সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ছোটবেলার হীরু


আজ শুধুই ছোটবেলার বন্ধু সেই হারিয়ে যাওয়া 
শ্রীরামপুরের এঁদোপুকুরের হীরুর গল্প। জীবনের রাস্তা থেকে হঠাৎ করেই হারিয়ে যাওয়া মানুষকে ফিরে পাবার গল্প। হারিয়ে যাওয়া জীবনকে ফিরে পাবার গল্প। যে জীবনের পরতে পরতে জড়িয়ে আছে কত মায়া, স্নেহ, ভালোবাসা, স্বপ্ন, আশা আর আকাঙ্ক্ষা আর সেই মায়াময় স্বপ্নের জগতের হাতছানি। 

সেই ছোটবেলার বন্ধুদের স্মৃতি, নানা ঘটনা আর নানা কাহিনী। সেই গল্পের খোঁজ পেলাম আমি ঘুরতে ঘুরতে হাঁটতে হাঁটতে আমার এলোমেলো এলেবেলে জীবনের রাস্তায়। যে জীবনের খানাখন্দ ভরা এবড়ো খেবড়ো রাস্তায় আজ বড্ড ভীড় আর বহু মানুষের আনাগোনা। যাদের মাঝে আমি বড়ই বেমানান আর বিসদৃশ। তবু তার মাঝেই হঠাৎ করেই ওকে আজ দেখলাম। সেই এক দেখাতেই আমার প্রশ্ন হীরু তো। একটু আমাকে ভালো করে একদৃষ্টিতে জরিপ করে দেখে ও উত্তর দিলো হ্যাঁ, আমি হীরু। 

ব্যাস একদম বসে পড়লাম ওর পাশে কাছ ঘেঁষে। খোলা আকাশের নিচে। সেই কবে কার ঝুড়ি নামা বটগাছের পাশে বসে পড়লাম আমিও অতীত ঘাঁটতে বটগাছের ঝুড়িতে টান দিয়ে। অন্ধকার অতীত, ফেলে আসা অতীত, হারিয়ে যাওয়া অতীতকে ঘেঁটে, খুঁড়ে বের করার চেষ্টা করছি আমি একটু গায়ের জোরেই। সেই কতদিন আগেই তো ওকে এই শ্রীরামপুরে কোর্টের চত্বরে সাদা জামা কালো প্যান্ট পড়ে ঘুরে বেড়াতে দেখেছি যে। সেই চুপচাপ এগিয়ে চলা, কথা কম বলা হীরু। তখন মাথায় চুল ছিল আজ অনেকটাই ফাঁকা হয়ে গেছে বয়সের ভারে। আরও যেনো চুপ করে গেছে নিজে নিজেই। সেই খেলার মাঠে ফুটবল নিয়ে গোলপোস্টের দিকে দৌড়ে বেড়ানো হীরু।

সেই ইঁট পাতা রাস্তা, সেই লাইট পোস্টের কম আলোর স্পর্শ মাখা সন্ধ্যা। সেই সন্ধ্যা হলেই দোতলা বাড়ীর দেওয়াল টপকে শাঁখের আওয়াজ। সেই রাজবাড়ীর মাঠ, লাহিড়ী পাড়ার মাঠ বা আশু গোঁসাই এর মাঠ থেকে বল খেলে মামার বাড়ী ফেরা। দিদুর অপেক্ষা করা কখন তার আদরের ভাই আসবে ঘরে। সেই এঁদোপুকুরের জলে পা ডুবিয়ে হাত পা ধোওয়া, কচুরি পানার গন্ধ ভরা টলটলে কালো জল, সেই জলের ওপর পা ডুবিয়ে ফুল ফোটা কচুরি পানার গা ধরে টান দেওয়া আর কেমন যেন নিজে নিজেই ওদের জুড়ে যাওয়া একে ওপরের সাথে। 

