সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

এপ্রিল, ২০২৫ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

হ্যাপি বার্থডে মেজদি

দত্ত থেকে খোন্দকার। সেই শ্রীরামপুরের চাতরার শীতলা মন্দিরের বাড়ী থেকে শেওড়াফুলির সেই গঙ্গার ধারের ভাড়া বাড়ী। সেই বৈদ্যবাটি পুরসভার পুরপ্রধান দূর্গাচরণ দত্তর মেয়ে হয়ে আকবর আলী খোন্দকার এর হাত ধরে সেই বাম আমলে ঘর ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া। হ্যাঁ, আমাদের সবার সেই মেজদি। শরৎ চন্দ্রের গল্পের মেজদির আজ জন্মদিন। সেই চন্ডীতলার বিধায়ক এর আজ জন্মদিন। ফেসবুকের দেওয়ালে শুভেচ্ছার বার্তার ঢল দেখে মনে হলো সত্যিই তো আকবর দাকে নিয়ে এত কিছু লিখি আমি কই একবার তো মেজদিকে নিয়ে লিখলে হয়। আর তাই আজ তাঁর জন্মদিনের দিন শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে মনে হলো দু চারটে কথা লিখে ফেলি আরকি টোটো চালকের কলমে। আমার সাদা জীবনের কালো কথায় আমার আঁকিবুঁকি ব্লগের পাতায়। আসলে কিছু কিছু মানুষ কেমন যেন সহজ সরল ব্যবহার করেই হেসেই জীবন কাটিয়ে দেয়। জীবনের মারপ্যাঁচ রাজনীতির মাঠে খেলতে নেমেও কেমন সহজ থাকে তারা। আর এই সহজ সরল ভালো ব্যবহার নিয়েই চলে তাদের জীবন। যে জীবনে সুখ জড়িয়ে আছে একসময় দুঃখ কষ্ট সহ্য করে চলতে হয়েছে তাঁকে। ছেলে মেয়েকে মানুষ করতে হয়েছে তাঁকে। আকবর দা হঠাৎ করেই চলে যাবার পর একা হ...

সিউড়ির কীর্তনীয়া সঞ্জয়

সময় গেলে সাধন হবে না, জানোনা মোর খালে বিলে, থাকে না মিম জল শুকালে  সময় গেলে সাধন হবে না।  ওগো সময় গেলে সাধন হবে না। বেশ সুন্দর গানের দু কলি গুনগুন করে গেয়ে তিনি আমায় শুনিয়ে দিলেন। নাম সঞ্জয় ঘোষ, সদগোপ ঘোষ, বাড়ী বীরভূম জেলার সিউড়ির তিলপাড়া এলাকায়। বীরভূম জেলার সদর শহরে সিউড়ির এসপি মোড়ের কাছে পিএইচ ই অফিস জন স্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের অফিস এর সামনেই রাস্তার ওপর এই চায়ের দোকানে বসে আছেন তিনি হাসিমুখে।গলায় কণ্ঠীর মালা। হাসি মুখে চা তৈরী করছেন সেই ভোরবেলা থেকেই রাত পর্যন্ত। সারাদিন অজস্র লোকের ভীড়। তাঁর দোকানে চা খেতে আসছেন এই গরমেও দিনে, রাতে, সন্ধ্যায়। এই করেই তাঁর দিন চলে যায়। বোলপুর থেকে আমিও ঘুরতে ঘুরতে চলে গেছি এই সদর শহরে সিউড়িতে। রাস্তার পাশে একচিলতে ছোট্টো দোকান। নিজে ভালো কীর্তন করেন তিনি এই চায়ের দোকান সামলে। কীর্তনের ডাক পড়লেই চায়ের দোকান বন্ধ করে তিনি বেরিয়ে পড়েন সাধন করতে। ছেলে ভালো ব্যঞ্জ বাজায়। দোকানে তাঁর মাথার ওপর ঝুলছে গুটখা নানা রং বেরঙর এর প্যাকেট। আর মনে মনে তিনি এই ভাবের গান গেয়ে উঠেছেন। আমি বললাম কী যে বলেন দাদা আপনি। সময়...

