়ো বয়সে এসে।  আজ সাদা জীবনের কালো কথায় আমার এই আঁকিবুঁকি ব্লগে তাই সেই যার কোলে চেপে বাসে করে জীবনে প্রথম বার দুরু দুরু বুকে রামোজি ফিল্ম সিটিতে গিয়েছিলাম আমি বেশ ভয়ে আর আতঙ্কে যদি চেয়ারম্যান এর সামনে যেতে হয় আর ইংরাজিতে কথা বলতে হয় এই ভয়ে। সেই ভীড় বাসে বসতে জায়গা না পেয়ে সেই তাঁর কথা। সেই যে সারাদিন অফিস করে হায়দরাবাদ এর বাংলা ডেস্ক থেকে ধ্রুব রাতে ওর বাড়িতে ভাত খাবার জন্য নেমতন্ন করলো আমায় গরম ভাত, ডাল আর আলুভাজা রান্না করলো রূপা ওর শরীর খারাপ নিয়েও সেদিন কত কষ্ট করে। সেই খেতে দেবার সময় ওদের ঘরে খাবা...

বিনোদন রিপোর্টার দেবপ্রিয়

দেবপ্রিয় দত্ত মজুমদার। ওর সাথে কোথাও একসাথে কাজ করা হয়নি আমার। ওর খবরের ফিল্ড একদম আলাদা এন্টারটেনমেন্ট। আর আমার শুধুই সাধারণ খবর। কখনও জেলার খবর,আর কলকাতার খবর। রাজনীতির খবর নিয়েই ঘুরে বেড়ানো। তবু কেনো জানিনা ওর শান্তিনিকেতনে আসার খবর শুনেই ওকে সাহস করে আমার নম্বর দিলাম। এমনি কোনোও কারণ ছাড়াই যদি যোগাযোগ হয়। যদি দেখা হয়। কলকাতার গন্ধ আছে। মিডিয়ার একটা বলয় গায়ে জড়িয়ে আছে। আর কি শুধুই যদি দেখা হয়ে যায় এই আশায়।  চমক অপেক্ষা করেছিল আমার জন্য। পরদিন ফোনে যোগাযোগ করলো ও নিজেই। কথা হলো দু চারটে আমাদের। কোথায় থাকো তুমি জিজ্ঞাসা করলো। আর সত্যিই আমি টোটো চালকের কাজ করি কি না যেটা নিয়ে ওর নিজেরও একটা সন্দেহ ছিল মনে মনে সেটা পরিষ্কার করে দিলাম আমি ওকে। কিন্তু যেনো কতদিনের চেনা একজন মানুষ। কত আপন ছন্দে কথা বলা ওর। যেটা আমায় আকর্ষিত করলো বেশ। ওর অনুষ্ঠান যেটা হচ্ছে শান্তিনিকেতনে সেখানে আমার মতো একজন বাতিল মানূষকে আসতে বললো ও নিমন্ত্রণ জানালো সপরিবারে।  আমি একটু আবেগ প্রবণ মানুষ। আমি চলে গেলাম সেই অনুষ্ঠানে ওর আমন্ত্রণে। যা সচরাচর আমি কো...