সেই সন্ধ্যায় পুকুর ধারে জামরুল গাছের পাতার ফাঁকে বসে থাকা পাখির ডানা ঝটপট করা। মিষ্টি জামরুল ফুলের সুবাসে ভরে যেত গোটা পুকুর ধার। কেমন একটা মায়াময় সন্ধ্যা যে আলোআঁধারি মাখা সন্ধ্যায় ঘরে ফিরতে ইচ্ছা হতো না আমার কিছুতেই আর। সেই সময় দুর থেকে নাম ধরে কে যেন ডেকে উঠত আমায় এখনও হলো না তোর ঘরে ফেরার সময়। আর সেই ডাক শুনে একছুটে ঘরে ফেরা ভয়ে ভয়ে। কয়লার উনুনে গরম গরম ফুলো রুটি হওয়া সেটা দেখেই পেটের ক্ষিধে মাথায় ওঠা। বল পিটিয়ে এসে পেটের টানে গোগ্রাসে রুটি খেয়ে নেওয়া।আর তারপর বই এ মুখ গুঁজে পড়ার চেষ্টা করা মাত্র।

 সত্যিই কত কথা যে মনে পড়ে গেলো আমার হীরুর পাশে বসে আজ কে জানে। বটের ঝুড়ি বেয়ে নেমে গেছে মাটির নিচে, অনেক নিচে। সেই আমাদের ভাড়া বাড়ীর একটু দূরে ওদের সুন্দর দোতলা বাড়ি। ওরা চার ভাই আর এক বোন। ভুলে গেছি নাম সব ওদের। সেই দরজা বন্ধ থাকতো সব সময় ওদের বাড়ির। বেশ বাবা মা আর দাদাদের কড়া নজরদারিতে আর ঘেরাটোপে ওদের ভাইদের আর ওর বোনের বড়ো হওয়া। ওর বোনের মুখটা মনেই পড়ে না আর আমার বেশ সুন্দর দেখতে ছিল ওর বোন। সেই পাশেই নেড়ু আর শীতল মামাদের বাড়ী। সেই ওদের দিদি মায়াদি শুনলাম মারা গেছেন। সারাজীবন দাদার সংসারেই মায়াদি কাটিয়ে দিলেন দিব্যিই কেমন হাসিমুখে। 

সেই মল্লিক বুক স্টোরস এর বাবলুদার বাড়ী। ভালো আঁকা শেখাতেন লোকের বাড়ী বাড়ী গিয়ে। সেই রাজা আর মুনমুনদের বাড়ী। সেই অরণ্যদেব এর বই আনতে যেতাম কার্তিক মামা আর সেই বিশ্বনাথ মামার বাড়ী। সেই নাটক করা সমীর মামা, বাবলু মামা, আরও কতজন যে ছিল এই পুরোনো ছোটবেলার পাড়ায়। সেই বিলু মামা আর বোনমাসী। বিলু মামা নেই আর আজ। সেই বন্দনা মাসি, বিলু মামাদের বাড়ীতে ছোটকালে আমাদের ভাড়া থাকা। সেই একচালার টালির চাল সেই ছোটো ঘরেই শুরু আমার জীবন। যে জীবনের কতো কিছুই যে নেই আজ আর। সেই বড়ো ভাই নেই। ছোটো ভাই আর তরুণ আছে। পুলিশে কাজ করে তরুণ আগে দেখা হতো শ্রীরামপুরে স্টেশনে কাজে যাবার সময়। এখন আর হয়না আমিও যে আর কাজে যাই না কতদিন। সেই মৃণাল চক্রবর্তী বাপিদের বাড়ী যাওয়া। 

সেই ভজাদের বাড়ী আজও রাস্তার পাশেই দাঁড়িয়ে আছে রং চটা বিবর্ণ হয়ে। সেই রক্ষা কালী পূজোর সময় রাতজাগা ওদের বাড়ির সামনের ঠাকুর তলায় সবাই মিলে। সেই ওদের বাড়ির পাশেই ফ্ল্যাট উঠে যাচ্ছে দেখলাম। আর সেই একটু দূরে বাবলা, পদু মামা আর টাকুম মামার বাড়ি। তার পাশেই সেই গোরা মামা আর ভুলুদের বাড়ী ছিল। আর সেই বাড়ির পেছনে সেই ঝুমাদের ঘর। সেই বাগা, তোতা আর ঝুমা। সেই ঝুমাই তো আমার মেয়েকে দেখলো ছোটকালে। সেই ঝুমাও আজ আর নেই। সেই ঝুমার গল্প লিখতে হবে একদিন। কত স্মৃতি যে বটের ঝুড়ি বেয়ে নেমে আসছে আমার কাছে। আমায় ঘিরে ধরেছে সবাই যেনো এই খোলা আকাশের নিচে একা পেয়ে।