রাত পোহালেই মাহেন্দ্রক্ষণ, কাল রাজ্যে শুধুই জয় জগন্নাথ, অভিজিৎ বসু

রাত পোহালেই মাহেন্দ্রক্ষণ, কাল রাজ্যে শুধুই জয় জগন্নাথ অভিজিৎ বসু  চারিদিকে শুধু দীঘা মন্দিরের ছবি আর ছবি। চারিদিক জুড়েই জয় জগন্নাথ ধ্বনিতে মুখরিত আকাশ বাতাস। গোধূলি বেলায় জগন্নাথ মন্দিরকে সাক্ষী রেখে সূর্যের অস্তাচলে চলে যাওয়া। সমুদ্রের নোনা জলে তখন মিঠে রোদের ছায়া মাখা গোধূলি গড়াগড়ি খাচ্ছে। দুরে মন্দিরের ভিতর অপেক্ষার প্রহর গুনছেন প্রভু জগন্নাথ চুপটি করে মিটমিট করে মুচকি হাসছেন তিনি, এই সব কিছুর আয়োজন দেখে। রাত পোহালেই যে আসবে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ।  বুধবার দীঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনের আগে মঙ্গলবার মন্দিরের শীর্ষচুড়োতে উড়ল ধ্বজা। মুখ্যমন্ত্রীর হাত থেকে ধ্বজা নিয়ে চুড়োয় উঠে ধ্বজাস্থাপন হল। করজোড়ে দাঁড়িয়ে তাকিয়ে থাকলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলেন তিনি ঊর্ধ্বে তাঁর দৃষ্টি নিবদ্ধ। ঠিক সেই হীরক রাজার দেশে সিনেমার দৃশ্যে সেই রাজার মূর্তিস্থাপন এর মতই যেনো বিষয়। সেই আমলে শুরু হয়েছিল হীরকাব্দ। জানি না এই মা মাটি মানুষের আমলে কোন অব্দের আবার সূচনা হবে। সেই নতুন অব্দে আর কী কী ঘটনা ঘটবে। তবে এটা ...

মহম্মদ নিজামউদ্দিন - এর গল্প

আজ আপনাদের বলবো বর্ধমানের জামালপুরের মহম্মদ নিজামুদ্দিন এর গল্প। আমার সাদা জীবনের কালো কথায় আমার আঁকিবুঁকি ব্লগের পাতায় আজ এই ঝড়ের রাতে সেই নিজামুদ্দিন এর হাসি মুখ, নামাজ পড়ে যিনি নিজের দাড়িতে হাত বুলিয়ে বলতে পারেন, নেতাদের কথা বাদ দিন আমি আর আপনি তো এক। মানুষ আমরা, বন্ধু আমরা। কেউ কারুর শত্রু নয়। সত্যিই কি অসাধারন জীবন দর্শনের কথা কত সহজেই অবলীলায় বলে দিলেন তিনি হাসতে হাসতে। যা শুনে আমি সত্যিই অবাক হলাম এই ঝড়ের রাতে। বিহারের সমস্তিপুর জেলা থেকে প্রায় পঞ্চাশ বছর আগে যিনি চলে এসেছিলেন এই বাংলায় এক সময় এই বর্ধমানের জামালপুর এলাকায়। ব্রিটিশ আমলে যাঁর বাবা এক সময় দেশের হয়ে কাজ করেছেন বলে জানান তিনি আমায় কথায় কথায়। যিনি মনে করেন এই তাঁর সাথে আমার পাশে বসে গল্প করার সুযোগ করে দিলেন তাঁর প্রিয় আল্লাহ আকবর আর আমার মা কঙ্কালী ও‌ মা তারা স্বয়ং নিজেই হয়তো।  আর তাই তো এই ঝড় জল এর রাতে তাঁর সাথে কথা বলার সুযোগ হলো আমার কলকাতার বিখ্যাত হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক ডাঃ সৌমাল্য চট্টোপাধ্যায় এর চেম্বারে বসে তাঁর সেই সুন্দর জামালপুরের গ্রামের বাড়িতে...

ভালো থেকো আকবর দা

টুলু আর আকবরদার এই ছবিটা দেখে আমার বেশ ভালো লাগলো এতদিন পরেও। শালী আর জামাই বাবুর সেই অমলিন মিষ্টি মধুর সম্পর্কের একটি উজ্জ্বল রঙিন ছবি। মৃত্যুর এতো বছর অতিক্রান্ত হবার পরেও কেমন উজ্জ্বল হয়ে আছে আজও। সেই মোটর সাইকেল করে আকবরদার হুগলী জেলার এই প্রান্ত থেকে ওই প্রান্তে ছুটে বেড়ানো। লাল পার্টির সন্ত্রাসের বিরূদ্ধে রুখে দাঁড়ানো। বড়ো ভাই বলে কেউ ডাকলেই সেই ডাক শুনেই সবার পাশে দাঁড়িয়ে পড়া বুক চিতিয়ে হাসি মুখে তাঁর হয়ে কাজ করা আর সাহায্য করা যেটা আজকাল উঠেই গেছে প্রায়।   রাজনীতির বৃত্ত ছেড়ে, রাজনীতির ঘেরাটোপে বন্দী বা আবদ্ধ না হয়ে কাউকে তোয়াক্কা না করে যে কোনো মানুষকে সাহায্য করা দলমত নির্বিশেষে। সে সুকাই চাচা হোক, ভজা হোক, তরুণ পান হোক, মগরার রঘু হোক, কিম্বা সেই আকবরদার দক্ষিণ হস্ত ডাকাবুকো উত্তরপাড়ার সদ্য নেতা তৈরি হওয়া দিলীপ যাদব হোক, সেই পাণ্ডুয়ার আনিসুল, চন্ডিতলার অনিল দা, সেই বর্তমানের বিখ্যাত নেতা ও আধুনিক কবি সেই আমলে এত বিখ্যাত হয়ে উঠতে পারেননি তিনি সেই বর্তমানে ড সুবীর মুখোপাধ্যায়। আমরা তো তাঁকে সেই চন্ডিতলার সুবীর বলেই জানতাম। সেই ...

বারান্দা

রাত কেটে ভোর হয় একসময়, ভোরের আলোয় কেটে যায়, রাতের নিকষ কালো আঁধার।  জীবনের আঁধার মাখা, রাত জাগা, প্রহর গোনার পালা শেষ হয়, ঘড়ির ঘন্টা বাজে ঢং ঢং।  অন্ধকার রাস্তায় শেষ হুইসেলের আওয়াজ, লাঠির ঠক ঠক আওয়াজ, ঘরে ফেরে পাহারাদার। কিন্তু ভোর হলেই মে, আমার দু কামরার ছোট্ট ফ্ল্যাটের বারান্দায়, কেমন হুটোপুটি করতো ওরা। কেমন যেনো একটা প্রাণপণে, আমায় ডেকে তুলতো ওরা জোর করে। আজ আর ওরা সবাই মিলে, আমায় ডাকে না আর আজকাল। বিরক্ত করে না একদম ওরা আর, ঝটপট করে ডানা ঝাপটে, জড়াজড়ি করে এ ওর সাথে ঝগড়া করে না আর,ভোরের আলো দেখে। ছোটো ব্যালকনির ঝুল পড়া, ধুলো মাখা জায়গাটা, কেমন ভোর বেলায় ফাঁকা ফাঁকা লাগে আজকাল। বারান্দার কোণে পড়ে থাকা লাঠি, জাল, জং পড়া তার, খাবারের কৌটো, নিজের বুকের মাঝে চেপে বসে। নিজের অজান্তেই জং পড়া তার দিয়ে জাল বুনি আমি ভোরবেলায়। জং পড়া তারের খোঁচায় রক্তাক্ত হই আমি। ওদের জন্য আজ বড়ো মন কেমন করে, কেমন আছে ওরা সব কে জানে। সাদা, ধূসর, রঙিন সব আমার ভালোবাসার বোবা পাখির দল। রাত পোহালেই যারা জল,খাবার চাইতো।  একটু দেরি হলে ঘাড় গুঁজে মুখ ফুলিয়ে অভিমান...