 চুপ করে একমনে নিরীক্ষণ করছে আমায় হীরু। কি রে,কি করিস তুই। সেই যে ইটিভির সাংবাদিক সেই আমাদের বাপি। আমি বললাম না আর আমি কিছুই করিনা রে। ঘুরে বেড়াই এলোমেলো আর এলেবেলে হয়ে এদিক ওদিক। আমার জীবনের দৌড় শেষ হয়ে গেছে। তোর কি খবর, বললো চলে যাচ্ছে আমি অসুস্থ খুব। মাথায় রক্ত জমাট বেঁধে গেছিলো। হাই সুগার। পা অকেজো। নার্ভ এর রোগে ভুগছি আমি। বাড়িতে কে আছেন রে? সেই অতবড় বাড়িতে। বললো আর কেউ নেই সবাই যে যার মতো বাড়ী করে চলে গেছে। সব ঘরেই তালা পড়ে গেছে। বোন এর বিয়ে হয়েছে সব এদিক ওদিক থাকে দাদারা। মাঝে মাঝে দেখা হয় কোনোও অনুষ্ঠানে পুজোয় এই আর কি। আমি একাই থাকি ওই বাড়িতে।

আমিও ওকে একমনে নিরীক্ষণ করলাম। একজন চলে এলো কথা বলতে বলতে। মুখটা বেশ চেনা চেনা লাগলো আমার। সেই ইটিভির অফিস ছিল নন্দীমাঠের কাছে চন্দ্র মোহন রায় লেনে বাড়ি তাঁর। ব্যাংক কর্মী ছিলেন অবসর নিয়েছেন। তিনি বললেন চলুন চা খাই আমরা তিনজনে। বিস্কুট দিলেন খেতে আমায়, আমি সেটা খিদে পেটে চেপে রেখেও হাসিমুখে প্রত্যাখ্যান করলাম। বললাম না আমি সকালে কিছুই খাই না। আবার দোকান থেকে এসে বসে পড়লাম বট গাছ এর তলায়। ওদের দুজনের ছবি তুলে নিলাম। ওরা গল্প করে তারপর সবাই যে যার বাড়ী ফিরে যায় হীরু আর ওর বন্ধুরা গাছতলায় গল্প করে প্রতিদিন । ফিরে দুপুরের খাবার খায় সবাই। হীরু কোনোদিন রাস্তায় দোকানে খেয়ে নেয় আর কোনোদিন বাড়িতে রান্না করে। সত্যিই কি জীবন এর সন্ধান পেলাম আমি। 

 
সেই গবা মামার কথা, সেই পাড়ার বাবুন এর কথা, সেই তিলক, বাপি, মধু, স্বপন, বিশুর কথা গল্প হলো কত। ওদের কাছেই শুনলাম প্রতিদিন ওরা অবসর নেওয়া লোকজন এই কোর্টের মাঠের পেছনে বসে থাকে সুখ দুঃখের কথা বলে এই গাছের নিচে। যে গাছের নিচে পুলিশ ভ্যান করে কত আসামী আসতো দূর দূর থেকে। এই গাছতলায় আমরা সবাই অপেক্ষা করতাম ঘণ্টার পর ঘন্টা তাদের ছবি তুলব বলে। সেই বাপি, রানা, মিন্টে, সৌরভ, প্রকাশ পাল, বিধান, সুদীপ কোলে, সৌগত, তাপস লাহা কতজন যে ছিল। লাইন দিয়ে কোমরে দড়ি বেঁধে তাদের নিয়ে যাওয়া হতো। আর সাংবাদিক আর ক্যামেরাম্যানদের সেই সময় ছবি তোলার জোর তৎপরতা। 

গাছের নিচে দাঁড়িয়ে এসব মনে পড়ে গেলো আমার। সেই লোকজনের ভীড়, আওয়াজ কত লোকজন, পুলিশের লোকজন এর দৌড়ঝাঁপ। আজ কিছুই নেই সব হারিয়ে গেছে আমার জীবন থেকে। বটের ঝুড়ি আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরছে আমায়। আমি কেমন যেন স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে আছি একা একাই। ওকে চুপ করে গাছ তলায় বসে থাকতে দেখলাম। আমি হীরুকে ফেলে ধীরে ধীরে এগিয়ে চললাম নিজের ঘরের দিকে। একা একদম একা।

ছোটবেলার হীরু - অভিজিৎ বসু।
একত্রিশ জানুয়ারী দু হাজার পঁচিশ।
ছবি নিজের মোবাইল ক্যামেরায় তোলা।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অ্যাঙ্কর মিমির কথা

'আমরা যদি এই আকালেও স্বপ্ন দেখি কার তাতে কী?' বাহ দারুন সুন্দর এই কথা। স্বপ্ন দেখার কি কোনো সময় হয় নাকি। পঞ্জিকার পাতা উল্টে তিথি নক্ষত্র দেখে কি স্বপ্ন দেখা যায়। যে স্বপ্ন বাঁচার খোরাক জোগায়। যা দেখে এই দৌড় ঝাঁপ করা জীবনে কেমন একটা স্বস্তি মেলে সেই স্বপ্ন সফল হোক বা না হোক। যে কোনোও বয়সে এই স্বপ্ন দেখা যায়। ফেসবুকের পাতায় সেই কথা লেখা দেখে মনে মনে কিছুটা সাহস সঞ্চয় করেই এই রাত দুপুরে ভয়ে কম্পমান হয়েই ওকে নিয়ে লেখার চেষ্টা করা। সেই পোদ্দার কোর্টের অফিসে সেই দুর থেকেই অচেনা জগতের সেই খবরের বিখ্যাত সব নানা ধরনের খবর পাঠিকাদের ভীড়ে তাঁকে দুর থেকে দেখা। একদম অন্য এক গ্রহের বাসিন্দা যেনো। সেই কালামের দোকানে হয়তো কোনোও সময় চা খেতে গিয়ে দেখতে পাওয়া। সেই লিফটের কুঠুরিতে একসাথে ওঠা বা নামা কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখেই। কিন্তু সেই অন্য খবর পড়া অ্যাঙ্কর দের সাথে সহজ সরল ভাবে মিশে যাওয়ার সাহস হয়নি আমার কোনোও দিন তাঁর সাথে। আজ আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায় আমার আঁকিবুঁকি ব্লগের পাতায় সেই ২৪ ঘণ্টার পোদ্দার কোর্টের অফিসের বিখ্যাত অ্যাঙ্কর মিমির কথা। ...

এলোমেলো , এলেবেলে বিন্দাস জীবন ও জন্মদিন

দেখতে দেখতে বছরের পর বছর গড়িয়ে যায়। আসলে এই অচলাবস্থা আর অকর্মণ্য দিনযাপনের একটা জীবন কাটিয়ে দিতে দিতে বেশ আমি কেমন যেন এডজাস্ট করে নিয়েছি নিজের সাথে নিজেরই এক অদ্ভুত সহাবস্থান। আমার জীবনের সাথে ক্রমেই দ্রুত কমতে থাকে যেনো মৃত্যুর দূরত্ব। দীর্ঘ দিনের জীবনের ঘন্টা ধ্বনিতে কেমন অচেনা সুরের সুর মূর্ছনা বেজে ওঠে ঠিক যেনো ওই গির্জার ঘরে জিঙ্গেল বেল, জিঙ্গেল বেল এর সুরের মতই আচমকা রাত বারোটা বাজলেই এই একত্রিশ মে।  যার তাল, লয় আর ছন্দে আন্দোলিত হয় এই জীবন আর জীবনের নানা জলছবি। যে ছবির কোলাজে ধরা পড়ে হাসি কান্না, সুখ আর দুঃখের নানা অনুভব। যে অনুভূতির জারক রসে আমি জারিত হই প্রতি মুহূর্তে। আর তাই তো বোধহয় সেই ছোটবেলার দিন এর কথা মনে পড়ে গেলেই সেই ঝাপসা হয়ে যাওয়া ধূসর হয়ে যাওয়া সেই ছবির সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে ইচ্ছা হয় আমার বড়ো এই আজকের দিনে।  সেই পুরোনো দিনের ভালোবাসার স্পর্শ আর স্মৃতি রোমন্থন করা একটি ছবি। মায়ের নিরাপদ কোলে ঠিক নয় চুপটি করে পাশে বসে আছি আমি একদম ফিট ফাট হয়ে আপন মনে ভদ্র শান্ত ছেলের মতোই যা আমি মোটেও নয়। আজকের সেই এ...