এলোমেলো জীবনের এলেবেলে কথা

জীবনের আঁকাবাঁকা পথ ধরে আমার এগিয়ে চলা। যে পথে নানা চড়াই আর উৎরাই। যে পথ কখনও কাঁদায় আবার কখনও হাসায়। যে পথ আবার কখনও কখনও জোনাকির আলো মাখা গায়ে উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে পথ দেখায়। যে পথের বাঁকে আমার হারিয়ে যেতে ইচ্ছা করে ওই ফাঁকা রাস্তায়। যেখানে কেউ নেই। যেখানে আমি একা একদম একা। সত্যিই তো জীবনের এই হাজার ভীড়ের মাঝে আমরা সবাই যে বড়ো একা।  আমার সাদা জীবনের কালো কথায় আমার নিজের কথা বলতে ইচ্ছা হলো আজ। সেই যে কথা শুরু করে ছিলাম আমি একদিন আলগোছে। যে কথা বলতে গিয়ে আমি অনেকের কাছেই হাসির পাত্র হলাম। সেই জীবনের কথা। যে জীবনের সাথে লেপ্টে ছিল একদিন নিশ্চিত একটা ভরপুর সুখের জীবন। যে জীবনের চারিধারে কালো টলটল করা পুকুরে দুপুর বেলায় নিশ্চিন্তে ঘাই মারতো মাছ। পুকুর ধারে বসে মাছের খেলা দেখতে বড়ো ভালো লাগে আমার। আর মাথার ওপর খোলা আকাশে চক্কর কাটতো চিল আর সাদা বকের দল। যাদের ডানায় লেপ্টে থাকতো সুখের আবেশ।  আসলে জীবন মানে তো ধরাবাঁধা একটা একশো মিটারের ট্র্যাকে দৌড়ে যাওয়া। কারুর ফার্স্ট হওয়া, কারুর দ্বিতীয় বা তৃতীয় হওয়া। আর কারুর শুধুই এলোমেলো এলেবেলে বিন...

গ্রাম থেকে শহরে আসা

বহু দিন পর গ্রাম থেকে বোলপুর থেকে কলকাতা এলাম। আসলে এই গ্রাম, ফাঁকা রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো সাইকেল চালিয়ে এলোমেলো ভাবে এদিক ওদিক উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘোরা কোনো নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে নয় সেটাই আমার বেশ ভালো লাগে এই বুড়ো বয়সে টোটোময় জীবনে। শহুরে জীবনের এই ভীড় ভাট্টা, এই চেনা মানুষের অচেনা হাসি হেসে দূরে চলে যাওয়া, কেউ চিনতে পারে আবার কেউ নয় সেটা দেখে কেমন লাগে আমার। কেমন একটা ছন্দহীন গতিময় জীবনে ভেসে যাওয়া এদিক থেকে ওদিক একে অপরকে টেক্কা দিয়ে নির্দ্ধিধায় নিঃশব্দে নিঃশঙ্ক চিত্তে। একটু কেমন যেন আলুনি লাগে আমার। তবু সেই আলুনি শহরে ঘুরে বেড়ালাম আমি বেশ কিছু সময়। বাস ধরলাম। গঙ্গার ওপর দিয়ে পার হয়ে সেই টি বোর্ডের রাস্তা পার হয়ে রাজভবনের গেট পার করে, সেই মহাকরণের পোস্ট অফিস এর গেট পার করে নেমে পড়লাম মেয়ো রোডের উপর। সেই চেনা শহরের চেনা রাস্তায়। যে রাস্তায় ঘুরে বেড়িয়েছি আমি একা একাই কতদিন এই বোশেখের সন্ধ্যায় বা শীতের দুপুরে। যেখানে শুধু গণতন্ত্রের প্রহরীদের আনাগোনা হয় সন্ধ্যা হলেই। যাঁরা অতন্দ্র প্রহরীর মতো আগলে রাখে এই বাংলার দূর্জয় ঘাঁটি ব...

পানকৌড়ির স্বপ্ন

উজ্জ্বল নক্ষত্র খচিত সব মুখে, কেমন মায়া জড়ানো হাসি, এ ওর গায়ে লেপটে যাওয়া জীবন।  সারা শরীরে ছড়িয়ে রয়েছে আলোকমালার বেআব্রু নীল, সাদা, সবুজ হরেক কিসিমের রং।  রং মাখা, সং সাজা শরীরে, মনে একটু উষ্ণতার হাতছানি, একে অপরকে জড়িয়ে ধরে বেঁচে থাকার আকন্ঠ প্রয়াস। কত চেনা, অচেনা মানুষের মাঝে, উষ্ণতা ঢাকতে শীতবস্ত্র খোঁজে এই উষ্ণ রাতেও কেউ কেউ। জীবনের উষ্ণতার হাতছানি এড়িয়ে, শীতার্ত মানুষের উষ্ণতা অনুভব। ওরা সব কেমন যেন মায়াময় জীবনের, ছন্দহীন, গতিহীন সব বন্ধু মানুষ জন। যারা জানে না, সৌর জগতের কোন গ্রহের সন্ধান করতে নেমেছে তারা, এই রাত দুপুরে। যারা এখনো ভাবনার আগুন গায়ে মেখে, বেঁচে থাকার চেষ্টা করে বৃথাই। সব ওলোট পালট করে দিয়ে বলতে পারেনা তারা, আমরা সবাই বাঁচতে চাই। মানুষের অধিকার নিয়ে, সেই বাঁচার স্বপ্ন দেখতে চাই  দু চোখ ভরে। দয়া নয়, ভিক্ষা নয়, দান বা অনুগ্রহ নয়। নিজের মতো করে শিরদাঁড়া সোজা করে বাঁচার স্বপ্ন। যে বাঁচার জন্য কারুর কাছে,মুখাপেক্ষী হয়ে ভিক্ষাপাত্র নিয়ে থাকা নয়। উজ্জ্বল সেই সব মুখ গুলোয় নবমীর চাঁদের মিষ্টি টাটকা আলোয় ভরপুর। কেমন যেনো ট...

নতুন স্বপ্ন

পুরোনো দিনের কথা ভুলে নতুনকে আবাহন। বৈশাখের প্রথম প্রভাতে রক্তরাগে রঞ্জিত তৃষিত সূর্য। সূর্যের প্রখর তাপে ধরিত্রীর মাটি ফেটে ফুটি ফাটা। শাল শিমুলের ডালে কচি পাতার নরম ওম মাখা হাতছানি। ওই গাছেদের শিরা-উপশিরায় নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন। নতুন সূর্যের আলো মাখা সকাল হাজির আজ ঘরের দাওয়ায়। ঢেউ খেলানো রাস্তায় ন্যাংটা খোকার টলমল পায়ে ছুটে চলা। শিশুটির কোমরের ঘুনশির মন কেমন করা দোল খাওয়া দেখে, মনে পড়ে যায় কত কথা। চৈত্রের সাঁঝবেলায় আমার এলোমেলো হয় সব কিছু।  ঢাকের বাদ্যি, শুকনো বাতাসের স্পর্শ, মন কেমন করা সন্ধ্যা, বাঁশ গাছের ফাঁকে উঁকি মারা চাঁদ। সন্ধ্যা প্রদীপ হাতে মায়ের তুলসী তলায় দাঁড়িয়ে থাকা। কেমন যেনো থমকে গেলো ওই কচি পায়ের তালে, ছায়াময় সময়। যে সময় পুরোনোকে বাসর ঘরে বন্দি করে রাখে অক্লেশে, নিশ্চিন্তে, নিরাপদে। সিন্দুকের আড়ালে আবডালে জমে থাকে ধুলোর পুরু আস্তরণ। সর সর করে দেওয়াল বেয়ে এগিয়ে চলে নিঃশব্দে, ওই পাখনা ছাড়া লাল পিঁপড়ের দল। ওরা সবাই একে অপরকে জড়িয়ে, ভালোবেসে, বেঁচে থাকে ওরা। পুরোনোকে ঠেলে ফেলে দিয়ে, সকলকে জড়িয়ে ধরে নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখে ...