যা দেখি…প্রতিদিন মনে পড়ে কত… স্মৃতির পথ ধরে হাঁটি… লিখি…

ইটিভির অ্যাঙ্কর অঙ্কুর

ভাবা যায় এই ভুবন ভোলানো হাসিমুখের বিখ্যাত অ্যাঙ্করও নকল হতে পারে নাকি কোনোভাবে। হতেই পারে না একদম এটা। কোনোভাবেই এটা মেনে নেওয়া যায় না আর বিশ্বাস করাও যায় না। ওর এই পোস্ট দেখে সেটাই মনে হলো আমার সবার প্রথমেই। আসলে এই জীবনের পথে হাঁটতে হাঁটতে আসল আর নকলের এই গা ঘেঁষাঘেঁষির ভীড়ে পার্থক্য বোঝাই যে দায়। কে আসল বন্ধু আর কে নকল বন্ধু সেটাই বোঝা মুশকিল। সেটাকে নির্ধারণ করা যে বড়ই দুষ্কর কাজ। সেটাই যে আজকাল আর ঠিক করে ঠাওর করতে পারি না আমি এই বুড়ো বয়সে এসে।  আজ সাদা জীবনের কালো কথায় আমার এই আঁকিবুঁকি ব্লগে তাই সেই যার কোলে চেপে বাসে করে জীবনে প্রথম বার দুরু দুরু বুকে রামোজি ফিল্ম সিটিতে গিয়েছিলাম আমি বেশ ভয়ে আর আতঙ্কে যদি চেয়ারম্যান এর সামনে যেতে হয় আর ইংরাজিতে কথা বলতে হয় এই ভয়ে। সেই ভীড় বাসে বসতে জায়গা না পেয়ে সেই তাঁর কথা। সেই যে সারাদিন অফিস করে হায়দরাবাদ এর বাংলা ডেস্ক থেকে ধ্রুব রাতে ওর বাড়িতে ভাত খাবার জন্য নেমতন্ন করলো আমায় গরম ভাত, ডাল আর আলুভাজা রান্না করলো রূপা ওর শরীর খারাপ নিয়েও সেদিন কত কষ্ট করে। সেই খেতে দেবার সময় ওদের ঘরে খাবা...

বিনোদন রিপোর্টার দেবপ্রিয়

দেবপ্রিয় দত্ত মজুমদার। ওর সাথে কোথাও একসাথে কাজ করা হয়নি আমার। ওর খবরের ফিল্ড একদম আলাদা এন্টারটেনমেন্ট। আর আমার শুধুই সাধারণ খবর। কখনও জেলার খবর,আর কলকাতার খবর। রাজনীতির খবর নিয়েই ঘুরে বেড়ানো। তবু কেনো জানিনা ওর শান্তিনিকেতনে আসার খবর শুনেই ওকে সাহস করে আমার নম্বর দিলাম। এমনি কোনোও কারণ ছাড়াই যদি যোগাযোগ হয়। যদি দেখা হয়। কলকাতার গন্ধ আছে। মিডিয়ার একটা বলয় গায়ে জড়িয়ে আছে। আর কি শুধুই যদি দেখা হয়ে যায় এই আশায়।  চমক অপেক্ষা করেছিল আমার জন্য। পরদিন ফোনে যোগাযোগ করলো ও নিজেই। কথা হলো দু চারটে আমাদের। কোথায় থাকো তুমি জিজ্ঞাসা করলো। আর সত্যিই আমি টোটো চালকের কাজ করি কি না যেটা নিয়ে ওর নিজেরও একটা সন্দেহ ছিল মনে মনে সেটা পরিষ্কার করে দিলাম আমি ওকে। কিন্তু যেনো কতদিনের চেনা একজন মানুষ। কত আপন ছন্দে কথা বলা ওর। যেটা আমায় আকর্ষিত করলো বেশ। ওর অনুষ্ঠান যেটা হচ্ছে শান্তিনিকেতনে সেখানে আমার মতো একজন বাতিল মানূষকে আসতে বললো ও নিমন্ত্রণ জানালো সপরিবারে।  আমি একটু আবেগ প্রবণ মানুষ। আমি চলে গেলাম সেই অনুষ্ঠানে ওর আমন্ত্রণে। যা সচরাচর আমি কো...