বুটা হ্যাপি বার্থডে

দেখতে দেখতে আমার বুটা বড়ো হয়ে যাচ্ছে। সেই ছোট্ট মেয়েটা হাতে খড়ির দিন পেরিয়ে, স্কুলের জীবন পার করে, কলেজ জীবন এর প্রায় শেষের পথে আজ এসে পড়েছে। পয়লা বৈশাখের প্রথম সকাল এলেই ওর জন্মদিনের কথা মনে পড়ে যায় আমার। সেই কত ছোটো থেকে ওকে ঝড়ঝাপটা সামলে ওকে বড়ো করে তোলা ওর মায়ের। যদিও সবটাই ওর মায়ের অবদান। বাবা হিসেবে বলতে গেলে যদিও আমি একদম ফেল্টু একজন। যদিও গোটা জীবনেই আমি ফেল্টু। আজ তাই আমার সাদা জীবনের কালো কথায় আমার আঁকিবুঁকি ব্লগের পাতায় সেই ছোট্টো বুটার লেডি হয়ে ওঠার কথা। যে কথা লিখতে আমার ভয় নেই আজ।  আসলে কী জানেন তো সেই ছোট্টো শিশুকে বুকে আগলে মানুষ করা ওর মার। সেই শ্রীরামপুর ওয়ালস হাসপাতাল থেকে ওকে ঘরে নিয়ে আসা, চন্দননগরে ওকে স্কুলে নিয়ে যাওয়া ট্রেন পথে। সেই লকডাউন এর সময় কাজ না থাকায় বসে থাকা ঘরে একরাশ চিন্তা নিয়ে। কি করে সংসার চলবে সেই চিন্তায় রাত জেগে বাবা আর মেয়ের রাত্রিযাপন করা। আর হিসাব করা সামনের মাসে বাড়ী ভাড়া দেবো কি করে আমরা। আর কারুর ফোনে একটু আশার সঞ্চার হলে ভালো কাজের খবর পেয়ে মেয়েকে বলা দেখ ঠিক এইবার আমাদের কাজ হবে এ...

স্বাগত নববর্ষ

বসন্তের শেষ রাত! আজ চৈত্র সংক্রান্তি।‌ আচ্ছা... বসন্তের কি শেষ বলে কিছু হয়? শান্তিনিকেতনে? বসন্তের শেষ হয় কি? না বোধহয়। শান্তিনিকেতন তো চিরবসন্তের দেশ। সেই চির বসন্তের দেশে সংক্রান্তির দিন আমরা বেরিয়ে পড়লাম দুজনে মিলে। মাথায় কাঠ ফাটা রোদ্দুর নিয়ে। উদ্দেশ্য ছিল মা কঙ্কালীতলা মন্দির দর্শন। মেলার ভীড়ে হারিয়ে যাওয়া। মিলে মিশে একাকার হওয়া। টোটোতে চেপে আমি গান ধরলাম মনে মনে,  বসন্ত যায়— ললিত রাগে বসন্ত চলে যায়।  এ চৈত্র দিনে মরি হায়— হায়!  সত্যিই এই বুড়ো বয়সেও যে মরতে সাধ হয় বড়ো। বুড়ো বয়সে আফশোষ হয় আমার বসন্ত চলে যাওয়া দেখে। উদাসী বাউন্ডুলে চৈত্রের খাঁ খাঁ দুপুর রোদে কিছুটা এগিয়ে রাস্তা জ্যাম আর যাবে না টোটো। অগত্যা মাঠে নেমে পড়া দুজনের। হেঁটে হেঁটে এগিয়ে চলা চড়াই আর উৎরাই পেরিয়ে। জীবনের এই শেষ বয়সে এসে চড়াই আর উৎরাই পার করতে আমার বেশ ভালোই লাগে। আমার এলোমেলো এলেবেলে বিন্দাস জীবন নিয়ে বেশ ভালই লাগে এই ভাবে ঘুরে বেড়াতে। আর তাই বোধহয় ভীড়ে মিশে যাওয়া।  আকাশ পানে তখন সুয্যি মামার গনগনে উত্তাপ। শহুরে জীবনের রোদ চশমা পড়ে আমাদ...